Importance Of Quran Research /কুরআনে বারবার চিন্তা ও গবেষণার কথা কেন বলা হয়েছে? শুধু তিলাওয়াত দ্বারা কি সে হক আদায় হবে ?
এতে কোন সন্দেহ নেই যে কুরআনের বাণী তার পাঠকের কাছে পরিস্কার ও সহজবোধ্য।প্রত্যেকেই নিজ নিজ সামর্থ ও যোগ্যতামতে এর দ্বারা উপকৃত হতে পারে। পূর্ণাংগ মাত্রায় কাংখিত হেদায়েত নসীব না হলেও তিলাওয়াতের জন্য প্রতি হরফে দশ দশ নেকী পাওয়া থেকে কেউ ব্যর্থ হবে না।কিন্ত বিষয়টা তো তাতে শেষ হচ্ছেনা।কারণ কুরআন নাজিলের সাথে হেদায়েতের সম্পর্ক যেটা কুরআন খুলতেই তার পাঠককে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে,শুরুতেই সওয়াবের কথা বলা হয়নি।
الم
ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
আলিফ লাম মীম।
এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। এটি হেদায়েত গ্রন্থ পরহেযগারদের জন্য।
(সূরা বাকারাঃ ১-২)
কুরআন কোন কাজ করতে হবে আর কোনটি নয়,তা কোন রকম জটিলতা ব্যতিরেকে সোজা বলে দিয়েছে, বৈধ অবাধ্যতার সীমা নির্ধারন করে দিয়েছে। কিন্ত এই সাথে নিজের অভ্যন্তরেও এক সুগভীর দর্শন লুকিয়ে রেখেছে। যার গভীরতা অথৈ এবং বিস্তৃতি অনন্ত।সে গভীরতায় পৌঁছার জন্য শুধুমাত্র আরবী ভাষাজ্ঞান, দ্রুত পঠন আর অর্থ জানার পান্ডিত্য যথেষ্ট নয়।এর জন্য বারবার পড়া, প্রতিটি বাক্যের ও বিষয়ের উপর প্রচুর চিন্তা গবেষণাও প্রয়োজন। শুধু সাঁতরাতে জানলেই হবেনা ডুবুরির মতো অতল তলে তলিয়ে দেখাও আবশ্যক। কুরআনের প্রতিটি সূরা ও পারায় সাধারন পথিকের মতো শুধু হেঁটে গেলেই চলবেনা উপরন্ত প্রতিটি আয়াতের স্টেশানে বিরতি দিয়ে দিয়ে এগুতে হবে।তাও একবার নয়,ক্রমাগত ও উপর্যুপরি।
খোদ কুরআনে এমন সূরা কমই আছে যেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে এ আহবান না করা হয়েছে।
لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ -যাতে তোমরা চিন্তা করো।
لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ-যাতে তোমরা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করো।
لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ-যাতে তোমরা স্মরণ করতে পারো।
সূরা কাফ আয়াতঃ৩৭ এ বলা হয়েছে-
إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَذِكْرَىٰ لِمَن كَانَ لَهُ قَلْبٌ أَوْ أَلْقَى السَّمْعَ وَهُوَ شَهِيدٌ
এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্যে, যার অনুধাবন করার মত অন্তর রয়েছে। অথবা সে নিবিষ্ট মনে শ্রবণ করে।
অর্থাৎ কুরআন মাজীদ থেকে উপকৃত হতে হলে প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে, বুকের ভিতর এমন একটা সজাগ অন্তর থাকবে যেটা কুরআনের জ্ঞানকোষ ধারন করতে প্রস্তত ও আন্তরিক।যদি এমন অন্তর নাও থাকে তাহলে এমন শ্রবনশক্তি থাকবে যা পরিপূর্ণ একাগ্রতা ও নিবিষ্টা সহকারে আল্লাহর বাণীতে মগ্ন হয়ে যায়। যদি এর কোনটাই না থাকে তাহলে এমন লোকের কুরআন তিলাওয়াতের আগে অন্তর আর কানের মেরামত প্রয়োজন। আল্লাহ এদের প্রতি তাঁর গোস্বা প্রকাশেও অস্পস্টতা রাখেননি।
أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ أَمْ عَلَىٰ قُلُوبٍ أَقْفَالُهَا
তারা কি কুরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?
