Muhammad-মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সম্পূর্ণ জীবনী
Muhammad-মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সম্পূর্ণ জীবনী
লিখেছেন মনযূরুল হক
জানা যায়, নবীজির (সা.) জন্মের পরে দাদা আব্দুল মুত্তালিব নাম রেখেছিলেন ‘মুহাম্মাদ’। কুরআনে নবী ঈসা (আ.)-এর ভাষায় বলা হয়েছে ‘আহমাদ’। নবুয়তের পূর্বে তাকে ডাকা হতো ‘আল-আমিন’ বলে।
এক হাদিসে হজরত যুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, আমার পাঁচটি নাম রয়েছে, আমি ‘মুহম্মাদ’ ও ‘আহমাদ’ এবং আমি ‘মাহী’, যার আমার মাধ্যমে আল্লাহ কুফর মুছে দেন; এবং আমি ‘হাশির’, যেহেতু মানুষ পরকালে আমার ওপর নির্ভর করে সমবেত হবে; এবং আমি ‘আকিব’। [বুখারী, হাদিস ৩৫৩২]
হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের সামনে নিজের নাম এভাবে বলতেন, আমি মুহাম্মদ, আহমদ, মুকাফ্ফি, হাশির, নাবিউত তাউবা (তওবার নবী), নাবিউর রহমাহ (রহমতের নবী)।
হজরত জুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) বলেন, আল্লাহ নিজেই নবীজির নামা রেখেছেন রউফ ও রহিম। [মুসলিম, হাদিস ২৩৫৫] ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, এই নামগুলো সব গুণবাচক। তাই এগুলো শুধু পরিচয়ের জন্য দেওয়া সাধারণ নামই নয়; বরং প্রতিটি নামই এমন কোনো গুণ বোঝায়, যা তার প্রশংসা ও পূর্ণতাকে অপরিহার্য করে। [জাদুল মায়াদ, খন্ড, ১, পৃষ্ঠা ৮৬]
এ-কারণেই অনেক মানুষ তার জন্যে বিভিন্ন সম্মানজনক গুণবাচক নাম ব্যবহার করেছেন এবং এ-কাজকে তারা ভেবেছেন পুণ্যের কাজ। ইবনে দিহয়া তার রচনায় ‘মুফরাদুন ফি আসমাইন নাবাবিইয়া’ শিরোনামে লিখেছেন, অনেকের অভিমত, রাসুল (সা.)-এর নামের সংখ্যা আল্লাহর নামের মতো নিরানব্বইটি। তবে কেউ যদি গুণ ধরে ধরে তার নাম খোঁজে, তাহলে তা তিনশ’ হয়ে যাবে। [ফাতহুল বারী, খ- ৬, পৃষ্ঠা ৫৫৮]
আল্লামা কাসতালানি (রহ.) বলেন, আবু বকর ইবনে আরাবি রচিত ‘আহকামুল কুরআন’ গ্রন্থে আমি দেখেছি, কয়েকজন সুফি বলেছেন, আল্লাহর এক হাজার নাম রয়েছে এবং নবীজিরও রয়েছে একহাজার নাম। [আল-মাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যাহ, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১৪] তিনি তার ‘আল-মাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যাহ’ গ্রন্থে কাজি আয়াযের ‘শিফা’ গ্রন্থের অনুকরণে রাসুল (সা.)-এর চারশতাধিক নাম বর্ণনা করেছেন। [আল-মাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যাহ, খ- ২, পৃষ্ঠা ১৫-২১] এবং যেহেতু সেখানে অনেকগুলো নাম আল্লাহর নামের মতোই, তাই উভয়ের গুণাবলি ও নামের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখ করে তিনি একটি পৃথক অধ্যায় রচনা করেছেন, যেনো স্রষ্টা ও সৃষ্টির গুণের মধ্যে সমতা এসে না পড়ে। [কাজি আয়ায কৃত ‘আশ-শিফা’, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৩৮-৩৪০]
আল্লামা যুরকানি (রহ.) ইমাম গাজালির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, আমাদের জন্য রাসুল (সা.)-এর এমন নাম রাখা বৈধ নয়, যা তার পিতৃপুরুষ রাখেন নি, এমনকি তিনি নিজেও তার জন্যে রাখেন নি। অর্থাৎ আমাদের জন্য তার নাম রাখা বৈধ নয়, যদিও সে-নামটি সর্বস্ব গুণ প্রকাশ করে। যদি নবীর জন্য আমাদের পছন্দসই নাম রাখা বৈধ হয়, তাহলে অনেকেই হয়তো এমন নাম রেখে বসবে, যে নামের উপযুক্ত আল্লাহ ছাড়া কেউ নয়। এই উদাসীনতার ফলে সে বিরাট বিপদের মুখে পড়বে, অথচ সে বুঝতেও পারবে না, কী করেছে। [শারহুয যুরকানী আলাল মাওয়াহিব, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ১১৯] ইমাম যুরকানি (রহ.) যা বলেছেন, বাস্তবেও সেটাই সঠিক। যেহেতু নবীজির নাম কয়টি কী কী- এ বিষয়ে শরিয়তে সুস্পষ্ট বিবরণ রয়েছে।
আল কুরআনে মুহাম্মদ (সাঃ)-এর গুণবাচক নাম 15 টি
নিম্নেআল কুরআনে আলোচিতবিভিন্ন গুণবাচক নাম আলোচনা করা হলোঃ
১.মুহাম্মদঃ আল কুরআনে এনামটি চার বার এসেছে। যথাঃ সূরা আলে ইমরানঃ ১৪৪, সূরা আহজাবঃ ৪০, সূরা মুহাম্মদঃ ২,সূরা আল ফাতাহঃ ২৯। মুহাম্মদ অর্থ প্রশংসিত।
২. আহমাদঃ আহমাদ নামটি আল কুরআনে শুধু একবার সূরা সফে এসেছে।আহমাদ শব্দের দু’টি অর্থ। এক. ‘অধিক প্রশংসিত’, আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যিনিসবচেয়ে বেশি প্রশংসার যোগ্য। দুই. আল্লাহর সর্বাধিক প্রশংসাকারী। ‘আর স্মরণ করোঈসা ইবনে মারিয়ামের সেই কথা যা তিনি বলেছিলেনঃ ‘হে বনী ইসরাঈল! আমি তোমাদের কাছেআল্লাহর প্রেরিত রাসূল। আমি সেই তাওরাতের সত্যতা প্রতিপাদনকারী যা আমার আগে এসেছেএবং একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম ‘আহমাদ’। (সূরা সফ)
৩. নবীঃ ‘নাবা’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ সংবাদ। রাসূল সাঃ আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর বাণী পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। কোন পথেমানুষের মুক্তি এবং কোন পথে শয়তান ফাঁদ পেতে বসে আছে তার সংবাদবাহক রাসূল সাঃঅসংখ্য পথ ও মতের মধ্যে তিনি সঠ িক পথের সংবাদবাহক।
৪. রাসূলঃ দূত বা বার্তাবাহক। (হে নবী) ‘আমি তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ (সূরা নিসাঃ ৭৯) মানুষের শিক্ষা ও হিদায়াতের জন্য তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন বার্তাবাহক ছাড়া আর কিছু নহেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘(হে নবী) তুমি বলে দাও, আমি তোমাদেরই মতো মানুষ। আমি তো মানুষরাসূল ছাড়া কিছুই নই।’
৫. মুয্যাম্মিলঃ চাঁদর আবৃতব্যক্তি। ‘হে চাদর আবৃতকারী, রাত্রির কিয়দংশ জাগো, অর্ধেক রাত্রি অথবা তার চেয়েকিছু কম অথবা কিছু বেশি এবং তারতিলের সাথে কুরআন তেলাওয়াত করো। নিশ্চয় আমি তোমারওপর গুরুভার দায়িত্ব অর্পণ করেছি।’ (সূরা মুয্যাম্মিলঃ ১)
৬.মুদ্দাসসিরঃ বস্ত্র মুড়িদিয়ে শয়নকারী। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে বস্ত্র মুড়ি দিয়ে শয়নকারী, ওঠো এবং সাবধানকরে দাও, তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো, তোমার পোশাক পবিত্র রাখো,অপবিত্রতা থেকে দূরে থাক।’ (সূরা মুদ্দাস্সিরঃ ১-৫)
৭. শাহিদঃসাক্ষ্যদানকারী। ‘হে নবী নিশ্চয়ই আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা।’ (সূরা আহজাবঃ৪৫) অর্থাৎ আল্লাহর শিক্ষা ও হিদায়াতের সাক্ষ্যদানকারী, ইসলামের রূপরেখা বা চিত্রেরজ্বলন্ত নমুনা।
৮.বাশির ও মুবাশ্বিরঃ সুসংবাদদানকারী। তিনি সৎকর্মশীলদের কল্যাণ ও সৌভাগ্যের সুসংবাদদানকারী। ‘হে নবীনিশ্চয়ই আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সুসংবাদদানকারী হিসেবে।’ (সূরা আহজাবঃ ৪৫) প্রকৃতইরাসূলুল্লাহ সাঃ-এর পয়গাম ছিল মানবজাতির জন্য অনেক বড় সুসংবাদ।
৯. মুনজির ও নাজিরঃ ভীতি প্রদর্শনকারী। অর্থাৎ এখনো যারা সত্যসম্পর্কে অজ্ঞ, রাসূল সাঃ ছিলেন তাদের সতর্ক ও সাবধানকারী। ‘হে নবী আমি আপনাকেপাঠিয়েছি ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে।’ (সূরা আহজাবঃ ৪৫)
১০. আমিনঃ বিশ্বস্ত। নবী আকরাম সাঃ তাঁর উন্নত চরিত্র ওমাধুর্যমণ্ডিত স্বভাবের কারণে স্বতন্ত্র এবং বিশিষ্ট ছিলেন। তিনি ছিলেন সবার চেয়েঅধিক বক্তিত্ব সম্পন্ন, সবার জন্য নিরাপদ ও বিশ্বস্ত আশ্রয়স্থল। আরো ছিলেন একজন সম্মানিত প্রতিবেশী, বন্ধুভাবাপন্ন মানুষ, সর্বাধিক দূরদর্শিতাসম্পন্ন জ্ঞানী, সত্যবাদী, কোমল প্রাণ ও পবিত্র পরিচ্ছন্ন মনের অধিকারী। অঙ্গীকার পালনে, প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ও আমানত আদান প্রদানে তিনি ছিলেন অতুলনীয়। তাই স্বজাতির লোকেরা তাঁকে আল আমিন নামে ভূষিত করেন।
১১. হাদিঃ পথ প্রদর্শকঃ রাসূল সাঃ ছিলেন সিরাতুল মুস্তাকিমেরপ্রদর্শক। মানবজাতি যখন আদিম জাহেলিয়াতের কোলে ঘুম গিয়েছিল, সভ্যতা যখন প্রগাঢ়অন্ধকারে ডুবেছিল, চারদিকে বিরাজ করছিল উত্তেজনা, মানুষ মানুষে সঙ্ঘাত, যুদ্ধ ওলুটপাটের তাণ্ডবে মেতে উঠেছিল, অসংখ্য পথ ও মতের যাঁতাকলে মানুষের নাভিশ্বাস শুরুহয়েছিল, তখন লাখো চাঁদের আলো নিয়ে হেরা থেকে নেমে এলেন সিরাতুল মুস্তাকিমেরপ্রদর্শক মুহাম্মদ সাঃ। লক্ষ্যচ্যুত জাতিকে তিনি পথের দিশা দিলেন।
১২. নূরঃ আলো। রাসূল সাঃ অন্ধকার পৃথিবীর এক আলোকিত মহামানব।তাঁর আগমনের পর সব অন্ধকার দূরীভূত হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা তাঁর আগমনে বলেছেন,‘সত্য এসেছে, মিথ্যা অপসৃত হয়েছে, মিথ্যা তো পরাজয় ধ্বংস হবেই।’ তাঁর শিক্ষা ওচরিত্র যেমন ছিল আলোকিত ও ঝলমল, তেমনি তাঁর বাস্তব অবয়বও ছিল সূর্য ঝিকমিক। তাঁরচলনে-বলনে, আচার আচরণে লক্ষ চাঁদের আলো এসে আছড়ে পড়ত। তাঁর দৈহিক সৌন্দর্যসম্পর্কে আবু কারসনার মা ও খালা বলেন, ‘আমরা এমন সুদর্শন মানুষ আর দেখিনি। আমরা ওরমুখ থেকে আলো বিকীর্ণ হতে দেখেছি।’ হজরত আবু হোরায়রা বলেন, ‘রাসূল সাঃ-এর চেয়েসুদর্শন কাউকে দেখিনি। মনে হতো যেন সূর্য ঝিকমিক করছে।’
১৩. সিরাজুম মুনিরাঃ মূর্তিমান আলোক ও প্রদীপ। অর্থাৎ তাঁরব্যক্তিত্ব ও জীবন আমাদের পথের অন্ধকার দূরীভূতকারী উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। ‘হে নবীআমি তোমাকে সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদদানকারী ও সতর্ককারী, আল্লাহর নির্দেশে তাঁরদিকে আহ্বানকারী এবং উজ্জ্বল প্রদীপ বানিয়ে পাঠ িয়েছি। (সূরা আহজাবঃ ৪৫-৪৬)
১৪. দায়ী ইলাল্লাহঃ আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী। অর্থাৎ পথভ্রষ্ঠলোকদেরকে আল্লাহ পথে আহবানকারী। পথহারা মানুষকে তিনি সঠিক ঠ িকানায় পৌঁছে দিয়েছেন।‘হে নবী আমি তোমাকে সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদদানকারী এবং সতর্ককারী, আল্লাহরনির্দেশে তাঁর দিকে আহ্বানকারী ও উজ্জ্বল প্রদীপ বানিয়ে পাঠিয়েছি। (সূরা আহজাবঃ৪৫-৪৬)
১৫. রহমতঃ অনুগ্রহ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘(হে নবী) আমি যেতোমাকে পাঠিয়েছি, এটা আসলে দুনিয়াবাসীর জন্য আমার রহমত।’ (সূরা আম্বিয়াঃ ১০৭) হজরতমুহাম্মদ সাঃ আগমন আসলে সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত বা অনুগ্রহ। কারণতিনি এসে অন্ধকারে নিমজ্জিত বিশ্বকে জাগিয়ে তুলেছেন। বিশ্বমানবতা যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছিল, এই বুঝি আদ-সামুদ জাতির ভাগ্যবরণ করতে যাচ্ছে, অকস্মাৎআল্লাহর গজব এসে আছড়ে পড়বে হয়তো এখনি। কিন্তু রাসূল সাঃ-এর কারণে সমগ্র মানব জাতি অবশ্যম্ভাবী এক ধ্বংস থেকে মুক্তি পেল। ব্যক্তি হিসেবে তিনি ছিলেন করুণার আধার। তাঁর চাচা আবু তালিব কোনো এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায়ই বলতেন, ‘তিনি সুদর্শন,তাঁর চেহারা থেকে বৃষ্টির করুণা প্রত্যাশা করা হয়। তিনি এতিমদের আশ্রয় তিনিবিধবাদের রক্ষাকারী।
আল্লাহর অসংখ্য গুনবাচক নাম রয়েছে, আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এরও অসংখ্য গুনবাচক নাম রয়েছে তবে আল্লাহ তায়ালার যত গুলি গুনবাচন নাম আছে সবগুলিই হল আল্লাহর নিজস্ব সত্তাগত নাম, যা সৃষ্ট বা মাখলুক নয়। পক্ষান্তরে মহানবীর যতগুলি গুন আছে গুনবাচন নাম আছে সবই হল আল্লাহ প্রদত্ত এবং আল্লাহ দ্বারা সৃষ্ট বা মাখলুক।
ইমাম কাসতালানী মাওয়াহেবুল লাদুন্নিয়া কিতাবে উল্লেখ করেন মহানবীর গুনবাচন নামের সংখ্যা ৩৩৭টি এবং উপনাম হল ৪টি।
ইমাম সুয়ুতী (রহঃ) বলেন মহানবীর গুনবাচন নামের সংখ্যা ৩৪০টি এবং উপনাম হল ৪টি।
ইমাম সালিহি (রহঃ) বলেন মহানবীর গুনবাচন নামের সংখ্যা ৭৫৪টি এবং উপনাম হল ৪টি।
আল্লামা ইবনে ফারিসের মতে মহানবীর গুনবাচন নামের সংখ্যা ১২০০টি।
কাযী আবুবকর ইবনু আরাবী তিরমিযি শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থে এবং আল্লামা আহমদ রেজা খান (রহঃ) উভয়ে বলেন মহানবীর গুনবাচক নাম ১ হাজার।
শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী (রহঃ) বলেন মহানবীর গুনবাচন নাম হল ৫০০টি।
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (স.) এর জীবনী
237. প্রশ্নঃ আমাদের প্রিয় নবীজীর নাম কি?
উত্তরঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
238. প্রশ্নঃ তাঁর পিতা- মাতা ও দাদার নাম কি?
উত্তরঃ পিতাঃ আবদুল্লাহ, মাতাঃ আমেনা, দাদাঃ আবদুল
মুত্তালিব।
239. প্রশ্নঃ তাঁর দুধমাতার নাম কি?
উত্তরঃ প্রথম দুধমাতা ছুওয়াইবা (আবু লাহাবের
কৃতদাসী) তারপর হালিমা সাদিয়া (রাঃ)।
240. প্রশ্নঃ আমাদের প্রিয় নবীজীর নাম কয়টি ও
কি কি?
উত্তরঃ পাঁচটি। মুহাম্মাদ, আহমাদ, মাহী, হাশের,
আক্বেব (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। (বুখারী)
241. প্রশ্নঃ তিনি কখন জন্মলাভ করেন?
উত্তরঃ ৯ই রবিউল আওয়াল। মতান্তরে ১২ই রবিউল
আওয়াল সোমবার দিন। ৫৭০ মতান্তরে ৫৭১খৃঃ। হস্তি
বছর।
242. প্রশ্নঃ জন্মলাভের পর কে তাঁর লালন-
পালনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন?
উত্তরঃ দাদা আবদুল মুত্তালিব।
243. প্রশ্নঃ কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)এর নাম মুহাম্মাদ রাখেন?
উত্তরঃ দাদা আবদুল মুত্তালিব।
244. প্রশ্নঃ নবীজীর কত বছর বয়সে তাঁর পিতা-
মাতা ইন্তেকাল করেন?
উত্তরঃ তাঁর জন্মের পূর্বে পিতা এবং তাঁর বয়স ৬
বছর হলে মাতা ইন্তেকাল করেন।
245. প্রশ্নঃ নবীজীর কত বছর বয়সে তাঁর দাদা
আবদুল মুত্তালেব ইন্তেকাল করেন?
উত্তরঃ তখন তাঁর বয়স ৮ বছর।
246. প্রশ্নঃ দাদা আবদুল মুত্তালেব ইন্তেকাল করার
পর কে তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন?
উত্তরঃ চাচা আবু তালেব।
247. প্রশ্নঃ নবীজী কত বছর বয়সে চাচা আবু
তালেবের সাথে শাম দেশ (সিরিয়া) সফর করেন?
উত্তরঃ ১২ বছর বয়সে।
248. প্রশ্নঃ কৈশরে নবীজী কি কাজ করতেন?
