জ্বিন আসরের / (Jinn-Asor) লক্ষণ এবং জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়

 

 

Jinn-Asor

 

জ্বিন আসরের / (Jinn-Asor) লক্ষণ এবং জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়

আজ শুরুতে আমরা জ্বিন আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ জানবো। গতপর্বে ব্যখা করা হয়েছে, মানুষ কয়েকভাবে জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হয়। আমাদের সমাজে whole body possession বা যেটাকে জ্বিনে ধরা বলে এটাকেই শুধু জ্বিনের সমস্যা ভাবা হয়, পুরো শরীর পজেসড না হলে সচরাচর কেউ বিশ্বাস করে না যে জ্বিন আছে শরীরে। কিন্তু আসলেই এটা সম্ভব যে, কারো শরীরে জ্বিন ঢুকে আছে.. আর দিনের পর দিন ধীরেধীরে সে মানসিক এবং শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখা জরুরী, আমরা যে লক্ষণগুলো আলোচনা করতে যাচ্ছি এক-দুদিন এসব দেখলেই জ্বিন আক্রান্ত হয়েছে ভাববার কারণ নেই, কারণ এগুলো স্বাভাবিক অসুখবিসুখ এর কারণেও হতে পারে। এই লক্ষণগুলো কারো মাঝে যদি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান থাকে, তাহলে ধরে নিবেন সমস্যা আছে।

আলোচনার সুবিধার্থে পজেসড হওয়ার লক্ষণগুলোকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করে নিচ্ছি। ঘুম সংক্রান্ত এবং অন্য সময়ের..।

ঘুম সংক্রান্ত লক্ষণ সমূহঃ

১। নিদ্রাহীনতা: যার জন্য সারারাত শুধু বিশ্রাম নেয়াই হয়, ঘুম হয়না

২। উদ্বিগ্নতা: যেজন্য রাতে বার বার ঘুম ভেঙে যাওয়া। 

৩। বোবায়ধরা: ঘুমের সময় কেউ চেপে ধরেছে, নড়াচড়া করতে পারছে না। প্রায়ই এমন হওয়া

৪। ঘুমের মাঝে প্রায়শই চিৎকার করা, গোঙানো, হাসি-কান্না করা

৫। ঘুমন্ত অবস্থায় হাটাহাটি করা (Sleepwalking)

৬। স্বপ্নে কোনো প্রাণিকে আক্রমণ করতে বা ধাওয়া করতে দেখা। বিশেষতঃ কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, উট, সিংহ, শিয়াল, সাপ (*)

৭। স্বপ্নে নিজেকে অনেক উঁচু কোনো যায়গা থেকে পড়ে যেতে দেখা

৮। কোনো গোরস্থান বা পরিত্যক্ত যায়গা, অথবা কোনো মরুভূমির সড়কে হাটাচলা করতে দেখা

৯। বিশেষ আকৃতির মানুষ দেখা। যেমন: অনেক লম্বা, খুবই খাটো, খুব কালো কুচকুচে

১০। জ্বিন-ভুত দেখা

দ্রষ্টব্যঃ যদি স্বপ্নে সবসময় দুইটা বা তিনটা প্রাণী আক্রমণ করতে আসছে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে সাথে দুইটা বা তিনটা জ্বিন আছে।

 

ঘুম ব্যতীত অন্য সময়ের লক্ষণ

১। দীর্ঘ মাথাব্যথা (চোখ, কান, দাত ইত্যাদি সমস্যার কারণে নয়, এমনিই)

২। ইবাদত বিমুখতা: নামাজ, তিলাওয়াত, যিকির আযকারে আগ্রহ উঠে যাওয়া। মোটকথা, দিনদিন আল্লাহর থেকে দূরে সরে যাওয়া

৩। মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকা, কিছুতেই মন না বসা..

৪। ব্যাপক অলসতা; সবসময় অবসন্নতা ঘিরে রাখা

৫। মৃগীরোগ

৬। শরীরের কোনো অংঙ্গে ব্যাথা কিংবা বিকল হয়ে যাওয়া। ডাক্তাররা যেখানে সমস্যা খুজে পেতে বা চিকিৎসা করতে অপারগ হচ্ছে। আবারও মনে করিয়ে দেই, শারীরিক রোগের কারণেও এসব হয়ে থাকে। তবে যখন দীর্ঘদিন যাবত যখন এসব লক্ষণ দেখা যাবে, তখন ভাববেন কোনো সমস্যা আছে। জ্বিনের আক্রমণ থেকে বাচার জন্যঃ আগামী পর্বে হয়তো বাসাবাড়ি থেকে জিন তাড়ানোর পদ্ধতি, এরপর জ্বিনদ্বারা আক্রান্ত রুগীকে রুকইয়াহ করার নিয়ম আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ। তবে পোস্ট অনেক লম্বা হতে পারে। এজন্য দুই পর্বে দেয়ার ইচ্ছা আছে।

 

যাহোক, আজ সবশেষে খবিস জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে কয়েকটি মৌলিক বিষয় জেনে নিন।

 

