Importance Of Jummah Day-জুমআ’র দিনের ফযীলত

প্রিয় নবী হযরত মুহা’ম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
  • – সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমআ’র দিনই হচ্ছে সবচাইতে উত্তম দিন।
  • – জুমআ’র দিন সকল দিনের সর্দার, সব দিনের চাইতে বড় ও আল্লাহর নিকট বড় মর্যাদাবান। এই দিনটি আল্লাহর কাছে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের চাইতে অধিক উত্তম।
  • – আদম আ’লাইহিস সালামকে এই দিনেই সৃষ্টি করা হয়েছিলো।
  • – এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিলো।
  • – এই দিনেই তাঁর তাওবাহ কবুল করা হয়েছিলো।
  • – এই দিনেই তিনি ইন্তিকাল করেছিলেন এবং
  • – এই দিনেই ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে।
  • – জিন ও মানুষ ছাড়া প্রতিটি প্রাণী শুক্রবার দিন ভোর হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত ক্বিয়ামাতের ভয়ে ভীত থাকে।
  • – এই দিন এমন একটি বিশেষ সময় রয়েছে, যদি কোন মুসলিম বান্দা নামাযের মধ্যে মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে কোন অভাব পূরণের জন্য দুয়া করে, মহান আল্লাহ তাকে তা দান করেন।
  • – জুমআ’র দিনে সুরা কাহাফ পড়লে পরবর্তী জুমআ’ পর্যন্ত ঐ ব্যাক্তির জন্য একটি বিশেষ জ্যোতি আলোকিত হয়ে থাকবে।
  • – তোমরা জুমআ’র দিন আমার ওপর বেশী পরিমাণ দুরূদ পাঠ কর। কেননা এ দিনটি হাজিরার দিন। এই দিনে ফেরেশতাগণ হাজির হয়ে থাকেন। যে ব্যক্তি আমার ওপর দরূদ পাঠ করে তার দরূদ আমার কাছে পেশ করা হতে থাকে।
  • – এ দিন দ্বিতীয় শিঙ্গা ফুঁৎকার দেয়া হবে। কাজেই এ দিন তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরূদ পাঠ করবে। কারণ তোমাদের দরূদ আমার নিকট পেশ করা হবে।
(তথ্যসূত্রঃ আবু দাউদঃ ১০৪৬, তিরমিযীঃ ৪৯২, ইবনে মাজাহঃ ১১৩৯, সহীহ, মুস্তাদরাক হাকেম, সহীহুল জামে।)

জুমআ’র সালাতের জন্য সকাল সকাল পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফযীলতঃ

আবু জুরআ’হ আল-ই’রাক্বী রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “আমি এই হাদীসের চাইতে অন্য কোন সহীহ হাদীস জানি না, যাতে অল্প পরিশ্রমে এতো বেশি সওয়াবের কথা বর্ণিত রয়েছে।” ফাতহুল মুগীষঃ ৪/১৮৩।
হাদীসটি হচ্ছে সুন্নত অনুযায়ী জুমুয়া’হর সালাতের জন্য পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া সংক্রান্ত, যা নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমআ’র দিন গোসল করবে এবং তার স্ত্রীকে গোসল করাবে, সকাল-সকাল ও আগে-আগে (মসজিদে যাওয়ার জন্য) প্রস্তুত হয়, জুমআ’র জন্য কোন যানবাহনে চড়ে নয়, বরং পায়ে হেঁটে মসজিদে যাবে এবং সেখানে অনর্থক কোন কথা না বলে চুপ করে থাকে, ইমামের নিকটে বসে মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শুনবে, তার (মসজিদে যাওয়ার) প্রতিটি পদক্ষেপ সুন্নাত হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে সে এক বছর যাবত (নফল) সিয়াম পালন ও রাত্রিতে (নফল) সালাত আদায় করার (সমান) সওয়াব পাবে।” আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ, তিরমিজিঃ ৪৯৬, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, সহীহ তিরমিযীঃ ৪১০, সহীহ আত-তারগীবঃ ৬৮৭।
ইমাম ইবনে কাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “তার স্ত্রীকে গোসল করাবে অর্থ হচ্ছে স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে। ইমাম ওয়াকী ‘স্ত্রীকে গোসল করাবে’ এইভাবেই অর্থ করেছেন।” যাদ আল-মাআ’দঃ ১/২৮৫।
সুতরাং, যে ব্যক্তি তার বাড়ি থেকে ১০০ কদম পায়ে হেঁটে জামে মসজিদে পৌঁছাবে, তার আমলনামায় ১০০ বছর নফল সালাত ও সাওম পালনের সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে। সুবহা’নাল্লাহ! আল্লাহ তাআ’লা আমাদের হায়াতে ও রিযক্বে বরকত দান করুন এবং জুমআ’র দিনের পূর্ণ সওয়াব ও নূর দান করুন, আমিন।

জুমআ’র দিনে মৃত্যুবরণ করার ফযীলতঃ

তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী এমন কোনো নামাযী মুসলমান ব্যক্তি যদি জুমআ’র দিনে অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর থেকে শুক্রবার মাগরিবের পূর্বে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে সে ব্যক্তি আল্লাহর রহমতে কবরের আজাব থেকে নিরাপদ থাকবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “এমন কোনো মুসলিম নেই যে শুক্রবার দিনে বা রাতে মৃত্যুবরণ করে, আর আল্লাহ তাকে কবরের ফেতনা (পরীক্ষা বা শাস্তি) থেকে রক্ষা করেন না।” সুনানে তিরমিযীঃ ১০৭৪, শায়খ আলবানী রহি’মাহুল্লাহ বলেন, হাদীসটি সহীহ।
আপনারা যারা জুমআ’র দিনে মৃত্যুবরণ করার ফযীলতের কথা জানতে পারবেন তারা দুয়া করবেন, আল্লাহ যেনো জুমআ’র দিনে নেককার অবস্থায় আপনাকে মৃত্যু দান করেন। আল্লাহ আমাদেরকে কবুল করুন, আমিন।

এক নজরে জুমুআ’হর দিনে সুন্নত সমূহঃ

জুমআ’র দিনকে হাদীসে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। জুমআ’র দিনের বিশেষ কয়টা আমলঃ
  • (১) আগে আগে জুমআ’র সালাতের জন্য মসজিদে যাওয়া ও ইমামের কাছাকাছি বসে মনোযোগ দিয়ে খুতবাহ শোনা।
  • (২) জুমআ’র আদায় করা।
  • (৩) যারা জুমআ’র সালাত পড়বেন, তাদের জন্য ফরয গোসলের ন্যায় গোসল করা।
  • (৪) পুরুষদের জন্য খুশবু ব্যবহার করা।
  • (৫) জুমআ’র সালাতের জন্য উত্তম পোশাক পরা।
  • (৬) জুমআ’র দিনে ও রাতে বেশি বেশি দুরুদ পড়া।
  • (৭) সুরা কাহাফ সম্পূর্ণ একবার পড়া, বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর থেকে শুক্রবার মাগরিবের মাঝখানে যেকোন সময়ে। একবারে পুরোটা পড়তে না পারলে ২-৩ বারে ভাগ করে পড়া যাবে।
  • (৮) আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত দুয়া কবুলের বিশেষ সময়ে বেশি বেশি দুয়া পড়া। বিশেষ করে দিনের শেষ ঘন্টাতে আপনার দুনিয়া ও আখেরাতের প্রয়োজনীয় সমস্ত দুয়াগুলো আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানানো।
আল্লাহ আমাদের হায়াতে, রিযক্বে ও আমাদের পরিবারে বরকত দান করুন। আমিন।

আরও পড়ুন…

Nafl Prayer-নফল নামাজ কত প্রকার ও কি কি?

