যৌতুক / Dowry প্রথা কেন হারাম?

 

 

Dowry

 

 

যৌতুক বা পণ একটি হারাম ও জাহেলী প্রথা, সামাজিক ব্যাধী এবং দণ্ডণীয় অপরাধ (সাথে রয়েছে যৌতুক সংক্রান্ত কতিপয় জরুরি বিধিবিধান) 🌀 যৌতুক কাকে বলে? ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের শর্ত হিসাবে কনে পক্ষের নিকট বর পক্ষ কর্তৃক ডিমান্ড বা দাবি করে কোনো ধরণের অর্থ-সম্পদ গ্রহণ করাকে যৌতুক বলা হয়। বাংলা পিডিয়ায় বলা হয়েছে: “বিবাহের চুক্তি অনুসারে কন্যাপক্ষ বরপক্ষকে বা বরপক্ষ কন্যাপক্ষকে যে সম্পত্তি বা অর্থ দেয় তাকে যৌতুক বা পণ বলে।” (বাংলাপিডিয়া ৮/৪৫৫) 🌀 যৌতুক প্রথা কেন হারাম? ইসলামে কেন যৌতুক প্রথা হারাম ও গর্হিত বিষয় তা নিন্মে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল:

❖ ১. যৌতুক প্রথা হিন্দুদের রীতি-নীতির অন্তর্ভূক্ত। আর ইসলামের দৃষ্টিতে অমুসলিমদের ধর্মীয় রীতি-নীতি ও কৃষ্টি-কালচার অনুসরণ করা হারাম। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ “যে ব্যক্তি বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে তাদের দলভুক্ত হিসেবে গণ্য হবে।” [সুনানে আবু দাউদ, অধ্যায়: পোশাক-পরিচ্ছেদ হা/৪০৩১-হাসান সহিহ] এই হিন্দুয়ানী সংস্কৃতিটি দুর্ভাগ্য জনক ভাবে ভারত উপমহাদেশের মুসলিমদের মাঝে অনুপ্রবেশ করেছে। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিকগণ বলেন: “হিন্দু সমাজে নারীরা পুরুষদের মতো একইভাবে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতো না। তাই অনেক আগে থেকেই হিন্দু সমাজে নারীদেরকে বিয়ের সময়ে যৌতুক দেবার প্রচলন ছিল। কালক্রমে তা বিয়ের পণ হিসাবে আবির্ভূত হয় যা একসময় কনে পক্ষের জন্য এক কষ্টকর রীতি হয়ে দাঁড়ায়।” (উৎস: কাজী এবাদুল হক (জানুয়ারি ২০০৩)। “যৌতুক”।) “দীর্ঘদিন যাবত হিন্দু সমাজ ও মুসলিম সমাজ একত্রে বসবাসের কারণে সাম্প্রতিককালে আরো বিভিন্ন কুপ্রথার মতো এই যৌতুক কুপ্রথাটিও মুসলিম সমাজে সংক্রমিত হয়।” [ইসলামের বৈধ ও নৈতিক প্রেক্ষাপট। লেখক: তমিজুল হক (ব্যরিস্টার এট ল.) পৃষ্ঠা নং ৫২৮] 

 

❖ ২. ইসলামের দৃষ্টিতে এটি ‘অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ ভক্ষণ’ এর নামান্তর। এটি আল্লাহ তাআলা বলেন: وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ “তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না।” (সূরা বাকারা: ১৮৮)

 

❖ ৩. বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে যৌতুক লেনদেন একটি দণ্ডনীয় অপরাধ আর ইসলামের বিধান হল, মানব কল্যাণে প্রণীত সরকারী আইন মান্য করা প্রতিটি মুসলিমের জন্য অপরিহার্য। কোনভাবেই তা লঙ্ঘন করা বৈধ নয়-যতক্ষণ না তা আল্লাহর নির্দেশ পরিপন্থী হয়। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের যৌতুক নিরোধক আইন অনুসারে যৌতুক গ্রহণের অপরাধ প্রমাণিত হলে এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল বা ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

 

❖ ৪. যৌতুক প্রথা বিবাহের ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান পরিপন্থী। কেননা ইসলামের বিধান হল, বিয়ের ক্ষেত্রে স্বামী তার স্ত্রীকে দেনমোহর প্রদান করবে। স্ত্রীর পক্ষ থেকে অগ্রিম চুক্তি করে কোনো কিছু নেয়ার বিধান দেয়া হয় নি। কিন্তু এখানে নামকে ওয়াস্তে দেনমোহর রেজিস্ট্রেশন খাতায় লেখা হলেও বাস্তবে স্ত্রীর নিকট যৌতুক গ্রহণ করা হয়। সুতরাং তা সম্পূর্ণ হারাম, জুলুম ও অনৈতিক কাজ। বর বা তার পরিবারের জন্য এ সম্পদ ভক্ষণ করা সম্পূর্ণ হারাম। পূর্ব যুগের মুসলিমগণ এই যৌতুক প্রথার সাথে পরিচিত ছিল না। কিন্তু বিশেষ করে পাক-ভারত উপমহাদেশে অমুসলিমদের সাহচর্য্যে থাকার ফলে ধীরে ধীরে এই নিকৃষ্ট প্রথা দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ ও অসচেতন মুসলিমদের মাঝে সংক্রামিত হয়েছে। (আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমীন)

 

🌀 দেনমোহর এবং আমাদের সমাজের বাস্তবতা: আল্লাহ তাআলা বলেন: وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا “আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশী মনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।” (সূরা নিসা: ৪) দুর্ভাগ্য বশত: কুরআনের এ নির্দেশ বর্তমানে আমাদের সমাজে সরকারী বিয়ে রেজিস্ট্রির খাতায় কেবল লিখে রাখার বিষয়। অনেক মানুষ তাদের স্ত্রীদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে অবধারিত ও অনিবার্য প্রাপ্য মোহর থেকে শুধু বঞ্চিত করছে না বরং উল্টো স্ত্রীর পরিবার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ-কড়ি এবং আসবাব-পত্র যৌতুক হিসেবে হাতিয়ে নিচ্ছে। এটি নি:সন্দেহে কনের পরিবারের উপর একটি মারাত্মক জুলুম। যে পিতা তার শরীরের রক্তঘাম দিয়ে একটি মেয়েকে প্রতিপালন করল সেই মেয়েকে বিয়ে দিতে গিয়ে তার মাথার উপর যখন যৌতুকের মত এই মহা অভিশাপ চেপে বসে তখন তার মানসিক কী অবস্থা কী হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ যৌতুকের কারণে কত অসহায় নারীকে স্বামীর নির্মম নির্যাতনে নিষ্পেষিত হচ্ছে, অপমানিত হতে হচ্ছে, কত নারী তার স্বামী বা স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের অত্যাচারে মৃত্যুমুখেও পতিত হচ্ছে সে সব খবর কয়টা মিডিয়ায় প্রকাশ পায়? সুতরাং বিধর্মীদের থেকে অনুপ্রবেশকারী এই অপসংস্কৃতি, সামাজিক ব্যাধি ও হারাম প্রথার অবসান হওয়া জরুরি।

🌀 যৌতুক সংক্রান্ত কতিপয় জরুরি বিধিবিধান:

◉ ক. মেয়ের বাবা বা অভিভাবক যদি বরকে বিয়ের পর স্বেচ্ছায় কিছু অর্থ-সম্পদ বা উপহার-সামগ্রী দান করে তা গ্রহণ করায় কোনও দোষ নেই। বরং বাবা বা অভিভাবকের পক্ষ থেকে মেয়ে-জামাইকে এই উপহার দেয়া উত্তম। বিশেষ করে জামাই যদি অভাবী হয়। কেননা এতে একজন অভাবীর নতুন সংসার সাজাতে সাহায্য করা হয় এবং এর মাধ্যমে উভয় পক্ষের মাঝে পারস্পারিক ভালবাসা ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী রা. এর সাথে তাঁর মেয়ে ফাতিমা রা. কে বিয়ে দেয়ার পর তাদেরকে গৃহস্থালির কিছু প্রয়োজনীয় আসবাব-সামগ্রী দিয়েছিলেন। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে: عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ جَهَّزَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاطِمَةَ فِي خَمِيلٍ وَقِرْبَةٍ وَوِسَادَةٍ حَشْوُهَا إِذْخِرٌ আলী রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা রা.-কে কিছু গৃহস্থালির আসবাবপত্র দান করেছিলেন। (সেগুলো হল:) একখানা চাদর, একটা পানির পাত্ৰ (মশক) আর একটা বালিশ, যার ভিতরে ছিল ইযখির ঘাস।” [এ হাদিসটি আহমদ শাকের সহিহ বলেছেন, মুসনাদ আহমদ ২/৫৭, শুআইব আরনাবুত বলেন, এর সনদ শক্তিশালী-তাখরিজুল মুসনাদ হা/৭১৫। আর শাইখ আলবানীর পক্ষ থেকে দু ধরণের মন্তব্য পাওয়া যায়। এ জায়গায় বলেছেন: সহিহ- দ্রষ্টব্য: সহিহ ইবনে মাজাহ হা/৩৩৬৬। তবে তিনি অন্যত্র যঈফ বলেছেন। দ্রষ্টব্য: সুনানে নাসাঈ হা/৩৩৮৪-আল্লাহ ভালো জানেন কোনটি শাইখের সর্বশেষ মত]

◉ খ. বিয়ের আগেই বিশেষ কোনো কারণে যদি কনের পিতা বা অভিভাবক স্বেচ্ছায় বিবাহে আগ্রহী ব্যক্তিকে অর্থকড়ি বা উপহার-সামগ্রী দেয়ার প্রস্তাব দেয় তাহলে উক্ত ব্যক্তির জন্য তা গ্রহণ করা জায়েয। উদাহরণ: কোনও কারণে এক ময়ের বিয়ে হচ্ছে না। আর বাড়িতে মেয়ে অবিবাহিত থাকার কারণে নানা ফেতনা-ফ্যাসাদে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে মেয়ের পিতা বা অভিভাবক যদি অগ্রিম ঘোষণা দেয় যে, ‘যে ব্যক্তি আমার মেয়ে বা বোনকে বিয়ে করবে তাকে এত এত টাকা বা এই এই উপহার-সামগ্রী প্রদান দেয়া হবে।’ এখন কোনও ব্যক্তি যদি ঐ মেয়েকে বিয়ে করে এবং মেয়ে পক্ষ তাকে স্বেচ্ছায় টাকা-পয়সা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করে তাহলে তা গ্রহণ করা তার জন্য নাজায়েয হবে না। কারণ সে এ অর্থ-সামগ্রী কনে পক্ষের কাছে ডিমান্ড বা দাবি করে নেয় নি। সুতরাং তা যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে আত্মমর্যাদা সম্পন্ন পুরুষের উচিৎ নয় পরিস্থিতির শিকার ও অসহায় কনের বাবা বা অভিভাবকের পক্ষ থেকে কোনো কিছু গ্রহণ করা।

◉ ৩. মেয়ের পিতা বা অভিভাবক যদি মেয়ের ইজ্জত-সম্ভ্রম রক্ষার স্বার্থে বিয়ে দেয়াকে অপরিহার্য মনে করে কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব দাতা ব্যক্তি যদি যৌতুক ছাড়া বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় (আর তার বিকল্প উপযুক্ত কোনো বরও খুঁজে না পাওয়া যায়) তাহলে এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে যৌতুক দিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করলে গুনাহ হবে না। কেননা, ইসলামের একটি মূলনীতি হল, الضرورات تبيح المحظورات “জরুরি প্রয়োজন নিষিদ্ধ বিষয়কে বৈধ করে দেয়।” আল্লাহ বলেন: لَا يُكَلِّفُ اللَّـهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا “আল্লাহ কারো উপর তার সাধ্যাতীত কোন কাজের দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না।” (সূরা বাকারা: ২৮৬) তিনি আরও বলেন: فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ “অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো যতটুকু তোমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে।” (সূরা তাগাবুন: ১৬) তবে বিয়ের পূর্বে চুক্তি করে যৌতুক গ্রহণ করার কারণে বর আল্লাহর নিকট অপরাধী ও গুনাহগার হিসেবে সাব্যস্ত হবে। যৌতুকের এ ম্পদ ভক্ষণ করা তার জন্য সম্পূর্ণ হারাম। পরিশেষে দুআ করি, আল্লাহ তাআলা মুসলিম সমাজকে যৌতুক নামক অভিশাপ থেকে রক্ষা করুন এবং নির্বোধদেরকে সুবুদ্ধি দান করুন। আমীন। আল্লাহু আলাম। আরও পড়ুন: যৌতুক একটি অবৈধ ও ঘৃণিত প্রথা যৌন চাহিদা হচ্ছে ক্ষুধার মতো! ক্ষুধা লাগলে যেমন খাবার প্রয়োজন হয় , তেমনি নারী পুরুষ একটি নির্দিষ্ট বয়সে উপনীত হলে তাদের যৌন চাহিদা সৃষ্টি হয় ৷ এটা আল্লাহর একটি সৃষ্টি। তাই প্রতিটি ছেলে মেয়ের উপযুক্ত বয়সে বিবাহ হওয়াটাই শ্রেয়। কিন্তু আমাদের সমাজে পড়াশোনার নামে , ক্যারিয়ার গড়ার নামে উপযুক্ত সময় থেকে অনেক পরে ছেলে-মেয়েদের বিবাহ দেয়া হয়। ফলে যৌন চাহিদার বর্শবর্তি হয়ে যেনা ব্যভিচারে পা বাড়ায় যুবক যুবতীরা ৷ আর এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক ৷ কারণ আপনি যদি একটি বিড়াল পালেন , আর তাকে খেতে না দেন তাহলে সুযোগ পেলেই বিড়াল আপনার হাড়ির খাবার চুরি করবে ৷ অভিভাবকরা ইচ্ছে করেই ছেলেমেয়ের বিয়ে দেরীতে দিচ্ছে , সুতরাং যেনা তো হবেই ৷ আপনার মেয়ে অন্য ছেলের সাথে তো পালাবেই ৷ এটা আপনারই কর্মফল ৷ সরকারি বিধান মোতাবেকও যদি একজন নারীর বিয়ের বয়স ১৮ বছর এবং একজন পুরুষের বিয়ের বয়স ২১ বছর হয় তারপরও অনেক অভিভাবকেরা ছেলের বয়স নিয়ে গেছে ৩০/৩৫ এ এবং মেয়ের বয়স নিয়ে গেছে ২৫/২৮ এ ৷ অথচ ইসলামিক রাষ্ট্রে ছেলে মেয়েদের এত দেরীতে বিবাহ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই ৷ অভিভাবকের কাছে এখন বিবাহ হয়ে গেছে কঠিন তাই যেনা হয়েছে সহজ ৷ এর জন্য এই সমস্ত সহীহ দ্বীনহীন অভিভাবকরাই দায়ী! আল্লাহ্ প্রতিজ্ঞাও করেছেন “ বিয়ে করলেই তোমাদের ধনী করে দিবো।” তবুও মেয়ে বিয়ে দেয়ার সময় কেবলই চাকুরীজীবী ছেলে খোজাটা মূলত আল্লাহ্’র উপর অনির্ভরশীলতা’র ইঙ্গিত। আমি তো মনে করি, “একটা ভালো চাকুরী’র পূর্বশর্তই হচ্ছে “বিয়ে”। কেননা, তখন তাকে রিজিক প্রদান করার দায়িত্ব স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা নিয়ে নেন। পড়ুন সেই মহাপবিত্র আয়াতে কারীমা… ” ﻭﺃﻧﻜﺤﻮﺍ ﺍﻻﻳﺎﻣﻲ ﻣﻨﻜﻢ ﻭ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﻴﻦ ﻣﻦ ﻋﺒﺎﺩﻛﻢ ﻭ ﺇﻣﺎﺋﻜﻢ ﺇﻥ ﻳﻜﻮﻧﻮﺍ ﻓﻘﺮﺍﺀ ﻳﻐﻨﻬﻢ ﺍﻟﻠﻪ “ (তোমাদের মধ্য হতে যারা বিবাহহীন তাদের বিবাহ দিয়ে দাও এবং দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরকেও। তারা যদি নিঃস্বও হয়ে থাকেন তবে স্বয়ং আল্লাহ্ তাকে ধনী বানিয়ে দেবেন) – সূরা নুর। আয়াতঃ ৩২। .অবশ্য উক্ত আয়াতে বিবাহহীনদের অবিভাবকদেরকেই আল্লাহ্ এ আদেশ করেছেন। কেননা আল্লাহ্ জানেন, অবিভাবকেরা কি সব চিন্তা করেন। অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে কেউ বিয়ে করতে চাওয়া সামাজিকভাবে খারাপ চোখে দেখা হয়। আমাদের সমাজে কেউ কারো বিয়ের কথা শুনলে মানুষ এতাটাই অবাক হয় যে অবৈধভাবে প্রেম ভালোবাসা যেনা করলেও এতোটা অবাক হয়না। বিষয়টা এখন সম্পূর্ণ উল্টো হয়ে গেছে,আগে মানুষ প্রেম ভালোবাসার কথা শুনলে অবাক হতো লজ্জা পেত, এখন তার বিপরীত। এ কারণেই আজ আমাদের সমাজের এত অধঃপতন। ছেলে বিয়ে করে মেয়েকে খাওয়াবে কি..!? আপনার আরেকটা মেয়ে থাকলে তাকে খাওয়াতেন না? তাহলে সমাজকে পাপমুক্ত করার জন্যে নিজের মেয়েকে বিয়ে দিয়ে অন্যের ঘরে তুলে দিয়ে, ছেলেকে বিয়ে করিয়ে অন্যের মেয়েকে ঘরে তুলে নিজের মেয়ের এখনো বিয়ে হয়নি মনে করে অন্যের মেয়েকে খাওয়াতে অসুবিধা কোথায়?? শুধু প্রতিষ্ঠিত ছেলের সাথেই বিয়ে দিতে হবে এই চিন্তা কেন আসবে..? প্রতিষ্ঠিত বলতে কি বুঝেন আপনি..? ভুলে যাবেননা মানুষের ভাগ্য” হায়াত মউত এগুলো মানুষের হাতে থাকেনা কখনো বলেও আসেনা। ধরুন,আজকে আপনি একজন ভালো চাকুরীজীবি প্রতিষ্ঠিত ছেলের সঙ্গে আপনার মেয়েকে বিয়ে দিলেন,দুর্ভাগ্যবশত বিয়ের পরে তার মৃত্যু হলে বা তার চাকুরী চলে গেলো তখন কি করবেন.? তাই প্রতিষ্ঠিত নয়,একজন ভালো নামাজি দ্বীনদার ছেলে দেখেই বিয়ে দিন,এতে তারা সাময়িক কিছু করতে না পারলেও তাদের দ্বীনদারীত্বের কারনে আল্লাহর রহমত অবধারিত থাকবে, এবং ভাল একটা কিছুর ব্যবস্থা হবে ইনশাআল্লাহ । আর বদবখত,লম্পট, প্রতিষ্ঠিত ছেলে দেখে দিবেনতো বিয়ের পরে পস্তাতে হবে,যতই প্রতিষ্ঠিত হউক আল্লাহর রহমত না থাকলে গজব অবধারিত। টাকা পয়সা মানুষ্কে সুখ শান্তি এনে দিতে পারেনা। সুতরাং,আপনার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ছেলেকে বিয়ে করিয়ে সমাজের অসংখ্য ছেলেকে চারিত্রিক শুদ্ধতা নিয়ে বেড়ে উঠতে সহযোগিতা করুন।