১। জামা’আতে নামাজ আদায় করা। তাহাজ্জুদ পড়া। এই দুটি আপনার আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে।

২। গানবাজনা থেকে বিরত থাকা।

৩। সর্বদা পাকপবিত্র থাকা। বিশেষত: ঘুমের আগে অযু করে বিছানায় যাওয়া।

৪। ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া।

৫। সব কাজে বিসমিল্লাহ বলা, বিশেষত: খাবার সময় এবং ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করতে। এছাড়া উঁচু থেকে লাফ দেয়ার সময়, কিছু ফেলার সময়, অন্ধকারে কিছু করার সময়ও বিসমিল্লাহ বলা ভালো।

৬। কুকুর – বিড়াল না মারা, সাপ মারতে চাইলে আগে জোর আওয়াজে ৩বার বলা “জ্বিন হলে চলে যাও..”

৭। কোনো গর্তে প্রসাব না করা। হাদিসে এব্যাপারে পরিষ্কার নিষেধাজ্ঞা আছে।

৮। ঘরে প্রবেশের এবং বের হওয়ার দোয়া পড়া, দোয়া না জানলে অন্তত বিসমিল্লাহ বলা।

৯। সন্ধ্যার সময় ঘরের জানালা বন্ধ করা, বাচ্চাদের বাহিরে বের হতে না দেয়া। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর বাচ্চাদের বের হতে কিংবা জানালা খুলতে পারেন।

১০। স্ত্রী সহবাসের পুর্বে অবশ্যই দু’আ পড়া। বিয়ের প্রথম রাতের দোয়াটি পড়া।

১১। টয়লেটে ঢোকার সময় দু’আ পড়া।

১২। প্রতিদিন “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর” ১০০বার পড়া। একশতবার না হলে, অন্তত সকাল – সন্ধ্যায় ১০বার করে পড়া।

১৩। সকাল সন্ধ্যার অন্যান্য মাসনুন আমলগুলো নিয়মিতভাবে প্রতিদিন করা

১৪। সুরা ইখলাস ফালাক নাস, তথা তিনকুল-এর আমল গুরুত্ব সহকারে করা।

 

আয়েশা সিদ্দীকা রা. থেকে এব্যাপারে চল্লিশটিরও বেশি সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সা. জীবনের শেষ পর্যন্ত এর আমল করেছেন। আমল হলো, রাসূল সা. প্রতিরাতে ঘুমানোর পূর্বে সূরা ইখলাস তিনবার, সূরা ফালাক তিনবার ও সূরা নাস তিনবার পড়ে দুইহাতের তালুতে ফুঁ দিতেন। ফুঁ এর সাথে হালকা থুতু বেরিয়ে আসতো। এরপর সমস্ত শরীরে হাত বুলিয়ে নিতেন। দ্বিতীয়ত: প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাযের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সূরা ইখলাস, একবার সূরা ফালাক ও একবার সূরা নাস এভাবে তিন সূরা তিনবার পড়তেন। এসময়ে ফুঁ দেয়া লাগবে না। হাদীসের শেষাংশে আল্লাহর রাসূল সা বলেন, এআমলই তোমার জন্য যথেষ্ট।অন্য হাদিসের আছে এই সুরাগুলো পড়ে বাচ্চাদের ফুঁ দিয়ে দিতেন। উপরে উল্লেখিত পরামর্শ বিভিন্ন হাদিস থেকে নেয়া, লেখা দীর্ঘ হয়ে যাবে এজন্য সবগুলো হাদিস উল্লেখ করা সম্ভব হলো না। আর উপরে বলা কিছু দুয়া [এখানে] পাবেন। এছাড়া বাকিগুলো প্রসিদ্ধ অনেক বইতে পাবেন, যেমনঃ হিসনে হাসিন, গুলজারে সুন্নাহ, হিসনুল মুসলিম। আরো সহজে পাবেন নুরানী মাদরাসার বাচ্চারা একটা নীল রঙের বই পড়ে (নুরানী পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা এরকম নাম), বেলায়েত সাহেবের লেখা, সেখানে। যাহোক, অনেকগুলো ব্যাপার আলোচনা হলো, আল্লাহ আমাদের সতর্ক থাকার তাওফিক দিন, আমিন।  

 

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার (রুকইয়াহ) হাদিয়া।

  • ঢাকার মধ্যে রুকইয়ার হাদিয়া প্রতি রোগী প্রথমবার ৫০০০ টাকা, ২য়/তয় বার ৪০০০ টাকা, আর ঢাকার বাহিরে হলে প্রথমবার ১০,০০০ টাকা, ২য়/৩য়  বার  ৮০০০ টাকা ।
  • বি. দ্রঃ খুব বেশি দূরত্ব, অসুস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বড় বেশি কঠিন রোগীর ক্ষেত্রে হাদিয়া আলোচনা সাপেক্ষে কম বেশি হতে পারে।
  • এই ইসলামিক চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে, কোরআন হাদিসের চিকিৎসা সমাজে কায়েম করানো, আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে দীন-ইসলামের খাদেম হিসাবে কবুল করুন, আমীন, সুম্মা আমীন।

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

 

Islami Dawah Center Cover photo

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )

ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )