Duty of a Wife – সূন্নাহ’র আলোকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে  “স্ত্রী”  নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।

Duty of a Wife

Duty of a Wife – সূন্নাহ’র আলোকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে  “স্ত্রী”  নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।

লিখছেন মুহতারাম Mahmud Siddiqui

১.
জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু। নবীজীর প্রিয় আনসারি সাহাবি। সাহাবিদের মধ্যে যাদেরকে ধরা হতো জাঁদরেল আলিম; হযরত জাবির তাদের অন্যতম। নবীজীর ওফাত পরবর্তী সময়ে ছিলেন ‘মুফতিল মাদিনা’ বা মদিনার মুফতি। বিভিন্ন মাসয়ালার প্রয়োজনে সাহাবিরা চলে আসতেন তাঁর কাছে। হাদিস তলব ছিল তাঁর অতি আকাঙ্ক্ষিত বিষয়। এক হাদিসের তলবে সফর করেছেন মাসাধিককাল। হাফেজ যাহাবির বিবরণ অনুযায়ী, হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহর বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি।[১]
জাবিরের পিতা আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে হারাম রাযিয়াল্লাহু আনহু। বদরের যুদ্ধে নবীজি যে-কজন উপ-দলনেতা নির্ধারণ করেছিলেন, তিনি তাদের একজন। উহুদের যুদ্ধে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর শাহাদাত বরণ করেন। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহর দায়িত্বে রেখে যান নয়জন মেয়েসন্তান। হযরত জাবির নিজ মুখে সেই বিবরণ দিচ্ছেন।
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমি ষোলোটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমি তখনও যুদ্ধ করতে সক্ষম হয়ে উঠিনি। এ সময় উহুদ যুদ্ধে আমার পিতা শহিদ হন। আমার নয় বোনের দায়িত্ব রেখে যান আমার কাঁধে। সর্বপ্রথম আমি অংশগ্রহণ করি হামরাউল আসাদ যুদ্ধে।”[২]
এই নয় বোনকে দেখভাল করার জন্য জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু একজন বিধবা নারী বিয়ে করেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে বোনদের লালনপালন করেন।
হযরত জাবির কি বিশেষভাবে বোনকে দেখভালের উদ্দেশ্যকে লক্ষ রেখেই বিয়ে করেছিলেন? শোনা যাক ইমাম বুখারির রেওয়ায়াতে, সাহাবির নিজ বয়ানে।
“এক যুদ্ধে নবীজীর সাথে অংশগ্রহণ করেছিলাম। (যুদ্ধ শেষে মদিনায় ফিরছি।) আমার ক্লান্ত উট মন্থর গতিতে পথ চলছে। নবীজি এসে পৌঁছলেন।
—‘কে? জাবির?’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন।
—‘জি।’ আমি জবাব দিলাম।
—‘কী ব্যাপার, পিছিয়ে আছ কেন তুমি?’ নবীজি প্রশ্ন করলেন।
—‘পথ চলতে চলতে উট ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। গতিও মন্থর হয়ে গেছে। তাই পিছিয়ে পড়েছি।’ আমি জবাব দিলাম।
এরপর নবীজি হাতের লাঠি দিয়ে আমার উটকে খুঁচিয়ে বললেন, এবার আরোহণ করো। নির্দেশ মতো আমি উটে চড়লাম। আমার উটকে নবীজির উট থেকে একটু দূরে-দূরে রেখে চলছি।
পথ চলতে চলতে নবীজি প্রশ্ন করেন,
—‘জাবির, বিয়ে করেছ?’
¬—‘জি, ইয়া রাসূলাল্লাহ।’ সংক্ষেপে উত্তর দিই।
—‘কুমারী না পূর্ব-বিবাহিতা?’ নবীজি জানতে চান।
—‘পূর্ব-বিবাহিতা।’ জবাব দিই।
—‘কুমারী বিয়ে করলে না কেন? তুমি তার সাথে আনন্দ-কৌতুক করতে, সেও তোমার সাথে চিত্ত বিনোদন করত।’ নবীজির কণ্ঠে কিছুটা আশ্চর্যের স্বর।
—‘ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমার ছোট ছোট বোন আছে। তাই এমন একজন নারীকে বিয়ে করতে চেয়েছি, যে তাদেরকে একত্র করে রাখবে। মাথার চুল আঁচড়ে দিবে। তাদের দেখাশোনা করবে।’ আমি জবাব দিলাম।
এরপর নবীজি বলেন, ‘তুমি তো এখন বাড়ি যাচ্ছ। বাড়িতে পৌঁছে স্ত্রীর সাথে মুজামাআ করবে।’[৩]
একই হাদিসের ভিন্ন বর্ণনায় জাবির ইবনে আব্দুল্লাহর বক্তব্য বিবৃত হয়েছে এভাবে—“ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমার পিতা যুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। আমার ছোট ছোট বোন আছে। তাদের কাছাকাছি বয়সের মেয়ে বিয়ে করব, এটা আমার পছন্দ হয়নি। যে তাদের আদব-আখলাক শেখাতে পারবে না, তাদের দেখাশোনা করতে পারবে না। তাই আমি একজন বিধবা নারী বিয়ে করেছি। যেন সে তাদের দেখাশোনা ও আদব-আখলাক শেখানোর দায়িত্ব পালন করতে পারে।”[৪]
কুতুবে সিত্তাহ সহ প্রায় সকল হাদিসের কিতাবে এই ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। কোনো বর্ণনাতেই এর প্রেক্ষিতে নবীজির কোনো বিরূপ মন্তব্য বা নসিহত পাওয়া যায়নি। বলাবাহুল্য, সাহাবিদের কোনো আমলের ক্ষেত্রে নবীজির নীরবতা শরিয়তে ‘তাকরির’ বা অনুমোদন বলে বিবেচিত হয়। এই কাজটি করেছেন মদিনার মুফতি সাহাবি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু। এবং নীরব থেকে তা অনুমোদন করেছেন ফতোয়ার কেন্দ্রবিন্দু খোদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
২.
উম্মে সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা। আবু সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহু মারা যাওয়ার পূর্বে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, দ্বিতীয় আর বিয়ে করবেন না। কিন্তু আবু সালামা তাকে সেই প্রতিজ্ঞা পালনে নিষেধ করে যান। সাথে দোয়া করে দেন, ‘হে আল্লাহ, আমার পরে উম্মে সালামাকে আরও উত্তম একজন স্বামী মিলিয়ে দিও। যে তাকে দুঃখ-কষ্ট দিবে না।’ উম্মে সালামা ভেবে পাচ্ছিলেন না, আবু সালামার চেয়ে উত্তম স্বামী কে হতে পারে? ইদ্দত শেষ হবার পর হযরত আবু বকর ও উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুমার প্রস্তাব পর্যন্ত ফিরিয়ে দেন। অবশেষে নবীজি প্রস্তাব দেন।
নবীজি যখন প্রস্তাব দেন, তখন উম্মে সালামার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
তাঁর প্রথম কথাই ছিল—‘ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইন্নি গায়রা ওয়া মুসবিয়াহ; ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমার গাইরত অনেক বেশি। আমার অনেকগুলো ছোট ছোট সন্তান আছে।’[৫]
দেখা যাচ্ছে, নবীজির প্রস্তাব যেখানে পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার, তখনও উম্মে সালামার প্রধান চিন্তা ছিল—কীভাবে তিনি তাঁর সন্তানদের লালনপালন করবেন। পরবর্তীতে নবীজির ঘরে তারা লালিতপালিত হয়েছে। সন্তান লালনপালনের প্রতি উম্মে সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা এতটাই মাতৃত্বসুলভ ছিলেন; তাঁর ঘরোয়া কাজে সহযোগী নারীর সন্তানকেও নিজের দুধ পান করিয়েছেন। বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বসরি রহ. সেই সৌভাগ্যবান সন্তান।
*
উম্মুল মুমিনীন খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ রাযিয়াল্লাহু আনহা। নবীজির প্রিয়তম সন্তানদের জননী। নবুওয়তের আগে ও পরে তাঁর ঘরনি। উম্মুল মুমিনিন খাদিজা ছিলেন নবীজির চার মেয়ে ও এক ছেলের জননী। তিনি শুধু সন্তান জন্ম দেননি; বরং জননী ও ঘরনি হিসেবে সকল কাজ আঞ্জাম দিয়েছেন। নবীজিকে ঘরোয়া সকল চিন্তা থেকে মুক্ত রেখেছেন। ঘরোয়া সকল কাজ শেষ করে হেরা গুহায় নবীজির জন্য খাবার বহন করে নিয়ে গেছেন।

Duty of a Wife – নবীজি স্ত্রী হিসেবে কোন নারীদের প্রশংসা করেছেন?

৩.
উপরোক্ত সবগুলো ঘটনাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন থেকে নেওয়া। প্রথমটি তাঁর এক প্রিয় সাহাবির; দ্বিতীয় ও তৃতীয়টি তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী—উম্মাহাতুল মুমিনিনের।
এবার দেখা যাক, নবীজি স্ত্রী হিসেবে কোন নারীদের প্রশংসা করেছেন?
* আবু আব্দুর রহমান আনসারি রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—“তোমরা কুমারী নারী বিয়ে করো। কারণ তারা হয় মিষ্টভাষী, অধিক সন্তানধারিনী এবং অল্পেতুষ্ট।”[৬]
* আবু হুরাইরা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, উটে আরোহণকারীদের মধ্যে কুরাইশ নারীরা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ নারী। তারা সন্তানের প্রতি অধিক মমতাময়ী ও স্বামীর সম্পদের প্রতি অত্যধিক যত্নশীল হয়ে থাকে।
[৭]
অর্থাৎ, স্ত্রী হিসেবে দুই ধরনের নারীকে নবীজি প্রশংসা করেছেন। এক. কুমারী নারী; দুই. সন্তান ও স্বামীর প্রতি মমতাময়ী ও দায়িত্বশীল নারী। প্রথমটি দৈহিক এবং দ্বিতীয়টি সাংসারিক দায়িত্ব। তাহলে দেখা যাচ্ছে—নিছক দৈহিক হক আদায়ই কেবল একজন স্ত্রীর দায়িত্ব নয়; বরং সন্তান পালন এবং স্বামীর সংসারের দেখাশোনা করাও স্ত্রীর দায়িত্ব।
এই দায়িত্বই পালন করেছেন উম্মুল মুমিনিন খাদিজা রাযিয়াল্লাহু আনহা এবং উম্মে সালামা রাযিয়াল্লাহু আনহা। স্বামীর বড় সংসারের হাল ধরেছেন জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহুর অভিজ্ঞ স্ত্রী। এটাই ফিতরাত; এটাই স্বাভাবিকতা।
৪.
এখন প্রশ্ন হলো—এই যে উম্মাহাতুল মুমিনিন সংসারের এত দায়িত্ব পালন করেছেন, এর কতটুকু ফরজ? কতটুকু সুন্নাত?
এই প্রশ্নের আগে প্রথমেই মাথায় রাখা জরুরি—জীবন নিছক ফরজ-ওয়াজিব দিয়ে চলে না; এরচেয়েও বেশি প্রয়োজন নফল ও মুস্তাহাবের। খোদ কেয়ামতের দিনও অধিকাংশ মানুষ ফরজ-ওয়াজিব দিয়ে পার পাবে না; প্রয়োজন হবে অসংখ্য নফল ও মুস্তাহাবের। সংসার জীবনে ফরজ-ওয়াজিবের চেয়ে নফল-মুস্তাহাব ও নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রয়োগই সবচেয়ে বেশি। নিছক ফরজ-ওয়াজিবের ওপর ভর করে বসে থাকলে শতকরা ৯০ ভাগ পরিবারই টিকবে না। ভেঙে পড়বে সম্পূর্ণ পরিবারব্যবস্থা।
তাহলে ফরজ-ওয়াজিবের প্রসঙ্গ কেন শরিয়তে রাখা হয়েছে? কেন সন্তানকে দুধ পান করানো ফরজ করা হয়নি? লালনপালনও কেন ফরজ নয়?
এই প্রসঙ্গের আয়াত-হাদিস ও ফিকহি মাসয়ালাগুলো গভীর দৃষ্টিতে দেখলে বোঝা যায়, শরিয়ত এই প্রসঙ্গগুলোর অবতারণা করেছে মানুষকে জুলুম থেকে রক্ষা করতে। এগুলো সাধারণ অবস্থায় স্বাভাবিক জীবনে প্রয়োগের জন্য নয়। এর জন্য রয়েছে অসংখ্যা আয়াত ও হাদিস, নবীজি ও সাহাবিদের জীবনী। এই প্রসঙ্গগুলো প্রয়োগ হবে তখনই, যখন স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর ওপর জুলুম হবে। তাকে প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত করা হবে। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রীও স্বামীর এসব ‘না-ফরজ’ হক আদায় থেকে বিরত থাকতে পারবে।
শরিয়ত স্ত্রীর জন্য সন্তানকে দুধ পান করানো ফরজ করেনি বটে; তবে দুধ পান করানোর জন্য অসংখ্য ফযিলত ও পরকালীন নেয়ামতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মাতৃত্বের দায়-দায়িত্ব আদায় করার পরই কেবল একজন মা হাদিসে বর্ণিত তিনগুণ ফযিলতের হাদিসে তৃপ্তি পেতে পারেন।
আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর ব্যবস্থাপনা সৃষ্টিই করেছেন এভাবে—পুরুষ বাইরের কাজ আঞ্জাম দিবে। নারী আঞ্জাম দিবে ঘরোয়া কাজ। বৈবাহিক বৈতরণী পাড়ি দিয়ে এ দুজনের সমন্বিত উদ্যোগে যা পরিচালিত হবে—এর নাম পরিবার। ইসলামে বৈবাহিক ব্যবস্থা নিছক দৈহিক প্রয়োজন মেটাবার মাধ্যম নয়; বরং হালাল উপায়ে দৈহিক প্রয়োজন পূরণের পাশাপাশি আদর্শ পরিবার গঠনের মাধ্যম। যে-পরিবারে স্বামী আদায় করবে বাইরের দায়িত্ব, স্ত্রী আদায় করবে ঘরোয়া দায়িত্ব।
এক্ষেত্রে স্ত্রীর এতসব দায়-দায়িত্ব ও কষ্টে স্বামীর যেমন সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত; তেমনি স্ত্রীরও স্বামীর পাহাড়সম দায়িত্ব বাইরের কষ্টের ব্যাপারে সহমর্মী হওয়া উচিত। স্বামীর যেমন উচিত নয় “বাসায় কী এমন কাজ করো” বলে খোঁচা দেওয়া, স্ত্রীরও উচিত নয় “বাইরে থেকে এসে নবাবের মতো আদেশ করো” বলে তিক্ততা তৈরি না করা। কারণ, স্বামী বাইরে থেকে এলে তাকে হাসিমুখে স্বাগত জানানো স্ত্রীর অবশ্যপালনীয় দায়িত্ব।
এই স্বাভাবিকতা ও সংসারে স্ত্রীর যেমন ইহসান আছে স্বামীর প্রতি; তেমনি স্ত্রীর প্রতিও আছে স্বামীর অবারিত ইহসান। স্ত্রী যেমন স্বামীকে ঘরোয়া সকল চিন্তা ও পেরেশানি থেকে মুক্ত রাখে, স্বামীও স্ত্রীকে বাইরের সকল প্রয়োজন ও বিপদে আগলে রাখে। সংসার ও পরিবারে দুজন দুজনের পরিপূরক; কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়।
এখানেই ইসলামি ফিতরাত ও ফেমিনিজমের পার্থক্য। ইসলাম যেখানে নারী-পুরুষকে পরস্পরের পরিপূরক বানিয়ে সুস্থ পরিবারব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়, ফেমিনিজম মুসলিম নারী-পুরুষকে পরস্পরের প্রতিপক্ষ দেখাতে চায়। এতে করে সহজে সংসার ও পরিবার ব্যবস্থায় ধস নামানো সহজ হয়। দ্বীনী ঘরানায় এই মানসিকতা প্রবেশ করানোর সহজ ও নেক মাধ্যম হলো—সাংসারিক জীবনে ইসলামের ফিতরাতকে আড়াল করে ফরজ-ওয়াজিবের আলোচনা তুলে ক্রমশ দূরত্ব ও তিক্ততা তৈরি করা। ফেমিনিজম যেন আমাদের মধ্যে সুঁই হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোতে না পারে—এ ব্যাপারে আমাদের ভাই ও বোনদের সতর্ক থাকা জরুরি। এ থেকে বাঁচতে হলে ইসলামে পারিবারিক ব্যবস্থার সামগ্রিক আলোচনা বেশি বেশি করা জরুরি।
তথ্যসূত্র :
[১] সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৩/১৮৯-১৯৪
[২] সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ৩/১৯১
[৩] সহিহ বুখারি, হাদিস নং-২০৯৭
[৪] সহিহ বুখারি, হাদিস নং-২৯৬৭
[৫] সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ২/২০৪
[৬] সুনানু ইবনি মাজাহ, হাদিস নং-১৮৬১
[৭] সহিহ বুখারি, হাদিস নং-৩৪৩৪

Duty of a Wife – শরীয়তে নাকি বউ ঘরের কাজ করতে বাধ্য না!

 

একদা ফাতিমা (রা.) গৃহস্থালীর কাজের চাপ, নিজের হাড়ভাঙা খাটুনি ও কষ্টের কথা নিজের আব্বাজানের কাছে বললেন।
তিনি ছিলেন এমন পিতা যিনি তার কন্যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন। যাঁর সাথে রাসুল ﷺ তাঁর দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর মিলিত হওয়ার সুসংবাদ দিয়েছিলেন। যা শুনে তিনি হেসে উঠেছিলেন (রাদিআল্লাহু আনহা)।
তাঁর একার পক্ষে অত্যন্ত কষ্ট হওয়ায় তিনি রাসুল ﷺ এর নিকট কাজে সাহায্যের জন্য একজন খাদেম চাইলেন।
রাসুল ﷺ তাঁকে খাদেম দিলেন না। যেখানে রাসুল ﷺ মদীনায় ইসলামি হুকুমতের প্রধান। তাই এতে কোন সন্দেহ-ই নেই যে তার নিকট অতিরিক্ত খাদেম ছিলো না। এবং ওই দিনও নতুন কয়েকজন গোলাম এসেছিল। এ সত্ত্বেও রাসুল ﷺ তাঁকে খাদেম না দিয়ে নিজ হাতে ঘর-বাড়ির সকল কাজ করার নির্দেশ দিলেন।
উপরন্তু ঘরের কাজ করার অলসতা কাটিয়ে উঠার নিয়ম বলে দিলেন। তিনি তাকে বললেন, ❝যখন তোমরা (আলী ও ফাতিমা) শয়ন করবে তখন ৩৪ বার ‘আল্লহু-আকবার’ ৩৩ বার ‘সুবহা-নআল্ল-হ’ এবং ৩৩ বার ‘আলহামদু লিল্লা-হ’ পড়বে। এটা তোমাদের জন্য খাদেম থেকেও উত্তম হবে।❞
স্বামীর ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং যাবতীয় খেদমত করা স্ত্রী হিসেবে নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্যর অন্তর্ভুক্ত এটা আমরা সীরাহ থেকেই দেখতে পাই যার সাক্ষ্য দেয় সহিহ হাদিসও।
স্বামী, তার সন্তান এবং পরিবারের হক্ব আদায় করা তার উপর অর্পিত দায়িত্ব। সর্বকাজ নিজের হাতে করা তো ফাতিমা রাদিআল্লাহু আনহারও সুন্নাহ। মোহর হিসেবে মোহরে ফাতেমি চাওয়া বা ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহার জীবদ্দশায় আলী রাদি.-র এক বিয়ে টেনে আনা বোনেরা কেন তার মতো একা হাতে সব কাজ করতে পারবে না? বরং তাদের তো উচিত প্রযুক্তির এই যুগেও যাতা সহ প্রাচীন সব সরঞ্জাম ব্যবহার করা। যেহেতু, নিজেদের জন্য সুবিধাজনক ক্ষেত্রে উনাকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।
ততোধিক আশ্চর্যের কথা হচ্ছে, সাহাবিয়া মহিলাগন ঘরে যেভাবে কাজ করতেন সেভাবে নিজেদের ক্ষেত খামারেও কাজ করতেন।
উম্মুল মুমিনীন খাদিজা রাদিআল্লাহু আনহা তার বিয়ের পর প্রাক্তন স্বামীদের ব্যবসা সহ সকল সম্পদ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে হস্তান্তর করে তিনি পুরোদস্তুর গৃহীনি হয়ে গিয়েছিলেন।
  • উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা তাঁর ঘরের যাবতীয় কাজ নিজে করতেন।
  • ❝আটা কুটতেন নিজেই।❞ [বুখারী শরীফ]
  • ❝খামির নিজে বানাতেন। রুটি বানাতেন নিজে। রান্না করতেন নিজেই।❞ [বুখারী, আবূ দাউদ]
  • ❝বিছানা বিছাতেন নিজে।❞ [শামায়েলে তিরমিযী]
  • ❝অযুর পানি নিজেই আনতেন।❞ [মুসনাদে আহমাদঃ৬/৬৮]
  • ❝রাসূলুল্লাহ ﷺ কুরবানির জন্য যে উট পাঠাতেন, সেটার দেখাশুনাও নিজেই করতেন।❞ [বুখারী-হজ্জ অধ্যায়]
  • ❝তিনি রাসূলুল্লাহর ﷺ মাথাও আঁচড়ে দিতেন।❞ [বুখারীঃ ই’তিকাফ অধ্যায় ]
  • ❝রাসুল ﷺ এর শরীরে সুগন্ধি লাগিয়ে দিতেন।❞ [বুখারীঃ হজ্ব অধ্যায়]
  • ❝রাসূলের ﷺ কাপড় ধুয়ে দিতেন।❞ [বুখারীঃ গোসল অধ্যায়]
  • ❝শোয়ার পূর্বে রাসূল ﷺ এর মিসওয়াক ও পানি ঠিক করে দিতেন।❞ [মুসনাদে আহমাদঃ ৬/৫৪].
  • ❝রাসূল ﷺ এর মিসওয়াক পরিষ্কার করে দিতেন।❞ [আবূ দাউদঃ তাহারাত অধ্যায়]
  • ❝আম্মাজান আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা’র ঘরে কোনো মেহমান এলে মেহমানের আপ্যায়নের কাজটাও তিনিই করতেন।❞ [আবু দাঊদ শরীফ- শিষ্টাচার অধ্যায়]
আমাদের জানা থাকা দরকার, উম্মুল মুমিনীন আম্মাজান আয়েশা (রা.) উম্মতের মধ্যে এত বড় একজন ফক্বীহ, আলেমা হওয়া সত্ত্বেও নিজ হাতে এসব করেছেন। আবার আমরা এটাও জানি তাঁর সারাজীবন যা সমস্ত মুমিন নারীদের জন্য উত্তম আদর্শ। অথচ বাস্তবিক অর্থে সাংসারিক কাজ কর্মের ক্ষেত্রে উনাকে আমরা কতজন আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পেরেছি?
শারয়ী ওজর থাকলে এবং জীবন পরিচালনার তাগিদে নারী প্রয়োজনে বাইরে পর্দার সাথে কাজ করতে পারবেন, সেটা ভিন্ন বিষয় এবং ভ্যালিড ওজর।
মুসলিম নারীদের মনে রাখা দরকার যে, জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রাপ্ত খাদিজা রা. আয়েশা রা. ফাতিমা রা. এবং অন্যান্য উম্মুল মুমিনীনগণ, নারী সাহাবিয়াগণ গৃহস্থালি কাজ করেই জান্নাতের সর্দারনী হয়েছেন। সাংসারিক কাজকর্ম খাদেমার উপর ছেড়ে দিয়ে, নিজেরা সো কল্ড ক্যারিয়ারে মনোযোগ দিয়ে তারা জান্নাতি হতে পারেন নি!
ইসলামের বিধান নারীর জন্য নামাজের উত্তম স্থান ঘরের সবচেয়ে ভেতরের ঘরের কোনায়। ফিতনার এই যুগে ফেমিনিজম ও ততোধিক বিষাক্ত দ্বীনি ফেমিনিজম এর ফিতনা হতে নিজেকে বাঁচিয়ে, চূড়ান্ত কামিয়াবির লক্ষ্যে আমাদের বোনদের উচিত উম্মুল মুমিনীনদের ও সাহাবিয়া রাদিআল্লাহু আনহুমাদের আদর্শ অনুযায়ী জীবন গড়ে তোলা।
আল্লাহ তায়ালা বোঝার তৌফিক দান করুক।
প্রকাশ থাকা আবশ্যক যে, মানবজাতির সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যই হল আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করা। আর ঘরের কাজ করা নারীদের জন্য ইবাদত স্বরূপ। উম্মুল মুমিনীন এবং সাহাবিয়া রাদিআল্লাহু আনহাদের সুন্নাহ স্বরূপ।
❝রাসুল ﷺ ঘরে রান্না করেছেন এমন কোন বর্ণনা কোথাও নেই।
রাসুল ﷺ যেসকল কাজে পরিবারকে সাহায্য করেছেন তা পুরুষসুলভ কাজ ছিল। সেজন্য আমাদের ভালো করে বুঝে নেওয়া দরকার, রান্না-বান্না এবং সন্তান প্রতিপালনের দায়িত্ব একান্তই নারীর। স্বামী সাহায্য করলে সেটা তার একান্ত অভিরুচি। এসব কাজ করা সুন্নাহ তো নয়ই উপরন্তু তিনি শারয়ীভাবে এসব করতে বাধ্যও নন।❞
এতদ আলোচনা পরবর্তীতে এখন প্রশ্ন হচ্ছে,
জান্নাতের সরদারনী যদি, স্বামীর ঘরে যাতা পিষে হাতের ছাল তুলে ফোস্কা ফেলে দিতে পারেন! তাহলে খাদেমা চাওয়ার আমি কে? এরপরেও যদি খাদেমার আশায় আমরা বসে থাকি, তাহলে এই লজ্জা আমরা রাখিবো কোথায়?

Duty of a Wife – কোরআনের “স্ত্রী” নিয়ে অলৌকিক শব্দ-বিন্যাস!

 

.
“স্ত্রী” বুঝাতে কোরআন সর্বমোট তিন প্রকার শব্দ ব্যবহার করেছে।
.
১) امرأة [ ইমরাআহ ]
যে স্ত্রীর সাথে শুধু দৈহিক সম্পর্কই স্থাপিত হয়, মনস্তাত্বিক কিংবা চিন্তাভাবনার আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকেনা তাকে কোরআন [ ইমরাআহ ] বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। বাংলায় বলা যেতে পারে- “পত্নী”।
.
২) زوجة [ যাওজাহ ]
যে স্ত্রীর সাথে দৈহিক ও মনস্তাত্বিক বোঝাপড়া খুব ভালো তাকে কোরাআন [ যাওজাহ ] বলেছে। বাংলায় আমরা বলতে পারি “স্ত্রী”।
.
৩) صاحبة [ সাহিবাহ ]
যে স্ত্রীর সাথে মূলত কোন সম্পর্কই কাজ করেনা, কিংবা যে স্ত্রীর কোন অস্তিত্বই যেন নেই তাকে কোরআন [ সাহিবাহ ] বলে বুঝিয়েছে। আমরা বাংলায় বলতে পারি সাথী।
.
এবার দেখা যাক কোরআনের ক্যানভাসে এ শব্দত্রয়ের বর্নিল শিল্প, যা কোরআনের অনুপম অলৌকিকতাকে নতুন রূপে তুলে ধরেছে।
.
নূহ ও লূত (আ) এর বৌ ছিল, তবে তাদের মধ্যে ঈমান ও চিন্তা চেতনার কোন সম্পর্কই ছিল না, তাই কোরআন তাদের স্ত্রীদের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছে- ইমরাআহ নূহ (নূহ-পত্নী), ইমরাআহ লূত (লূত-পত্নী)।
.
“আল্লাহ তা’আলা কাফেরদের জন্যে নূহ-#পত্নী ও লূত-#পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ণ বান্দার গৃহে। অতঃপর তারা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল। ফলে নূহ ও লূত তাদেরকে আল্লাহ তা’আলার কবল থেকে রক্ষা করতে পারল না এবং তাদেরকে বলা হলঃ জাহান্নামীদের সাথে জাহান্নামে চলে যাও।
[ সূরা তাহরীম- ১০ ]
.
লক্ষ্য করুন, এখানে ‘যাওজাহ’ (স্ত্রী) না বলে ‘ইমরাআহ’ (পত্নী) বলেছেন। একইভাবে আসিয়া ও ফিরাউনের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল কিন্তু ঈমান ও চিন্তার সূত্র ছিলনা তাই সেখানেও আল্লাহ “স্ত্রী” না বলে পত্নী বলে অভিহিত করেছেন।
.
“আল্লাহ তা’আলা মুমিনদের জন্যে ফেরাউন-#পত্নীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বললঃ হে আমার পালনকর্তা! আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্যে একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে ফেরাউন ও তার দুস্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে যালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন।”
[ সূরা তাহরীম- ১১ ]
.
.
এবার আসুন ‘যাওজাহ’ বা প্রকৃত “স্ত্রী” কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহিত হয়েছে তা পরখ করা যাক।
.
আদম (আ) এর স্ত্রী হাওয়া (আ) এর ক্ষেত্রে-
“এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার #স্ত্রী (যাওজাহ) জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে।”
[ সূরা বাক্বারাহ- ৩৫ ]
.
মুহাম্মাদ (স) ও তার স্ত্রীগন-
“হে নবী! আপনি আপনার #স্ত্রীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।”
[ সূরা আহযাব- ৫৯ ]
.
.
এবার একটি মজার বিষয় লক্ষ্য করা যাক। যাকারিয়া (আ) যখন আল্লাহর কাছে স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব স্বত্বেও সন্তানের জন্যে দোয়া করছিলেন সেই কথাটি কোরআন কোট করেছে “ইমরাআহ” বা “পত্নী” শব্দযোগে।
“আমি ভয় করি আমার পর আমার স্বগোত্রকে এবং আমার #পত্নী (ইমরাআহ) বন্ধ্যা; কাজেই আপনি নিজের পক্ষ থেকে আমাকে এক জন কর্তব্য পালনকারী দান করুন।”
.
সম্ভবত এর কারণ হিসেবে বলা যায়, সেই সময়ে যাকারিয়া (আ) ও তার স্ত্রীর মাঝে মনোমালিন্য ছিল কিংবা চিন্তার দ্বন্ধ ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর সমাধান হয়ে যায়। এই কারণেই যাকারিয়া (আ) এর সন্তান লাভের পরের জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে আল্লাহ পাক উল্লেখ করেছেন ‘যাওজাহ’ বা “স্ত্রী” শব্দ দিয়ে।
.
“অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্যে তার #স্ত্রীকে (যাওজাহ) সংশোধন করে দিয়েছিলাম। তারা সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ত, তারা আশা ও ভীতি সহকারে আমাকে ডাকত এবং তারা ছিল আমার কাছে বিনীত।”
[ সূরা আম্বিয়া- ৯০ ]
.
এই কারণেই যখন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছে তখন কি করা উচিত সেই বিষয়ে বিধান দিতে গিয়েও কোরআন নারীকে “পত্নী” বা “ইমরাআহ” বলে বর্ণনা করেছে।
.
“যদি কোন “পত্নী” (ইমরাআহ) স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখেন।”
[ সূরা নিসা- ১২৮ ]
.
আর এরকমের কোন সম্পর্ককে ফোকাস না করে যখন সাধারন স্বামী স্ত্রীর বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তখন কোরআন স্ত্রীকে “নিসা” (স্ত্রীগণ) বলে প্রকাশ করেছে।
.
যখন কোরআন বুঝাতে চেয়েছে যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আদৌ কোন সম্পর্ক নেই তখন “সাহিবাহ” বা “সাথী” বলে জানিয়েছে। যেমন কেয়ামতের ময়দানে কেউ যখন কারো থাকবেনা, সবাই দিগ্বিদিক ছুটবে, কোন সম্পর্কই আর কোন কাজে আসবেনা… এমন অবস্থার বর্ননা দিতে গিয়ে কোরআন স্ত্রীকে “সাহিবাহ” বা “সাথী” বলেছে।
.
“সেদিন পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে,তার মাতা, তার পিতা, তার #সাথী (সাহিবাহ) ও তার সন্তানদের কাছ থেকে।”
[ সূরা আবাসাঃ ৩৪-৩৬ ]
.
এমনিভাবে যে স্ত্রীর বাস্তবিক কোন অস্তিত্বই নেই তাকেও কোরআন “সাহিবাহ” বলে অভিহিত করেছে। যেমন, আল্লাহ রব্বুল ইযযতের কোন পত্নী কিংবা সঙ্গী নেই মর্মে ঘোষণা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন-
.
“তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আদি স্রষ্টা। কিরূপে আল্লাহর পুত্র হতে পারে, অথচ তাঁর কোন #সাথী নেই ? তিনি যাবতীয় কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ।”
[ সূরা আনআম- ১০১ ]
.
.
এই সেই কোরআন, যার প্রতিটি শব্দ বুননের পিছনেও রয়েছে কার্যকরী মূলনীতি। প্রতিটি শব্দের গভীরতায় রয়েছে সমাজ দর্পনের এপিঠ-ওপিঠ। আল্লাহ, তুমি আমাদের কোরআনের জ্ঞান বাড়িয়ে দাও, আমীন।

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )

Related posts

৫ জন কে বলা হয় পাঁক পাঞ্জাতন / 5-Are-Called-Punk-Panjatan

by IDCAdmin
5 years ago

Quran-Competition / কাতারে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১ম স্থান অর্জন বাংলাদেশী হাফেজ

by IDCAdmin
5 years ago

পঞ্চদশ পারার ১১তম পেইজ – 15 Para 11 Page – নূরানী হাফেজী কোরআন শরীফ

by IDCAdmin
3 years ago
Exit mobile version