Dua to be rich – ধনী হওয়ার দোয়া/আমল- আজ থেকেই শুরু হোক ধনী হওয়ার পথচলা

ধনী হওয়ার আমল গুলো নিয়মিত করার মাধ্যমে একজন অভাবী, দুঃখী মানুষ স্বচ্ছল ও সুখী মানুষে পরিণত হওয়া দিনের আলোরমত সত্য।
শুধু চাই আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও লেগে থেকে নিচের দোয়া সমূহের আমল করা। তবে অবশ্যই অলস হলে চলেবে না।
ধনী হওয়ার জন্য ইসলামী জীবন যাপন করতে হবে। চলুন দেখে নেই ধনী হতে গেলে কি কি আমল করতে হবে।

ধনী হওয়ার আমল (এক)

 

হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, এক সময় জনৈক ব্যাক্তি হুজুরে আকরাম (সাঃ) এর খেদমতে এসে আরয করলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ !
দুনিয়া আমাকে পরিত্যাগ করেছে এবং আমি অভাব গ্রস্থ এবং অক্ষম হয়ে পড়েছি । আমার পরিত্রানের কোন উপায় আছে কি ?
তদুত্তরে হুজুর (সাঃ) বললেন, তুমি কোথায় আছো ? (ইহলোকে না পরলোকে ) সালাতে মালায়েকা (ফেরেশতাগণের দুআ) এবং তাসবীহে খালায়েক যার বদৌলতে ফেরেশতাগণ কে রিজিক প্রদান করা হয়; তা তোমার কাছ থেকে কোথায় গেল ?
যে দুআ ও প্রার্থনার বরকতে ফেরেশতাকুল এবং মানব জাতি স্ব স্ব জীবিকা প্রাপ্ত হয়ে থাকে তা কি তুমি জানোনা ? সে ব্যাক্তি আরয করিলো সেই দুআ কি ?
হুযুর (সাঃ) বললেন, “সুবাহানাল্লহী ওয়া বিহামদীহি সুবাহানাল্লহীল আজীমী ওয়া বিহামদীহি আসতাগফিরুল্লাহ ”।
অর্থ: আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং তার প্রশংসা গীতির সাথে তাকে স্মরণ করছি, মহান আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং
তার প্রশংসা বর্ণনার সাথে আল্লহ্ তাআ’লার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

এ দুআ প্রতিদিন ফজরের নামাজের আগে কিংবা পরে একশত বার করে পড়তে হবে, হেটে হেটে বা এদিক সেদিক দুনিয়াবি ধ্যান নিয়ে পড়া যাবেনা।
বরং এক যায়গাতে বসে পড়তে হবে, তাহলে সংসার, দুনিয়া আপনা আপনি আপনার দিকে ফিরবে, অর্থাৎ দুনিয়া আপনার কাছে হেয় ও লাঞ্ছিত অবস্থায় ধরা দেবে।
এবং আল্লহ তাআ’লার এর এক একটি শব্দ হতে এক একজন ফেরেশতা সৃষ্টি করে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত তাসবীহ পাঠে নিযুক্ত করে দেবেন।
ও উহার সমুদয় সওয়াব আপনি পাবেন । অতঃপর লোকটি চলে গেল এবং দীর্ঘদিন পর্যন্ত ফিরে এলো না।
এরপর একদিন এসে আরজ করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দুনিয়া আমার কাছে এত বেশি পরিমাণে এসেছে যে তাকে কোথায় রাখবো আমি জানি না ।
(সুবহান আল্লাহ)

ধনী হওয়ার আমল (দুই)

 

নবী করীম (স:) বলেন, যে ব্যক্তি এই দোয়া দৈনিক ১০০০ বার পাঠ করে আল্লাহ চাহে তো সে অল্প দিনেই ধনী হয়ে যেতে পারে।
জুমার নামাজের পর যদি ৭০ বার পাঠ করে, তবে সপ্তাহ দিনেই আল্লাহ চাহে তো তার আর্থিক অবস্থার পরির্বতন হতে পারে।
”আল্লাহুম্মাকফীনী বি-হালালিকা আন-হারামিকা ওয়াআগনিণী বি-ফাদলিকা আম্মান সিওয়াক” (মিরকাত)

 

ধনী হওয়ার আমল (তিন)

এটি হল বিবাহ। কারণ বিবাহ ধনী হওয়ার একটা সহজ উপায়। আল্লাহ্ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ওয়াদা করেছেন যে,বিবাহ করলে তিনি নিজ
অনুগ্রহে তাকে ধনী করে দেবেন।

আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, যারা বিবাহবিহীন আছে এবং দাস দাসীদের মধ্যে যারা নেককার তাদের বিবাহ দিয়ে দাও।
যদি তারা অভাবগ্রস্থ থাকে আল্লাহ্‌ তায়ালা নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে ধনী করে দিবেন।আর আল্লাহ্ তায়ালা প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।(সুরা নূরঃ ৩২)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ)বলেছেন, আল্লাহ্ তায়ালা বিবাহ দিতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং স্বাধীন ও গোলামদেরকে তার (বিবাহ করতে)আদেশ দিয়েছেন
এবং এর বদৌলতে তাদেরকে ধনাঢ্যতার ওয়াদা করেছেন।এরপর তিনি উপরোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করলেন।

রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ্‌ তায়ালার জন্য কর্তব্য হয়ে যায়। আল্লাহ্‌ তায়ালার রাস্তায় জিহাদকারী।
চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায়। এবং ওই বিবাহিত ব্যক্তি যে (বিবাহ করার মাধ্যমে) পবিত্র থাকতে চায়। (তিরমীজি-১৬৫৫, নাসায়ী-৩২১৮, ৩১২০,সহীহ ইবনে হিব্বান-৪০৩০, বায়হাকীঃসুনানুল কুবরা-১৩৪৫৬,২১৬১২; হাদিসটি হাসান)

 

ধনী হওয়ার আমল (চার)

যে ব্যক্তি তিনটি কাজ করে, আল্লাহ তাআলা তাকে ধনী করে দেনঃ-
১. সব সময় ওজু অবস্থায় থাকা।
২. আল্লাহর রাস্তায় দান।
৩. হজ্জ্ব করা।

ধনী হওয়ার আমল (পাঁচ)

একটি ঘটনা দিয়েই শুরু করি। এক যুবক হুযুরের কাছে আসলেন নিজের দারিদ্রতার অভিযোগ নিয়ে। বল্ল, ইয়া রাসুলাল্লাহ আমি অনেক গরীব।
জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কোন কিছুই আমার কাছে নাই। পরিবার পরিজনের খরচ বহন করার সামর্থ্ও নাই।
ইয়া রাসুলাল্লাহ আমি খুবই গরবী আমার উপর দয়া করুন।হুযুর (দঃ) এশ্ন করলেন তোমার ঘরে কি আছে?
সে জবাব দিল হে রাসুলাল্লাহ আমার কাছে ১টি কম্বল আর ১টি পেয়ালা ছাড়া আর কিছুই নাই।
অত:পর হুযুর (দঃ) ফরমালেন, যাও তা নিয়ে আস। সে ঘরে গেল আর সে কম্বল আর পেয়ালা নিয়ে আসল।
তা বিক্রী করে একটা কুঠার কিনে আনলেন। আর হুযুর (দঃ) তাতে নিজ হাতে হাতল লাগিয়ে দিলেন । আর বল্লেন, যাও এ দিয়ে লাকড়ি সংগ্রহ কর।
সে গিয়ে জঙ্গল থেকে লাকড়ি কেটে এনে বিক্রী করতে লাগল, ১৫ দিন পর অত্যন্ত আনন্দ চিন্তে হুযুরের বারেগাহে চলে আসল।
আর আরজ করল এয়া রাসুলাল্লাহ ১৫দিনে আল্লাহ তায়ালা আমাকে ১০ দেরহাম দান করেছেন।

এবার হুযুর (দঃ) তাকে বললেন তুমি এ ১০ দেরহামকে ৩ ভাগ কর। একভাগ, নিজের জন্য খরচ কর। একভাগনিজের আত্মিয়স্বজনের জন্য খরচ কর।
আর বাকী এক ভাগ গরীবদের জন্য খরচ কর। এ ভাবে আমল করতে করতে মদীনার সবচেয়ে গরীব লোকটি হযরত ওমরের জামানায় মদীনার
সবচেয়ে ধনী লোকদের একজনে পরিনত হলেন।

আশা করি ধনী হওয়ার আমল বিষয়ক এ প্রবন্ধটি যারা অভাবগ্রস্থ বা দারিদ্রতার জন্য হতাশ তাদের কাজে লাগবে।
আপনার পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

লেখাটিতে উপকার পেয়েছেন? আবার পড়তে চান? তাহলে শেয়ার করুন।

==========================================================================

 

    Islami Dawah Center Cover photo

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।