5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ
5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ
উপকারিতা ও পুরস্কার
নামাজ হল ইসলাম ধর্মের মৌলিক কর্মের একটি। প্রতিদিন 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। নামাজ হল মুনাজাত বা চুপিচুপি কথা বলা। মু`মিন বান্দা আল্লাহর সঙ্গে ভাববিনিময় করে এ নামাজের মাধ্যমে।
এটা প্রায় সব মুসলমানেরই জানা কথা, তারপরও আমরা অনেকেই নামাজ হতে বিমুখ থাকি। এমনকি নামাজের ওয়াক্ত চলে যায়, নামাজ কাজা হয়ে যায় তাতেও অনেকেরই বিন্দুমাত্র আফসোস নেই!! অথচ নামাজের মধ্যেই আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য রেখেছেন অগণিত কল্যাণ ও উপকারিতা এবং দান করেন অকল্পনীয় পুরস্কার।
আমরা অনেকেই জানিনা নামাজ স্বাস্থের জন্যও অনেক উপকারী। 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বেশকিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নাড়াচাড়া হয় যা এক প্রকার ব্যায়াম। এই ব্যায়াম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি যা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
- যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ ছেড়ে দেয় তার মুখের জ্যোতি কমে যায়।
- যে ব্যাক্তি জোহরের নামাজ ছেড়ে দেয় তার রোজগার থেকে বরকত কমে যায়।
- যে ব্যাক্তি আসরের নামাজ ছেড়ে দেয় তার শরীরের শক্তি কমে যায়।
- যে ব্যাক্তি মাগরিবের নামাজ ছেড়ে দেয় তার সন্তান দ্বারা কোনো উপকার আসে না।
- যে ব্যাক্তি ঈসার নামাজ ছেড়ে দেয় তার রাতের ঘুম থেকে সুখ কমে যায়।
5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা
ফজরের সময়: ফজরের সময় নামাজ আদায় করলে সারা রাত ঘুমের পর হালকা অনুশীলন হয়ে যায়। এ সময় পাকস্থলী খালি থাকে তাই কঠিন অনুশীলন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ সময়ে নামাজ আদায় করলে নামাজির অবসাদগ্রস্ততা ও অচলতা থেকে মুক্তি পায়। মস্তিস্কে রক্ত চলাচল বেড়ে পুনরায় চিন্তা করার জন্য প্রস্তুত হয়। এ সময়ে দেহ পরিষ্কার, দাঁত পরিষ্কার, অঙ্গ ধোয়া ও পেশাব-পায়খানা থেকে পবিত্রতা অর্জন হয়ে যায়। এতে জীবাণুর আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। এ সময়ে যে নামাজিরা হেঁটে মসজিদে যায় তাদের আত্মা পরিচ্ছন্ন ও প্রশান্ত পরিবেশ থেকে যে সূক্ষ্ম তৃপ্তি লাভ করে – তা সবই উপকারী।
** স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, অন্ত্ররোগ ও আলসার থেকেও বাঁচা যায়।
** রোমের পাদরি হিলার বলেন, ভোরের নামাজের জন্য ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাশ্চর্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। (প্রার্থনা গ্রন্থ)
জোহরের সময়: মানুষ জীবিকার জন্য দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কাজ করে। এতে ধুলা, ময়লা, বিষাক্ত কেমিকেল দেহে লেগে শরীরে জীবাণু আক্রমণ করে। সূর্য ঢলে পড়ার সময় গরমের কারণে বিষাক্ত গ্যাস বের হয়ে, মানবদেহে প্রভাব ফেললে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। এ সময় ওযু করলে অনেক জীবাণু দূর হয় এবং ক্লান্তি দূর হয়ে দেহ পুনর্জীবন অনুভব করে। নামাজ আদায়ের ফলে এ গ্যাস শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে না ফলে দেহ বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে যায়। এ সময় আল্লাহ নামাজ ফরয করে মানুষের জন্য অনুগ্রহ করেছেন।
আসরের সময়: পৃথিবী বৃত্তীয় ও লম্ব দুই ধরনের গতিতে চলে। যখন সূর্য ঢলতে থাকে তখন পৃথিবীর ঘূর্ণন কমতে থাকে। এমনকি আসরের সময় একেবারেই কমে যায়। এ সময় রাতের অনুভূতি প্রবল হতে থাকে ও প্রকৃতির মধ্যে স্থবিরতা এবং অবসাদগ্রস্ততা প্রদর্শিত হতে থাকে। আসরের নামাজের সময় অবচেতন অনুভূতির শুরু হয়। এ সময় নামাজ আদায় করলে অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্ততা, অবচেতন অনুভূতি, মানসিক চাপ ও অস্থিরতা কমে যায়। সুর্যের রশ্মি নামাজিকে প্রশান্তি দান করে।
মাগরিবের সময়: সারাদিন মানুষ জীবিকার জন্য শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম করে কাটায়। মাগরিবের সময় ওযু করে নামাজ আদায়ের ফলে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ হয়। এ সময় নামাজ আদায়ে পরিবারের সকল সদস্যের অংশ গ্রহণ দেখে বাচ্চারাও নামাজের প্রতি আগ্রহী হয়।
এশার সময়: মানুষ কাজ শেষে বাসায় ফিরে রাতে খাবার খায়। এ সময় খেয়ে শুয়ে পড়লে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে হাল্কা ব্যায়াম করে নিলে তা স্বাস্থের জন্য ভাল। এশার নামাজ ব্যায়ামের চেয়েও বেশি উপকারি এ নামাজ আদায়ে শান্তি পাওয়া যায়, খাদ্য হজম হয় এবং অস্থিরতা দূর করে।
তাহাজ্জুদের সময়: এ সময় নামাজ আদায়ে অস্বস্তি, নিদ্রাহীনতা, হার্ট, স্নায়ুর সংকোচন ও বন্ধন সহ মাথার বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কাজ করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, যারা দূরের জিনিস ভালভাবে দেখতে পায়না তারা এ সময়ে নামাজ আদায় করলে সুফল পাবে। এছাড়াও এ সময়ে নামাজ আদায় করলে বুদ্ধি, আনন্দ এবং অসাধারণ শক্তির সৃষ্টি হয় যা নামাজিকে সারাদিন উৎফুল্ল রাখে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর উপকারিতা
০১। নামাজে যখন সিজদা করা হয় তখন আমাদের মস্তিস্কে রক্ত দ্রুত প্রবাহিত হয়। ফলে আমাদের স্মৃতি শক্তি অনেকবৃদ্ধি পায়। নামাজ মানুষের মস্তিস্কে বন্ধ দরজাগুলো খুলে দেয়।
০২। নামাজে যখন আমরা দাড়াই তখন আমাদের চোখ মুসল্লার সামনের ঠিক একটি কেন্দ্রে স্থির অবস্থানে থাকে ফলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
০৩। নামাজের মাধ্যমের আমাদের শরীরের একটি ব্যায়াম সাধিত হয়। 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের স্বাস্থ্যের হিফাজত করে, রোগব্যাধি দূর করে, এটি এমন একটি ব্যায়াম যা ছোট বড় সবাই করতে পারে।
০৪। নামাজের মাধ্যমে আমাদের অসাধারন পরিবর্তন এসে মন ও আত্মাকে আলোকিত করে এবং অন্তরকে শীতল ও শক্তিশালী করে।
০৫। নামাজ সকল মানুষের দেহের কাঠামো সঠিক রেখে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সজীবতা দান করে ফলে মানুষের অলসতা ও শারীরিক বিকলঙ্গতা দূর হয়ে যায়।
০৬। নামাজ মানুষের ত্বক পরিষ্কার রাখে যেমন ওযুর সময় আমাদের দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার করা হয় এর ফলে বিভিন্ন প্রকার জীবানু হতে আমরা সুরক্ষিত থাকি।
০৭। 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর জন্য ওযুর সময় মুখমন্ডল যেভাবে পরিস্কার করা হয় তাতে আমাদের মুখে এক প্রকার মেসেস তৈরি হয় ফলে আমাদের মুখের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং বলিরেখা কমে গিয়ে মুখের ত্বক স্বতেজ হয়ে চেহারার উজ্জলতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ফলে মুখের দাগ কম দেখা যায়।
০৮। কিশোর বয়সে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে মন পবিত্র থাকে এর ফলে নানা প্রকার অসামাজিক কাজ থেকে সে বিরত থাকে।
০৯। 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে মানুষের জীবনি শক্তি বৃদ্ধি পায়।
১০। কেবল মাত্র 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর মাধ্যমেই চোখের নিয়মিত যত্ন নেওয়া হয়। ফলে অধিকাংশ নামাজ আদায় কারী মানুষের দৃষ্টি শক্তি বজায় থাকে।
ফজরের সময় ও চিকিৎসা বিজ্ঞান:
ফজরের সময় নামাজ আদায় করলে সারা রাত ঘুমের পর হালকা অনুশীলন হয়ে যায়। এ সময় পাকস্থলী খালি থাকে তাই কঠিন অনুশীলন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ সময়ে নামাজ আদায় করলে নামাজি অবসাদগ্রস্ততা ও অচলতা থেকে মুক্তি পায়। মস্তিষ্ক ফ্রি হয়ে পুনরায় চিন্তা করার জন্য প্রস্তুত হয়। এ সময়ে নামাজি হেঁটে মসজিদে যায় আর আত্মা পরিচ্ছন্ন, প্রশান্ত পরিবেশ থেকে সূক্ষ্ম অনুভূতি লাভ করে- এসবই উপকারী। এ সময়ে দেহ পরিষ্কার হয়। দাঁত পরিষ্কার, অঙ্গ ধোয়া ও পেশাব-পায়খানা থেকে পবিত্রতা অর্জন হয়ে যায়। এতে জীবাণুর আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। ডা. মাহমুদ চুগতাই বলেন, অন্ত্ররোগ ও আলসার থেকেও বাঁচা যায়। রোমের পাদরি হিলার বলেন, ভোরের নামাজের জন্য ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাশ্চর্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। (প্রার্থনা গ্রন্থ)
জোহরের সময় ও চিকিৎসা বিজ্ঞান:
মানুষ জীবিকার জন্য দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কাজ করে। এতে ধুলা, ময়লা, বিষাক্ত কেমিকেল শরীরে লাগে। দেহে জীবাণু আক্রমণ করে। ওজু করলে এসব দূর হয় এবং ক্লান্তি দূর হয়ে দেহ পুনর্জীবন লাভ করে। গরমের কারণে সূর্য ঢলে পড়ার সময় বিষাক্ত গ্যাস বের হয়। এ গ্যাস মানবদেহে প্রভাব ফেললে মস্তিষ্ক, পাগলামিসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। এ সময় ওজু করে নামাজ আদায় করলে এ গ্যাস প্রভাব ফেলতে পারে না ফলে দেহ বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে যায়। এ সময় আল্লাহ নামাজ ফরয করে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করেছেন।
আসরের সময় ও চিকিৎসা বিজ্ঞান:
পৃথিবী দুই ধরনের গতিতে চলে। লম্ব ও বৃত্তীয়। যখন সূর্য ঢলতে থাকে তখন পৃথিবীর ঘূর্ণন কমতে থাকে। এমনকি আসরের সময় একেবারেই কমে যায়। এ সময় রাতের অনুভূতি প্রবল হতে থাকে। প্রকৃতির মধ্যে স্থবিরতা এবং অবসাদগ্রস্ততা প্রদর্শিত হতে থাকে। আসরের নামাজের সময় অবচেতন অনুভূতির শুরু হয়। এ সময় নামাজ আদায় করলে অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্ততা, অবচেতন অনুভূতির আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। মানসিক চাপ ও অস্থিরতা কমে। নূরানি রশ্মি নামাজিকে প্রশান্তি দান করে।
মাগরিবের সময় ও চিকিৎসা বিজ্ঞান:
সারাদিন মানুষ জীবিকার জন্য শ্রম ও কষ্টের মধ্যে কাটায়। মাগরিবের সময় ওজু করে নামাজ আদায়ের ফলে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ হয়। এ সময় নামাজ আদায়ে পরিবারের বাচ্চারাও অংশ গ্রহণ করতে পারে। এতে বাচ্চারা অনুগত, পুণ্যশীল হয়। এ সময় পরিবারের মধ্যে আনন্দের রেশ বয়ে যায়।
এশার সময় ও চিকিৎসা বিজ্ঞান:
মানুষ কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে রাতে খাবার খায়। এ সময় খেয়ে শুয়ে পড়লে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, অল্প ব্যায়াম করে বিছানায় গেলে কোনো সমস্যা হবে না। এশার নামাজ ব্যায়ামের চেয়েও বেশি উপযোগী। এ নামাজ আদায়ে শান্তি পাওয়া যায়, খাদ্য হজম হয় এবং অস্থিরতা দূর হয়।
তাহাজ্জুদের সময় ও চিকিৎসা বিজ্ঞান:
এ সময়ে নামাজ আদায় করা অস্বস্তি, নিদ্রাহীনতা, হার্ট, স্নায়ুর সংকোচন ও বন্ধন এবং মাথার বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা। ডা. মাহমুদ চুগতাই বলেন, যারা দূরের জিনিস দেখে না এ সময়ে নামাজ আদায় করা তাদের চিকিৎসা। এছাড়াও এ সময়ে নামাজ আদায় করলে বুদ্ধি, আনন্দ এবং অসাধারণ শক্তির সৃষ্টি হয় যা নামাজিকে সারাদিন উৎফুল্ল রাখে।
5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পুরস্কারসমূহ
- ** কুরআনুল কারিমের ঘোষণা অনুযায়ী নামাজি ব্যক্তিকে জান্নাতে এমন লোকদের সঙ্গে রাখা হবে কেয়ামতের দিন যাদের কোনো ভয়ভীতি এবং কোনো চিন্তা থাকবে না।
- ** আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নামাজি ব্যক্তিদের ভালোবাসেন।
- ** নামাজ মানুষের রুটি-রুজিতে বরকত দান করে।
- ** নামাজি ব্যক্তিকে আল্লাহ সুস্থতা দান করেন।
- ** নামাজ আল্লাহর ভয়াবহ আজাব থেকে হিফাজত করে।
- ** ফেরেশতাগণ নামাজি ব্যক্তির হিফাজতের দায়িত্বে থাকেন এবং মাগফিরাত কামনা করেন।
- ** নামাজি ব্যক্তির ঘরে আল্লাহ রহমত ও বরকত নাজিল হতে থাকে।
- ** নামাজ শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয়দান করে।
- ** বিশেষ নূর দ্বারা নামাজির ব্যক্তির চেহারাকে আলোকিত করে দেন।
- ** নামাজি ব্যক্তির মধ্যে আল্লাহর দয়ার প্রকাশ পায় অর্থাৎ নামাজি ব্যক্তির অন্তর সর্বদা নরম থাকে।
- ** নামাজি ব্যক্তিকে জাহান্নামের ভয়াবহ আযাব থেকে নাজাত দেয়া হবে।
- ** নামাজি ব্যক্তির আখিরাতে সব মাঞ্জিল পার হবে দ্রুততার সঙ্গে এমনকি পুল সিরাতও।
- ** নামাজ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
ইসলামের অনুসারী সব মুসলিমের ওপর নামাজ হলো ফরজ ইবাদত। আল্লাহতাআলা এই ফরজ ইবাদত পালনে মুসলিম উম্মাহকে তাওফিক দান করুন। সুতরাং যে ব্যক্তি যথাযথ নিয়মে প্রতিদিন 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদয় করবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া এবং আখিরাতে তার জন্য রেখেছেন অসংখ্য নিয়ামত এবং অসংখ্য পুরস্কার।
নামাজের অতুলনীয় উপকারিতা ও পুরস্কার লাভের সৌভাগ্য লাভ করে সত্যিকারের মাওলার দিদারে আমাদের আত্ম নিয়োগ করার তাওফিক দান করুন।
— আমিন।
5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর শারীরিক উপকারিতা
নামাজ ফরজ ইবাদাত। আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন সব মুসলমানের জন্য 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ কে ফরজ করেছেন। এ নামাজ পরকালের মুক্তি লাভের অন্যতম মাধ্যম। কারণ পরকালে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব সুন্দরভাবে দিতে পারবে, তার পরবর্তী হিসাব সহজ হয়ে যাবে।
আবার নামাজ দুনিয়ায় সব ধরনের অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। শুধু তাই নয়, নামাজের মাধ্যমে নামাজি ব্যক্তি অনেক শারীরিক উপকার লাভ করে। যার কিছু তুলে ধরা হলো-
দাঁড়ানো
মানুষ যখন নামাজে দাঁড়ায়; তখন সব চোখ সিজদার স্থানে স্থির থাকে। ফলে মানুষের একাগ্রতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
রুকু
নামাজি ব্যক্তি যখন রুকু করে এবং রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে দাঁড়ায় তখন মানুষের কোমর ও হাঁটুর ভারসাম্য রক্ষা হয়। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে কোমর ও হাটু ব্যাথা উপশম হয়।
সিজদা
নামাজে যখন সিজদা করা হয় তখন নামাজি ব্যক্তির মস্তিস্কে দ্রুত রক্ত প্রবাহিত হয়। ফলে তার স্মৃতি শক্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আবার সিজদা থেকে ওঠে যখন দুই সিজদার মাঝখানে বসে এতে তার পায়ের উরু ও হাঁট সংকোচন এবং প্রসরণ ঘটে। এতে করে মানুষের হাঁটু ও কোমরের ব্যথা উপশম হয়।
ওঠা বসা
নামাজের সময় নামাজি ব্যক্তিকে দাঁড়ানো, রুকুতে যাওয়া, রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে স্থির দাঁড়ানো, আবার সিজদায় যাওয়া, সিজদা থেকে ওঠে স্থিরভাবে বসা, আবার সিজদা দিয়ে দাঁড়ানো বা বসা। এ সবই মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যায়াম। এতে মানুষের শারীরিক বহুবিদ উপকার সাধিত হয়।
মানসিকতার পরিবর্তন
নামাজের মাধ্যমে মানুষের মন ও মানসিকতায় অসাধারণ পরিবর্তন আসে। গোনাহ, ভয়, নীচুতা, হতাশা, অস্থিরতা, পেরেশানি ইত্যাদি দূরভীত হয়। ফলে বিশুদ্ধ মন নিয়ে সব কাজে সম্পৃক্ত হওয়া যায়।
দেহের কাঠামোগত উন্নতি
নামাজ মানুষের দেহের কাঠামোগত ভারসাম্যতা বজায় রাখে। ফলে স্থুলতা ও বিকলঙ্গতা হার কমে যায়। মানুষ যখন নামাজে নড়াচড়া করে তখন অঙ্গগুলো স্থানভেদে সংবর্ধিত, সংকুচিত হয়ে বিশেষ কাজ করে থাকে। অঙ্গ ও জোড়াগুলোর বর্ধন ও উন্নতি এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়।
পরিচ্ছন্ন রাখে
5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর জন্য মানুষকে প্রতিদিন পাঁচবার অজু করতে হয়। আর এতে মানুষের ত্বক পরিষ্কার থাকে। ওজুর সময় মানুষের দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার হয় য দ্বারা বিভিন্ন প্রকার জীবানু হতে মানুষ সুরক্ষিত থাকি।
চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি
নামাজের জন্য মানুষ যতবার অজু করে, ততবারই মানুষের মুখমণ্ডল ম্যাসেস হয়ে থাকে। যাতে মুখমণ্ডলে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে মানুষের চেহারার লাবন্যতা বৃদ্ধি পায়, মুখের বলিরেখা ও মুখের দাগ কমে যায়।
বিশেষ করে…
নামাজ মানুষের মানসিক, স্নায়ুবিক, মনস্তাত্ত্বিক, অস্থিরতা, হতাশা-দুশ্চিন্তা, হার্ট অ্যাটাক, হাড়ের জোড়ার ব্যাথা, ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ, পাকস্থলীর আলসার, প্যারালাইসিস, ডায়াবেটিস মেলিটাস, চোখ এবং গলা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
হার্টের রোগীদের প্রতিদিন বাধ্যতামূলকভাবে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা উচিত,নামাজ মানুষকে সব সময় সতেজ রাখে, অলসতা এবং অবসাদগ্রস্ততাকে শরীরে বাড়তে দেয় না।
পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের মধ্যে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর মতো এমন সামগ্রিক ইবাদত আর নেই। নামাজির জন্য এটা একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য যে, এটা একান্তই সামগ্রিক ব্যায়াম। যার প্রভাব মানুষের সব অঙ্গগুলোতে পড়ে এবং মানুষের প্রতিটি অঙ্গ নড়াচড়ার ফলে শক্তি সৃষ্টি হয় এবং সুস্বাস্থ্য অটুট থাকে।
পরিশেষে…
নামাজের উপকারিতায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ শুধু তাই নয়, নামাজ মানুষের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক পবিত্রতা সাধনের অনন্য হাতিয়ার।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সময়মতো 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
ফজরের নামাজের ১০ উপকারিতা
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, أَوَّلُ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الصَّلاةُ ، فَإِنْ صَلَحَتْ صَلَحَ لَهُ سَائِرُ عَمَلِهِ ، وَإِنْ فَسَدَتْ فَسَدَ سَائِرُ عَمَلِهِকেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর হিসাব হবে। যদি নামাজ ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি নামাজ বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। (তাবরানি ১৯২৯)
মূলত নামাজ এমন ইবাদত যা সারা বছর দৈনিক 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। মৃত্যু ছাড়া আর কোনো অবস্থাতেই 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ মাফ হয় না। এমনকি মৃত্যুশয্যাতেও নামাজ হতে বিরত থাকার কোনো বিধান নেই।
5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর মধ্যে ফজর নামাজের গুরুত্ব আরো বেশি। হাদিসে এর এত বেশি গুরুত্ব এসেছে যে, যদি একজন মুমিন তন্মধ্য থেকে মাত্র একটিও মনে রাখে তাহলেও এক্ষেত্রে তার গাফলতি অনায়াসে দূর হয়ে যাবে। তার হিম্মত বেড়ে যাবে। ঘুম ও অলসতা কাটিয়ে ওঠতে সক্ষম হবে। নব প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে সে ফজরের জামাতে শরিক হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টায় ব্রতী হবে—ইনশা আল্লাহ।
এ লক্ষে ফজরের নামাজ আদায়ে বিশেষ ১০ টি উপকারী দিক পাঠকের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো।
১. ফজরের নামাজে দাঁড়ানো, সারা রাত দাঁড়িয়ে নামায পড়ার সমান। উসমান ইবন আফফান রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, مَنْ صَلَّى الْعِشَاءَ فِي جَمَاعَةٍ فَكَأَنَّمَا قَامَ نِصْفَ اللَّيْلِ ، وَمَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فِي جَمَاعَةٍ فَكَأَنَّمَا صَلَّى اللَّيْلَ كُلَّهُ
যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ঈশার নামাজ আদায় করলো, সে যেন অর্ধেক রাত জেগে নামাজ পড়লো। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সাথে পড়লো, সে যেন পুরো রাত জেগে নামাজ পড়লো। (মুসলিম ১০৯৬)
২. ওই দিনের পুরোটা আল্লাহর জিম্মায় থাকার দুর্লভ সৌভাগ্য। ফজরের নামাজ পড়লেই শুধু এ-ঈর্ষণীয় সৌভাগ্য লাভ করা যাবে। যুনদব ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সুফইয়ান আলবাজালি রাযি. বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللَّهِ فَلَا يُتْبِعَنَّكُمُ اللَّهُ بِشَيْءٍ مِنْ ذِمَّتِهِ
যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর জিম্মায় চলে গেল। অতএব আল্লাহ যেন তার জিম্মার বিষয়ে তোমাদেরকে কোনোরূপ অভিযুক্ত না করেন। (তিরমিযি ২১৮৪)
৩. ফজরের নামাজ কেয়ামতের দিন নূর হয়ে দেখা দেবে।
বুরাইদা আলআসলামি রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, بَشِّرِ الْمَشَّائِينَ فِي الظُّلَمِ إِلَى الْمَسَاجِدِ بِالنُّورِ التَّامِّ يَوْمَ الْقِيَامَةِযারা আঁধারে (ফজর নামাযে) মসজিদের দিকে হেঁটে যায়, তাদের কেয়ামতের দিন পরিপূর্ণ নূর প্রাপ্তির সুসংবাদ দাও। (আবু দাউদ ৪৯৪)
৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং জান্নাত প্রাপ্তির সুসংবাদ। আবূ যুহাইর ‘উমারাহ ইবনে রুআইবাহ রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে,لَنْ يَلِجَ النَّارَ أَحَدٌ صَلَّى قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا» يعني: الفَجْرَ والعَصْرَযে ব্যক্তি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে (অর্থাৎ ফজরের ও আসরের নামাজ) আদায় করবে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। (মুসলিম ৬৩৪, নাসায়ি ৪৭১, ৪৮৭, আবু দাউদ ৪২৭, আহমদ ১৬৭৬৯, ১৭৮৩৩)
৫.মুনাফেকি থেকে মুক্তি পাবে। আবূ হুরাইরা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, لَيْسَ صَلاَةٌ أَثْقَلَ عَلَى المُنَافِقِينَ مِنْ صَلاَةِ الفَجْرِ وَالعِشَاءِ، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِيهِمَا لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْواًমুনাফিকদের উপর ফজর ও এশার নামাজ অপেক্ষা অধিক ভারী নামাজ আর নেই। যদি তারা এর ফজিলত ও গুরুত্ব জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে বা পাছার ভরে অবশ্যই (মসজিদে) উপস্থিত হত। (বুখারি ৬৫৭, ৬৪৪, ৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪, মুসলিম ৬৫১)
৬. সরাসরি আল্লাহর দরবারে নিজের নাম আলোচিত হবে। আবূ হুরাইরা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,يَتَعَاقَبُونَ فِيكُمْ مَلاَئِكَةٌ بِاللَّيْلِ وَمَلاَئِكَةٌ بِالنَّهَارِ ، وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلاَةِ الفَجْرِ وَصَلاَةِ العَصْرِ ، ثُمَّ يَعْرُجُ الَّذِينَ بَاتُوا فِيكُمْ ، فَيَسْأَلُهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ بِهِمْ : كَيْفَ تَرَكْتُمْ عِبَادِي ؟ فَيَقُولُونَ : تَرَكْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَ ، وَأَتَيْنَاهُمْ وَهُمْ يُصَلُّونَতোমাদের কাছে পালাক্রমে দিনে ও রাতে ফেরেশতারা আসে। তারা আসর ও ফজরের সময় একত্রিত হয়। যারা রাতের কর্তব্যে ছিল তারা ওপরে উঠে যায়। আল্লাহ তো সব জানেন, তবুও ফিরিশতাদেরকে প্রশ্ন করেন, আমার বান্দাদেরকে কেমন রেখে এলে? ফেরেশতারা বলে, আমরা তাদেরকে নামাজরত রেখে এসেছি। যখন গিয়েছিলাম, তখনো তারা নামাজরত ছিল। (বুখারি ৫৪০)
৭. দুনিয়া আখেরাতের সেরা বস্তু অর্জিত হয়ে যাবে। আয়েশা রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,رَكْعَتَا الْفَجْرِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَاফজরের দুই রাকাত দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে, সবকিছুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ। (মুসলিম ১২৪০)
৮. পরিপূর্ণ এক হজ্জ ও ওমরার সওয়াব পাবে, যদি সে সূর্য ওঠা পর্যন্ত আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। আনাস ইবন মালিক রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ ، كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ ، وَعُمْرَةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍ ، تَامَّةٍযে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজরের নামাজ আদায়ান্তে বসে আল্লাহর যিকিরে মশগুল থেকে সূর্য উদয় হওয়ার পর দুই রাকাত নফল নামাজ (ইশরাক) আদায় করবে, সে পরিপূর্ণ এক হজ্জ ও ওমরার সওয়াব পাবে। ‘পরিপূর্ণ’ এ শব্দটি তিনি তিনবার বলেছেন। (তিরমিযি ৫৮৬)
৯. তুলনাহীন গণিমত লাভ করবে। উমর ইবনুল খাত্তাব রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নাজদের দিকে এক অভিযানে একটি সেনাদল পাঠান। তারা প্রচুর গণিমতের সম্পদ অর্জন করে এবং তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। তাদের সাথে যায় নি এমন এক লোক বলল, অল্প সময়ের মধ্যে এত পরিমাণে উত্তম গণিমত নিয়ে এদের চেয়ে তাড়াতাড়ি আর কোন সেনাদলকে আমরা ফিরে আসতে দেখি নি। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,أَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى قَوْمٍ أَفْضَلُ غَنِيمَةً وَأَسْرَعُ رَجْعَةً ؟ قَوْمٌ شَهِدُوا صَلَاةَ الصُّبْحِ ثُمَّ جَلَسُوا يَذْكُرُونَ اللَّهَ حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَأُولَئِكَ أَسْرَعُ رَجْعَةً وَأَفْضَلُ غَنِيمَةًআমি কি তোমাদেরকে এমন এক দলের কথা বলব না যারা এদের চেয়ে তাড়াতাড়ি উত্তম গণিমত নিয়ে ফিরে আসে? যারা ফজরের নামাজের জামা’আতে হাযির হয়, (নামাজ শেষে) সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহ্ তা’আলার যিকির করতে থাকে, তারাই অল্প সময়ের মধ্যে উত্তম গণিমতসহ প্রত্যাবর্তনকারী। (তিরমিযি ৩৬৪১)
১০. কেয়ামতের দিন সরাসরি আল্লাহকে দেখার সৌভাগ্য লাভ। আর এটি হচ্ছে সর্বোত্তম পুরস্কার। জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ আল বাজলী রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -এর কাছে ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্ণিমার রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন,أَمَا إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا، لاَ تُضَامُّونَ ـ أَوْ لاَ تُضَاهُونَ ـ فِي رُؤْيَتِهِ، فَإِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لاَ تُغْلَبُوا عَلَى صَلاَةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ، وَقَبْلَ غُرُوبِهَا فَافْعَلُوا ”. ثُمَّ قَالَ ” فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَاশোন! নিশ্চয় তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে তেমনি স্পষ্ট দেখতে পাবে, যেমন স্পষ্ট ঐ চাঁদকে দেখতে পাচ্ছ। তাঁকে দেখতে তোমরা কোনো ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই তোমরা যদি সূর্য উঠার আগের নামাজ ও সূর্য ডুবার আগের নামাজ আদায়ে সমর্থ হও, তাহলে তাই কর। তারপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, “সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসার তাসবীহ্ পাঠ করুন।” (বুখারি ৫৭৩)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথা নিয়মে জামাআতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে উল্লেখিত ফজিলত, মর্যাদা ও উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারীর পুরস্কার ও উপকারিতা
আখেরাতের পুরুস্কার
উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা রা. বলেন: নবী করীম সা. এর এ রকম অভ্যাস ছিল যে, তিনি যখন ঘরে তাশরীফ আনতেন কোন লৌকিকতা ছাড়াই ঘরবাসীদের সাথে প্রাণ খুলে কথাবার্তা বলতেন। কিন্তু মুয়াজ্জিনের আজান শোনা মাত্রই তিনি এরূপ ব্যাকুল হয়ে উঠতেন যে, সাথে সাথে আমাদের সঙ্গে কথাবার্তা বন্ধ করে দিতেন এবং নামাযের প্রস্তুতি নিতেন। তখন তাঁর অবস্থা দেখে মনে হত, আমরা যেন তাঁর নিকট সম্পূর্ণ অপরিচিত।
এর কারণ এই ছিল যে, আল্লাহ তায়া’লা এবং তাঁর বান্দার মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র সূত্র হচ্ছে নামায; সুতরাং এই নামাযের জন্য স্ত্রী-পুত্র তো বটেই এমনকি সমগ্র দুনিয়া এবং দুনিয়ায় যা কিছু আছে তার সবকিছু বিনষ্ট হলে ও কিছু আসে যায় না। মহান রাব্বুল আলামীন নামাযী বান্দাদের জন্য কি পুরস্কার রেখেছেন সে সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের কয়েকটি উদ্ধৃতি নিম্নে পেশ করা হল।
১. মহান আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন ঃالذين يقيمون الصلوة ومما رزقنهم ينفقون- اولئك هم المومنون حقا- لهم درجت عند ربهم ومغفرة ورزق كريم-
‘‘যারা নামায কায়েম করে এবং আমার দেয়া রিযিক থেকে ব্যয় করে। তারা হল সত্যিকার ঈমানদার। তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [ সূরা আনফাল-৩-৪]
২. আল্লাহ তা’য়ালা আরো বলেন:
والذين هم على صلوتهم يحافظون- اولئك هم الورثون- الذين يرثون الفردوس هم فيها خلدون-
‘‘আর যারা তাদের নামায সমূহের হিফাযত করে তারাই হবে অধিকারী। অধিকারী হবে জান্নাতুল ফেরদাউসের তাতে চিরকাল থাকবে। [সূরা মুমিনুন -৯ -১১]
৩. হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আল্লাহ তায়া’লা বলেন ঃ
আমি আপনার উম্মতের উপর 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করেছি এবং আমি আমার নিজের সাথে অঙ্গীকার করেছি যে, যে ব্যক্তি যথা সময়ে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ সমূহের পূর্ণ হিফাযত করবে, আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। আর যে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ সমূহের হিফাযত করবে না, তার জন্য আমার কাছে কোন অঙ্গীকার নেই। [আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ]
৪. একবার রাসুলুল্লাহ সা. সাহাবীদের জিজ্ঞাসা করলেনঃ যদি তোমাদের মধ্যে কারো ঘরের পাশ দিয়ে কোন নদী প্রবাহিত হয় যার মধ্যে সে দৈনিক পাঁচ বার গোসল করে, তাহলে বল, তার শরীরে কোন ময়লা থাকবে কি? সাহাবীগণ আরয করলেন না, তার শরীরে কোন ময়লাই থাকবেনা। নবী করীম সা. বললেন, এরূপ হচ্ছে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ এর দৃষ্টান্ত। আল্লাহ তা’য়ালা এসব নামাযের মাধ্যমে তার গুনাহগুলো মিটিয়ে দেবেন। [বুখারী, মুসলিম]
৫. হযরত আবুযার রা. বর্ণনা করেনঃ একবার শীতের সময় যখন গাছের পাতা ঝরে পড়ছিল, নবী করীম সা. বাইরে তাশরীফ আনলেন এবং গাছের দু’টি ডাল ধরে ঝাঁকি দেয়া শুরু করলেন এবং ঝরঝর করে (শুকনো) পাতা পড়তে লাগল। তখন নবী সা. বললেন, হে আবুযার! যখন কোন মুসলমান একনিষ্ঠ হয়ে আন্তরিকতার সাথে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তার গুনাহ সমূহ ঠিক এভাবে ঝরে পড়ে যেমন এ গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়ছে। [মুসনাদে আহমদ]