উত্তরঃ অল্প বেতনে মক্কাবাসীদের ছাগল
চরানোর কাজ করতেন।
249. প্রশ্নঃ কৈশরে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) পিতৃব্যদের সাথে একটি যুদ্ধে অংশ নেন।
যুদ্ধটির নাম কি?
উত্তরঃ হারবুল ফুজ্জার।
250. প্রশ্নঃ হিলফুল ফযূল কি?
উত্তরঃ মক্কার সম্মানিত লোকেরা অত্যাচারিতের
সাহায্য করার জন্য একটি চুক্তি সম্পাদন করে তাকে
হিলফুল ফযূল বলা হয়। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) পিতৃব্যদের সাথে এই চুক্তিতে অংশ গ্রহণ
করেন।
251. প্রশ্নঃ নবূওতের পূর্বে নবীজীর একটি
বিচক্ষণতা পূর্ণ ফায়সালার বিবরণ দাও?
উত্তরঃ তাঁর বয়স ৩৫ বছর। সে সময় কাবা সংস্করণ করা
হয়। শেষে কে হজরে আসওয়াদ স্থাপন করে
সম্মানিত হবে এনিয়ে মক্কার লোকেরা বিবাদে
লিপ্ত হলে নবীজী তাদের মাঝে মিমাংসা করে
দেন। একটি চাদরে পাথরটি রেখে সকল
গোত্রের প্রধানদের তার কিনারা ধরে নিয়ে
যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং তিনি নিজ হাতে পাথরটি
স্থাপন করেন। এতে সবাই খুশি হয়।
252. প্রশ্নঃ যুবক বয়সে নবীজী কি কাজ
করতেন?
উত্তরঃ ব্যবসা।
253. প্রশ্নঃ তিনি কখন কার সাথে বিবাহ বন্ধনে
আবদ্ধ হন?
উত্তরঃ তাঁর বয়স যখন ২৫ বছর তখন খাদিজা (রাঃ) এর
সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সে সময় খাদিজার
বয়স ছিল ৪০।
254. প্রশ্নঃ তাঁর কতজন স্ত্রী ছিলেন? তাঁদের
নাম কি?
উত্তরঃ ১১ জন। তাঁরা হচ্ছেনঃ
1- খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ
2- সাওদা বিনতে যামআ
3- আয়েশা বিনতে আবু বকর
4- যায়নাব বিনতে খুযায়মা (উম্মুল মাসাকীন)
5- হাফছা বিনতে ওমর বিন খাত্তাব
6- যায়নাব বিনতে জাহাশ
7- উম্মু সালামা হিন্দ বিনতে আবী উমাইয়া
8- জুআইরিয়া বিনতে হারেছ
9- ছাফিয়া বিনতে হুওয়াই বিন আখতাব
10- মায়মূনা বিনতে হারেছ
11- উম্মে হাবীবা রামলা বিনতে আবী সুফিয়ান।
(রাঃ)
255. প্রশ্নঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর
সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ স্ত্রীর নাম কি?
উত্তরঃ সর্ব প্রথম স্ত্রী ছিলেন, খাদিজা (রাঃ) এবং
সর্বশেষে যাকে বিবাহ করেছিলেন তিনি ছিলেন,
মায়মূনা বিনতে হারেছ (রাঃ)।
256. প্রশ্নঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর
একমাত্র কুমারী স্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তরঃ আয়েশা (রাঃ)
257. প্রশ্নঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)এর কতজন সন্তান
ছিলেন?
উত্তরঃ ৭ জন। কাসেম, আবদুল্লাহ, যায়নাব, উম্মু
কুলছুম, রুকাইয়া, ফাতেমা ও ইবরাহীম (রাঃ)।
258. প্রশ্নঃ নবীজীর নাতী-নাতনীর সংখ্যা কত
ছিল?
উত্তরঃ ৭ জন। যায়নাবের সন্তান দুজনঃ আলী ও
উমামা। রুকাইয়্যার সন্তান একজনঃ আবদুল্লাহ (শিশুবস্থায়
তিনি মৃত্যু বরণ করেন) ফাতিমার সন্তান চার জনঃ হাসান,
হুসাইন, উম্মে কুলছুম, যায়নাব।
259. প্রশ্নঃ কতবার এবং কখন নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বক্ষ বিদীর্ণ করা হয়?
উত্তরঃ দুবার। একবার শিশুকালে চার বছর বয়সে এবং
দ্বিতীয়বার মেরাজে যাওয়ার সময়।
260. প্রশ্নঃ নবুওতের পূর্বে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে ইবাদত করতেন?
উত্তরঃ ইবরাহীম (আঃ) এর দ্বীন অনুসারে ইবাদত
করতেন।
261. প্রশ্নঃ কোন পাহাড়ের কোন গুহায়
নবীজী ধ্যানমগ্ন থাকতেন?
উত্তরঃ নূর পাহাড়ের হেরা গুহায়।
262. প্রশ্নঃ কত বছর বয়সে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর উপর ওহী নাযিল হয়?
উত্তরঃ ৪০ বছর ৬ মাস ১২ দিন।
263. প্রশ্নঃ কখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)এর উপর ওহী নাযিল হয়?
উত্তরঃ ২১ রামাযানের রাতে সোমবার। ১০ আগস্ট
৬১০ খৃষ্টাব্দ।
264. প্রশ্নঃ গারে হেরা থেকে ফিরে এলে
স্ত্রী খাদিজা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)কে নিয়ে কার কাছে গমণ করেন এবং তিনি
কি বলেন?
উত্তরঃ ওরাকা বিন নওফলের নিকট। তিনি বলেন, ইনি এ
উম্মতের নবী।
265. প্রশ্নঃ নবুওত লাভের পর নবীজী কিভাবে
মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন?
উত্তরঃ গোপনে।
266. প্রশ্নঃ সাহাবীদের সাথে গোপনে
কোথায় মিলিত হতেন?
উত্তরঃ আরকাম বিন আবুল আরকামের গৃহে।
267. প্রশ্নঃ গোপন দাওয়াতের সময় কাল কত বছর
ছিল?
উত্তরঃ ৩ বছর।
268. প্রশ্নঃ মক্কী জীবনের দাওয়াতী কাজ
কয়টি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল? প্রত্যেক পর্যায়ের
সময়কাল কত ছিল?
উত্তরঃ ৩টি পর্যায়ে।
ক) গোপন দাওয়াত প্রথম তিন বছর।
খ) মক্কাবাসীদের মাঝে প্রকাশ্যে দাওয়াত।
নবুওতের ৪র্থ বছর থেকে ১০ম বছর পর্যন্ত।
গ) মক্কার বাইরে দাওয়াত। নবুওতের ১০ম বছরের
শেষ সময় থেকে হিজরতের পূর্ব পর্যন্ত।
269. প্রশ্নঃ সর্বপ্রথম কারা ইসলাম গ্রহণ করেন?
উত্তরঃ সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন:
নারীদের মধ্যে খাদীজা (রাঃ)
পুরুষদের মধ্যে আবু বকর (রাঃ)
বালকদের মধ্যে আলী (রাঃ)
ক্রীতদাসদের মধ্যে যায়দ বিন হারেছা (রাঃ)
270. প্রশ্নঃ কাফের হওয়া সত্বেও দাওয়াতী কাজে
কে নবীজীকে সহযোগিতা করেন?
উত্তরঃ চাচা আবু তালেব।
271. প্রশ্নঃ সর্বপ্রথম মুসলমানগণ কোথায় হিজরত
করেন এবং কখন?
উত্তরঃ নবুওতের ৫ম বর্ষে সর্বপ্রথম মুসলমানগণ
হাবশায় (বর্তমানে আফ্রিকার ইথিউপিয়া নামক দেশ)
হিজরত করেন।
272. প্রশ্নঃ আবিসিনয়া বা হাবশার দ্বিতীয় হিজরতে
কতজন পুরুষ ও কতজন নারী ছিলেন?
উত্তরঃ ৮৩ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারী ছিলেন।
273. প্রশ্নঃ কেন সেই দেশে হিজরত করার
জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সাহাবীদেরকে পরামর্শ দেন?
উত্তরঃ কেননা সেখানকার বাদশা নাজ্জাশী ন্যায়
পরায়ন ও দয়ালু লোক ছিলেন।
274. প্রশ্নঃ কোথায় কতদিন নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বয়কট করে রাখা হয়েছিল?
উত্তরঃ নবুওতের ৭ম থেকে ১০ম বছর পর্যন্ত ৩
বছর শেবে আবী তালেবে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বয়কট করে রাখা হয়েছিল।
275. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)এর নবুওতী জীবনের কোন সময়কে
আমুল হুযন বা দুশ্চিন্তার বছর বলা হয়?
উত্তরঃ ১০ম বছরকে। সে বছর তাঁর জীবন
সঙ্গীনী খাদিজা (রাঃ) ও তাঁকে সহযোগিতাকারী
আবু তালেব মৃত্যু বরণ করেন। আর তখন
থেকেই নেমে আসে তাঁর প্রতি অবর্ণনীয়
নির্যাতন।
276. প্রশ্নঃ কোন কোন কাফের রাসূল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সবচেয়ে
বেশী কষ্ট দিয়েছিল?
উত্তরঃ আবু লাহাব, আবু জাহেল, উক্ববা বিন আবী
মুআইত্ব, ওতবা, শায়বা, উমাইয়া বিন খালাফ।
277. প্রশ্নঃ একজন কাফের রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)কে খুবই কষ্ট দিত। তার ধ্বংসের জন্য
তার নামে কুরআনে একটি সূরা নাযিল হয়। ঐ
কাফেরের নাম কি এবং সূরাটির নাম কি?
উত্তরঃ কাফেরের নামঃ আবু লাহাব। সূরাটির নামঃ সূরা
লাহাব।
278. প্রশ্নঃ নবীজী কখন মেরাজে গমণ
করেন ?
উত্তরঃ নবুওতের ১০ম বছরে।
279. প্রশ্নঃ আক্বাবার প্রথম বায়আত কখন অনুতি হয়?
উত্তরঃ নবুওতের ১১তম বছরে।
280. প্রশ্নঃ আক্বাবার প্রথম বায়আতে কোন্
গোত্র থেকে কতজন লোক অংশ
নিয়েছিলেন?
উত্তরঃ মদীনার আওস ও খাজরায গোত্রের ১২
জন লোক।
281. প্রশ্নঃ আক্বাবার দ্বিতীয় বায়আত কখন অনুতি
হয়?
উত্তরঃ নবুওতের ১২তম বছরে মিনায় আক্বাবার
দ্বিতীয় বায়আত অনুতি হয়।
282. প্রশ্নঃ এই বায়আতে কতজন লোক অংশ
নিয়েছিলেন?
উত্তরঃ মদীনার আওস ও খাজরায গোত্রের ৭৩
জন পুরুষ ও ২ জন নারী এতে অংশ নিয়েছিলেন।
283. প্রশ্নঃ নবীজী নবুওতের কত বছর মক্কায়
অতিবাহিত করেন?
উত্তরঃ ১৩ বছর।
284. প্রশ্নঃ নবীজী কত বছর মদীনায় কাটান?
উত্তরঃ ১০ বছর।
285. প্রশ্নঃ কখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)কে হিজরতের আদেশ করা হয়?
উত্তরঃ মক্কার কুরায়শগণ দারুন্নদওয়ায় বসে সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করে যে তারা একযোগে মুহাম্মাদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে হত্যা করবে।
তখন আল্লাহ তাকে মক্কা পরিত্যাগ করার নির্দেশ
প্রদান করেন।
286. প্রশ্নঃ নবীজী কখন মক্কা ছেড়ে
মদীনায় হিজরত করেন?
উত্তরঃ ছফর মাস ১ম হিঃ। ৬২২ খৃষ্টাব্দ।
287. প্রশ্নঃ হিজরতের পূর্বে নবীজী কাকে
তাঁর বিছানায় শায়িত রেখে গিয়েছিলেন?
উত্তরঃ আলী (রাঃ)কে।
288. প্রশ্নঃ নবীজীর হিজরতের সময় সফর
সঙ্গী কে ছিলেন?
উত্তরঃ আবু বকর (রাঃ)।
289. প্রশ্নঃ হিজরতের সময় তিনি কোন গুহায় কত
দিন আত্মগোপন করেন?
উত্তরঃ গারে ছাওরে। তিন দিন।
290. প্রশ্নঃ হিজরতের সময় নবীজী রাস্তা
দেখানোর জন্য একজন কাফেরকে
পথপ্রদর্শক হিসেবে ভাড়া করে ছিলেন। তার নাম
কি?
উত্তরঃ আবদুল্লাহ বিন উরাইকাত।
291. প্রশ্নঃ নবীজীকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য
কাফেরগণ কি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিল?
উত্তরঃ ১০০ উট।
292. প্রশ্নঃ নবীজীর উটনীর নাম কি ছিল?
উত্তরঃ কাছওয়া।
293. প্রশ্নঃ নবীজী কখন মদীনায় পৌঁছেন?
উত্তরঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবু
বকর (রাঃ) সোমবার দিন ৮ রবিউল আওয়াল প্রথম
মদীনার কুবায় পৌঁছেন।
294. প্রশ্নঃ নবীজি কখন মদীনায় প্রবেশ
করেন?
উত্তরঃ ১২ই রবিউল আওয়াল। শুক্রবার দিন।
295. প্রশ্নঃ নবীজী মদীনায় গিয়ে কার বাড়িতে
অবস্থান করেন?
উত্তরঃ আবু আইয়্যুব আনছারীর (রাঃ) বাড়িতে।
296. প্রশ্নঃ নবীজী সর্বপ্রথম কোন মসজিদটি
নির্মাণ করেন?
উত্তরঃ মসজিদে কূবা।
297. প্রশ্নঃ মদীনায় গিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্থানীয় ইহুদীদের সাথে
একটি চুক্তি সম্পাদন করেন। ইসলামের ইতিহাসে
এটাকে কি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে?
উত্তরঃ মদীনার সনদ।
298. প্রশ্নঃ নবীজী কতবার ওমরা করেন?
উত্তরঃ চার বার।
299. প্রশ্নঃ নবীজী কতবার হজ্জ করেন?
উত্তরঃ একবার। বিদায় হজ্জ ১০ম হিজরী।
300. প্রশ্নঃ বিদায় হজ্জে কতজন লোক নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে হজ্জ
করেছেন?
উত্তরঃ ১ লক্ষ লোক। অন্য বর্ণনায় ১ লক্ষ ৪৪
হাজার।
301. প্রশ্নঃ নবীজী কতটি রামাযান রোযা
রাখেন?
উত্তরঃ নয়টি রামাযান।
302. প্রশ্নঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) কখন মৃত্যু বরণ করেন?
উত্তরঃ ১২ই রবিউল আওয়াল। সোমবার। ১১ হিজরী।
303. প্রশ্নঃ মৃত্যুর সময় নবীজীর বয়স কত ছিল?
উত্তরঃ ৬৩ বছর।
304. প্রশ্নঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)কে কোথায় দাফন করা হয়েছে?
উত্তরঃ তাঁর নিজ গৃহে তথা আয়েশা (রাঃ) এর গৃহে।
305. প্রশ্নঃ নবীজীর নামাযে জানাযা কে
পড়িয়েছে?
উত্তরঃ নির্দিষ্টভাবে কোন ইমাম ছিল না। এককভাবে
লোকেরা আয়েশা (রাঃ)এর গৃহে প্রবেশ করেন
এবং জানাযা পড়েন।
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর শিশুপ্রেম
মাওলানা এএইচএম আবুল কালাম আযাদ : বিশ্বনবী মুহম্মদ (সা:) শিশুদের মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন, স্নেহ করতেন। যেকোনো শিশুকে তিনি নিজের সন্তানের ন্যায় আদর-সোহাগও করতেন। নিষ্পাপ শিশু-কিশোরদের মন খুবই সরল, কোমল ও পবিত্র। তিনি বলতেন ‘শিশুরা বেহেশতের প্রজাপতি।’ অর্থাৎ প্রজাপতিরা যেমন তাদের সুন্দর শরীর আর মন নিয়ে ফুলবনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, শিশুরাও তেমনি তাদের সুন্দর মন নিয়ে পৃথিবীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। প্রজাপতির স্বভাব যেমন নিষ্কলুষ, শিশুরাও তেমনি নিষ্কলুষ ।
সন্তানের প্রতি রাসূলুল্লাহর সা: ভালবাসা: রাসূলুল্লাহ (সা.) শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন ও স্নেহ করতেন। বিশিষ্ট সাহাবি হজরত আনাস (রা:) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে আর কাউকেও সন্তানের প্রতি এত অধিক স্নেহ-ভালোবাসা প্রকাশ করতে দেখিনি।’ তিনি প্রাণপ্রিয় কন্যা ‘খাতুনে জান্নাত’ হযরত ফাতেমা (রা:) কে খুবই স্নেহ করে প্রায়ই বলতেন, ‘ফাতেমা আমার কলিজার টুকরা’। শিশু ফাতেমা (রা.) যখন তাঁর কাছে যেতেন, তিনি উঠে দাঁড়াতেন এবং ফাতেমার হাত ধরে চুমু দিয়ে তাকে মজলিসে বসাতেন।’ (আবু দাউদ) রাসূলুল্লাহ (সা:) বলতেন, ‘সন্তান-সন্ততিকে সম্মান করো এবং তাদের উত্তম শিষ্টাচার শিক্ষা দাও।’ (ইবনে মাজা)
অন্য ধর্মের শিশুদের প্রতি রাসূলুল্লাহর সা: ভালবাসা: মহানবী (সা:) মুসলিম শিশুদের যেমনীভাবে ভালোবাসতেন, ঠিক তেমনী অন্য ধর্মের শিশুদেরও গভীরভাবে ভালবাসতেন। যেকোনো শিশু পেলে তাকে জড়িয়ে ধরতেন ও আদর-স্নেহ করতেন, কোলে তুলে নিতেন, চুমু খেতেন, সুন্দর নামে ডাকতেন। সফর থেকে ফেরার পর ছোট ছেলেমেয়েদের উটের সামনে-পেছনে বসাতেন এবং তাদের সঙ্গে কৌতুক করে আনন্দ করতেন। শিশুদের প্রতি দয়ামায়া প্রদর্শন সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে শিশুদের প্রতি দয়া করে না, তাকে দয়া করা হয় না।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি)
নবীজীর (সা.) কাছে শিশু তো শিশুই। তার কোনো জাত-পাত, ধর্মাধর্ম ছিল না। বিধর্মী ও কাফেরদের শিশু সন্তানদের প্রতিও তাঁর সমান স্নেহবোধ ছিল। তাদেরকেও তিনি সমান আদর করতেন। তাঁর কাছে একদা একটি শিশুকে আনা হলে তিনি তাকে চুম্বন করেন এবং বলেন ‘এরা মানুষকে ভীরু ও কৃপণ করে দেয়, আর এরা হলো আল্লাহ্র ফুল।’ নবী করিম (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘প্রত্যেক জন্ম নেওয়া শিশু ফিতরাত তথা সহজাত সত্য গ্রহণ করার ক্ষমতা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে, কিন্তু তার পিতামাতা হয় তাকে ইহুদি বা খ্রিষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক বানায়।’ (বুখারী ও মুসলিম)
ইয়াতিম শিশুদের প্রতি রাসূলুল্লাহর সা: ভালবাসা: নবী করিম সা: অবহেলিত শিশুদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা ও বিনোদনের যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা ও ভালবাসা দিয়ে ধর্মে-কর্মে যথার্থ মানুষ হিসেবে গঠন করেছিলেন।
সব শিশুদের প্রতি রাসূলুল্লাহর (সা:) ভালবাসা থাকলেও এতিম শিশুদের প্রতি তাঁর দরদটা ছিল আরও বেশি। এক ঈদের দিনে সকালবেলা নবীজী (সা:) দেখলেন, রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে একটা শিশু কাঁদছে। পরনে তার ছিন্ন বস্ত্র। সারা শরীর কাদায় ঢাকা। শিশুটির কাছে যেয়ে জিজ্ঞাসা করে তিনি জানতে পারলেন, ছেলেটি এতিম। অর্থাৎ তার মা বাবা কেউ নেই। এ কথা শুনে তাঁর খুব খারাপ লাগলো। শিশুটির প্রতি তাঁর মায়া হলো। তাকে সাথে করে বাড়িতে নিয়ে এলেন। স্ত্রী আয়েশাকে (রা:) বললেন, শিশুটিকে ভালোভাবে গোছল করিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়ে দিতে। হযরত আয়েশা (রা:) তাকে তেমনিভাবে করিয়ে দেওয়ার পর তিনি নিজ হাতে তাকে নতুন পোশাক পরিয়ে ঈদের নামাজ পড়তে নিয়ে গেলেন। আদর করে শিশুটিকে বললেন ‘আজ থেকে আমি তোমার বাবা আর আয়েশা তোমার মা।’
কোনো দুঃখী মানুষের কষ্ট দেখলে নবীজীর (সা:) কষ্ট তো হতোই, বিশেষ করে কোনো শিশুর কষ্ট দেখলে, তাঁর দুই চোখ অশ্রুতে ভরে যেতো। চলারপথে কোনো শিশুকে কাঁদতে দেখলে, তাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করতেন।
শুধুমাত্র নিজের বাচ্চাদের ভালোবাসলেই হবে না। ইসলামের দৃষ্টিতে সব শিশুর প্রতি স্নেহ ও ভালোবাসা দেখাতে হবে আমাদের। বিশেষ করে যেসব শিশুর বাবা বেঁচে নেই কিংবা বাবা-মা কেউই বেঁচে নেই, সেসব অনাথ শিশুদের প্রতি আমাদের মমত্ববোধ প্রকাশ করতে হবে। তাদের খোঁজখবর নিতে হবে এবং প্রয়োজনে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মহানবী সা. বলেন, ‘আমি এবং এতিমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব। একথা বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলির মধ্যে সামান্য ফাঁক রাখলেন। (বোখারী: ৪৯৯৮)।
শিশুদের সাথে রাসূলুল্লাহর সা: খেলাধুলা করা: তিনি বলেন ‘শিশুদেরকে যে ভালোবাসে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ শিশুদেরকে দেখলে তিনি আদর করতেন। দু’হাত মেলে দিতেন তাদের দিকে। তারপর বলতেন ‘দেখিতো, কে আগে আমার কাছে পৌঁছাতে পারো।’ সব শিশুরা একসাথে দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়তো। কেউ তাঁর কোলে, কেউ তাঁর কাঁধে, কেউ তাঁর বুকে। কেউ ঝুলে পড়তো তাঁর গলায়। এসব শিশুদের অনেককেই তিনি হয়তো চিনতেন না। কিন্তু তাদের সবাইকে নিয়ে তিনি আদর করতেন। সবার সাথে আনন্দ করে খেলাধুলা করতেন।
শিশু হাসান (রা:) ও হোসেন (রা:) ছিলেন নবীজীর (সা:) নাতি। নবীজী (সা:) তাঁদেরকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। তাঁদের দুইজনকে নিয়ে প্রায় সময় তিনি মজার মজার খেলা করতেন। নানা নিজে হামাগুড়ি দিয়ে ঘোড়া সাজতেন। দুই নাতি পিঠে সওয়ার হতেন।
অনেক সময় নবীজী (সা:) যখন নামাজে সেজদায় যেতেন, শিশু দুই নাতি তাঁর পিঠে চড়ে বসতেন। তাঁরা তাঁর পিঠ থেকে না নামা পর্যন্ত তিনি সেজদারত অবস্থায় থাকতেন। কিন্তু কখনোই তিনি বিরক্তিবোধ করতেন না। নিষেধও করতেন না।
শিশুদের চুমু খাওয়া: তিনি সবার সাথে আনন্দ করে খেলাধুলা করতেন শুধু তাই নয়, তাঁদেরকে কোলে নিয়ে তিনি চুমুও খেতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণিত, তিনি বলেন, কিছু বেদুঈন লোক রাসুূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আপনারা কি আপনাদের শিশু-সন্তানদের চুমু দিয়ে থাকেন?’ নবী (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ তারা বলল, ‘কিন্তু আল্লাহর কসম! আমরা চুমু দেই না।’ রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ্ যদি তোমাদের অন্তর থেকে দয়া উঠিয়ে নেন, তবে আমি কি তার মালিক করে দিতে পারি?’ (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লাহ্পাকের দয়া ও করুণা পেতে হলে আমাদেরকে ছোটদের প্রতি ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ করতে হবে। ইমাম বোখারী রহ: সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রা:-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, একদা রাসূল সা: নিজ নাতি হাসান রা. কে চুমু খেলেন। সে সময় তার কাছে আকরা বিন হারেস উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, আমি দশ সন্তানের জনক। কিন্তু আমি কখনও তাদের আদর করে চুমু খাইনি। তখন মহানবী সা. তার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘যে দয়া করে না, তার প্রতিও দয়া করা হয় না’। (বোখারী: ৫৬৫১)।
শিশুর মোহাব্বতে রাসূলুল্লাহর সা: খুতবা বন্ধ করা: নবী করিম (সা.)-এর জীবনে শিশু-কিশোরদের প্রতি স্নেহ-ভালোবাসার অনেক ঘটনা বিদ্যমান। একদিন নবীজী (সা.) মসজিদে খুতবা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখলেন তাঁর শিশু নাতি হাসান (রা.) ও হোসেন (রা.) তাঁর দিকে দৌড়ে আসতে যেয়ে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার অবস্থা। সাথে সাথে খুতবা দেওয়া বন্ধ করে মিম্বর থেকে ছুটে এসে তিনি তাঁদেরকে কোলে তুলে নিলেন। তারপর তাঁদেরকে সামনে বসিয়ে রেখে আবার খুতবা দিতে শুরু করলেন।
মসজিদে কোনো শিশু এলে তাকে তিনি সামনে ডেকে নিতেন। তিনি তাঁর সাহাবাদের উদ্দেশ্য করে বলতেন ‘শিশুদের প্রতি এমন আচরণ করো, যাতে তাদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ সৃষ্টি হয়।’
শিশুর কষ্টে রাসুলুল্লাহর সা. নামাজ দ্রুত শেষ করা: মদীনার মসজিদে নববীতে রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের জামাতে ইমামতি করতেন। এ জামাতে মহিলা নামাজীরাও শরিক হতো। তারা তাদের শিশু সন্তানদেরকেও নিয়ে আসতো এবং তাদেরকে একটু দূরে রেখে জামাতে নামাজ আদায় করতো। তিনি যখন ইমামতি করতেন, এসময় কোনো শিশুর কান্নার আওয়াজ তাঁর কানে গেলে তিনি দ্রুত নামাজ শেষ করতেন, যাতে ওই শিশুর কোনো কষ্ট না হয়।
শিশুদের দুষ্টামীতে রাসূলুল্লাহর সা. কষ্ট না পাওয়া: শিশুদের কোনো ধরনের অচরণেই কখনও তিনি বিরক্ত হতেন না। একবার তিনি একটা শিশুকে কোলে নিয়ে মিষ্টি খাওয়াচ্ছিলেন। এমন সময় শিশুটি হঠাৎ তাঁর কোলে প্রস্রাব করে দিল। কিন্তু তিনি তাতে বিন্দুমাত্র বিরক্তও হলেন না; বরং নিজেই পানি দিয়ে উক্ত স্থানটি ধুয়ে নিলেন।
এমনিভাবে শিশুদেরকে তিনি অন্তর দিয়ে অকৃত্রিমভাবে ভালোবাসতেন। হযরত আনাস (রা.) দীর্ঘদিন নবীজীর (সা.) ঘনিষ্ট সান্নিধ্যে ছিলেন। তিনি বলেন ‘আমি রাসুলুল্লাহর (সা.) মত শিশুদেরকে এত অধিক ভালোবাসতে আর কাউকে দেখিনি।’
কাজের ছেলের সাথে রাসুলুল্লাহর সা. আচরণ: শিশু নির্যাতন রোধে রাসূলুল্লাহ (সা.) আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও শাস্তি কার্যকর করার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে ঘরে কাজ করা শিশু নির্যাতিত হওয়ার বিষয়টি বেশি আলোচনায় আসছে। অথচ প্রিয় নবী (সা.)-এর আদর্শ দেখুন। তিনি একটি শিশু কৃতদাসকে সন্তানের স্থানে উন্নীত করে গেছেন।
হযরত আনাস (রা.)-কে মাত্র আট বছর বয়সে তাঁর মা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সেবায় অর্পণ করেন। (বুখারি : হা. ১৯৮২) দীর্ঘদিন খেদমত করতে গিয়ে নবীজী (সা.) কে কেমন পেয়েছেন সে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি ৯ বছর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমত করেছি। আমার কোনো কাজে আপত্তি করে তিনি কখনো বলেননি, ‘এমন কেন করলে? বা এমন করোনি কেন’?’’ (মুসলিম : হা. ২৩০৯) শুধু মুসলিম সেবক নয়, ভিন্ন ধর্মের শিশু সেবকও ছিল নবীজী (সা:)-এর স্নেহের পাত্র। একটি ইহুদি শিশু রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর খেদমত করত। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসুলুল্লাহ (সা:) তাকে দেখতে গেলেন। তার শিয়রে বসলেন। তাকে ইসলাম গ্রহণ করতে আহ্বান করলেন। সে তখন নিজের বাবার দিকে তাকাল। বাবা বলল, তুমি আবুল কাসেমের কথা মেনে নাও। এবার ছেলেটি ইসলাম গ্রহণ করল। তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘর থেকে বেরিয়ে আসার সময় বললেন, ‘সব প্রশংসা আল্লাহর। তিনি ছেলেটিকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছেন। ’ (বুখারি : হা. ১২৯০)
