Quran Telawat – কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও মর্যাদা
Quran Telawat – কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত ও মর্যাদা
ফাইল ফটো
আল কোরআন মানব জাতির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সংবিধান। প্রত্যেক নবী ও রাসূলকে আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হিদায়াতের জন্য কিতাব দান করেছেন। সে ধারায় সর্বশেষ নবী মোহাম্মাদ (সা.)-কে দান করেছেন আল-কোরআন।
আল-কোরআন এমন একটি ঐশী কিতাব যার ভাষা, ভাব, অলংকার, উপমা, ছন্দ, মূর্ছণা, ভাবের গভীরতা, অভিনব গ্রন্থনা, বাক্যের অনুপম বিন্যাস, মর্মস্পশী, সুর-ঝংকার, শাব্দিক দ্যোতনা ঈদৃশ গুনাবলী সব কিছু মিলে তার তুলনা হয় না। মোট কথা এর স্টাইল সম্পূর্ণ আল্লাহ প্রদত্ত।
এ কোরআন তেলাওয়াতের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছ। নিম্নে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে বর্ণনা করা হলো-
কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অন্তরে শান্তি হাসিল হয়:
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।’ (সূরা আর-রা‘দ ১৩:২৮)
হাদিসে এসেছে- বারা ইবনু আযিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি সূরা আল-কাহ্ফ তিলাওয়াত করছিল, আর তার পাশ্বে একটি ঘোড়া দু’টি রশি দিয়ে বাঁধা ছিল, তিলাওয়াত করার সময় একটি বাদলের মতো ছায়া এসে ঘোড়াটিকে ঢেকে দিল, আর ওই বাদল ধীরে ধীরে ঘোড়ার নিকটবর্তী হচ্ছিল। ঘোড়া তা দেখে লাফালাফি করতে লাগল, যখন সকাল হলো তখন ওই ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নিকট উপস্থিত হলো এবং তাকে ওই ঘটনা খুলে বলল তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ হলো শান্তি যা কোরআন তিলাওয়াতের কারণে অবতরণ করছিল।’ (সহীহুল বুখারি, হাদিস: ৫০১১)
কোরআন তেলাওয়াতকারী একটি অক্ষরে বিনিময়ে দশটি করে সওয়াব পাবে:
আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তেলাওয়াত করল তার বিনিময়ে সে একটি নেকী পাবে, আর একটি নেকীর বদলা হবে দশগুণ, একথা বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম, একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর। (সুনান আত তিরমিযী, হাদিস: ২৯১০)
কোরআন তেলাওয়াকারী এবং সে অনুযায়ী ‘আমলকারী সর্বোত্তম মুমিন:
আবূ মূসা আল আশ‘আরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে তার উদাহরণ হলো লেবুর মত তার স্বাদও ভাল আবার ঘ্রাণও ভাল। মুমিনের উদাহরণ হলো খেজুরের ন্যায়, তার স্বাদ ভাল কিন্তু কোনো ঘ্রাণ নেই, আর কোরআন তেলাওয়াতকারী পাপী ব্যক্তির উদাহরণ হলো ফুলের মতো ঘ্রাণ ভাল কিন্ত স্বাদ তিক্ত, আর কোরআন তেলাওয়াত নাকারী হাফেজের উদাহরণ হলো মাকাল ফলের মতো যার স্বাদ তিক্ত এবং সু-গন্ধ নেই।’ (সহীহুল বুখারী, হাদিস: ৭৫৬০)
কোরআন তেলাওয়াকারীর প্রতি হিংসা করাও সওয়াব পাওয়ার যোগ্য:
কোনো মানুষের প্রতি হিংসা করা শরীয়াতে বৈধ নয় কিন্তু যারা কোরআন তেলাওয়াত করে তাদের প্রতি হিংসা বৈধ। কেননা সে যদি তার অন্তরে পোষণ করে আমার অমুক ভাই এত সুন্দর করে কোরআন তেলাওয়াত করে আমি পারব না কেন এরকম হিংসা বৈধ করা হয়েছে। যেমন নিম্নের হাদিসটি উল্লেখযোগ্য-
‘আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দুই ব্যক্তির প্রতি হিংসা করা বৈধ-(১) ওই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তায়ালা কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন আর সে তা দিনরাত তেলাওয়াত করে আর তার প্রতিবেশী তা শুনে বলে হায়! আমাকেও যদি এভাবে কোরআন মাজীদ শিখানো হত যেমন তাকে শিখানো হয়েছে, তাহলে আমিও এভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতাম, (২) ওই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তয়ালা সম্পদ দিয়েছেন আর সে ওই সম্পদ মহান আল্লাহর পথে ব্যয় করতে থাকে, আর তার প্রতিবেশী তা দেখে বলে হায়! আমাকেও যদি তার মতো সম্পদ দেয়া হত যেমন তাকে দেয়া হয়েছে তাহলে আমিও তার মতো মহান আল্লাহর পথে ব্যয় করতাম যেমন সে করছে।’ (সহীহুল বুখারী,-হাদিস: ৫০২৬)
ভালভাবে কোরআন তেলাওয়াতকারী কিয়ামতের দিন সম্মানিত ফেরেশাগণের সঙ্গে থাকবে:
‘আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআন তেলাওয়াত পারদর্শী ব্যক্তিরা সম্মানিত ফেরেশতাগণের সঙ্গে থাকবে। আর যারা আটকিয়ে কষ্ট করে কোরআন তেলাওয়াত করে তারা দ্বিগুণ সওয়াব পাবে।’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৯৮)
কোরআন তেলাওয়াত করা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর উত্তরাধিকারী যা তিনি মুসরিমদের জন্য রেখে গেছেন:
‘আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা মদিনার বাজার অতিক্রম করার সময় দাঁড়িয়ে গেলেন এবং লোকদের সম্বোধন করে বললেন, হে বাজারের লোকেরা কোন জিনিস তোমাদেরকে আটকিয়ে রেখেছে? লোকেরা বলল, হে আবূ হুরায়রা এটা কেমন কথা? আবূ হুরায়রা বলল, ওখানে নবী (সা.) এর মিরাস (সম্পত্তি) বন্টন হচ্ছে আর তোমরা এখানে বসে আছ? তোমরা কেন ওখানে যাচ্ছ না? আর নিজেদের অংশ গ্রহণ করছ না? লোকেরা জিজ্ঞেস করল সম্পত্তি কোথায় বন্টন হচ্ছে? আবূ হুরায়রা (রা) বলল, মসজিদে। লোকেরা দ্রত মসজিদে গেল, আবূ হুরায়রা (রা.) ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকলেন, লোকেরা মসজিদ থেকে ফিরে আসল, আবূ হুরায়রা (রা.) তাদেরকে জিজ্ঞেস করল কী হলো তোমরা ফিরে আসলে কেন? লোকেরা বলল, আমরা মসজিদে গেলাম কিন্ত ওখানে কোনোকিছু বন্টন হতে দেখলাম না, তাই আমরা ফিরে আসলাম। আবূ হুরায়রা (রা.) লোকদেরকে জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি মসজিদে কাউকে দেখো নি? লোকেরা বলল, কেন নয় আমরা ওখানে কিছু লোককে নামাজ আদায় করতে দেখেছি, আবার কিছু লোক কোরআন মাজীদ তেলাওয়াত করছে, আবার কিছু লোক হালাল হারামের মাসয়ালা-মাসায়েল বর্ণনা করছে। আবূ হুরায়রা (রা.) বলল, তোমাদের অবস্থা দেখে আমার আফসোস হচ্ছে, এটাইতো রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মিরাস (সম্পত্তি)। (মু‘জামুল আওসাত, হাদিস: ১৪৩০)
কোরআন তেলাওয়াতকারীদের পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালা নিম্নোক্ত চারটি নিয়ামত দ্বারা সম্মানিত করবেন:
(১) তাদের প্রতি প্রশান্তি নাজিল হবে
(২) আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি দয়া করবেন।
(৩) ফেরেশতাগণ তাদের চতুষ্পার্শ্বে তাদের সম্মানে দাঁড়িয়ে যায়।
(৪) আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাগণের নিকট তাদের গৌরবের সঙ্গে স্বরণ করেন।
‘আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন কিছু লোক মহান আল্লাহর ঘরে উপস্থিত হয়ে কোরআন তেলাওয়াত করে এবং পরস্পর পরস্পরকে শিক্ষা দেয় এবং শিক্ষা নেয়, তখন তাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হয়, মহান আল্লাহর রহমত তাদেরকে আবরিত করে রাখে, ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে রাখে আর আল্লাহ তায়ালা তাদের কথা ওদের নিকট স্বরণ করে যারা তাঁর নিকট আছে, স্বরণ রাখো যার আমল তাকে পেছনে রেখেছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ৭০২৮)
কোরআন তেলাওয়াত আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গে ভালোবাসা সৃষ্টি করে:
‘আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গে ভালোবাসার স্থান করতে চায় সে যেন কোরআন তেলাওয়াত করে।’ (আবূ নু‘আইম হুলাইয়াতে এই হাদিসটি বর্ণনা করেছেন-হাদিস: ১৮৭২)
তাহাজ্জুদের সালাতে কোরআনের দশটি আয়াত তেলাওয়াত করার সওয়াব পৃথিবী এবং পৃতিবীতে যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম:
‘ফুযালা ইবনু ‘উবাইদ এবং তামিমুদ্দারী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামাজে দশটি আয়াত তেলাওয়াত করে তার জন্য এক কিন্তার সওয়াব, আর এক কিন্তার সওয়াব হলো পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম, কিয়ামতের দিন তোমর রব বলবে, কোরআনের প্রতিটি আয়াতের বদলে এক স্তর উপরে উঠো, এভাবে সর্বশেষ আয়াত তেলাওয়াত করা পর্যন্ত উপরে উঠতে থাকবে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাকে বলবেন, আমার নিয়ামত গ্রহন করার জন্য তোমার হাত উন্মোক্ত করো, বান্দা হাত উন্মোক্ত করে বলবে, হে আমার রব! তুমি তোমার দান সম্পর্কে ভালভাবে জানো, আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘এক হাতে স্থায়ী নিয়ামতসমূহ গ্রহণ করো আর অপর হাতে অন্যান্য নিয়ামতসমূহ গ্রহণ করো।’ (মু’জামুল কাবীর, হাদিস: ১২৫৩)
রাতে এক’শ আয়াত তেলাওয়াতকারী সম্পূর্ণ রাত জাগ্রত থেকে ইবাদত করার সমান সওয়াব পাবে:
‘তামিমুদ্দারী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে এক’শ আয়াত তেলাওয়াত করবে সে সম্পূর্ণ রাত জাগরণকারী হিসেবে গণ্য হবে।’ (সুনান আদ্ দারেমী, হাদিস: ১৬৯৫৮)
প্রতিদিন এক হাজার আয়াত তেলাওয়াতকারী মহান আল্লাহর নিকট সওয়াবের ভান্ডার লাভকারী বলে চিহিৃত হবে:
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনে‘আস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে দশটি আয়াত তেলাওয়াত করে সে গাফেল বলে গণ্য হবে না, আর যে ব্যক্তি এক’শ আয়াত তেলাওয়াত করে সে আনুগত্যশীল বলে গণ্য হবে, আর যে ব্যক্তি এক হাজার আয়াত তেলাওয়াত করে তার জন্য সওয়াবের ভান্ডার লিখা হবে।’ (সুনান আবূ দাউদ, হাদিস: ১৪০০)
কোরআন তেলাওয়াত এবং অনুধাবন করবে মনোকার-নাকিরের প্রশ্নের উত্তরে সফল হওয়ার কারণ:
বারা ইবনু‘আযিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কবরে মুমিন ব্যক্তির নিকট দু‘জন ফেরেশতা আসবে, তারা এসে তাকে জিজ্ঞেস করবে, তোমার রব কে? (মুমিন হলে) সে বলবে আমার রব আল্লাহ, তারা আবার জিজ্ঞেস করবে তোমার দ্বীন কী? সে বলবে আমার দ্বীন ইসলাম, তারা আবার জিজ্ঞেস করবে তোমাদের মাঝে যে ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছিল তার ব্যাপারে তোমার কী ধারণা? সে উত্তরে বলবে, তিনি আল্লাহর প্রেরিত রাসূল (সা.)। তারা আবার বলবে তুমি এগুলো জানলে কীভাবে? তখন ওই ব্যক্তি বলবে আমি মহান আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করেছি এবং তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁকে সত্য নবী বলে বিশ্বাস করেছি।’(সুনান আবূ দাউদ, হাদিস ৪৭৫৫)
কোরআন তেলাওয় মৃত ব্যক্তিকে কবরের ‘আজাব থেকে রক্ষা করে:
‘আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, যখন মানুষকে কবরে দাফন করা হয় তখন ফেরেশতা মাথার দিক থেকে আজাব দেয়ার জন্য আসে, তখন কোরআন তেলাওয়াত তাকে বাধা দেয়, যখন ফেরেশতা সামনের দিক থেকে আসে তখন দান খয়রাত তাকে বাধা দেয়, যখন ফেরেশতা পায়ের দিক থেকে আসে, তখন মসজিদে পায়ে হেঁটে যাওয়া তাকে বাধা দেয়। (মু‘জামুল আওসাত, হাদি: ৯৪৩৮)
কোরআন বেশি বেশি তেলাওয়াতকারীকে জান্নাতের তাজ পরিধান করানো হবে:
‘আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন কোরআন কোনো দুর্বল লোকের ন্যায় এসে তার তেলাওয়াতকারীর নিকট উপস্থিত হয়ে বলবে আমাকে কি চিনো? আমি সে, যে তোমাকে রাত্র জাগিয়েছে আর তোমাকে গরমে পিপাসিত রেখেছে, নিশ্চই প্রত্যেক ব্যবসাকারী স্বীয় ব্যবসার ফল ভোগ করতে চায়। আর আজ আমি অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ছেড়ে তোমার নিকট এসেছি, অতএব কোরআন তেলাওয়াতকারীকে তার ডান হাতে বাদশাহী দেয়া হবে আর বাম হাতে চিরস্থায়ী জান্নাতে থাকার আদেশনামা। তার মাথায় পরিধান করানো হবে শান্তি এবং সম্মানের তাজ। আর তার পিত-মাতাকে দেয়া হবে দু‘টি মূল্যবান পোশাক, যার বিপরীত পৃথিবী এবং পৃথিবীর সবকিছু তুচ্ছ মনে হবে। কোরআন তেলাওয়াতকারীর পিতা-মাতা আবেদন করবে হে আমার রব! এই সম্মান কোন আমলের কারণে? তাদেরকে উত্তরে বলা হবে তোমার সন্তানকে কোরআন শিখানোর কারণে। কোরআন তেলাওয়াতকারীকে কিয়ামতের দিন বলা হবে যেভাবে পৃথিবীতে কোরআন তিলাওয়াত করতে এভাবে তেলাওয়াত করো এবং জান্নাতের স্তরসমূহে আরোহণ করতে থাক তোমার সর্বশেষ স্তর ওখানে হবে যেখানে গিয়ে তুমি তেলাওয়াত বন্ধ করবে।’ (তাবারানী)
কোরআন তেলাওয়াত অন্তরের আনন্দ এবং চোখের জ্যোতি স্বরুপ এবং দুঃখ-বেদনা, চিন্তা, রোগ এবং পেরেশানী দূর করে:
‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তির কোনো দুঃখ-চিন্তা হবে, তখন সে এ দোয়া পাঠ করবে, ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার বান্দা, তোমার বান্দা এবং তোমার বান্দীর ছেলে, আমার ভাগ্য তোমার হস্তে, আমার ওপর তোমার নির্দেশ কার্যকর, আমার প্রতি তোমার ফায়সালা ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত, আমি সে সমস্ত নামের প্রত্যেকটির বদৌলতে যে নাম তুমি তোমার কিতাবে নাজিল করেছ, অথবা তোমার সৃষ্টজীবের মধ্যে কাউকেও যে নাম শিখিয়ে দিয়েছ, অথবা স্বীয় জ্ঞানের ভান্ডারে নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছ, তার মাধ্যমে তোমার নিকট এই আকুল নিবেদন জানাই যে, তুমি কোরআনকে আমার হৃদয়ের প্রশান্তি বানিয়ে দাও, আমার বক্ষের জ্যোতি, আমার চিন্তা-ভাবনার অপসারণকারী এবং উদ্বেগ-উৎকন্ঠার বিদূরিতকারী। যখন কোনো ব্যক্তি এ দোয়া পাঠ করবে তখন আল্লাহ তার চিন্তা এবং বেদনা দূর করে দেবেন, তার চিন্তাকে আনন্দে পরিণত করে দেন, সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করল ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরা কি দোয়াটি মুখস্থ করব? তিনি বললেন, কেন নয়; প্রত্যেক শ্রবণকারীর উচিত এই দোয়া মুখস্থ করা।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ৪৩১৮)
পরিশেষে বলা যায় যে, পবিত্র আল কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। কোরআন তেলাওয়তের মাধ্যমে মানবজাতির সমস্ত রোগ যেমন- শির্ক, কুফর, মুনাফেকী, লৌকিকতা, হিংসা, রাগ, ঘৃণা, শক্রতা ইত্যাদি দূর করা সম্ভব।
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।
আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )
Related Posts
Leave a Reply Cancel reply
Categories
- advices
- Ahle Hadis
- Allah
- Amal
- Arabic Communication
- Arabic Grammar
- Arif Azad
- Bangladesh
- Biography
- Child care
- Country
- Death
- Dowry
- Dua
- Education
- Eid
- Family
- Fasting
- Fatwa
- Gazwatul Hind
- Hadith
- Hajj
- Halal or Haram
- Humble
- Husband & Wife
- IDCM
- Iman
- Interest
- Islamic Books
- Islamic Days
- Islamic Economi
- Islamic Education
- Islamic FAQ
- Islamic Future
- Islamic History
- Islamic Lectures
- Islamic Life
- Islamic Politics
- Islamic Rules
- islamic song
- islamic story
- Jihad
- Jinn
- let's learn arabic
- Magic
- Marriage
- Mosque
- Motivation
- Muhammad SM
- Muslims
- News
- Parenting
- Patriotism
- Pending
- Personal Development
- Poet
- Pornography
- Press Release
- Prophets
- Quran
- Quran and Science
- Quran Interpretation
- Qurbani
- Relations
- Rizq
- Ruqyah
- Sacrifice
- Sadaqah
- Safety
- Sahaba
- Salah
- Salat
- Sex
- Sin
- Tajweed
- Taqwa
- Tasawwuf
- Tawba
- Tawhid
- Veil
- Weed
- Zakat
Recent Posts
- ব্যাংকে রাখা ফিক্সড ডিপোজিটের উপর কি প্রতি বছর যাকাত আবশ্যক? – Zakat on Fixed Deposit – সমিতির টাকার ওপর জাকাত আসবে কি? March 25, 2023
- Symptoms of Bad and Good Death – খারাপ এবং ভালো মৃত্যুর আলামত সমূহ March 20, 2023
- Taweez in Islam – ইসলামে তাবিজ জায়েজ হলেও কেন তাবিজ থেকে দূরে থাকা উত্তম? March 20, 2023
- Dua to be rich – ধনী হওয়ার দোয়া/আমল- আজ থেকেই শুরু হোক ধনী হওয়ার পথচলা March 7, 2023
- Islam has never encouraged polygamy – ইসলাম একাধিক বিয়েকে কখনো উৎসাহিত করে নি! January 9, 2023