☪ অহংকার এক মহাব্যাধি, অহংকারীর পরিণাম:- @@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@
১) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঐ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যার দিলের মধ্যে সরিষার দানা পরিমাণও অহংকার থাকবে।
২) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন, “অহংকার আমার চাদর এবং শ্রেষ্ঠত্ব ও বড়ত্ব আমার পরিধানের পোশাক। সুতরাং আমার এই দুই জিনিস নিয়ে কেউ টানাটানি করলে আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর এতে আমি সামান্য পরোয়াও করব না”।
৩) এক হাদীসে আছে, যার দিলে সরিষার দানা পরিমাণ অহংকার থাকবে আল্লাহ্ পাক তাকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।
৪) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মানুষ নিজেকে ভাল মনে করতে থাকে। এতে সে অহংকারে লিপ্ত হয়। এমনকি এক সময় তাকে জালিমদের মধ্যে গণ্য করা হয়। ফলে জালিমদের মত শাস্তি তাকে দেয়া হয়।
৫) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কেয়ামতের দিন জাহান্নামের মধ্য হতে একটা গর্দান বের হবে। তার দুটি কান থাকবে যা দ্বারা সে শুনবে, দুটি চোখ হবে যা দ্বারা সে দেখবে এবং একটা জবান থাকবে যা দ্বারা সে কথা বলবে। সে বলবে, তিন শ্রেণীর লোকদের উপর আমাকে নিযুক্ত করা হয়েছে। ক. প্রত্যেক কট্টর অহংকারীর উপর খ. যে আল্লাহ্ পাকের সাথে শরীক করে তার উপর গ. যারা ছবি তৈরী করে তাদের উপর।
৬) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, জান্নাত জাহান্নামের মধ্যে তর্ক হল। জাহান্নাম বলল, আমার ভিতর অহংকারী ও জালিমদের বসবাস হওয়ায় আমাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। আর জান্নাত বলল, আমার জন্য ঐ সমস্ত লোকদেরকে নির্বাচন করা হয়েছে যারা দূর্বল, অসহায় ও সাদাসিধে তাঁদের জন্য আমাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
৭) এক হাদীসে আছে, হযরত নূহ (আ.) ইন্তেকালের সময় তার দু’জন ছেলেকে ডেকে বললেন, আমি তোমাদেরকে দুটি জিনিসের নির্দেশ দিচ্ছি এবং দুটি জিনিস থেকে নিষেধ করছি, নিষিদ্ধ জিনিস দুটি হল শিরিক ও অহংকার।
৮) এক হাদীসে আছে, কেয়ামতের দিন অহংকারী ও জালিমদেরকে পিপড়ার ন্যায় ছোট করে দেয়া হবে। মানুষ তাদেরকে পা দ্বারা মাড়াই করবে।
৯) হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা:) বলেন, কোন মুসলমানকে হালকা মনে করোনা। কারণ একজন সাধারণ মুসলমানও আল্লাহ্ পাকের নিকট অনেক মহান। [ইরশাদুল মুলূকের ১১৪ পৃষ্ঠায় এ আসারকে মারফু বলা হয়েছে]
১০) হযরত যাহাব (রহ.) বলেন, আল্লাহ্ পাক জান্নাতে আদনকে সৃষ্টি করার পর তাকে বললেন, সমস্ত অহংকারীদের জন্য তুমি হারাম।
১১) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেননা যে নিজেকে ভালো লাগার জন্য ও অহংকারের সাথে দম্ভ ভরে লুঙ্গি পায়জামা বা অন্য কোন পোশাক ঝুলিয়ে পরে।
১২) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, এক ব্যক্তি দুটি চাদর পরে দম্ভ ভরে চলছিল। তার নিজের কাছে নিজেকে ভাল মনে হচ্ছিল। তখন তাকে আল্লাহ্ পাক জমিনে ধ্বসিয়ে দিলেন। কেয়ামত পর্যন্ত সে এভাবে জমিনের মধ্যে ধ্বসতে থাকবে।
১৩) হযরত মুতাররিফ ইবনে আব্দুল্লাহ (রা:) মুহাল্লাবকে রেশমী জুব্বা পরে দম্ভ ভরে চলতে দেখে বললেন, হে আল্লাহর বান্দা! তোমার এ চলন (অহংকারের সাথে চলা) আল্লাহ পাক ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) পছন্দ করেন না।
মুহাল্লাব বলল, তুমি কি চিন না আমি কে? হযরত মুতাররিফ (রা.) বললেন, তোমাকে আমি খুব ভালভাবে চিনি। তোমার শুরুতে ছিল এক ফোটা নাপাক বির্য এবং শেষে তুমি হবে মুর্দা যা দেখে সবাই ঘৃণা করবে এ দুই অবস্থা ছাড়াও তোমার পেটের নাপাকি নিয়ে তুমি ঘুরে বেড়াচ্ছ। একথা শুনে মুহাল্লাব অহংকার ত্যাগ করে চলে গেল।
১৪) হযরত ওমর (রা:) বলেন, মানুষ যখন বিনয়ী হয় আল্লাহ্ পাক তখন তাঁর সম্মান বাড়িয়ে দেন এবং বলেন, তুমি সুউচ্চ মর্যাদায় আরোহন কর। পক্ষান্তরে মানুষ যখন অহংকারী হয় তখন আল্লাহ্ পাক তাকে অপদস্ত করেন এবং বলেন, তুমি অপদস্ত হও। তখন সে নিজের কাছে বড় মনে হলেও মানুষের কাছে শুকরের চেয়েও বেশী ঘৃণিত, অপদস্ত ও ছোট হয়ে যায়।
১৫) হযরত মালেক ইবনে দিনার (রহ.) বলেন, মসজিদের দরজায় গিয়ে যদি কেউ বলে, তোমাদের নিকৃষ্টতম ব্যক্তিটি যেন বাহিরে আসে, তাহলে খোদার কসম করে বলছি, আমার আগে কেউ বের হবে না। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ.)কে যখন একথা শুনানো হল তখন তিনি বললেন, এ কথাটাই হযরত মালেক ইবনে দিনার (রহ.) কে মালেক বানিয়ে দিয়েছে।
☪ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা আমাদেরকে অহংকার থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করুন।আমীন ইয়া রাব্বাল আলামিন।
আরও পড়ুন…
Duas Of The Quran-কুরআনের সব দু’আ
আলহামদুলিল্লাহ! কুরআন শরীফের প্রায় সমস্ত দোয়াগুলি এক জায়গায় অর্থ সহ লিপিবদ্ধ করে দেয়া হলো। এ দোয়াগুলি নিজে মুখস্থ করুন এবং অপরকে পড়ার ও মুখস্থ করার সুযোগ করে দিন।
“হে আমাদের প্রভূ! তুমি আমাদের থেকে (সব দোয়া) কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি সবকিছু শুনতে পাও ও সব কিছু জানো। আর তুমি আমাদের তাওবাহ্ কবুল করো। অবশ্যই তুমি একমাত্র তাওবাহ্ কবুলকারী ও দয়াময়”।
“হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমাদের ভুল ত্রুটি হয়, তবে তুমি আমাদের অপরাধী করো না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর যেমন গুরুভার অর্পন করেছিলে, আমাদের ওপর তেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করো না। যে ভার সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর আরোপ করো না। আমাদেরকে ক্ষমা করো, আমাদেরকে দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। তাই কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে (জয়যুক্ত করার জন্য) সাহায্য করো।
“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপ ক্ষমা করো। কাজে কর্মে আমাদের বাড়াবাড়ি মাফ করে দাও। আমাদের পদক্ষেপগুলো সুদৃঢ় করে দাও এবং কাফির সম্প্রদায়ের উপর আমাদেরকে সাহায্য করো।”
“হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি যদি কাউকে অন্যায় কাজের জন্য দোযখের আগুনে নিক্ষেপ কর, তাহলে নিশ্চয়ই সে লাঞ্ছিত হবে। আর সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।”
“হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমরা এক আহবানকারীকে ঈমানের দিকে আহবান করতে শুনেছি যিনি বলছিলেন, তোমরা নিজ প্রতিপালকের ওপর ঈমান আন। তাতেই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের অপরাধগুলো ক্ষমা করো এবং আমাদেরকে পূণ্যবানদের সাথে মৃত্যু দান করো।”
“হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার রসূলগণের মাধ্যমে আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ, সে অনুযায়ী আমাদের ওপর রহম কর। আর কিয়ামতের দিন আমাদেরকে লাঞ্ছিত করোনা। নিশ্চয়ই তুমি অঙ্গীকারের ব্যতিক্রম কিছু করোনা।”
“হে আমাদের প্রতিপালক! জালেমের এই জনপদ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তোমার কাছ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক কর এবং তোমার কাছ থেকে আমাদের জন্য কোন সাহায্যকারী পাঠাও।”
“(তাঁরা দু’জন বললেন) হে আমাদের প্রভু! আমরা আমাদের নিজেদের উপর অত্যাচার করেছি। যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর ও আমাদের উপর দয়া না কর, তাহলে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব”।
“হে আমার পালনকর্তা! আমার যা জানা নেই এমন কোন দরখাস্ত করা হতে আমি তোমার কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না কর, দয়া না কর, তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হবো”।
“হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতাও দান করেছ এবং আমাকে বিভিন্ন তাৎপর্যসহ ব্যাখ্যা করার বিদ্যা শিখিয়ে দিয়েছ। হে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টা! তুমিইই আমার ইহকাল ও পরকালের অভিভাবক। আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যুদান কর এবং আমাকে স্বজনদের সাথে মিলিত কর।
“হে আমার পালনকর্তা! আমাকে নামায কায়েমকারী কর এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি কবুল কর আমাদের দোয়া। হে আমার প্রতিপালক! হিসাব গ্রহণের দিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং বিশ্বাসীগণকে ক্ষমা কর।”
“(আমি ঘোষণা করছি) পবিত্র তিনি, যিনি এদেরকে (যানবাহন) আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন এবং আমরা এদেরকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা অবশ্যই আমাদের পালনকর্তার দিকে ফিরে যাব”।
“হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর”।
“হে আমার পালনকর্তা! আমাকে প্রজ্ঞা দান কর, আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর। আর আমাকে নেয়ামতসম্পন্ন উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর। এবং আমার পিতাকে ক্ষমা কর। সে তো পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এবং পূনরুত্থান দিবসে আমাকে লাঞ্ছিত করো না, যে দিবসে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি কোন উপকারে আসবে না। কিন্তু যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে সে লাঞ্ছিত হবেনা।
“হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি তুমি যে অনুগ্রহ করেছ তার জন্য এবং যাতে আমি তোমার পছন্দমত সৎকাজ করতে পারি। আর তুমি নিজ করুণায় আমাকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ দাসদের শ্রেণীভুক্ত করে নাও”।
“হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী। অতএব যারা তওবা করে ও তোমার পথ অবলম্বন করে, তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা কর”।
“হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তাদেরকে স্থায়ী জান্নাতে প্রবেশশধিকার দান কর; যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাদেরকে দিয়েছ (এবং তাদের) পিতা-মাতা, পতি-পত্নী ও সন্তান সন্ততিদের মধ্যে (যারা) সৎকাজ করেছে তাদেরকেও (জান্নাত প্রবেশের অধিকার দাও)। নিশ্চয়ই তুমি পরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়”।
(নোটঃএখানে সূরাগুলো ক্রমান্বয়ে দেয়া আছে,সূরা বাকারা থেকে শুরু হয়েছে)
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।