৬. বান্দার চারটি আমল নিয়ে ফেরেশতারা পরস্পরে বলাবলি করে। আমল সমূহ নিম্নরূপ ঃ
* নামাযের পর মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করা।
* এক নামায শেষ করে পরবর্তী নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকা।
* জামায়া’তে নামায পড়ার আশায় পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
* এবং অসুস্থ অবস্থায় শীতের কষ্ট উপেক্ষা করেও পরিপূর্ণ অযু করা। এ চারটি কাজের মাধ্যমে নামাযী ব্যক্তি সুখে-শান্তিতে বাস করবে এবং নেককার বান্দা হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হবে। আর সে সদ্যজাত শিশুর মত নিষ্পাপ হবে। [ মিশকাত]
৭. হাদীস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি ধীরস্থিরভাবে পরিপূর্ণ আদবের সাথে যথা নিয়মে 5 times prayer/৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে আল্লাহ্ তায়া’লা তাকে পাঁচটি পুরস্কার দ্বারা সম্মানিত করবেন।
* তার রিজিক ও জীবিকার যাবতীয় কষ্ট দূর করে দিবেন।
* তার কোন কবর আযাব হবেনা।
* কিয়ামতের দিন আমলনামা তার ডান হাতে প্রদান করা হবে।
* সে বিদ্যুতগতিতে পুলসিরাত পার হতে পারবে।
* সে বিনা হিসেবে আনন্দের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [ফাজায়েলে নামাজ]
৮. হাদীস শরীফে আছে যে ব্যক্তি নামায পড়ে মসজিদ হতে বের হয়, কিন্তু পরবর্তী নামাযে শরীক না হওয়া পর্যন্ত তার অন্তঃকরণ মসজিদের দিকেই থাকে এবং সে যথাসময়ে নামায সম্পন্ন করে সে ব্যক্তি কিয়ামতের কঠিন দিবসে আল্লাহ্র আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাবে। [মিশকাত]
৯. রাসূলে কারীম সা. বলেছেন ঃ তোমরা সর্বদা গুনাহর আগুনে জ্বলতেছ। তোমরা যখন ফজরের নামায আদায় কর, তখন উহা নিভে যায়। ফজর হতে জোহর পর্যন্ত আবার পাপের আগুনে জ্বলতে থাক। যখন জোহরের নামায শেষ কর তখন উহা নিভে যায়। পুনরায় জোহর হতে আসর পর্যন্ত আগুন জ্বালিয়ে তার মধ্যে পোড়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করতে থাক; কিন্তু আসরের নামায সমাপ্ত করার সংগে সংগে উহা নিভে শীতল হয়ে যায়। আবার আসর হতে মাগরিব পর্যন্ত সময় উহা এমনভাবে জ্বলে উঠে যে, উহার শিখা তোমাদেরকে ছাই করে ফেলতে চায়। কিন্তু মাগরিবের নামায আদায় করা মাত্রই উহা নির্বাপিত হয়ে যায়। তারপর ই’শা পর্যন্ত তোমাদের পাপের আগুন আবার তীব্রভাবে জ্বলতে থাকে এবং যখন তোমরা ই’শার নামায সম্পন্ন কর, তখন উহা সম্পূর্ণরূপেই নিভে যায়। তখন তোমরা সম্পূর্ণ নিষ্পাপ হয়ে ঘুমিয়ে থাক। ঘুম ভাংগা পর্যন্ত তোমাদের আমল নামায় আর কোন প্রকার গুনাহ লিখা হয়না। [তারগীব ও তারহীব]
সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্ নামাযের পুরস্কার
১. ফজরের সুন্নাত ঃ আয়েশা রা. হতে বর্ণিতঃ নবী করীম সা. বলেছেন, ফজরের দু’রাকাআ’ত সুন্নাত সমস্ত দুনিয়া ও উহার মধ্যবর্তী সকল নিয়ামত হতে উত্তম। [মুসলিম]
২. জোহরের সুন্নাত ঃ উম্মে হাবীবা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জোহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকআ’ত এবং পরে দু’রাকআ’ত সুন্নাত যথারীতি আদায় করে আল্লাহ তায়া’লা তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন। [তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ]
৩. আসরের সুন্নাত ঃ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি আসরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকাআ’ত সুন্নাত পড়ে আল্লাহ্ তার প্রতি রহম করেন। [আবু দাউদ, তিরমিযী, আহমদ] * হুজুর সা. আসরের সুন্নাত কখনো কখনো দু’রাকাআ’ত পড়তেন।
৪. মাগরিবের সুন্নাত ঃ
যে ব্যক্তি মাগরিবের (ফরযের) পর দু’রাকাআ’ত স্ন্নুাত পড়ে তার সে নামায উপরস্থ ইল্লিয়ীনে পৌঁছানো হয়। [আবু দাউদ]
৫. ই’শার সুন্নাত ঃ যে ব্যক্তি দিনরাত ১২ রাকাআ’ত নামায পড়বে। তার জন্য বেহেশতে ঘর নির্মান করা হবে। চার রাকআ’ত জোহরের পূর্বে, দু’রাকআ’ত জোহরের পরে, দু’রাকাআ’ত মাগরিবের পরে, দু’রাকাআ’ত ই’শার পরে এবং দু’রাকাআ’ত ফজরের পূর্বে। [বায়হাকী]
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।
আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )
ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )