স্ত্রীর প্রতি তুষ্টির বে-নযীর দৃষ্টান্ত / The-Example-Of-Wifes-Nazi
IDCAdmin
স্ত্রীর প্রতি তুষ্টির বে-নযীর দৃষ্টান্ত / The-Example-Of-Wifes-Nazi
স্ত্রীর প্রতি তুষ্টির বে-নযীর দৃষ্টান্ত / The-Example-Of-Wifes-Nazi
*স্ত্রীর প্রতি তুষ্টির বে-নযীর দৃষ্টান্ত:*— ———————————————- আল্লাহ্ তাআ’লা প্রদত্ত বস্তুতে তুষ্টির বে-নযীর দৃষ্টান্ত:—- হযরত হাসান বসরী (রহ:) একজন গোলাম খরিদ করছিলেন। সে গোলাম একজন আল্লাহ্ ওয়ালা এবং বুযুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। হযরত হাসান বসরী (রহ:) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “হে গোলাম! তোমার নাম কি? গোলাম বলল, “হুযুর! গোলামের কোন নাম থাকেনা। মালিক যে নামে ডাকে সেটাই তার নাম। চিন্তা করে দেখুন, এ আল্লাহ্ ওয়ালা বুযুর্গ গোলাম হযরত হাসান বসরীর রহ. মত তাবে‘ঈকে-যিনি একশত বিশজনের অধিক সাহাবীর সাক্ষাৎ লাভে ধন্য হয়েছেন -পর্যন্ত গোলামীর আদব শিক্ষা দিচ্ছেন। অতঃপর হযরত হাসান বসরী রহ. তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি কী খেতে পছন্দ করো? সে উত্তরে বললো, হুযুর! গোলামের কোন স্বতন্ত্র পছন্দ নেই, মনিব যা খেতে দেন তাই তার পছন্দ। পুনরায় তাকে প্রশ্ন করলেন, তোমার প্রিয় পোশাক কোনটি? ভৃত্য জবাবে বলল, গোলামের কোন লেবাস হয় না। মালিক যা পরতে দেন তাই তার পোশাক।
এদত শ্রবণের পর হযরত হাসান বসরী (রহ:) সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। অতঃপর যখন তার জ্ঞান ফিরল, তখন তিনি বললেন, হে গোলাম! আমি তোমাকে শৃঙ্খল মুক্ত করে দিলাম, আজ হতে তুমি গোলাম নও, তুমি আযাদ, মুক্ত স্বাধীন ব্যক্তি। গোলাম বলল, আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। তবে আপনার নিকট আমার প্রশ্ন-আপনি আমাকে কোন্ খুশিতে আযাদ করে দিলেন? প্রত্তুরে হাসান বসরী (রহ:) বলেন, “তুমি আমাকে আল্লাহর গোলামী শিখিয়েছো; এভাবে যে, আল্লাহ্ তাআ’লা যা খেতে দেন খুশীর সাথে তাই খেতে হয়, আল্লাহ্ যা পরতে দেন খুশীর সাথে তাই পরতে হয়, তেমনি ভাবে যে স্ত্রী প্রদান করেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। আর এটাই আল্লাহর পরিপূর্ণ গোলামী। *মূল কথা:-* এ ঘটনা আমাদেরকে একথাই শিক্ষা দেয় যে, যে সহধর্মিণী আমাদেরকে দান করা হয়েছে তা একমাত্র আল্লাহ্ তাআ’লার পক্ষ থেকেই দান করা হয়েছে। আমার জন্য এর চেয়ে ভাল আর কেউ হতে পারেনা।
কারণ আমার মাওলার কুদরতী বণ্টনের মাধ্যমেই আমি তাকে পেয়েছি। সুতরাং এই বিবির প্রতিই আমাকে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তাদেরকে নসীহত করতে হবে। তারা আক্বলের দরুন ভুল-ভ্রান্তি করে বসলে যথা সম্ভব তাকে মাফ করে দিতে হবে। তাদের আচার-আচরণকে যথা সম্ভব বরদাশত করে নিয়ে এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। প্রয়োজনের মুহাব্বাতের সাথে তাদের বুঝাতে হবে, নসীহত করতে হবে, দ্বীনী কিতাবের তা‘লীম দিতে হবে। তাকদেরকে মোটেও হেয় নযরে দেখা যাবেনা। তুচ্ছ জ্ঞান করা যাবেনা। যেহেতু তারা বেহেশতের হুরদের চেয়েও অধিক সম্মানী, সৌন্দর্যের অধিকারী এবং সুন্দরী হবে। কেননা স্ত্রীলোকেরা দুনিয়াতে নামায পড়েছে, রোযা পালন করেছে, স্বামীর খিদমত করে তাকে সন্তুষ্ট রেখেছে, পর্দা করেছে। পক্ষান্তরে হুররা সেসব ইবাদত করেনি। তাই আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় ইবাদতের নূর ও জ্যোতি দুনিয়ার স্ত্রীদের চেহারায় দান করবেন। খোদা প্রদত্ত সেই নূরের বদৌলতে জান্নাতে দুনিয়ার সেই স্ত্রীরা বেহেশতী হুরদের অপেক্ষা অধিক সুন্দরী পরিদৃষ্ট হবে। সুতরাং নিজ পত্নীদেরকে হেয় তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখবেনা।
মাত্র কয়েক দিনের জন্য তারা তোমাদের সাথী হয়ে আছে। অসংখ্য খিদমতের আঞ্জাম দিচ্ছে, তাদের খিদমতের ফিরিস্তি অনেক লম্বা। সামান্য চিন্তা করলেই তা বুঝা সম্ভব। তাদের উছিলায় পুরুষ অনেক গুনাহ থেকে বাঁচতে পারছে, সন্তানের চেহারা দেখছে, নিশ্চিন্ত ভাবে দ্বীন-দুনিয়ার দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়া সম্ভব হচ্ছে ইত্যাদি। অপর দিকে বিশেষ হিকমতের কারণে তাদেরকে পুরুষদের তুলনায় কম আকল দেয়া হয়েছে-একারণে তারা অনেক ক্ষেত্রে ভুল করে বসে, এটা ক্ষমা যোগ্য। তাদের জান্নাতী মর্যাদা লক্ষ্য করে তাদের বক্রতাপূর্ণ আচরণ সহ্য করলে শুধু প্রভু তুষ্টি এবং দাম্পত্য জীবন সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবেনা বরং সবরের কারণে ইনশাআল্লাহ্ আল্লাহ্ ওয়ালাদের কাতারে শামিল হওয়া যাবে। ইসলামী ইতিহাসের পাতায় এমন অনেক লোকের প্রমাণ পাওয়া যায়, যারা স্বীয় স্ত্রীর বক্রতাপূর্ণ আচার-ব্যবহারে সহনশীলতা ও ধৈর্যশীলতার পরিচয় প্রদানের ফলে তারা ওলীদের মর্যাদার ভূষিত হয়েছে। এরূপ মহান ব্যক্তিদের থেকে কয়েক জনের ঘটনা একটু বিস্তারিত তুলে ধরলাম, যারা স্ত্রীদের বদৌলতে ওলী হয়েছেন।
*ঘটনা:-০১)* হযরত শাহ্ আবুল হাসান খারকানীর (রহ:) স্ত্রী বড়ই বদ মেযাজী ছিল। শাহ্ সাহেবের নিকট জনৈক খোরাসানী ব্যক্তি বাইআ’তের জন্য তার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন-হযরত কোথায় আছেন? অন্দর মহল হতে বিবি সাহেবা উত্তরে বললেন-কিসের হযরত? আমি রাত-দিন তার নিকটই আছি। তার মধ্যে বুযুর্গীর কি আছে? এ উত্তর শুনে খোরাসানী বেচারা কাঁদতে লাগল। প্রতিবেশীদের সাথে আফসোস প্রকাশার্তে বলল-হাজার মাইল দুরত্ব পাড়ি দিয়ে আসলাম বাইআ’তের জন্য। আর বিবি সাহেবা বলছেন, তিনি বুযুর্গ-ই নন। লোকেরা তার কথা শুনে বলল, বিবি সাহেবার কথায় কর্ণপাত করো না। বরং তুমি ময়দানে যাও এবং তার আমল-আখলাক ও কারামত স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করো। অতঃপর সে ব্যক্তি মাঠে গিয়ে শাহ্ সাহেবকে বাঘের পিঠে আরোহী অবস্থায় আসতে দেখলো। এদিকে শাহ্ সাহেব ব্যাপারটি আঁচ করতে পারলেন যে, এ খোরাসানী ঘর থেকে আমার স্ত্রীর কটূক্তি শুনে এসেছে। তাই বুযুর্গ তাকে সম্বোধন করে বললেন- এ বদমেযাজ স্ত্রীর বদমেযাজ ও তিক্ততা আমি সহ্য করছি যার ফলশ্রুতিতে এ হিংস্র বাঘ আমার গোলামী খাটছে। আল্লাহ্ তাআ’লা এ স্ত্রীর বদৌলতে আমাকে এ নেআ’মত প্রদান করেছেন। আমি বিবিকে আল্লাহর বান্দী মনে করে আল্লাহ্ তাআ’লার বণ্টনে খুশি হয়ে কালাতিপাত করছি। আমি যদি তাকে তালাক প্রদান করি তাহলে সে আমার অন্য মুসলমান ভাইকে কষ্ট দিবে। এজন্য তাকে আল্লাহর বান্দী ধারণা পূর্বক আল্লাহর বণ্টনে খুশি হয়ে কার্য সম্পাদন করি। আমি তাকে