নবীজীর প্রতি শিশুদের মোহাব্বত: নবীজী সা. শুধু শিশুদেরকে ভালবাসতেন না শিশুরাও নবীজী সা. কে প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন। নবীজী (সা:) কোন পথ দিয়ে আসবেন জানতে পেরে সে এলাকার শিশুরা পথের দু’পাশে এসে হাজির হতো। নবীজীর (সা.) আগমন ঘটলে তারা নেচে-গেয়ে আনন্দ-উল্লাস শুরু করে দিত। নবীজীও (সা.) এতে খুব আনন্দ করতেন। শিশুরাও নবীজীর (সা.) আদর পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বল হয়ে উঠতো।
শিশু হত্যা রোধে নবীজীর কর্মসূচী: সুস্থভাবে খেয়েপরে নিরাপদে বেঁচে থাকা প্রত্যেক শিশুর মৌলিক অধিকার। শিশুদের জীবন রক্ষা করার জন্য মহানবী (সা.) সর্বাগ্রে দয়ামায়াহীন আরব পৌত্তলিকদের জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। শিশুদের যথার্থ মর্যাদায় অভিষিক্ত করে তিনি শিশুহত্যায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের গোপন পন্থায় ধ্বংস করবে না।’ (আবু দাউদ) যে জাতি আপন সন্তানকে জীবিতাবস্থায় মাটিচাপা দিয়ে আনন্দ-উল্লাস করত, ইসলামের নবীর সংস্পর্শে ও হুঁশিয়ার বাণীতে তা পরিত্যাগ করে তারাও সভ্য সমাজ হয়ে ওঠে। এভাবে তিনি কোমলমতি শিশুদের পৃথিবীতে নিরাপদে বেঁচে থাকার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ইসলামী আইন ব্যবস্থায় মানব ঘাতকের সর্বোচ্চ শাস্তি ধারালো অস্ত্র দ্বারা শিরশ্ছেদের মাধ্যমে মৃত্যুদ-। কিন্তু শিশু হত্যার মতো জঘন্য অপরাধের বেলায় ইসলামে আরো কঠোরতার নমুনা পাওয়া যায়। একবার এক “রাহাজান” একটি শিশুর অলংকার ছিনতাই করে তাকে পাথরে পিষে হত্যা করে। ওই শিশুহত্যার মৃত্যুদ- কোনো ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে দেওয়া হয় না। বরং তাকেও নিহত শিশুটির মতো প্রস্থরাঘাতে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। (মুসলিম : হা. ৪৪৫৪)
ইসলাম গ্রহণ করলে আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (মুসলিম: হা. ১৯২), তা সত্ত্বেও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে রাসূলুল্লাহ (সা.) অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। হযরত কায়েস ইবনে আসেম (রা.) ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর কাছে এসে বললেন, ‘আমি (জাহেলি যুগে) কন্যাসন্তানদের জীবন্ত কবর দিয়েছি। ’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘প্রতিটি কন্যার বদলে একজন করে দাস মুক্ত করে দাও। ’ তিনি বললেন, আমি তো কেবল উটের মালিক। রাসুলুল্লাহ (সা:) বললেন, ‘তাহলে প্রতিটি কন্যার বদলে একটি করে উট কোরবানি করো। ’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৮/৩৩৫)
প্রতিটি মুসলিম পরিবার যদি শিশুর শারীরিক সুস্থতা ও বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক বিকাশের দিকে গুরুত্ব না দেয় তাহলে শিশুরা মানবজাতির শ্রেষ্ঠ জনসম্পদে পরিণত হবে না। একটি শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য জাতিসংঘ ‘শিশু অধিকার সনদ’-এর ২৭ নম্বর ধারায় প্রতিটি শিশুর শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, সামাজিক ও নৈতিক উন্নয়নের বিষয়ে তাদের পর্যাপ্ত মানসম্মত জীবনযাপনের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব বিষয়ে সবার বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার দ্বারাই শিশুরা প্রকৃত মানুষে পরিণত হয়। শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য রাসুলে করিম (সা.) তাদের সঙ্গে কোমল ব্যবহার নিজে করেছেন এবং অন্যদেরও সদাচার করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। তিনি চাইতেন শিশুরা যেন কোনো সময় কষ্ট না পায় বা নির্যাতনের শিকার না হয়। শিশুদের যেকোনো মৌলিক চাহিদা মেটাতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত যতœশীল। কোনো শিশু দুষ্টুমি করলে তিনি তাকে কড়া শাসন না করে হাসিমুখে শোধরানোর কৌশল গ্রহণ করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা করেন, ‘যে ছোটকে স্নেহ-মমতা করে না এবং বড়কে শ্রদ্ধা করে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, তিরমিজি)
শিশুদেরকে ভাল শিক্ষা দেয়ার নির্দেশ : শিশুদের কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন না করে তাদের সঙ্গে সব সময় ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দানের কথা উল্লেখ করে নবী করিম (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা শিশুসন্তানদের স্নেহ করো, তাদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করো এবং সদাচরণ ও শিষ্টাচার শিক্ষা দাও।’ (তিরমিজি) অন্যকে জ্ঞান দান করা উত্তম কাজ। কিন্তু শিশুদেরকে জ্ঞান দান করা আরও উত্তম। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) মানবসন্তানকে সুশিক্ষা প্রদানের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘সন্তানকে সদাচার শিক্ষা দেওয়া দান-খয়রাতের চেয়েও উত্তম।’ শিশুদের উত্তম ও যুগোপযোগী শিক্ষাদানের জন্য তিনি নির্দেশ প্রদান করেছেন, ‘তোমাদের সন্তানদের উত্তমরূপে জ্ঞানদান করো। কেননা তারা তোমাদের পরবর্তী যুগের জন্য সৃষ্ট।’(মুসলিম)
শিশুদের কোমল ও পবিত্র মনে যদি একবার কোনো খারাপ ধারণা বা ভয়ভীতি প্রবেশ করে, তবে তা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে থেকে যায়। তাই নবী করিম (সা.) শিশু-কিশোরদের সঙ্গে খেলাচ্ছলেও মিথ্যা বা প্রতারণা করতে নিষেধ করেছেন।
উপসংহার: শিশুরা আগামী দিনের দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তাই তাদের যদি সুন্দর করে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা যায়; তাহলে ভবিষ্যৎ পৃথিবী হবে আরও সুন্দর। রাসূলুল্লাহ (সা.) আজ থেকে ১৪০০ বছর আগেই নিজ কর্ম, উপদেশসহ আরো নানা উপায়ে সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধি করে বিশ্বকে একটি শিশুবান্ধব সমাজ উপহার দিয়ে গেছেন। তাই ইসলামের শিক্ষা সব শিশুই যেন নিরাপদে বেড়ে ওঠে। অথচ আজকের আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও আমাদের দেশে শিশুরা কতই না অবহেলিত, নির্যাতিত ও নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার! সুতরাং ইসলামের সুমহান শিক্ষাকে সামনে রেখে যদি নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের আদর্শ শিক্ষা-দীক্ষায় শিশুদের যথাযথ স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে পিতামাতা, সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্র তাদের সেবা লাভে উপকৃত হবে। শিশুদের প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা প্রদর্শন করা হলে এমন পরিবারে আল্লাহর করুণা ও দয়া সর্বদাই বর্ষিত হতে থাকবে।
লেখক: সভাপতি: বাংলাদেশ জাতীয় মুফাস্সির পরিষদ, টাঙ্গাইল জেলা।
ছোটদের প্রতি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ভালবাসা
শরীফ আব্দুল গোফরান : বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সাঃ) পৃথিবীর সেরা মানুষ। মানবজাতির জন্য তিনি অনুপম আদর্শ, তাঁর ৬৩ বছরের জীবনে আমাদের জন্য রয়েছে চলার পাথেয়।
মহানবী (সাঃ)-এর শিক্ষা ও সাহাচর্যে যারা নিজেদেরকে গঠন করেছেন, তারা হচ্ছেন, সাহাবী বা সাথী। মানুসের জন্য তারা তারকাস্বরূপ। মহানবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আমার সাহাবীগণ হচ্ছেন আকাশের তারকাস্বরূপ।’’ আজকের শিশু-কিশোরদের কাছে মহানবী (সাঃ)-এর জীবন ও চরিত্র তুলে ধরার প্রয়োজন অতীতের চেয়ে অনেক বেশি। বড়রা এই বিষয়টি উপলব্দি করলে মঙ্গল।
মহান রাববুল আলামিন পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘‘রাসূলের জীবনে তোমাদের জন্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’’ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন আল্লাহর নবী একই সঙ্গে মানুষ। বিশ্ব মানবের ইতিহাসে মহানবী (সাঃ)-এর স্থান সবার উপরে। তাঁর তাকওয়া, অনুপম ব্যক্তিত্ব ও চরিত্রমাধুর্য আমাদের সকলের জন্য অনুসরণযোগ্য। শিশু কিশোররাও মহানবীর প্রোজ্জ্বল আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছিল।
মহানবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘যারা আমাদের ছোটদেরকে আদর করে না এবং আমাদের বড়দেরকে সম্মান করে না, তারা আমাদের আদর্শের অনুসারী নয়।’’ ফলে মহানবী (সাঃ) দুনিয়ায় এসেই বন্ধুত্ব করলেন ছোটদের সাথে। তাঁর বন্ধু হলেন আলী (রাঃ), খালিদ বিন অলিদের মতো ছোট্ট শিশু-কিশোররা, তাদের নিয়ে তিনি কিশোর বয়সে গঠন করেন ‘‘হিলফুল ফুজুল।’’
শিশু-কিশোরদের প্রিয় বন্ধু ছিলেন তিনি। ছিলেন খেলার সাথী, তিনি শিশুদের খুব আদর করতেন। খাবার তুলে দিতেন তাদের মুখে। কোলে তুলে নিতেন আদর করে। কতো গল্প, কবিতা শোনাতেন তাদের। মাথায় হাত বুলাতেন। কোলে তুলে নিয়ে চুমু খেতেন।
একবার নবীজী তার নাতী হাসান (রাঃ) কে আদর করে চুমু খাচ্ছিলেন। তা দেখে হযরত আকবা ইবনে হারিস নবীজীকে বললেন, ‘‘ওগো নবী (সাঃ) আপনি কি এমনিভাবে শিশুদের আনন্দ দান ও আনন্দ উপভোগ করেন? আমি তো আমার ছোট শিশু সন্তানদের এত আদর করি না। নবীজী তার জবাবে বললেন, ‘‘তোমার অন্তর থেকে আল্লাহ যদি মমতা তুলে নিয়ে থাকেন, তার জন্য তো আমি দায়ী নই। নবীজী বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি শিশু-কিশোরদের প্রতি ভালবাসা প্রদর্শন করে না, সে আমার উম্মত নয়।’’
শিশুর জন্য হ্যাঁ বলুন শিশু অধিকার রক্ষার প্রশ্নে দুনিয়াব্যাপী আজ এই স্লোগানটি উচ্চারিত হচ্ছে। রাসূল (সাঃ) আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে শিশুদের প্রতি সেই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে গেছেন।
একদিন রাসূল (সাঃ) একদল শিশুর সঙ্গে আনন্দ করছেন। শিশুরাও নবীজীকে ঘিরে খুশিতে মেতে ওঠে। এমন সময় সোখানে এক বেদুঈন এসে উপস্থিত হল। সে বললো, ‘‘শিশুদের নিয়ে এমন আমোদ-আহলাদ করা আমার পছন্দ নয়।’’ রাসূলের হাসি-খুশি-মুখখানি মলিন হয়ে গেল। তিনি শুধু বললেন, ‘‘যে ব্যক্তির হৃদয়ে মায়া নেই, আল্লাহ যেন তাকে দয়া করেন। (মুসলিম)
রাসূল (সাঃ) কখনো শিশুদের ওপর রাগ করতেন না, চোখ রাঙাতেন না। কর্কশ ভাষায় তাদের সাথে কথা বলতেন না। তিনি শিশুদের আদর করে কাছে বসাতেন, গল্প, ছড়া, বকবিতা শোনাতেন। ছোটদের দেখলে আনন্দে নবীজীর বুক ভরে যেত। তিনি তাদেরকে বুকে ঝড়িয়ে ধরতেন। একদিন একটি সুন্দর শিশুকে দেখে তিনি জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘‘ইন্নাহুম লামিন রায়হানিল্লাহ।’’ এর মানে হলো ‘‘এই শিশুরাই তো আল্লাহর বাগানের ফুল।’’ তিনি কখনো কোন শিশুকে বিক্রিত নামে ডাকতেন না। তিনি তাদের অর্থবোধক নাম রাখতেন এবং মিষ্টিসুরে সুন্দর নাম ধরে ডাকতেন।
প্রিয়নবী শিশুদের যেমন আদর করতেন, তেমনি আবার তাদের সাথে রসিকতাও করতেন। একবার আনাস (রাঃ)-এর ছোট এক ভাইয়ের একটি পাখি মারা যায়, এতে তার মন খারাপ হয়।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর সেরা মানুষ। মানবজাতির জন্য তিনি অনুপম আদর্শ। তাঁর ৬৩ বছরের জীবনে আমাদের জন্য রয়েছে চলার পাথেয়। মহানবী (সা.) এর শিক্ষা ও সাহচর্যে যারা নিজেদেরকে গঠন করেছেন, তারা হচ্ছেন সাহাবী বা সাথী। মানুষের জন্য তাঁরা তারকাস্বরূপ। মহানবী (সা.) নিজেই বলেছেন, ‘আমার সাহাবীগণ হচ্ছেন আকাশের তারকাস্বরূপ’। আজকের শিশু-কিশোরদের কাছে মহানবী (সা.)-এর জীবন ও চরিত্র তুলে ধরার প্রয়োজন অনেক বেশি। বড়রা এই বিষয়টি উপলব্ধি করলে মঙ্গল।
মহান রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেন : ‘রাসূলের জীবনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ এ জন্যই তো আল্লাহ পাক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী করে হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে পাঠিয়েছিলেন মানবতার কল্যাণে। বিশ্ব মানবের ইতিহাসে মহানবী (সা.) এর স্থান সবার ওপরে। তাঁর তাকওয়া, অনুপম ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র মাধুর্য আমাদের সকলের জন্য অনুসরণযোগ্য। শিশু-কিশোররাও মহানবী (সা.) এর প্রোজ্বল আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছিল।
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যারা ছোটদেরকে আদর করে না এবং বড়দের সম্মান করে না, তারা আমাদের আদর্শের অনুসারী নয়।’ ফলে মহানবী (সা.) দুনিয়ায় এসেই বন্ধুত্ব করলেন ছোটদের সাথে। তাঁর বন্ধু হলেন হযরত আলী (রা.), খালিদ বিন অলিদের মতো ছোট্ট শিশু-কিশোররা। তাদের নিয়ে তিনি কিশোর বয়সেই গঠন করেন ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সংগঠন। আগেই বলেছি, শিশু-কিশোরদের প্রিয় বন্ধু ছিলেন মহানবী (সা.) ছিলেন খেলার সাথী। তিনি শিশুদের খুব আদর করতেন। খাবার তুলে দিতেন তাদের মুখে। মাথায় হাত বুলাতেন। কোলে তুলে নিয়ে চুমু খেতেন। একদিন মহানবী (সা.) তার নাতি হাসান (রা.)কে আদর করে চুমু খাচ্ছিলেন। তা দেখে হযরত আকবা ইবনে হারিস নবীজীকে বললেন, ‘ওগো নবী (সা.) আপনি কি এমনিভাবে শিশুদের আনন্দদান ও আনন্দ উপভোগ করেন? আমি তো আমার ছোট শিশু-সন্তানদের এতো আদর করি না। নবীজী তার জবাবে বললেন, ‘তোমার অন্তর থেকে আল্লাহ যদি মমতা তুলে নিয়ে থাকেন, তার জন্য তো আমি দায়ী নই।’ নবীজী আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিশু-কিশোরদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করে না, সে আমার উম্মত নয়।’
শিশুর জন্য হ্যাঁ বলুন, শিশুরা সবার আগে ত্রাণ পাবে, শিশু অধিকার রক্ষার প্রশ্নে দুনিয়াব্যাপী আজ এই সেস্নাগানটি উচ্চারিত হচ্ছে। রাসূল (সা.) আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে শিশুদের প্রতি সেই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে গেছেন। একদিন আমাদের মহানবী (সা.) একদল শিশুর সঙ্গে আনন্দ করছেন। শিশুরাও নবীজীকে ঘিরে খুশিতে মেতে ওঠে। এমন সময় সেখানে এক বেদুঈন এসে উপস্থিত হয়। সে মহানবী (সা.)কে উপলক্ষ করে বললো, ‘শিশুদের নিয়ে এমন আমোদ আহ্লাদ করা আমার পছন্দ নয়।’ এ কথা শুনে রাসূল (সা.) এর হাসি-খুশি মুখখানি মলিন হয়ে গেল। তিনি বললেন, ‘যে ব্যক্তির হৃদয়ে মায়া নেই, আল্লাহ যেন তাকে দয়া করেন।’ (মুসলিম)।
রাসূল (সা.) কখনো শিশুদের ওপর রাগ করতেন না। চোখ রাঙাতেন না। কর্কশ ভাষায় তাদের সাথে কথা বলতেন না। তিনি ছোটদের আদর করে কাছে বসাতেন। তাদের সাথে মজার মজার কথা বলতেন। ছোটদেরকে দেখলে আনন্দে নবীজীর বুক ভরে যেত। তিনি তাদেরকে বুকে জড়িয়ে ধরতেন। একদিন একটি সুন্দর শিশুকে দেখে তিনি জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, ‘এই শিশুরাইতো আল্লাহর বাগানের ফুল।’ তিনি কখনো কোন শিশুকে বিকৃত নামে ডাকতেন না। তিনি তাদের অর্থবোধক নাম রাখতেন এবং মিষ্টি সুরে সুন্দর নাম ধরে ডাকতেন। প্রিয় নবী শিশুদের যেমন আদর করতেন, তেমনি আবার তাদের সাথে রসিকতাও করতেন। একবার হযরত আনাস (রা.) এর ছোট এক ভাইয়ের একটি পাখি মারা যায়। এতে তার মন খারাপ হয়। নবীজী তখন তাকে আদর করে কাছে ডেকে নিলেন। বললেন-
‘ইয়া আবা উমায়েরু
মা কা-আলান নুগায়রু?’
অর্থাৎ হে আবু উমায়ের, তোমার পাখির ছানাটির কি হলো? তখন নবীজীর মুখে ছন্দ ও সুর শুনে হেসে ফেললো। (বুখারী ও মুসলিম)।
অপর এক ঘটনা। একদিন এক মহিলা তার ছেলের হাতে কিছু আঙ্গুর ফল দিয়ে বললেন, নবীজীকে দিয়ে আস। ছেলেটি আঙ্গুর ফলগুলো নবীজীর কাছে না এনে নিজেই সব খেয় ফেললো। নবীজী বিষয়টা জানতে পারলেন। তিনি শিশুটিকে আদর করে কোলে তুলে নিলেন। তারপর বললেন,
‘কি হে দেখি বলো
মায়ের দেয়া আঙ্গুরগুলো
কোথায় হারিয়ে গেলো।’
রাসূল (সা.) শিশুর মনের অভিব্যক্তি বুঝতে পারতেন। তাদের চাওয়া-পাওয়া মান অভিমান সবই আপন করে নিতে পারতেন। তাই শিশুরাও একাকার হয়ে যেতো নবীজীর ভালোবাসায়। রাসূর (সা.) বলেছেন, ‘শিশুরা আল্লাহর দেয়া খশবু। ওরা ফুলের মতো।’ (মেশকাত)।
বর্তমানে জাতিসংঘ শিশুদের রক্ষায় বিশ্বজনমত সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অথচ তা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। অহরহ শিশুরা প্রাণ হারাচ্ছে দেশে দেশে। আফগানিস্তান, ইরাক, ফিলিস্তিন, কাশ্মীরসহ সারা বিশ্বে কতো শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। এদের জন্য দরদী জাতিসংঘের একবারও প্রাণ কাঁদে না। কারণ শিশুদের পক্ষে প্রতিবাদ করার সাহস জাতিসংঘেরও নেই।
আল্লাহর রাসূর (সা.) চৌদ্দশ’ বছর আগেই শিশুদের যুদ্ধে ব্যবহার ও হত্যা না করার নির্দেশ দিয়েছেন। বদর যুদ্ধের সময় কিছু বালক যুদ্ধের প্রস্ত্ততি নিচ্ছিলেন। রাসূল (সা.) বালকদের জিহাদী প্রেরণা দেখে খুশি হলেন। কিন্তু তিনি এই কচি শিশুদের ঘরে ফিরে যেতে বললেন। অবশ্য উমাইয়ার নামক একটি শিশুর দৃঢ় সংকল্পের জন্য শেষে তাকে যুদ্ধে যেতে অনুমতি দেন।
অন্য এক যুদ্ধে কয়েকজন শিশু মারা যায়। তারা ছিলো শত্রুপক্ষের। এ খবর এসে পৌঁছলে রাসূল (সা.)-এর প্রাণ কেঁদে উঠে। তিনি খুবই আফসোস ও দুঃখ করতে থাকেন। এ অবস্থা দেখে একজন সৈনিক বললেন, ‘হে আল্লাহর নবী। আপনি যাদের জন্য এতো মর্মদেনা ভোগ করছেন তারা বিধর্মীদের সন্তান। রাসূল (সা.) তার কথায় অসন্তুষ্ট হলেন। তিনি বললেন : ‘এখন থেকে সাবধান হও। কখনো শিশুদের হত্যা করবে না। প্রতিটি শিশুই নিষ্পাপ ফুলের মতো।’
দ্বিতীয় হিজরীতে অনুষ্ঠিত বদর যুদ্ধের স্মৃতিকথা বলতে গিয়ে সাহাবীদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় সাহাবী হযরত আবদুর রহমান বিন আওফ (রা.) বর্ণনা করেন। বদর যুদ্ধের সময় যখন তুমুল যুদ্ধ চলছিল, হঠাৎ করে আমি দেখতে পেলাম আমার দু’পাশে দু’টি বালক। একটি বালক আমার নিকটে এসে অপর বালকটিকে আড়াল করে বললো, ‘চাচা আবু জাহল কে? আমি বললাম, আবু জাহলকে তোমার কি প্রয়োজন? সে বললো, আমি শুনেছি আবু জাহল আমাদের নবীজীকে কষ্ট দিয়েছে, তাই তাকে হত্যা করতে এসেছি। আমি তাকে বললাম, ঠিক আছে আমি রণাঙ্গনে আবু জাহলকে দেখিয়ে দেবো। এক সময় আবু জাহল আমার দৃষ্টিতে পড়লো। আমি বালকদ্বয়কে ইশারা করে দেখালাম। বালকদ্বয় বাজপাখির ন্যায় দ্রুত গিয়ে তাকে আঘাত করলো। যেহেতু তারা ছিল ছোট, আবু জাহলের গায়ে সরাসরি আঘাত করার সুযোগ ছিল না, বিধায় প্রথমেই তারা আবু জাহলের ঘোড়ার পায়ে আঘাত করলো। ততক্ষণে আবু জাহল ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে গেলো। তারা আবু জাহলকে ছুরি দ্বারা আঘাত করে রক্তাক্ত করে ফেললো।
আঘাতের পর আঘাত করে মৃত মনে করে স্থান ত্যাগ করে নিজ স্থানে ফিরে এলো। এই শিশু দু’টি হলো আপন দুই ভাই। একজনের নাম মুয়ায এবং অপরজন হলো মুয়াবেবর। তাদের পিতার নাম আফরা। যুদ্ধ শেষে মহাবনী (সা.) এর স্নেহধন্য অপর কিশোর আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এসে দেখলেন, আবু জাহল তখনো বেঁচে আছে। ইবনে মাসউদ তার বুকে বসলেন। আবু জাহল চোখ খুলে প্রশ্ন করলো ‘তুমি কে? তখন কিশোরটি জবাব দিলেন। আমি আব্দুল্লাহ আল মাসউদ। তোমার খবর কি? আবু জাহল বললো, ‘দুঃখ আমার, মদীনার কৃষকের দু’টি ছেলে আমার এ অবস্থা করেছে। কোন বীরপুরুষ আমাকে ধরাশায়ী করেনি।’ তারপর আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবু জাহলের গর্দান থেকে মাথাটা আলাদা করে নিলো। এরা আমাদের নবীজীকে কত ভালোবাসতেন। আবু জাহলকে মেরে তার নজির স্থাপন করলেন। হযরত আবু যায়েদ (রা.) হযরত আবু হুরায়রা (রা.)সহ বহু কিশোর নবীজীর ভালোবাসা পেয়ে কখনো তাকে ছেড়ে যেতেন না।
নবীজী যখন কোথায়ও সফরে বের হতেন, রাস্তায় কোন শিশুকে দেখলেই তাকে উটের পিঠে তুলে নিতেন এবং নিজ গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতেন। তিনি এতিম শিশুদের ভালোবাসতেন। তাদের মাথায় হাত বুলাতেন। নতুন জামাকাপড় কিনে দিতেন। আদর যত্ন করতেন। ফলে শিশুরাও তাদের বন্ধু নবীজীকে ভালোবাসতেন। এভাবে রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রোজ্বল আলোয় আলোকিত হয়েছিল শিশুরা। আলোকিত হয়েছে বিশ্ব ভুবন।
লেখক : শিশু সাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
FAQ About Prophet Muhammad SM
Q. মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) নাম শুনে চুমু খাওয়া যাবে কিনা?
A.
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।
আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )
ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )
Related Posts
7 Comments
Leave a Reply Cancel reply
Categories
- advices
- Ahle Hadis
- Allah
- Amal
- Arabic Communication
- Arabic Grammar
- Arif Azad
- Bangladesh
- Biography
- Child care
- Country
- Death
- Dowry
- Dua
- Education
- Eid
- Family
- Fasting
- Fatwa
- Gazwatul Hind
- Hadith
- Hajj
- Halal or Haram
- Humble
- Husband & Wife
- IDCM
- Iman
- Interest
- Islamic Books
- Islamic Days
- Islamic Economi
- Islamic Education
- Islamic FAQ
- Islamic Future
- Islamic History
- Islamic Lectures
- Islamic Life
- Islamic Politics
- Islamic Rules
- islamic song
- islamic story
- Jihad
- Jinn
- let's learn arabic
- Magic
- Marriage
- Mosque
- Motivation
- Muhammad SM
- Muslims
- News
- Parenting
- Patriotism
- Pending
- Personal Development
- Poet
- Pornography
- Press Release
- Prophets
- Quran
- Quran and Science
- Quran Interpretation
- Qurbani
- Relations
- Rizq
- Ruqyah
- Sacrifice
- Sadaqah
- Safety
- Sahaba
- Salah
- Salat
- Sex
- Sin
- Tajweed
- Taqwa
- Tasawwuf
- Tawba
- Tawhid
- Veil
- Weed
- Zakat
Recent Posts
- বৃষ্টির সময় ৬ টি কাজ করা সুন্নাত – Sunnah During the Rain May 2, 2023
- ব্যাংকে রাখা ফিক্সড ডিপোজিটের উপর কি প্রতি বছর যাকাত আবশ্যক? – Zakat on Fixed Deposit – সমিতির টাকার ওপর জাকাত আসবে কি? March 25, 2023
- Symptoms of Bad and Good Death – খারাপ এবং ভালো মৃত্যুর আলামত সমূহ March 20, 2023
- Taweez in Islam – ইসলামে তাবিজ জায়েজ হলেও কেন তাবিজ থেকে দূরে থাকা উত্তম? March 20, 2023
- Dua to be rich – ধনী হওয়ার দোয়া/আমল- আজ থেকেই শুরু হোক ধনী হওয়ার পথচলা March 7, 2023
[…] হযরত মুহাম্মাদ(সা.) […]
[…] হযরত মুহাম্মাদ(সা.) […]
[…] হযরত মুহাম্মাদ(সা.) […]
[…] হযরত মুহাম্মাদ(সা.) […]
[…] হযরত মুহাম্মাদ(সা.) […]
[…] হযরত মুহাম্মাদ(সা.) […]
[…] হযরত মুহাম্মাদ(সা.) […]