Importance of Isme Azom

Importance of Isme Azom – ইসমে আযম এর ফজিলত

ইসমে আ’যম কি? ইসমে আ’যম -এর ফযীলত কি? ইসমে আ’যম পাঠের নিয়ম কি? ইসমে আযম কি?
সেই ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি ইসমে আ’যম এর কথা। ইসমে আ’যম জানা এবং পাঠ করার অনেক বড় বড় ফজিলতের গল্পও আমাদের অনেকেরই জানা। কিন্তু ইসমে আ’যম আসলে যে কোনটি একেবারে সুনির্দিষ্ট করে তা বলা কঠিন বৈকি। তবু কুরআনুল কারিম এবং হাদিস শরিফে প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষনে ইসমে আ’যমের পরিচয়ের যে চিত্র পাওয়া যায় তা আমাদের জন্য অবশ্যই অনেক অনেক গুরুত্ববহ। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিনের জানার অনুসন্ধিতসা হেতু সংক্ষিপ্ত কলেবরে এর উপরে আলোকপাতের ইচ্ছে। তাওফিকদাতা কেবলমাত্র মহান মুনিব আল্লাহ জাল্লা শানুহূ। তাঁর নিকটেই সাহায্য চাই। তাঁর কাছেই আশ্রয় চাই। ইসম অর্থ- নাম, আ’যম অর্থ- সবচেয়ে মহান বা শ্রেষ্ঠ। ইসমে আ’যম দ্বারা ‘আল্লাহ তাআ’লার সবচাইতে মহান বা শ্রেষ্ঠ নাম (The Greatest Name of almighty Allah)’ বুঝানো হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআ’লার রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর নাম। যেমন- আল খালিক্ব, আর-রাহমান, আর-রাহীম, আল কারীম, আল গফূর, আল গফফার, আল হাইয়্যু, আল কাইয়্যূমু, আল আযীযু ইত্যাদি। সহীহ হাদীসের বর্ণনায় আল্লাহ তাআ’লার নাম ৯৯ টি বলা হলেও, অন্য হাদীসে বলা হয়েছে, এই ৯৯ টি নামের বাইরে আল্লাহ সুবহা-নাহু ওয়াতাআ’লার আরো অনেক নাম রয়েছে, যা কোন মানুষকে জানানো হয়নি, অথবা সে নামগুলো আসলে কেউই জানে না, একমাত্র আল্লাহ পাক ব্যতিত। আমাদের জানা কিংবা অজানা আল্লাহ পাকের বরকতময় এসব নামের মাঝে যে নাম দিয়ে আল্লাহ সুবহা-নাহু ওয়াতাআ’লার বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব সবচেয়ে বেশী প্রকাশিত হয়, সেই নামকে ‘ইসমে আযম’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ইসমে আজমের ব্যাপারে বিজ্ঞ আলেমদের থেকে প্রায় ৪০ টি মতামত বর্ণিত হয়েছে, যার মধ্যে আল্লামা সুয়ূতি (রহ.) তাঁর রচিত ‘আদ দুররুল মুনাজ্জাম ফিল ইসমিল আ’যম’ নামক গ্রন্থে ২০ টি মতামত উল্লেখ করেছেন। হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) বলেন, “ইসমুল আ’যম হলো ‘আল্লাহ’ শব্দ। তবে শর্ত হলো, তা পূর্ণ একাগ্রতা ও ইখলাসের সঙ্গে বলতে হবে’।” (মিরকাতুল মাফাতিহ, ১/৬) কারও কারও অভিমত হচ্ছে- ‘ইসম অর্থ যেহেতু নাম আর আজম অর্থ শ্রেষ্ঠ। সুতরাং, ইসমে আজম মানে হচ্ছে আল্লাহর একটি সর্বশ্রেষ্ঠ নাম। আর তা হচ্ছে ‘আল্লাহ’ নামটি। এই পবিত্র নামটি কুরআনুল কারিমে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক (২৬৯৮) বার এসেছে এবং এই ২৬৯৮ সংখ‍্যাটি কুরআনের বিস্ময়কর সংখ‍্যা ১৯ দ্বারা বিভাজ‍্য। (২৬৯৮÷১৯)=১৪২। ‘আল্লাহ’ নামের জিকির হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির। তবে কোনো অবস্থায় তা লম্ফ-ঝম্ফ করে নয়। ‘আল্লাহ’ নামের জিকির করতে হবে বিনীত চিত্তে, চরম বিনম্রতার প্রকাশ থাকবে যে জিকিরে। ভদ্রতার সাথে বিনয়াবনত মস্তকে আল্লাহ নামের জিকির করতে হবে। আশ্চর্য মজার বিষয় হচ্ছে, আমাদের প্রতিপালক, আকাশ ও জমিনের একমাত্র স্রষ্টা, কুল কায়েনাতের একচ্ছত্র অধিপতি রব্বুল আলামীনের এই ইসমে জাত তথা ‘আল্লাহ’ নামটি পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়, হচ্ছে, হবে। মুসলমানরা আল্লাহ পাকের এই চির মধুর নাম ধরে ‘ইয়া আল্লাহ’ বা ‘হে আল্লাহ’ বলে প্রার্থনা করেন। সবসময় সুখে-দু:খে, মুখে-মুখে, মনে-মনে ‘আল্লাহ’ নামটি জপে থাকেন। আল্লাহ পাককে স্মরণ রাখেন। মুমিন হৃদয়ে এরচেয়ে বড় প্রশান্তির বিষয় আর কি থাকতে পারে? কুরআনে হাকিমে ঘোষনা এসেছে- ‘আলা- বিযিকরিল্লাহি তাত্বমায়িন্নুল কুলূব।’ অনুবাদ: জেনে রেখো, আল্লাহর স্মরনই কেবল অন্তরে প্রশান্তি আনয়ন করে। সমসাময়িককালের প্রখ্যাত সউদি আলেম মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহর মতে, ‘ইসমে আ’যম হচ্ছে আল-হা’ইয়্যু (চিরঞ্জীব) এবং আল-ক্বাইয়্যুম (চিরস্থায়ী)। আল্লাহ তাআ’লাকে এই বলে দুআ করা বা আহবান করা, ইয়া হা’ইয়্যু, ইয়া ক্বাইয়্যুম, ইয়া যাল যালালি ওয়াল ইকরাম (হে মর্যাদাবান ও কল্যাণময়)। এই দুইটি নাম, আল-হা’ইয়্যু এবং আল-ক্বাইয়্যুম, ক্বুরআনের তিনটি জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে। ইসমে আ’যম রয়েছে আয়াতুল কুরসীতে। যেমন, اللّهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। অর্থঃ আল্লাহ! তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী। ইসমে আ’যম রয়েছে সুরা আলে ইমরানের দ্বিতীয় আয়াতে। যেমন, اللّهُ لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। এবং সুরা ত্বোয়া-হা, ১১১ নং আয়াতে। যেমন, وَعَنَتِ الْوُجُوهُ لِلْحَيِّ الْقَيُّومِ وَقَدْ خَابَ مَنْ حَمَلَ ظُلْمًا সমস্ত মুখমন্ডল সেই চিরঞ্জীব চিরস্থায়ী সত্ত্বার সামনে অবনমিত হবে, আর যে ব্যক্তি জুলুমের বোঝা বহন করবে সে হতাশ হয়ে যাবে।‘ উপরোক্ত গুরুত্বপূর্ণ অভিমত প্রকাশের ক্ষেত্রে মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ যে হাদীসখানার উপর নির্ভরতা পোষন করেছেন তা হচ্ছে: আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ক্বুরআনের তিনটি সূরার মাঝে ইসমে আ’যম (আল্লাহর সবচেয়ে মহান নাম) রয়েছেঃ আয়াতুল কুরসী, সুরা আলে-ইমরান এবং সুরা ত্বোয়া-হা এর মাঝে।” [ইবনে মাজাহঃ ৩৮৫৬, আল-হাকিমঃ ১/৬৮৬, শায়খ আলবানী রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ “হাদীসটি হাসান।” সিলসিলাহ আস-সহীহাহঃ ৭৪৬।] বলা বিধেয় মনে করছি, আমাদের দেশে প্রচলিত অযীফার কিছু বই কিতাব পাওয়া যায় যেগুলোতে দেখা যায়, কিছু মনগড়া বানোয়াট নাম আল্লাহ তাআ’লার উপর আরোপ করা হয়ে থাকে, সেগুলোকে আবার ইসমে আ’যম বলেও বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় যদিও আসলে তা মোটেই ইসমে আযম নয়। এসব ভুল-ভ্রান্তিতে ভরা বিদআ’তপূর্ণ বই কিতাব ক্রয়, পাঠ এবং আমল করা থেকে অবশ্যই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ভুল তথ্যের পেছনে না পড়ে বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ গ্রহন করে মানসম্মত বই-পুস্তক থেকে ধর্মীয় জ্ঞান অন্বেষণ করার প্রতি মনযোগী হওয়া বাঞ্ছনীয়। আল্লাহ পাক আমাদের হেফাজত করুন। হাদিসের ভান্ডারে ইসমে আ’যমের সন্ধানে………… ১. হযরত আবূ হুরাইরাহ রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলার নিরানব্বই- এক কম একশ’টি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামগুলো মুখস্থ করবে সে জান্নাতে যাবে। অপর বর্ণনায় আছে, তিনি বিজোড়, (তাই) বিজোড়কে ভালবাসেন।’ মিশকাতুল মাসাবীহ, অধ্যায়ঃ পর্ব-১০. আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ, হাদিস নম্বরঃ ২২৮৭ ২. আসমা বিনতে ইয়াযীদ রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর মহান নাম (ইসমে আযম) এই দু’ আয়াতের মধ্যে নিহিত আছে- وَإِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌ وَاحِدٌ ۖ لَّا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَـٰنُ الرَّحِيمُ উচ্চারণঃ- ওয়া ইলা-হুকুম ইলা-হূ ওয়া-হিদ, লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়ার রহমা-নুর রহীম। অর্থঃ- ‘‘আর তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ। তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নাই। তিনি দয়াময় অতি দয়ালু ’’ ( ২ঃ ১৬৩) এবং সূরা আল ইমরানের প্রথম আয়াত। الم اللَّـهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ উচ্চারণঃ- আলিফ লা-ম মী-ম আল্ল-হু লা- ইলা-হা ইল্লা- হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যূম। অর্থঃ- আলিফ লাম মীম। (1) আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক। (2)’ সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ২৮/ দুআ, হাদিস নম্বরঃ ৩৮৫৫, সূনান আত তিরমিজী (হুসাইন আল-মাদানী পাব্লিকেশন) – ৩৪৭৮, সূনান তিরমিজী (ইফাঃ) – ৩৪৭৮, সুনানে ইবনে মাজাহ (পাবলিশারঃ বাংলা হাদিস) – ৩৮৫৫, সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ) :- ১৪৯৬, সুনান আবূ দাউদ (আল্লামা আলবানী একাডেমী):- ১৪৯৬, মিশকাতুল মাসাবীহ (হাদিস একাডেমি)ঃ- ২২৯১ ৩. কাসিম রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ইসমে আযম, যার উল্লেখ করে দোয়া করলে তা কবুল হয়, তা তিনটি সূরায় রয়েছেঃ সূরা বাকারা, সূরা আল ইমরান ও সূরা তাহা।’ সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ২৮/ দোয়া হাদিস নম্বরঃ ৩৮৫৬ ৪. কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বসা ছিলাম, অর্থাৎ তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল, যখন সে রুকু-সিজদা এবং তাশাহুদ পড়ে দোয়া করতে আরম্ভ করল তখন সে তার দোয়ায় বলতে লাগলঃ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ يَا حَىُّ يَا قَيُّومُ إِنِّي أَسْأَلُكَ উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আস’আলুকা বি আন্না লাকাল হামদ, লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম। ইন্নি আসালুকা। অর্থঃ- ‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি। তুমিই তো সকল প্রশংসার মালিক, তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি দয়াশীল। তুমিই আকাশসমূহ ও পৃথিবীর একমাত্র সৃষ্টিকর্তা! হে মহান সম্রাট ও সবোর্চ্চ মর্যাদার অধিকারী, হে চিরঞ্জীব, হে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী’’। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীগনকে বললেন, তোমরা কি জানো সে কিসের দ্বারা দুআ করল? তারা বললেন, আল্লাহ এবং তার রাসুলই ভালো জানেন। তখন তিনি বললেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! সে আল্লাহর ঐ ইসমে আজম দ্বারা দুআ করেছে যা দ্বারা দুআ করা হলে তিনি তা কবুল করেন, আর যদ্বারা কোন কিছু চাওয়া হলে তা তিনি দান করেন।’ সূনান নাসাঈ (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ১৩/ সাহু [ভুল], হাদিস নম্বরঃ ১৩০৩ ৫. আনাস রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু সূত্রে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বসা ছিলেন। এসময় এক ব্যক্তি সলাত আদায় করে এই বলে দু‘আ করলোঃ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلَهَ إِلَا أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالإِكْرَامِ يَا حَىُّ يَا قَيُّومُ ‏. উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আস’আলুকা বি আন্না লাকাল হামদ, লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম। অর্থঃ- ‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি। তুমিই তো সকল প্রশংসার মালিক, তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি দয়াশীল। তুমিই আকাশসমূহ ও পৃথিবীর একমাত্র সৃষ্টিকর্তা! হে মহান সম্রাট ও সবোর্চ্চ মর্যাদার অধিকারী, হে চিরঞ্জীব, হে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী’’। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এ ব্যক্তি ইসমে আযম দ্বারা দু‘আ করেছে, যে নামে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নামে তাঁর নিকট চাওয়া হলে তিনি দান করেন।’ সুনান আবূ দাউদ, অধ্যায়ঃ ২/ সালাত, হাদিস নম্বরঃ ১৪৯৫ ৬. আনাস ইবনে মালেক রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেনঃ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ ذُو الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আস’আলুকা বি আন্না লাকাল হামদ, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা, ওয়াহদাকা লা শারিকা লাকাল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি জুল জালালি ওয়াল ইকরাম। অর্থঃ- ‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি, কেননা সমস্ত প্রশংসা তোমার, তুমি ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, তুমি একক সত্তা, তোমার কোন শরীক নেই, তুমি অনুগ্রহকারী, আসমানসমূহ ও যমীনের উদ্ভাবনকারী, মহা শক্তি ও সম্মানের অধিকারী” তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সে আল্লাহর নিকট তাঁর ইসমে আযমের (মহান নামের) উসীলায় প্রার্থনা করেছে, যার উসীলায় প্রার্থনা করলে তিনি দান করেন এবং যার উসীলায় দোয়া করলে তিনি কবুল করেন।’ সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ২৮/ দোয়া, হাদিস নম্বরঃ ৩৮৫৮ ৭. মুহাম্মাদ ইবন আবূ ছালজ (রহঃ) …… আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, ‘একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে এসে প্রবেশ করলেন। তখন সেখানে এক ব্যক্তি সালাত শেষ করে দু’আ করছিল। সে তার দু’আয় বলছিলঃ اللَّهُمَّ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। “হে আল্লাহ! আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই। তুমিই তো অনুগ্রহদাতা। আকাশমন্ডলির ও পৃথিবীর উপমাহীন সৃষ্টিকর্তা, প্রতাপশালী ও মর্যাদাবান।” নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, সে কিসের ওসীলায় দু’আ করেছে? এতো আল্লাহ তা’আলার ইসমে আযমের মাধ্যমে দু’আ করেছে। এর ওয়াসীলায় দু’আ করলে অবশ্যই তা কবুল করা হয়, যাঞ্চা করা হলে অবশ্যই প্রদান করা হয়।’ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ৫১/ দু’আ রাসুলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণিত, হাদিস নম্বরঃ ৩৫৪৪ ৮. আনাস রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘একদিন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মাসজিদে নাবাবীতে বসে ছিলাম। তখন জনৈক ব্যক্তি সলাত আদায় করছিল এবং সলাতের পর বলছিল, اَللّٰهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ الْحَنَّانُ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ يَا حَىُّ يَا قَيُّومُ أَسْأَلُكَ উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আস’আলুকা বি আন্না লাকাল হামদ, লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল হান্নানুল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম। ইন্নি আসালুকা। ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি। কারণ তোমারই জন্য সব প্রশংসা। তুমি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা‘বূদ নেই। তুমিই সবচেয়ে বড় দয়ালু, বড়দাতা। তুমিই আসমান জমিনের স্রষ্টা। হে মর্যাদা ও দান করার মালিক! হে চিরঞ্জীব, হে প্রতিষ্ঠাতা! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি।’ তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে আল্লাহকে ইস্মে আ‘যম-এর সাথে ডাকে তিনি তাতে সাড়া দেন এবং যখন তাঁর কাছে প্রার্থনা করা হয় তখন তিনি তা দান করেন।’ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), অধ্যায়ঃ পর্ব-১০. আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ, হাদিস নম্বরঃ ২২৯০ ৯. বুরাইদা রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেনঃ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ ‏.‏ উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ! ইন্নি আস’আলুকা বি-আন্নাকা আন্তাল্লাহুল-আহাদুস-সামাদুল্লাযি লাম-ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়াকুন লাহু কুফুওয়ান আহাদ । অর্থঃ- ‘‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট এই বিশ্বাসে প্রার্থনা করছি যে, তুমিই একমাত্র আল্লাহ, তুমি একক সত্তা, স্বয়ংসম্পূর্ণ, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি এবং তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই ’’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ নিশ্চয় এ ব্যক্তি আল্লাহর নিকট তাঁর মহান নামের উসীলায় প্রার্থনা করেছে, যার উসীলায় প্রার্থনা করলে তিনি অবশ্যই দান করেন এবং যার উসীলায় দোয়া করলে তিনি অবশ্যই কবুল করেন।’ সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ২৮/ দোয়া, হাদিস নম্বরঃ ৩৮৫৭ আমাদের উচিত, আল্লাহ তাআলাকে তাঁর ইসমে আ’যমের মাধ্যমে বিনীতভাবে ডাকা বা আহ্বান করা। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের উপর যথাযথ আমল করার মাধ্যমেই এটা সম্ভব। হাদিসে যেসব দুআকে ইসমে আ’যম বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে সেসব বরকতময় দুআর মাধ্যমে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো পদ্ধতিতে আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করার তাওফিক মহান দয়ালু প্রতিপালক আমাদের সকলকে দান করুন। আমিন।
IDC Partner

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।