স্ত্রীর চেয়ে আল্লাহর বান্দী এবং তারই কুদরতী বণ্টন হিসাবে প্রাধান্য দান পূর্বক তার সাথে সৌজন্যে মূলক আচরণ করি। তার তিক্ত ব্যবহারকে খুশি মনে করে বরদশ্ত করি। অতঃপর শাহ্ আবুল হাসান খারকানী (রহ:) আল্লামা রুমীর (রহ:) একটি কবিতা আবৃত্তি করেন, যার অর্থঃ “আমার ধৈর্য্য যদি এ মহিলার কষ্ট-যাতনাকে সহ্য না করত, তাহলে এ হিংস্র বাঘ কি আমার বেগার খাটতো যে, আমি তার পিঠে বসে আছি? আবার ওর পিঠে লাকড়ির বোঝা চাপিয়েছি? এসব কারামত আল্লাহ্ তাআ’লা এ মহিলার তিক্ত স্বভাবের সহ্য করার কারণেই দিয়েছেন।
*ঘটনা:-০২)* এ ঘটনা মির্যা মাযহার জানে জাঁনা (রহ:) এর। একদা এক বুযুর্গের ইলহাম হলো যে, হে মির্যা মাযহার জানে জাঁনে! দিল্লিতে এমন এক মহিলা আছে, যে নামাযের পাবন্দ এবং কুরআনে কারীমের খুব তিলাওয়াত কারী, কিন্তু সে খুব জেদী ও বদমেযাজ। তাকে বিয়ে করে নাও। কেননা, তোমার স্বভাব প্রকৃতি খুব নাজুক এবং স্পর্শকাতর। বাদশাহ্ তোমার খিদমত করতে যেয়ে পান করার পেয়ালা বাঁকা করে রাখাতে তোমার মাথায় ব্যাথা ধরে যায়, কাথার বা লেপের সুতা বাঁকা থাকলে তোমার মাথায় দরদ হয়ে যায়, ঘুমাতে পার না। দিল্লির জামে মসজিদে যাওয়ার প্রাক্কালে চারপায়ী বা চৌকী বক্র অবস্থায় দেখলে তোমার মাথা ধরে যায়, যখন তোমার স্বভাব এত নাজুক, তাই সে নাজুকতা এবং স্পর্শকাতরতা দূর করার জন্য চিকিৎসা স্বরূপ তুমি সেই মহিলাকে বিয়ে করে নাও। আমি তোমাকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করবো। তোমার বিজয় ডঙ্কা সারা দুনিয়াতে বেজে উঠবে। অতঃপর হযরত মির্যা জানে জাঁনা (রহ:) তাকে বিয়ে করে নিয়ে আসলেন এবং নিজের নাজুকতার এলাজ স্বরূপ সকাল-সন্ধ্যা তার তিক্ততা সহ্য করতে লাগলেন। একদিন এক কাবুলী হযরতের খানা আনার জন্য হযরতের বাড়ীতে গিয়ে বলল, হযরতের খানা দিন। ভিতর থেকে স্ত্রী কণ্ঠ বেজে উঠল- কিসের হযরত হযরত করছো? এগুলো তোমার হযরত কে খুব শোনাও গিয়ে। পাঠান এরূপ উত্তরে রাগান্বিত হয়ে অবস্থার হাল ক্রিয়ায় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ছুরি বের করে মারতে উদ্যত হল, সহসা তার চেতনা ফিরে এলে সে বলল, আপনি আমার শাইখের বিবি না হলে এখন ছুরি মেরে কারবার শেষ করে দিতাম। অতঃপর সে ব্যক্তি হযরত মির্যা মাযহার জানে জাঁনা (রহ:) এর নিকট গিয়ে বলল! হযরত আপনি কেমন বদমেযাজ মহিলা বিয়ে করেছেন? তিনি বললেন, এ স্ত্রীর উপর ধৈর্য ধারণ করার বরকতে আল্লাহ্ তাআ’লা আমাকে এ মর্যাদা দান করেছেন। ওলীদের কাতারে শামিল করেছেন। এবং আমার বিজয় ও সুনামের ডঙ্কা সারা এলাকায় বাজিয়ে দিয়েছেন। শাহ্ গোলাম আলী সাহেব (রহ:) মির্যা মাযহার জানে জাঁনা (রহ:) এর খলীফা ছিলেন। মাওলানা খালেদ কুর্দী (রহ:) ও তাঁর খলীফা ছিলেন। এ উভয়েই হযরতের হাতে বাইআ’ত গ্রহণ করেন। *মোটকথা:-* আল্লাহ্ তাআ’লা তাঁকে স্বীয় স্ত্রীর বক্রতা ও তিক্ত স্বভাব সহ্য করার বদৌলতে প্রথম সারির ওলীগণের অন্তর্ভুক্ত করেন। *[মানাযিলে সুলুক, ২৫-২৯]* আল্লাহ্ তাআ’লা আমাদেরকেও আমাদের বিবিদের *(বদ-আচরণে)* ধর্য্য ধারণ করার খুব তাওফীক দান করুন এবং আউলিয়ায়ে সিদ্দীকিন দের মর্যাদা হাসিল করার খুব তাওফীক দান করুন।আমীন..!
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।