(সূরা মোহাম্মদঃ২৪)
সাহাবায়ে কেরাম কিভাবে চিন্তা গবেষণা করতেন ?
কুরআনের ভাষা তাদের মুখের ভাষা ছিলো। কুরআনের বর্ণনাভংগি ও ব্যাকরণ তাদের জানা ছিলো। আলোচনার বিষয়ও পরিচিত ছিলো। এক কথায়,আরবদের সংস্কার,বিশ্বাস ও কাজকর্মের যে আলোচনা কুরআন করেছে তার কোনটিই তাদের কাছে অপরিচিত ছিলোনা। তবু কেনো তারা চিন্তা ভাবনার চূড়ান্ত করেছেন, দিনরাত শুধু কুরআনের পিছনে ব্যয় করেছেন।”মুয়াত্তা” য় ঈমাম মালেক রহঃ লিখেন,আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ ক্রমাগত আট বছর সূরা বাকারা গবেষণা করেছেন। তারপরও তিনি কুরআনের পিয়াসে যেনো অতৃপ্ত ছিলেন।
সুবহান আল্লাহ ! সূরা নাহলের আয়াতঃ ১০-১৩ এ চারটি আয়াত আপনাদের সামনে রাখছি। তিলাওয়াত করুন,দেখুন।
هُوَ الَّذِي أَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً ۖ لَّكُم مِّنْهُ شَرَابٌ وَمِنْهُ شَجَرٌ فِيهِ تُسِيمُونَ
তিনি তোমাদের জন্যে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন। এই পানি থেকে তোমরা পান কর এবং এ থেকেই উদ্ভিদ উৎপন্ন হয়, যাতে তোমরা পশুচারণ কর।
يُنبِتُ لَكُم بِهِ الزَّرْعَ وَالزَّيْتُونَ وَالنَّخِيلَ وَالْأَعْنَابَ وَمِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
এ পানি দ্বারা তোমাদের জন্যে উৎপাদন করেন ফসল, যয়তুন, খেজুর, আঙ্গুর ও সর্বপ্রকার ফল। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীলদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।
وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ۖ وَالنُّجُومُ مُسَخَّرَاتٌ بِأَمْرِهِ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
তিনিই তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছেন রাত্রি, দিন, সূর্য এবং চন্দ্রকে। তারকাসমূহ তাঁরই বিধানের কর্মে নিয়োজিত রয়েছে। নিশ্চয়ই এতে বোধশক্তিসম্পন্নদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
وَمَا ذَرَأَ لَكُمْ فِي الْأَرْضِ مُخْتَلِفًا أَلْوَانُهُ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لِّقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ
তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে যেসব রং-বেরঙের বস্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন, সেগুলোতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্যে যারা চিন্তা-ভাবনা করে।
প্রত্যেকটি ঘটনা ও নিয়ামত বর্ণনা শেষে আল্লাহ আমাদের বলছেন, এর মধ্যে চিন্তাশীল, বোধশক্তি সম্পন্ন ও জ্ঞানী ভাবুক বান্দাদের জন্য শিক্ষনীয় নিদর্শন রয়েছে। ধারাবাহিক তিনটি শব্দ, لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ। لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ । لِّقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ ।
এরপরও কি বুঝতে বাকী থাকে যে কুরআনের যে দাবী তার পাঠকের কাছে তা শুধু তিলাওয়াতের দ্বারা পূর্ণ করা যাবে ? যারা কুরআনের ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞ, বিষয়বস্তর পান্ডিত্য ও গভীরতা সম্পূর্ণ অপরিচিত,নাযিল হওয়ার প্রেক্ষপটও জ্ঞানের আড়ালে এবং কুরআন বাস্তবায়নে রাসুল সাঃ ও তার সংগী সাথীগণের কুরবানির ধূলি পরিমানও ত্যাগ করতে প্রস্তত নই,এমন দুর্বলদের পক্ষে কি করে বলা যায় যে “ কুরআন একখানি উন্মুক্ত কিতাব,যাকে বুঝার জন্য কোন চিন্তা গবেষণার দরকার নেই।”
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।
আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )
ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )