Islami Dawah CenterIslami Dawah Center
  • Home
  • About IDC
    • IDC Madrasah
    • IDC Foundation
    • IDC Dinia Madrasha
    • Fatwa Section
    • IDC Media
    • IDC Orphanage
    • IDC Research Center
    • IDC Home Initiative
  • Donate
  • Privacy Policy
    • Refund Policy
  • Contact
Islami Dawah CenterIslami Dawah Center
Toggle menu

    Blog Post

    Home > Islamic History > America and Israel – কে কার লেজ?
    America and Israel

    America and Israel – কে কার লেজ?

    by IDCAdmin September 30, 2021
    Islamic History 0

    America and Israel

    America and Israel – কে কার লেজ?

     

    একসময় আমেরিকা ইসরায়েলকে লেজের মতো নাড়াত, এখন ইসরায়েল আমেরিকাকে নাড়ায়। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে যা চেয়েছিলেন সব পেয়েছেন: জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরানো, ইরানের সঙ্গে চুক্তি ছুড়ে ফেলা, সৌদি আরব ও মিসরে ইসরায়েলপন্থী যুবরাজ সালমান ও জেনারেল সিসিকে ক্ষমতায় বসানো। ইসরায়েল এখন মধ্যপ্রাচ্যের নতুন ঈশ্বর, বাইবেলে বর্ণিত ইহুদি ঈশ্বরের ঘৃণায় কত নগর-জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে, সেখানে ফিলিস্তিনিরা তো সামান্য পিপীলিকা। এদের পিষে মারাই উচিত।

    দুই দুর্বৃত্তের কুকীর্তি আড়ালের জন্যও ফিলিস্তিনিদের মরা দরকার। এক পর্নো তারকার সঙ্গে ট্রাম্পের কেলেঙ্কারি আর বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মার্কিন ধনকুবেরদের থেকে নেওয়া উপহার (ওরফে ঘুষ) তদন্ত চলছে। দুজনের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ, ঠিকঠাক তদন্ত হলে দুজনেরই জেলবাস হওয়ার কথা। এমন সময় কিছু ফিলিস্তিনি মেরে দেশবাসীর নজর ঘোরানোয় ফায়দা আছে। পূর্ব জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধন করে জেরুজালেমে ইসরায়েলের বেআইনি দখলের স্বীকৃতি দিল যুক্তরাষ্ট্র। হাজির হলেন ট্রাম্পের জামাই জেরেড কুশনার ও কন্যা ইভানকা ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের শান্তির দূত জেরেড কুশনার ঘোষিতভাবে জায়নবাদী—জায়নবাদী হলো তারা, যারা জর্ডান-সিরিয়া-মিসরের কিছু অংশসহ সমগ্র ফিলিস্তিনে বর্ণবাদী ইহুদি ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজে সক্রিয়। এ কাজের মধ্যে আগ্রাসন, ভূমি দখল, গণহত্যা, ষড়যন্ত্র, গুপ্তহত্যা, দেশে দেশে আরব ও মুসলিমবিরোধী শক্তিকে মদদ দেওয়া—সব আছে।

     

    ট্রাম্পের ‘শান্তি’ মানে ফিলিস্তিনের ধ্বংসঃ

    ইসরায়েল মাত্র দুই সময় গণহত্যা চালায়: যুদ্ধে ও শান্তিতে। রাতভর সিরিয়ায় বোমা হামলা চালিয়ে দিনের বেলায় খুন করছে ফিলিস্তিনিদের। গত দুদিনে মৃতের সংখ্যা ষাট ছাড়িয়েছে, আহত প্রায় আড়াই হাজার। বেশির ভাগই নিরস্ত্র কিশোর-কিশোরী। ইসরায়েলের সীমান্ত দেয়ালের দেড় শ ফুট দূর থেকে ছোড়া পাথরে ইসরায়েলের শান্তিভঙ্গ তো দূরের কথা, ওই বর্ণবাদী দেয়ালের একটি চলটাও খসেনি। তবু নির্বিচার হত্যা এবং ইসরায়েলি মিডিয়ার উল্লাসে অন্ধ হলো পৃথিবী।

    ট্রাম্পের জামাই কুশনারের চোখে এসবই ‘শান্তি প্রক্রিয়ার নতুন সূচনা’। আসলে এই শান্তির সূচনা হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ১৫ মে, সেদিন ফিলিস্তিনি ভূমিতে গায়ের জোরে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ফিলিস্তিনিরা দিনটিকে ‘নাকবা’ বা ‘মহাবিপর্যয় দিবস’ হিসেবে প্রতিবাদী আত্মদানের মাধ্যমে পালন করে। মার্কিন দূতাবাস চালু হলো নাকবা দিবসের ঠিক আগের দিন। নাকবা দিবসের প্রাক্কালে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস চালু কিংবা ঈদের দিন সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি ঘৃণা ছাড়া আর কিছু প্রকাশ করে না। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতা হিসেবে কুশনারের কথাটি খেয়াল করুন, ‘একদিন যখন এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন আমরা সবাই এই দিনের কথা মনে করব, আমাদের শান্তির পথে যাত্রা শুরু হয়েছিল সত্যের প্রতি মার্কিন স্বীকৃতির ভেতর দিয়ে।’

    কুশনারের কথাটা মিলে যায় সৌদি যুবরাজ সালমানের কথা সঙ্গে। তিনি ফিলিস্তিনিদের ট্রাম্পের কথায় রাজি হতে নতুবা খামোশ হতে বলেছেন। সুতরাং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি মানে সম্পূর্ণ জেরুজালেমকে ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়া, আরও আরও ইসরায়েলি বসতকারের জন্য আরব ভূমি ছেড়ে দেওয়া। এককথায় ফিলিস্তিনিদের নাই হয়ে যাওয়াই মার্কিন-ইসরায়েলি শান্তির ফর্মুলা। এমন শান্তির রেকর্ড ভাঙা এক শটি হালাকু খানের পক্ষেও সম্ভব নয়।

     

    ‘সভ্যতা’র করাল অতীতঃ

    ইউরোপীয় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের শুরুর বছর ধরা হয় ১৪৯২ সালকে। সে বছর রাজা ফার্দিনান্দ ও রানি ইসাবেলা মুসলিম রাজত্ব গ্রানাডা জয় করেন। সে বছরই ক্রিস্টোফার কলম্বাস আরব নাবিকদের সহায়তায় ভারত খুঁজতে গিয়ে আমেরিকার উপকূলে গিয়ে ঠেকেন। মুসলিম বিতাড়নের মাধ্যমে খ্রিষ্টান শাসন কায়েমকে ইউরোপীয় ইতিহাসে ভাবা হয় জাতীয় ঐক্যের শুভক্ষণ হিসেবে। আর আমেরিকা মহাদেশে কোটিসংখ্যক রেড ইন্ডিয়ান হত্যার ঘটনাকে বলা হয়, ‘নিউ ওয়ার্ল্ড’ বা নতুন দুনিয়া প্রতিষ্ঠার মাহেন্দ্রক্ষণ। এ পথে যে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠল, জার্মান সমাজবিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়েবারের ভাষায়, সহিংসতার একচেটিয়া ক্ষমতার অধিকারী হওয়াই এসব রাষ্ট্রের খাসলত। এই সহিংসতা, গণহত্যা, জাতিনিধন চলতে থাকে ভারতবর্ষ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায়। প্রতিটি হত্যাকাণ্ড মনে করিয়ে দেয় ১০৯৯ সালে জেরুজালেম দখলকারী ক্রুসেডারদের গণহত্যার চিত্রকে। মাত্র দুদিনে ক্রুসেডাররা সেখানে ৪০ হাজার মুসলিম ও ইহুদি হত্যা করেছিল। সবই করেছিল সভ্যতার নামে।

    ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগের ইতিহাসে ইহুদি ও মুসলমানদের হানাহানির ঘটনা বিরল। মদিনায় আক্রমণকারী কুরাইশদের পক্ষ নেওয়ার জন্য ইহুদিদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, ইহুদি আইন মেনে সেটা করেছিল ইহুদি নেতারাই। আরব ও মুসলিম অঞ্চলই ছিল ইউরোপ থেকে পালানো ইহুদিদের আশ্রয়। দ্বিতীয় উমাইয়া রাজত্বের গ্রানাডায় ইহুদিরা কেবল সম্মানিতই হতো না, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক কর্তাও ছিল। সে কারণেই গ্রানাডা পতনের পর বিজয়ীরা ইহুদিদের আদেশ দেয়, হয় খ্রিষ্টান হও নয়তো দেশ ছাড়। প্রায় সত্তর হাজার ইহুদি খ্রিষ্টান হয়ে থেকে যায় কিছুদিনের মধ্যেই আবারও বিচারের তোপে পড়ার জন্য, যাকে বলে ইনকুইজিশন। বাকিরা পর্তুগালে ও উসমানিয়া সাম্রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এর সাত বছর পর স্পেনের মুসলিমদেরও বলা হয়, হয় খ্রিষ্টান হও নয়তো দেশ ছাড়।

     

    IDC Partner

     

    নয়া উপনিবেশবাদী ইসরায়েলঃ

    এত কথা বলার উদ্দেশ্য দুটি দিকে ইঙ্গিত করা। ইসরায়েলের জন্মের আগে ইহুদি ও মুসলমানদের মধ্যে বড় আকারের ও দীর্ঘ বিরোধের ঘটনা বিরল এবং পাশ্চাত্য পুঁজিশক্তির বিশ্বজয়ের অভিযানের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল গণহত্যা ও জাতিগত নিধন, যার নাম তারা দিয়েছিল আধুনিকতা, সভ্যতা ও শান্তির মিশন। প্রথম আকাশ থেকে ছোড়া বোমাটা ফেলা হয়েছিল লিবিয়ার ত্রিপোলির কাছের এক মরূদ্যানে, ১৯১১ সালে এক ইতালিয় বিমান থেকে। ইরাক-আফগানিস্তান-ইয়েমেন-সিরিয়া ও গাজায় পশ্চিমা বোমাগুলো অপর দেশ দখল ও অপর জাতি হত্যার সেই ঔপনিবেশিক মডেলেরই বাস্তবায়ন।

    উনিশ শতকের ইউরোপীয় জ্ঞান-রাজনীতি-ভাবনায় এই বিশ্বাস প্রবল ছিল যে ‘সাম্রাজ্যবাদ পৃথিবী থেকে নিম্নতর জাতিগুলোকে মুছে দিয়ে সভ্যতার উপকার করেছে’। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লর্ড সালিসবারি ১৮৯৮ সালের এক কুখ্যাত বক্তৃতায় বলেন, ‘যে কেউ গড়পড়তাভাবে পৃথিবীর জাতিগুলোকে জীবিত ও মৃতপ্রায় এই দুই ভাগে ভাগ করতে পারে।’ তাঁর কাছে নিম্নতর জাতিগুলোকে অনিবার্যভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হলো জীবতাত্ত্বিকভাবে এক জরুরি কাজ। ভারত ছাড়ার আগে চার্চিলের কারণে কোটি কৃষক-মজুরের দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর ইতিহাসও আমরা ভুলতে পারি না।

    ইউরোপের উত্তরাধিকারী আমেরিকার শাসকদের বড় অংশের মনেও এই শ্রেষ্ঠত্বের কুসংস্কার কিলবিল না করলে, কথায় কথায় তারা ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, ইয়েমেনসহ যেকোনো ‘স্বাধীন’ দেশকে পাথরযুগে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিতে পারত না। এভাবে পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ মুছে গেছে তাসমানিয়ার আদিবাসীরা, হাতে গোনার মতো জায়গায় এসেছে নিউজিল্যান্ডের মাওরি, আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ান, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাবরিজিন, দক্ষিণ আফ্রিকার হেরেরোদের মতো আফ্রিকার বেশ কিছু জাতি। একইভাবে ফিলিস্তিনিরা মুছে গেলে অসুবিধা কী?

    হলোকস্টের মর্মে ছিল দুটি ধারার মিলন, অ্যান্টি সেমেটিক বিদ্বেষ ও উপনিবেশে জাতিগত নিধনের অভিজ্ঞতা। আজ পাশ্চাত্য সভ্যতার ধরন বদলেছে কিন্তু কিন্তু ঘৃণার ব্যাকরণটা একই আছে। ফিলিস্তিনিরা তাদের চোখে অ্যান্টি সেমিটিজমের নতুন লক্ষ্য। কেননা ইসলামও একটা সেমেটিক ধর্ম। হলোকস্টের ইহুদিদের জায়গায় মুসলমানদের কল্পনা করলেই বিশ্বজুড়ে চলা মুসলিম হলোকস্টের চেহারাটা স্পষ্ট হবে। সাম্রাজ্য টেকাতে অর্থনৈতিক স্বার্থের পাশাপাশি ঘৃণার জ্বালানিও লাগে, মুসলিম-বিদ্বেষ হলো সেই জ্বালানি।

    জেরেড কুশনারের কথায় এই ঐতিহাসিক সত্যই ফুটে বেরিয়েছে। ফিলিস্তিনিদের শেষ লোকটিকে হত্যা অথবা বৃহত্তর ইসরায়েলের কল্পিত সীমান্তের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া তাদের ‘শান্তি’ কায়েমের আর কোনো পথ আসলেই নেই। মানবেতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামের জেদ দেখানো ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা ও বিতাড়ন ছাড়া থামানো অসম্ভব। নির্দিষ্ট সীমানাহীন ইসরায়েল যেহেতু আরব ভূমি দখলে কোনো বিরতি নিচ্ছে না, সুতরাং লড়াই চলবেই। একজন ফিলিস্তিনিও যত দিন থাকবে, তত দিন ইসরায়েলের মিথ্যা ও অন্যায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেই।

     

    ইসরায়েলি মিথ্যার বিপদঃ

    ট্রাম্প জামাতার ‘শান্তির পথে যাত্রা শুরু হয়েছিল সত্যের প্রতি মার্কিন স্বীকৃতির ভেতর দিয়ে’ কথাটা বুঝে দেখা দরকার। কোন সত্য সেটা? ইসরায়েলের দাবি, জেরুজালেম হাজার বছর ধরে ইহুদি রাজ্যের রাজধানী এবং ইহুদিরাই সমগ্র ফিলিস্তিন অঞ্চলের আদি বাসিন্দা। এই দাবির সত্যতা মানলে তো করুণা ছাড়া ফিলিস্তিনিদের আর কিছু পাওনা থাকে না। কে চৌদ্দ পুরুষ আগে কোথায় বাস করত, এই নিয়ম মানলে তো শ্বেতাঙ্গদের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশ ছাড়তে হয়। আদি বসবাসের ভিত্তিতে দেশ দাবি করা আন্তর্জাতিক আইনেও বাতিল। তারপরও ইসরায়েলি ‘সত্য’টা যাচাই করা যাক।

    ইতিহাসে ইসরায়েল বলে কোনো রাষ্ট্র ছিল না, দুনিয়ার বিভিন্ন জাতির ইহুদিদের এক জাতি ভাবাও ছিল অকল্পনীয়। সমস্যাটা আকাশ থেকে পাড়লেন ইসরায়েলের স্বপ্নদ্রষ্টা অস্ট্রিয়ান সাংবাদিক থিওডর হার্জেল। ‘জুডেনস্টাট’ বা ‘ইহুদি রাষ্ট্র’ নামে ১৮৯৬ সালে তিনি যে বই লেখেন, তা হিটলারের ‘মেইন ক্যাম্ফে’র মতোই বিপজ্জনক। হার্জেল লেখেন, ‘আমরা সেখানে (ফিলিস্তিনে) এশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপের দুর্গপ্রাচীর বানাব।’ ব্রিটেনও চাইছিল তুর্কি উসমানিয়া সাম্রাজ্য ভেঙে আরবে ভারতের মতো স্বর্ণপ্রসবা উপনিবেশ বসাতে। এ জন্য স্বাধীন আরব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরবদের তুর্কিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উসকায়। শিয়ালের কাছে মুরগি জিম্মায় বিশ্বাসী মক্কার আমির আর মিসরীয় মোল্লারা ব্রিটেনকে সাহায্য করে।

    প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত উসমানীয় সাম্রাজ্যের আরব অংশ ব্রিটেনের হাতে যায়। তারা দুটি রাষ্ট্র বানানো শুরু করে, একটা হলো সৌদি আরব অন্যটা ইসরায়েল। এরা তাই জন্মের ভাই, তাদের ধাত্রী ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র। তখন থেকেই এরা এশিয়ায় পাশ্চাত্যের কেল্লা এবং দুজনে দুজনার। মধ্যপ্রাচ্যের যাবতীয় সমস্যার গোড়া হাতালে এদেরই পাবেন।

    হিটলারের ইউটোপিয়ার শিকার হয়েছিল দুই কোটি মানুষ আর জায়নবাদী হার্জেলের ইউটোপিয়া হলো মধ্যপ্রাচ্যের অভিশাপ। জায়নবাদী নেতারা যে রাষ্ট্রচিন্তা করলেন, তা আদা আর কাঁচকলা তথা সম্প্রদায় ও জাতির মিশেল। এই দুটি পদার্থ একসঙ্গে রান্না করলে অখাদ্য হয়, দুর্গন্ধও হয়। সম্প্রদায়কে জাতি বলে ঘোষণা করায় সেটাই ঘটল। ইসরায়েল হলো এক চির অশান্তির নাম। পৃথিবীতে ইহুদি জাতি বলে কিছু নেই। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ইতিহাস প্রাচীন, কিন্তু জাতীয়তাবাদের ইতিহাস বড়জোর ৩০০ বছরের। আজকের পৃথিবীতে যেসব জাতি ও জাতিরাষ্ট্র আছে, তারা অতীতে এভাবে পরিচিত হতো না। ইতালীয়রা সবাই রোমান শাসকদের বংশধর নয়, ফরাসিরা অতীতে বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল, ইংল্যান্ডের ইংলিশরাও একাধিক নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মিশেল। দুনিয়ায় কোনো বিশুদ্ধ জাতি নেই, অথচ জায়নবাদীদের দাবি অনাদিকাল থেকে কেবল তারাই তাদের জাতিগত ও ধর্মীয় বিশুদ্ধতা অটুট রাখতে পেরেছে। তাদের রক্তই কেবল বিশুদ্ধ, বাকিরা ভেজাল। ঠিক একই দাবি হিটলারের নাজিবাদও করত।

    অথচ ডিএনএ পরীক্ষা সে কথা বলে না। বিশুদ্ধ জাতির দেশ ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকার ১২৬টি জাতির মধ্যে ‘ইসরায়েলি’ বলে কেউ নেই। ইসরায়েলি হলো তাদের নাগরিকত্বের পরিচয়। জাতিতে তারা ‘ইহুদি’। অ-ইহুদি ও আরব কাউকে সমান ভেবে একই সমাজ-রাষ্ট্রের অংশ করতে তারা নারাজ। ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের পক্ষে তাই গঠনগত ও চেতনাগত কারণেই গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও সেক্যুলার হওয়া সম্ভব না।

    বাইবেলের উপকথাকে সংবিধানের মৌলিক অংশ করে নিয়ে তারা দাবি করছে, জেরুজালেম তাদের চিরন্তন রাজধানী এবং জর্ডান নদী থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত এলাকা হবে ইসরায়েলের ভূমি। অথচ বাইবেল কথিত ‘ল্যান্ড অব ইসরায়েল’ ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বোঝাত না, বোঝাত ইহুদিদের আধ্যাত্মিক কেন্দ্রকে। বাস্তবে ইহুদিরা ছিল কেনান ও জুডাহ নামের অঞ্চলে। খ্রিষ্টজন্মের আগে ও পরে মাত্র কয়েক শ বছর জেরুজালেমে ইহুদি রাজত্ব থাকার প্রমাণ মেলে। কিন্তু এর ভিত্তিতে প্রাচীন নগরীর সাড়ে তিন হাজার বছরের ইতিহাস ও বর্তমানের মালিকানা দাবি করা নিপাট অন্যায়। তা ছাড়া ৭০ খ্রিষ্টাব্দে জেরুজালেম থেকে ইহুদিদের বিতাড়নেরও প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক প্রমাণও নেই। হজরত উমর (রা.)-এর জেরুজালেম জয়ের পরেই কেবল ইহুদিরা তাদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকার ফিরে পায়, যে অধিকার কেড়ে নিয়েছিল রোমানরা।

    মিসর থেকে ইহুদিদের দেশান্তরের মিথেরও সত্যতা দুর্লভ। ইসরায়েলে বসবাসকারী ইহুদিদের ৯০ শতাংশও নৃতাত্ত্বিকভাবে আদি বনি ইসরায়েল বা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর পুত্র ইসহাকের বংশধর না। বরং তাঁদের রক্তে বইছে মধ্যযুগীয় পূর্ব ইউরোপীয় খাজারি রাজত্বের অধিবাসীদের রক্ত—পনেরো শতকে খ্রিষ্টান ও মঙ্গল আক্রমণে মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে সেদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল তারা। এই ইউরোপীয় ইহুদিরা হিব্রু ভাষায়ও কথা বলত না। তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক স্লোমো স্যান্ডের বেস্ট সেলার বই ‘দ্য ইনভেনশন অব জুয়িশ পিপল’ (ইসরায়েলি বেস্ট সেলার) এবং ‘দ্য ইনভেনশন অব দ্য ল্যান্ড অব ইসরায়েল’ জায়নবাদীদের যাবতীয় দাবিকে অথই পানিতে ফেলে দিয়েছে।
    যিশুও একজন ফিলিস্তিনি
    স্লোমো স্যান্ড দাবি করেছিলেন, আজকের ফিলিস্তিনিদের মধ্যেই আদি বনি ইসরায়েলের বংশধরদের রক্ত বেশি প্রবাহিত আর ফিলিস্তিনিরাই আসলে মুসলমান হওয়া আদি ইহুদি। আর যিশুও ছিলেন একজন ফিলিস্তিনি যুবক, যিনি সত্য, ন্যায় ও ক্ষমার কথাই বলতেন। ইতিহাসের পরিহাস এই, ইসরায়েল ইহুদিবাদের নামেই ইহুদিদের বংশধর আজকে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে চলেছে। ইসরায়েলকে মোকাবিলা করতে হলে তার নকল ইতিহাস ও রাষ্ট্রপ্রকল্পের অসারতাও দেখাতে হবে।

    ফিলিস্তিনি কিশোরেরা যে জীবন দিচ্ছে, তা শুধু মুক্তির জন্য নয়, মাতৃভূমির জন্য নয়, সভ্যতার সবচেয়ে নির্দয় মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্যও। তাদের এই লড়াই তাই আরবের নয়, মুসলমানের নয়, মানবতার। হিটলারের বিরুদ্ধে লড়াই যদি গৌরবের হয়, জায়নবাদের নৃশংসতার প্রতিবাদও তেমনি গৌরবের। ফারুক ওয়াসিফ: লেখক ও সাংবাদিক। faruk.wasif@prothom-alo.info

    আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

     

    আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

    আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

    আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

    আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

    কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

    ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

    Islami Dawah Center Cover photo

    ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

     

    ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

    বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

    আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল ) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )

    Post Views: 254
    Share
    1184 / 2057

    Related Posts

    Significance of the Islamic New Year

    Significance of the Islamic New Year

    Islamic History, Muslims 0
    bahlul

    bahlul/বাহলুল

    Islamic History 0
    Polashi Tragedy

    Polashi Tragedy/পলাশী ট্রাজেডির ২৬৩ বছর ও বিশ্বাসঘাতকদের পরিণতি

    Islamic History 0

    Leave a Reply Cancel reply

    Required fields are marked

    Popular tags

    ইসলামের শত্রুদের জন্য বদদোয়া দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের স্বাস্থ্যগত উপকার সবর বা ধৈর্য

    Tags

    ইসলামের শত্রুদের জন্য বদদোয়া দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের স্বাস্থ্যগত উপকার সবর বা ধৈর্য
    © 2018-2023 Islami Dawah Center. All Rights Reserved | Developed by MO.com
    Go to mobile version