 

 

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ফরজ নামাজের পর সব নফল নামাজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো তাহাজ্জুদ নামাজ তথা রাতের নামাজ।’ (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ)

আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লামকে বিশেষভাবে রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-‘হে চাদর আবৃত, রাতের সালাতে দাঁড়াও কিছু অংশ ছাড়া।’ (সুরা মুজাম্মিল : আয়াত ১-২)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ইসলামের প্রাথমিক যুগে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে এ নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেন। প্রিয়নবির প্রতি কিছু সময় নামাজ পড়ার নির্দেশ ছিল না বরং রাতের কিছু অংশ ছাড়া সারারাত জেগে তাহাজ্জুদ আদায়ের নির্দেশ ছিল।

যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যেতে পারবেন, তাদের মধ্যে একশ্রেণির মানুষ হলেন তারা, যারা যত্নের সঙ্গে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। কুরআনের বিভিন্ন সুরায় এ নামাজের প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে। তাই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ি, তাবে-তাবেয়িসহ সব যুগের ওলি ও বিদ্বানরা তাহাজ্জুদ নামাজে রাত কাটিয়ে দিয়েছেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়, রাকাআত

– ইশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।

– তাহাজ্জুদ নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত পর্যন্ত পড়া বর্ণনা পাওযা যায়। সর্ব নিম্ন ২ রাকাআত আর সর্বোচ্চ ১২ রাকাআত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়াই ভালো। তবে এটা পড়া আবশ্যক নয়।

সম্ভব হলে ১২ রাকাআত তাহাজ্জুদ আদায় করা। তবে ৮ রাকাআত আদায় করা উত্তম। সম্ভব না হলে ৪ রাকাআত আদায় করা। যদি তাও সম্ভব না হয় তবে ২ রাকাআত হলেও তাহাজ্জুদ আদায় করা ভালো। তবে তাহাজ্জুদ নামাজের কোনো কাজা নেই।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত

نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ رَكَعَتِى التَّهَجُّدِ – اَللهُ اَكْبَر

অর্থ : দুই রাকাআত তাহাজ্জুদের নিয়ত করছি.. অতঃপর ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বেঁধে নামাজ পড়া।

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

– প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই দুই রাকাআত করে এ নামাজ আদায় করতেন। যে কোনো সুরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম।- তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাঁধা।- অতঃপর ছানা পড়া।- সুরা ফাতেহা পড়া।- সুরা মিলানো তথা কেরাত পড়া।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক লম্বা কেরাত পড়তেন। অতঃপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় রুকু, সেজদা আদায় করা। এভাবেই দ্বিতীয় রাকাআত আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

এভাবে দুই দুই রাকাআত করে ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে রাতের শেষ প্রহরে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

ফজর নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে সূর্য উঠার পর এ নামাজ আদায় করতে হয়। কেউ কেউ বলেছেন সূর্য উঠার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর; আবার কেউ কেউ বলেছেন ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর এ নামাজ পড়তে হয়। আর সূর্য এক বর্শা পরিমাণ (দেড় মিটারের মতো) মধ্যাকাশের দিকে উঠা পর্যন্ত এ নামাজের ওয়াক্ত থাকে।

 

চাশতের নামাজকে হাদীসে ‘সলাতুদ্‌ দুহা’ বলা হয়েছে। ‘দুহা’ শব্দের অর্থ ‘প্রভাত সূর্যের ঔজ্জল্য’, যা সূর্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয়। এই নামাজ প্রথম প্রহরের পর থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্বেই পড়া হয় বলে একে ‘সালাতুদ দুহা’ বা ‘চাশতের নামাজ‘ বলা হয়। নফল নামাজগুলোর মধ্যে চাশতের নামাজ গুরুত্বপূর্ণ একটি।

আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ নামাজের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সময় অনেক নামাজ আদায়কে সুন্নত ও নফল বলেছেন এবং তা আদায়ে পরামর্শ দিয়েছেন।

এমনই একটি নামাজ হলো ‘সালতুস চাশত বা চাশতের নামাজ’।

চাশতের নামাজকে হাদীসে ‘সলাতুদ্‌ দুহা’ বলা হয়েছে। ‘দুহা’ শব্দের অর্থ ‘প্রভাত সূর্যের ঔজ্জল্য’, যা সূর্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয়।

এই নামাজ প্রথম প্রহরের পর থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্বেই পড়া হয় বলে একে ‘সালাতুদ দুহা’ বা ‘চাশতের নামাজ’ বলা হয়।

নফল নামাজের মধ্যে চাশতের নামাজ গুরুত্বপূর্ণ একটি। প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) এই নামাজ সব সময় পড়েছেন এবং সাহাবাদেরকে নিয়মিত পড়তে উপদেশও দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে,
أوصاني خليلي بثلاث لا أدعهن حتى أموت : صوم ثلاثة أيام من كل شهر ، وصلاة الضحى ، ونوم على وتر . رواه البخاري

‘রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে অসিয়ত করেছেন – যা আমি মৃত্যু পর্যন্ত কখনো ছাড়বো না। ১. প্রতি মাসের তিন রোজা, ২. চাশতের নামাজ (সালাতুদ্‌ দুহা), ৩. এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিতর নামাজ আদায় করা।’ – (বুখারী, হাদিস : ১১২৪; মুসলিম, হাদিস : ৭২১)

বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্‌ (সা.) বলেছেন,
يُصبح على كل سُلامى من أحدكم صدقة، فكل تسبيحة صدقة، وكل تحميدة صدقة، وكل تهليلة صدقة، وكل تكبيرة صدقة، وأمر بالمعروف صدقة، ونهي عن المنكر صدقة، ويُجزئ من ذلك ركعتان يركعهما من الضّحى

‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড় রয়েছে। অতএব, মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ের জন্য একটি করে সদাকা করা।’ সাহাবায়ে কেরাম (রা) বললেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! কার শক্তি আছে এই কাজ করার?’ তিনি (সা.) বললেন, ‘মসজিদে কোথাও কারোর থুতু দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজই এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ, হাদীস : ৫২২২)

উপরোক্ত হাদীসটি মুলত চাশতের নামাজের অপরিসীম গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যের কথাই তুলে ধরে। এর থেকে আরো বুঝা যায় যে, চাশতের নামাজ ৩৬০টি সাদাকার সমতুল্য।

চাশতের নামাজের রাকাত সংখ্যা: চাশতের নামাজের সর্বনিম্ন ২ রাকাত পড়া যায়। উপরে ৪, ৮, ১২ রাকাত পর্যন্ত হাদীসে পাওয়া যায়। মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের পূর্বে আল্লাহ্‌র রাসূল (সা.) আলী (রা.) এর বোন উম্মে হানী (রা.) এর গৃহে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাকাত পড়েছিলেন। সংক্ষিপ্তভাবে পড়লেও রুকু এবং সিজদায় তিনি পূর্ণ ধীরস্থিরতা বজায় রেখেছিলেন এবং প্রতি দুই রাকাত অন্তর সালাম ফিরিয়ে ছিলেন। (বুখারী, হাদীস : ২০৭)

হাদিস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) আবু যর (রা.)-কে বলেছেন,

إن صليّت الضّحى ركعتين لم تُكتب من الغافلين، وإن صلّيتها أربعاً كُتِبتَ من المُحسنين، وإن صلّيتها ستّاً كُتِبتَ من القانتين، وإن صلّيتها ثمانياً كُتبتَ من الفائزين، وإن صلّيتها عشراً لم يُكتب عليك ذلك اليوم ذنب، وإن صلّيتها اثنتي عشرة ركعة بَنى الله لك بيتاً في الجنّة

‘তুমি যদি চাশতের নামাজ দুই রাকাত পড়ো, তাহলে তোমাকে গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। আর যদি চার রাকাত পড়ো, তাহলে তুমি নেককার মধ্যে গণ্য হবে।

আর যদি আট রাকাত পড়ো, তবে সফলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। আর যদি দশ রাকাত পড়ো তাহলে কেয়ামত দিবসে তোমার কোনো গুনাহ থাকবে না। আর যদি বারো রাকাত পড়ো, তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি তৈরি করবেন।’ (সুনানে কুবরা লিল-বাইহাকী, পৃষ্ঠা : ৩/৪৮)

চাশতের নামাযের নিয়ম: চাশতের নামাজ অন্য যেকোনো দুই রাকাত বিশিষ্ট সুন্নত বা নফল নামাজ আদায়ের মতই। কোনো নফল নামাজে যেমন দুই রাকাত পড়ে ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে থাকেন, এখানেও তেমনই। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

صلاة الليل والنهار مثنى مثنى

‘দিন ও রাতের নফল নামাজ দুই দুই রাকাত করে।’ (তিরমিযি, হাদিস : ৫৯৭; আবু দাউদ, হাদিস : ১২৯৫)

চাশতের নামাজের সময়: চাশতের নামাজের সময়টা আমরা ধরে নিতে পারি সকাল ৯ : ০০ থেকে বেলা ১১ : ০০ পর্যন্ত।  সূর্যের তাপ যখন প্রখর হতে শুরু করে তখন এই নামাজ আদায় করা উত্তম। কেননা, নবী কারীম (সা.) বলেছেন,

صلاة الأوابين حين ترمض الفصال

‘চাশতের নামাজ পড়া হবে যখন সূর্যের তাপ প্রখর হয়।’ (সহীহ্‌ মুসলিম, হাদীস : ৭৪৮)

বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন দিনের এক চতুর্থাংশ অর্থাৎ, দিনের চার ভাগের একভাগ পার হয় তখন এই নামাজ আদায় করা উত্তম। কাজেই, চাশতের নামাজ বা সালাতুদ্‌ দুহা আদায় করার উত্তম সময়টি হচ্ছে সূর্যোদয় এবং যোহর নামাযের মধ্যবর্তী সময়টা। (মাজমূ’ ফাতাওয়াহ্‌ লিল ইমাম আন-নাবাউয়ী, ৪/৩৬; আল-মাওসূ’য়াহ্‌ আল-ফিক্‌হিয়্যাহ্‌, ২৭/২২৪

 

শরিয়তের পরিভাষায় জাওয়াল হলো দিনের তৃতীয় প্রহরের প্রারম্ভ, মধ্যাহ্নোত্তর, অপরাহ্ণের সূচনা সময়; দিনের মধ্যভাগে বা দুপুরে সূর্য যখন মাথার ওপর থেকে পশ্চিম দিকে হেলে যায়। … এটি মূলত মধ্যদিনের সিজদা ও নামাজ নিষিদ্ধ সময়ের পর জোহরের ওয়াক্তের সূচনাপর্ব। এ সময় যে নফল নামাজ আদায় করা হয়, তাকে জাওয়ালের নামাজ বলা হয়।

 

এই নামাজের সময় মাগরিবের ফরজ ও সুন্নাত নামাজের পর কমপক্ষে ৬ রাকাত এবং ঊর্ধ্বে ২০ রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়, ইহাকে সালাতুল আওয়াবীন বলে।

 

নফল নামাজের নিষিদ্ধ সময়
সূর্যোদয়ের সময় সব নামাজ নিষিদ্ধ, সূর্য মাথার ওপর স্থির থাকা অবস্থায় নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমি, সূর্যাস্তের সময় চলমান আসর ব্যতীত অন্য কোনো নামাজ বৈধ নয়।

এ ছাড়া ফজর নামাজের ওয়াক্ত হলে তখন থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং আসর ওয়াক্তে ফরজ নামাজ পড়া হলে তখন থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো ধরনের নফল নামাজ পড়া নিষেধ। এই পাঁচটি সময় বাদে অন্য যেকোনো সময় নফল নামাজ পড়া যায়। (আওকাতুস সালাত)।

নফল নামাজের নিয়ত

নফল নামাজগুলো অধিকাংশই সুন্নত। তাই নিয়তে সুন্নত বলা যাবে, নফল বললেও হবে; সুন্নত–নফল কোনো কিছু না বলে শুধু তাকবিরে তাহরিমা দিয়ে আরম্ভ করলেও হয়ে যাবে।

দুই রাকাতের বেশি নফল নামাজের নিয়ত করে তা ছেড়ে দিলে বা যেকোনো জোড় সংখ্যা পূর্ণ হওয়ার পর বিজোড় সংখ্যায় নফল নামাজ ভেঙে গেলে; পরে এ জন্য শুধু দুই রাকাত আদায় করা ওয়াজিব হবে। (হিদায়া)

নফল নামাজের সূরা কিরাআত

নফল নামাজ যেকোনো সূরা বা আয়াত দিয়ে পড়া যায়। নফল নামাজে সূরার তারতিব বা ধারাক্রম জরুরি নয়। নফল নামাজের সূরা কিরাআত নীরবে পড়তে হয়; তবে রাতের নফল নামাজ ইচ্ছা করলে সরবেও পড়া যায়। বিভিন্ন কিতাবে বিভিন্ন নফল নামাজের বিভিন্ন সূরা কিরাআত ও বিশেষ বিশেষ নিয়ম বর্ণিত আছে। সম্ভব হলে তা অনুসরণ করা উত্তম; তবে জরুরি নয়। নফল নামাজে যত ইচ্ছা তত দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করা যায়।

এতে রাকাত দীর্ঘ করার জন্য এবং তিলাওয়াতের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য একই রাকাতে বিভিন্ন সূরা ও বিভিন্ন আয়াত পড়া যায় এবং একই রাকাতে একই সূরা বারবার পড়া যায়। নফল নামাজে কিরাআতে তিলাওয়াতের তারতিব বা ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি নয়।

নফল নামাজে রুকু, সিজদাসহ প্রতিটি রুকন বা পর্ব দীর্ঘায়িত করা সুন্নত ও মোস্তাহাব। এ জন্য রুকু ও সিজদায় তাসবিহ অনেকবার পড়া যায় এবং অন্যান্য পর্বে বেশি পরিমাণে বিভিন্ন দোয়া (যা কোরআন-হাদিসে আছে) পাঠ করা যায়। (কানজ)

তাহিয়্যাতুল অজুর নামাজ

অজু করার পরপরই এই নামাজ দুই রাকাত পড়তে হয়। ওয়াক্ত মাকরুহ হলে, মাকরুহ ওয়াক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। নবী করিম (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু করে দুই রাকাত নামাজ ইখলাসের সঙ্গে পড়বে, তার বেহেশত লাভ হওয়া অবধারিত।’ (মুসলিম ও আবু দাউদ)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, যে ব্যক্তি অজু ভাঙার পর অজু করল না, সে আমাকে অবজ্ঞা করল; আর যে ব্যক্তি অজু করার পর দুই রাকাত (নফল) নামাজ পড়ল না, সেও আমাকে অবহেলা করল। (হাদিসে কুদসি)।

দুখুলিল মাসজিদের নামাজ

মসজিদে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে, বসার আগেই দুই রাকাত দুখুলিল মাসজিদ নামাজ পড়তে হয়। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন বসার আগেই তার দুই রাকাত নামাজ পড়া উচিত।’ (হাদিস)। তবে যদি মাকরুহ ওয়াক্ত হয়, তাহলে মাকরুহ ওয়াক্ত শেষ হলে পড়বে। এ জন্য বসে অপেক্ষা করতে পারবে। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)।

 

সালাতুস সফর এবং দুখুলিল মানজিল ও

খুরুজুল মানজিলের নামাজ

বাড়ি থেকে সফরে বের হওয়ার আগে চার রাকাত নফল নামাজ পড়া অতীব বরকতময়। এই নামাজকে সালাতুস সফর বা সফরের নামাজ বলা হয়। সফর থেকে বাড়ি ফিরলে বা সফরে গন্তব্যে পৌঁছালে অথবা সফরে কোথাও অবস্থান করলে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে।

এই নামাজকে সালাতু দুখুলিল মানজিল বা মঞ্জিলে প্রবেশের নামাজ বলে। একইভাবে বাড়ি থেকে সফরে বের হওয়ার সময় কিংবা সফর থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় বা সফরের মাঝে অবস্থান থেকে রওনা দেওয়ার সময় দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। এই নামাজকে সালাতুল খুরুজিল মানজিল বা মঞ্জিল থেকে প্রত্যাবর্তনের নামাজ বলে। (তান্বিহুল গাফিলিন)।

 

সালাতুল হাজাত

সালাতুল হাজাত প্রসঙ্গটি বুখারি, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, মিশকাতসহ বহু হাদিস গ্রন্থে রয়েছে। পাক-পবিত্র হয়ে দোয়া, ইস্তিগফার ও কয়েকবার দরুদ শরিফ পড়ে একাগ্রতার সঙ্গে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে।

নামাজ শেষে ১১ বার ‘ইয়া কাজিয়াল হাজাত’ (হে প্রয়োজন পূর্ণকারী) পড়বে এবং আরও কয়েকবার দরুদ শরিফ পড়ে ভক্তি ও মহব্বতের সঙ্গে উদ্দেশ্য পূর্ণ হওয়ার জন্য দোয়া ও মোনাজাত করতে হবে। ইনশা আল্লাহ মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে।

 

সালাতু কাজায়িদ দাঈন বা ঋণ পরিশোধের নামাজ

হজরত আবু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমার ঋণ আছে; কিন্তু তা পরিশোধ করার ক্ষমতা নেই। উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি দুই রাকাত করে চার রাকাত নামাজ আদায় করো; ইনশা আল্লাহ তোমার ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে।

 

সালাতুল ফাকা

হজরত হুসাঈন (রা.) পুত্র আলী (রা.) কে বলেন, বত্স! শোনো, যখন তোমার ওপর কোনো বালা-মুসিবত আপতিত হয় অথবা দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তখন তুমি চার রাকাত নফল নামাজ পড়বে। আলী ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি এই নামাজ পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার বিপদ ও অভাব দূর করবেন।

 

সালাতুস শোকর

মনের কোনো আশা বা ইচ্ছা পূর্ণ হলে অথবা কোনো বিপদাপদ বা বালা-মুসিবত দূর হলে এবং আল্লাহর তরফ থেকে কোনো নিয়ামতপ্রাপ্ত হলে দুই রাকাত শোকরানা নামাজ আদায় করতে হয়। একে সালাতুস শোকর বা কৃতজ্ঞতার নামাজ বলে।

 

সালাতুত তাওবা

সালাতুত তাওবা বিষয়টি আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদসহ অনেক গ্রন্থেই রয়েছে। কোনো গোনাহ হয়ে গেলে; দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে, তাওবা ইস্তিগফার করে, দরুদ শরিফ পড়ে কান্নাকাটিসহ আল্লাহর কাছে দোয়া ও মোনাজাত করলে আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন। এই নামাজকে সালাতুত তাওবা বা তাওবার নামাজ বলা হয়।

 

সালাতুল মাতার

হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আকাশে মেঘ দেখে যদি কোনো ব্যক্তি দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে; আল্লাহ তাকে বৃষ্টির প্রতি ফোঁটায় ১০টি করে নেকি দান করবেন। বৃষ্টির পানিতে গাছপালায় ও তৃণলতায় যত পাতা গজাবে প্রতি পাতার বিনিময়ে তাকে আরও ১০টি করে নেকি দেওয়া হবে।

 

সালাতুল নাউম

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি শোয়ার আগে দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তা তার জন্য এক হাজার দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) ও এক হাজার জামাকাপড় (পোশাক) দান করার চেয়ে উত্তম।

 

সালাতুল সাকরাতুল মউত

হাদিস শরিফে আছে, যে ব্যক্তি মাগরিব ও এশার মাঝখানে দুই রাকাত নামাজ পড়বে; তার মৃত্যুযন্ত্রণা কম হবে। (সূত্র: ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন, খাজিনাতুল আসরার, নফল সালাতের ফজিলত)।

 

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনীযুগ্ম মহাসচিব: বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক: আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।