নিশ্চই এখন যে ছেলেটা বেকার সেই কয়দিন পর প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করবে। তখন কিন্তু তার চাহিদাও বেড়ে যাবে। প্রতিষ্ঠিত হয়েই যখন বিয়ে করতে হল, তখন ভাল দেখেই বিয়ে করি। তখন দেখা যায় এসকল আপুদের আর বিয়ে হয় না।আবার কোন কোন অবিভাবক লেখা-পড়া শেষ করার আগে বিয়ে দিতে চায়না,ফলে মেয়ের বয়স বেড়ে যায় প্লাস চেহারার লাবন্নতা নষ্ট হয়। বয়স্ক মেয়েকে কেউ বিয়ে করতে চায়না আরো যদি লাবন্নতা হ্রাস পায়,তাহলেতো কথায় নাই।তাই দেখা যায় অনেক আপুদের বিয়ে হচ্ছেনা বলে অবিভাবকদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।কয়েক বছর আগেও যে সকল প্রস্তাব নাকোচ করে দিয়েছি,এখন তাদের হয় বিয়ে হয়েছে তা নাহলে এখন আর তারা আগ্রহী নয়।তো আসুন সবাই বিয়েকে তথা হালালকে সহজ করি এবং প্রেম তথা হারামকে কঠিন করি। ছেলে-মেয়েকে বিয়ে দিন সাবালক হলেই… আপনি যদি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার কলুষিত দিকগুলো দেখেন তার অধিকাংশের কারণ মূলত বিয়েতে দেরি করা। তা আপনি বুঝুন আর না-ই বুঝুন! পিতা-মাতা তথা অভিভাবকদের জন্য দুটি দিকে খুবই দায়িত্ববান হওয়া দরকার। সন্তান লালন-পালনে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সন্তানকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। বিয়ের উপযুক্ত বয়স হলেই বিয়ে দিতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার কোনো সন্তান জন্ম লাভ করে সে যেন তার সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়। যখন সে বালেগ হয় তখন যেন তার বিবাহ দেয়। যদি সে বালেগ হয় এবং তার বিবাহ না দেয় তাহলে সে কোনো পাপ করলে, সে পাপ তার পিতার উপর বর্তাবে।’ (বায়হাকী, মিশকাত হা/৩১৩৮)। বিবাহের বয়স হওয়ার পর ছেলেমেয়ে যত ধরনের অবৈধ সম্পর্ক,যেনা ব্যভিচার করবে সেই পাপ ঐ ছেলেমেয়ের পিতার বা অভিবাকের হবে । অতএব, আপনি ও আপনার সন্তানকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে ও সুন্দর সমাজ গড়তে আপনার সন্তানকে সামর্থ্য থাকলে বিয়ে দিয়ে দেন তাড়াতাড়ি। : আল্লাহ বলেনঃ চরিত্র রক্ষার জন্য যারা বিয়ে করবে তারা যদি অভাবি হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন। (সুরা নুর : ৩২) -লেখকের নাম পাওয়া যায়নি।  

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

 

Islami Dawah Center Cover photo

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )

ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )