Eid-ঈদের সালাত ঘরে আদায় করা যাবে কিনা ও ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম?

 

মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ। বছরে দু’টি ঈদ উদযাপন করে মুমিন মুসলমান। ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের নামাজ বছরে দুবার পড়ার কারণে অনেকেই নামাজ পড়ার নিয়ম ভুলে যান। সে কারণেই মুমিন মুসলমানের জন্য ঈদের নামাজের নিয়ম জেনে নেয়া জরুরি।

ঈদের নামাজ উন্মুক্ত স্থানে আদায় করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করতেন। যদি উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা না থাকে তবে মসজিদেও ঈদের নামাজ পড়া যাবে।  

 

বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক দেশের মসজিদ কিংবা বাইরে বিশাল জামাআতে ঈদের নামাজ আদায়ে রয়েছে বিধি-নিষেধ। তাই মসজিদ ছাড়াও বাসা-বাড়িতেও ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে। তবে শর্ত হলো তা জামাআতে আদায় করা এবং খুতবা দেয়া।  

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ মসজিদে, খোলা জায়গায় কিংবা বাসা-বাড়িতে যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাআতের সঙ্গে পড়তে হবে। জুমআ নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য যে শর্ত প্রযোজ্য, ঈদের নামাজ আদায় করার জন্যও সে একই শর্ত প্রযোজ্য। jagonews24 সুতরাং জামাআত ছাড়া ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে না। বাসা-বাড়িতে ঈদের নামাজ আদায় করতে হলেও অবশ্যই জামাআতে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। তাই ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য ইমাম ছাড়া ন্যূনতম তিনজন মুসল্লি হতে হবে।

ঈদের নামাজ

ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুমআর নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।

ঈদের নামাজের পার্থক্য

তবে ঈদের নামাজের জন্য পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ৬টি তাকবির দিতে হবে। প্রথম রাকাআতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া। দ্বিতীয় রাকাআতে সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া।  

ঈদের নামাজের নিয়ত

ঈদের দুই রাকাআত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি… আল্লাহু আকবার।  

ঈদের নামাজের প্রথম রাকাআত

– তাকবিরে তাহরিমা : ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধা। – ছানা পড়া : ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা। – অতিরক্তি ৩ তাকবির দেয়া। এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা।

প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেধেঁ নেয়া। – আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া – সুরা ফাতেহা পড়া – সুরা মিলানো। অতপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাআত শেষ করা।  

ঈদের নামাজের দ্বিতীয় রাকাআত

– বিসমিল্লাহ পড়া – সুরা ফাতেহা পড়া – সুরা মিলানো। – সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া। প্রথম রাকাআতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেয়া অতপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা। – তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া। – সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।  

ঈদের নামাজের খুতবা

ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে। অবশ্য অনেকেই খুতবা না দেয়ার ব্যাপারে শিথিলতার কথা বলেছেন। খুতবা না দিলেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন। উল্লেখ্য, অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাজহাবসহ অনেকেই প্রথম রাকাআতে তাকবিরে তাহরিমাসহ ৭ তাকবির আর দ্বিতীয় রাকাআতে ৫ তাকবিরে দিয়ে থাকেন।

এতে কোনো অসুবিধা নেই। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। ঈদের নামাজ আদায়ে যথাযথ নিরাপত্তা বজায় রেখে সুস্থ থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।    

এবার কি ঈদের সালাত ঘরে আদায় করা যাবে?

  উত্তর দিচ্ছেনঃ ডঃ আবুল কালাম আজাদ মুদীর, ইউরোপিয়ান জামেয়া ইসলামিয়া, লন্ডন ঘরে ঈদের সালাত আদায় করা যাবে কি না, এই বিষয়টা নতুন নয়। সাহাবাদের যুগেও এই বিষয়টার আমল খুজে পাওয়া যায়। সহীহ রেওয়ায়েতে প্রমাণিত হয়েছে যে আনাস (রাঃ) ঈদের সালাত জামায়াতে না পাওয়ার পর তিনি ঘরে এসে পরিবারের সবাইকে নিয়ে -এমনকি দাস-দাসীদেরকে একত্রিত করে তাকবীর ঈদের জামায়াত করতেন।

তবে, সেখানে তিনি ঈদের খুতবা দিতেন না। কোন এক সময়ে আনাস (রা) এর দাস আব্দুল্লাহ বিন আবি উতবাহ দুই রাকায়াত ঈদের সালাতের ইমামতি করেছেন। (দেখুনঃ এরওয়াউল গালীল, আলবানী ৩/১২০), বুখারী হাদীস নং ৯৮৭ এর আগে, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা (হাদীস নং ৫৮০৩), সুনানে বায়হাকী (৬২৩৭)।

এই হাদীস বা সাহাবার আমলের ওপর ভিত্তি করে মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী মাজহাবে ঘরে ঈদের সালাত আদায় করা যাবে বলে মতামত দেওয়া হয়েছে। (দেখুনঃ মুখতাসারুল ঊম্ম- মুযানী ৮/১২৫, শারহুল খারশী ২/১০৪)। হানাফী মাজহাবে বলা হয়েছে যে যদি ইমামের সাথে ঈদের সালাত না আদায় করতে পারে তাহলে আলাদা বা একা তা আর আদায় করা যাবে না।

(দেখুন আদ-দুররুল মোখতার ২/১৭৫)। এর পক্ষে হাদীসের কোন প্রমাণ না পাওয়া গেলেও যুক্তি হলো- ঈদ হলো ব্যাপক গোষ্ঠীয় ইবাদত, পারিবারিক নয়। ফলে, ঘরে তা আদায় করা যাবে না। ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) ও ইবনে উসাইমিন হানাফীদের মতের পক্ষে মত দিয়েছেন। (দেখুনঃ আশশারহুল মুমতি৫/১৫৬)।

সাউদী স্থায়ী ফতোয়া কমিটির ফতোয়া (৮/৩০৬) বলেছেন যে যদি কেউ ঈদের সালাতের জামায়াত না পায়, তিনি ঘরে বা অন্য কোথাও আবার আলাদা জামায়াত করতে পারবেন ঈদের অতিরিক্ত তাকবীর সহ। কিন্তু এখানে সালাতের পর ঈদের খুতবা দিবেন না।

এই সালাতের জন্যে ইক্বামত দিতে হবে না এবং ক্বেরাত জোরে পড়বেন। ঈদের দিনে ঘরে ঈদের সালাত করলে আগে ঈদের সালাত পড়বেন এবং এরপর এশরাকের সালাত পড়বেন। কারণ ঈদের দিনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওসাল্লাম) ঐ দিনের সালাত শুরু করতেন ঈদের সালাত দিয়ে, এশরাকের সালাত নয়।

মিশরের গ্রান্ড মুফতিও ফতোয়া দিয়েছেন যে এই বছরের কোভিট-১৯ এর কারণে পরিবারের সদস্যরা নিজেরা ঘরেই ঈদের সালাতের জামায়াত করতে পারবেন। কারণ এর পক্ষে সাহাবীদের আমল পাওয়া যায়।

(দেখুনঃ https://www.albayan.ae/editors-choice/varity/2020-05-15-1.3859100 ) আমরা তাহলে কোনটা আমল করব? এখানে আপনাদের কাছে ভিন্নভিন্ন মত উপস্থাপন করা হলো। আপনারাই সিদ্ধান্ত নিবেন কোনটা আমল করবেন।

তবে, যেহেতু আনাস (রাঃ) নিজেই বাসায় পরিবারের লোকদেরকে নিয়ে ঈদের সালাত করেছেন বলে সহীহ হাদীসে প্রমাণ পাওয়া যায়, তাই আমরাও সে অনুযায়ী আমল করতে পারি। (আমি এই মতকে বেশী শক্তিশালী মনে করি এবং আমি এবার এই মতের ওপর আমল করব বলে নিয়ত করেছি।) আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।

ঈদের নামাজ ঘরে পড়া নিয়ে যা বললেন আজহারী (ভিডিওসহ

 
 
 
ফেসবুক লাইভে বক্তব্য রাখছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী।
ফেসবুক লাইভে বক্তব্য রাখছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। ছবি: সংগৃহীত
ঈদের নামাজ ঈদগাহ ছাড়া জায়েজ হয় কিনা এ বিষয়ে বিভিন্ন মাজহাবের ইমামের মতপার্থক্যগুলো আলোচনা করেছেন এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় আলেম মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১০টায় মালয়েশিয়া থেকে ফেসবুক লাইভে মাহে রমজান, যাকাতের গুরুত্ব ও ঈদের জামায়াত নিয়ে এক ঘণ্টারও বেশি সময় আলোচনা করেন তিনি। ইতিমধ্যে তার ওই ফেসবুক লাইভ ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
 
বক্তব্যটি মিজানুর রহমান আজহারীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভ সম্প্রচারিত হয়। সম্প্রচারের প্রথম তিন ঘণ্টাতেইপ্রথম তিন ঘণ্টায় প্রায় ১ মিলিয়ন (১০ লাখ) দর্শক দেখেছেন। আর ওই সময়ের মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ তার এ বক্তব্যে লাইক ও কমেন্ট করেছেন। মধ্যে ৩৮ হাজার দর্শক বক্তব্যটি নিজেদের টাইমলাইনে শেয়ার করেছেন।
 
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোট ১৩ লাখেরও বেশি দর্শক ওই ভিডিওটি দেখেছেন। শেয়ার করেছেন ৪৩ হাজার ভার্চুয়ালবাসী। দুই লক্ষাধিক মানুষ লাইক ও কমেন্ট করেছেন। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের সংখ্যা।
 
বর্তমান সময়ের আলোচিত ইসলামী বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী তার বক্তব্যে বলেন, যেহেতু করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন গোটা বিশ্ব লকডাউন চলছে। ক্রাইসিস মুমেন্ট (সংকটময় মুহূর্ত)। গোটা বিশ্ববাসী এখন আতংকিত। গোটা বিশ্বের মানুষ এখন খুব বিপদের মধ্যে আছে। ফলে আমাদের মসজিদগুলো এখন বন্ধ।
 
নামাজগুলো আমাদের ঘরে পড়তে হচ্ছে। এমনকি জুমার সালাতও মসজিদে আদায় করতে পারছি না। জুমার সালাতের পরিবর্তে জোহরের সালাত আদায় করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আর দুই দিন পরেই আমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছি।
 
বক্তব্যে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, বিগত যেকোনো বছরের ঈদের তুলনায় এই বছরের ঈদটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কেননা এই মহামারীকালীন ঈদের সালাত জামায়াতে আদায় করা সম্ভব নাও হতে পারে।
 
ভিডিওতে করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে ও সুস্থতা বজায় রাখতে তিনি ঈদের সালাত একা বা ঘরে আদায় কিংবা সর্বোচ্চ কয়েকজন মিলে ঈদের জামায়াত পড়ার পরামর্শ দেন তিনি। মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ঈদের নামাজে আজান ও ইকামাত দেয়ার প্রয়োজন নেই।
 
ঈদের নামাজে অতিরিক্ত কিছু তাকবির দিতে হয়। অতিরিক্ত তাকবিরের বর্ণনা দিয়ে আজহারী বলেন, মাজহাব ভেদে তাকবিরের সংখ্যার পার্থক্য রয়েছে। হানাফি মাজহাবে ছয়টি অতিরিক্ত তাকবির দেয়া হয়ে থাকে। প্রথম রাকআতে তিনটি দ্বিতীয় রাকাআতে তিনটি।
 
শাফিঈ মাজহাবে ১২টি অতিরিক্ত তাকবির দিতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রথম রাকআতে সাতটি ও দ্বিতীয় রাকআতে পাঁচটি। হাম্বলি আর মালিকি মাজহাবে ১১টি অতিরিক্ত তাকবির দেয়া হয়ে থাকে। প্রথম রাকাআতে ছয়টি আর দ্বিতীয় রাকাআতে পাঁচটি। তবে বাংলা ভাষাভাষীরা মূলত হানাফি মাজহাবের অনুসারী হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তিনি ছয় তাকবিরই পড়ার পরামর্শ দেন।  

ঈদের নামাজ ঘরে পড়ার নিয়ম

মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, নামাজে দাঁড়িয়ে তাকবিরে তাহরীমা অর্থাৎ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সানা পড়তে হবে। তারপর কেরাত পড়ার আগে অতিরিক্ত তিনটি তাকবির দিতে হবে অর্থাৎ ‘আল্লাহু আকবর’ তিনবার বলতে হবে।
 
এরপর সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য একটি সূরা এবং অন্য সকল নামাজের ন্যায় রুকু ও সিজদাহ করতে হবে। এবার দ্বিতীয় রাকাআতের জন্য দাঁড়িয়ে প্রথমে কেরআন পড়তে হবে অর্থাৎ সূরা ফাতিহা ও সঙ্গে অন্য একটা সূরা পড়তে হবে। এরপর রুকুতে যাওয়ার আগে তিনটি তাকবির অর্থাৎ ‘আল্লাহু আকবার’ তিনবার বলতে হবে এবং চতুর্থ তাকবির দিয়ে তারপর রুকুতে যেতে হবে।
 
এখানে তিনটি অতিরিক্ত তাকবির ও চতুর্থটি নামাজের স্বাভাবিক তাকবির। এভাবে ছয়টি অতিরিক্ত তাকবির দেয়ার মধ্য দিয়ে খুব সহজেই ঈদের নামাজ আদায় করা যেতে পারে।তবে ঈদের সালাত ঘরে আদায়ের ক্ষেত্রে খুতবার প্রসঙ্গটি বাদ যাবে। কেননা খুতবা সবার উদ্দেশে ইমাম সাহেব দিয়ে থাকেন।  

সবাইকে বেশি বেশি দোয়া পড়ার আহ্বান

  সবশেষে তিনি ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সহানুভূতি জানান ও তাদের জন্য বিশেষ দোয়া করেন। আর করোনাভাইরাস মহামারীতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। আর এই মহামারী থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে সবাইকে বেশি বেশি দোয়া করার আহ্বান জানান।
 

আরও পড়ুন…

 

Salam-সঠিক ভাবে সালাম দেওয়া ও নেওয়ার নিয়ম ও পদ্ধতি

 

সালাম ইসলামের সৌন্দর্যময় একটি দিক। সালাম আদান প্রদানের ফলে শত্রু থেকে সখ্যে পরিণত হয়। দুই ব্যাক্তির মাঝে ভালবাসা ফয়দা হয়। চেনা পরিচিতদের মাঝে ভালবাসা বৃদ্ধি পায়। অচেনা মানুষকে আপন করে নেওয়া যায়। এই মনোহর রূপমাধুরী শুধুমাত্র ইসলামেই রয়েছে। যা অন্য কোন ধর্মে নেই।

জনৈক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলেন— ইসলামে কোন্‌ জিনিসটি উত্তম? তিনি বললেন, তুমি খাদ্য খাওয়াবে ও চেনা অচেনা সকলকে সালাম দিবে। সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১২

“সালাম” মানেই শান্তি কামনা করা। আমি খুব অবাক হয় মাদ্রাসার ছাত্রদের দেখে! তাদের মাঝে রয়েছে সালামের প্রচার-প্রসার। ছোট-বড় সবাইকে সালাম দেয়। ছোট-বড় কোন ভেদাভেদ নেই। অধুনা আমাদের সমাজে এর বড়ই অভাব।

আমি বড় বলে ছোটরা আমাকে সালাম দিবে। আমি বড়, আমি কেন ছোটদের সালাম দেব? আর একটু নাম করা ব্যাক্তিত্ব হলে তো কথায় নেই। না দিলে পিছনে গিয়ে শেকায়ত করে— অমুকের ছেলে বড় বিয়াদব। আমি পাশ দিয়ে আসতেছি দেখা সত্বেও সালাম দেয়নি।

রাসূল সা. এরকম ভেদাভেদ করতেন না। রাসূল (ﷺ) ছোট-বড় সবাইকে সালাম দিতেন। আমরাও এই অভ্যাসকে নিজেদের মাঝে ফিট্ করে নেওয়ার প্রয়াস চালাব-ইন শা আল্লাহ!

সালাম মানেই শান্তি। কোন মুসলমান ভাইকে দেখামাত্র বললাম, “আসসালামু আলাইকুম।” অর্থ হলো, “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।” সালামের উত্তরে বলল, “ওয়ালাইকুমুস সালাম”। অর্থ হলো, “আপনার উপরেও শান্তি বর্ষিত হোক।” এভাবে পরিচিত অপরিচিত সবার জন্য শান্তি কামনা করা একমাত্র ইসলামেই রয়েছে।

যে আগে সালাম দেয়, সে অহংকার মুক্ত হয়। কারণ, অহংকার ব্যাক্তিরা আগে সালাম দিতে লজ্জাবোধ করে। বরং তাঁরা অন্যের সালামের প্রতি মুখাপেক্ষী। আমি একজন নামকরা ব্যাক্তি। আমি কীভাবে দিনমজুরকে সালাম দিব? অহংকারীরা সর্বসাধারণ জনগণকে তুচ্ছ মনে করে। কিন্তু, ইসলাম এই ভেদাভেদকে দূরীভূত করতেই সালামকে প্রাধান্য দিয়েছে। হাদীসে আছে—

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন—মানুষের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক উত্তম ঐ ব্যক্তি, যে আগে সালাম দেয়। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫১৯৭

আল্লাহ তাআলা এরশাদ ফরমান—

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তোমাদের সালাম দেওয়া হবে, তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে অথবা জবাবে তাই দেবে।’ সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৮৬

তবে অধুনা আমাদের সমাজে কিছু কুসংস্কার এখনো রয়ে গেছে। যখন কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে দেখা হয়, সালাম দিয়ে মুসাফাহা করত। কিন্তু, এখন বলে হাত নাড়িয়ে হাই (hi)। অথচ তাঁর মাঝে কোন বরকত নেই। না আছে নেকি, না আছে বরকত!

আরেকটি কুসংস্কার হলো— মাথা নিছু করে পা ধরে সালাম করা। যেটি সম্পূর্ণ শরীয়তবহির্ভূত কাজ। একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করা সম্পূর্ণ হারাম। পা ধরে সালাম বিধর্মীদের সংস্কার, যেটি আঁকড়ে ধরছে মুসলমানরা।

ইসলামের মনোহারিত্ব নিয়ে লিখতে গেলে অনেক লিখা। তন্মধ্যে সালাম হলো ইসলামের সৌন্দর্যময় একটি দিক। সালাম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করলাম।

 

সালামের সঠিক ও সুন্নতি পদ্ধতি কি?

 

 
 
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল দাঈ: ইসলাম এক উন্নত সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতিভূ। এর প্রতিটি কর্মই অত্যন্ত চমৎকার, পবিত্র ও কল্যাণকর। ইসলামি সম্ভাষণ রীতি হলো, এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। একজন বিবেকবান ব্যক্তি যদি চিন্তা করে তাহলে তার কাছে প্রতিভাত হবে যে, ইসলামি সম্ভাষণ রীতি অন্য সকল ধর্মীয় ও প্রচলিত রীতিনীতি থেকে সুন্দর, অর্থবহ ও গাম্ভীর্যপূর্ণ।
 
এটি কেবল সম্ভাষণ নয় বরং রীতিমত একটি ইবাদত। অর্থাৎ এর মাধ্যমে আমরা নেকি অর্জন করতে পারি কিন্তু হাই-হ্যালো, আদাব, নমস্কার ইত্যাদি বিধর্মীদের সম্ভাষণ রীতিতে ইসলামি রীতির মদো তাৎপর্য, গাম্ভীর্য ও আবেদন কখনও খুঁজে পাওয়া যায় না। নিম্নে সালামের সঠিক পদ্ধতি এবং তার মমার্থ তুলে ধরা হলো:

 

সালামের সঠিক ও সুন্নতি পদ্ধতি:

 
সালামের শরিয়ত সম্মত তিনটি স্তর রয়েছে:
 
◍ ১) পূর্ণাঙ্গ ও সর্বোচ্চ স্তর হলো, এভাবে বলা: ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। [অর্থ: আপনার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক]
◍ ২) এর চেয়ে নিম্নস্তরের হলো, এভাবে বলা, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” [অর্থ: আপনার প্রতি শান্তি এবং আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হোক]।
◍ ৩) সবচেয়ে নিম্নস্তরের হলো: “আসসালামু আলাইকুম” [অর্থ: আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক] বলা।
 
হাদিসে এসেছে যে,
عن عِمران بن الحصين رضي الله عنهما قَالَ: جاءَ رجُلٌ إِلَى النَّبيِّ ﷺ فَقَالَ: “السَّلامُ عَلَيكُم”، فَرَدَّ عَلَيْهِ، ثُمَّ جَلَسَ، فَقَالَ النبيُّ ﷺ: عَشْرٌ، ثُمَّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ: “السَّلامُ عَلَيكُم وَرَحْمَةُ اللهِ”، فَرَدَّ عليهِ، فَجَلَسَ، فَقَالَ: عِشْرون، ثُمَّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ: “السَّلامُ عَلَيكُم وَرَحْمَةُ الله وَبَرَكَاتُه”، فَرَدَّ عليهِ، فَجَلَسَ، فَقَالَ: ثَلاثُونَ. رواه أَبُو داود والترمذي وقال: حديثٌ حسنٌ.
 
ইমরান ইবনুল হুসাইন রা. হতে বর্ণিত, একজন ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে বলল, ‘আসসালামু আলাইকুম’। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আালইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে ছিলেন। সাহাবিগণও তার সাথেই ছিলেন। তিনি সালামের উত্তর দিলেন। অতঃপর লোকটি বসলে তিনি বললেন, দশ। (অর্থাৎ তুমি ১০টি নেকি পেয়েছ।) এরপর আরেক ব্যক্তি এসে বলল, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।”
 
তিনি সালামের উত্তর দিলেন। অতঃপর লোকটি বসলে তিনি বললেন, বিশ। (অর্থাৎ তুমি ২০টি নেকি পেয়েছ।) অতঃপর আরও এক ব্যক্তি এসে বলল, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।” তিনি সালামের উত্তর দিলেন। অতঃপর লোকটি বসলে তিনি বললেন, ত্রিশ। (অর্থাৎ তুমি ৩০টি নেকি পেয়েছ) [আবু দাউদ, তিরমিযী- হাদিসটি হাসান।]
 
➧ ইমাম নওবি রহ. বলেন, ” اعلم أن الأفضل أن يقول المُسَلِّم : السَّلامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، فيأتي بضمير الجمع وإن كان المسلَّم عليه واحداً ، ويقولُ المجيب : وَعَلَيْكُمُ السَّلامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَركاتُه .
 
“জেনে রাখো, সালাম দাতার জন্য সবচেয়ে উত্তম হলো, “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” বলা। বহু বচনের সর্বনাম ব্যবহার করবে যদিও যাকে উদ্দেশ্য করে সালাম দেয়া হচ্ছে সে একজন ব্যক্তি হয়। আর উত্তর দাতা বলবে, “ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।”
 
(আল আযকার, পৃষ্ঠা: ৩৫৬-৩৫৮) ❂ উল্লেখ্য যে, মাঝেমধ্যে ‘সালামুন আলাইকুম’, “সালামুন আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ”, সালামুন আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ” ইত্যাদি বাক্য দ্বারাও সালাম প্রদান করা জায়েজ আছে।
 
এ বাক্য দ্বারা ফেরেশতাগণ জান্নাতবাসীদেরকে সম্ভাষণ জানাবেন বলে কুরআনের একাধিক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। দেখুন: সূরা যুমার/৭৩, সূরা নাহল/৩২। অনুরূপভাবে সূরা কাসাস এর ৫৫ নং এবং সূরা আনআমের ৫৪ নং আয়াতের মাধ্যমেও এ সব বাক্য দ্বারা সালাম দেয়ার বৈধতা প্রমাণিত হয়। তাছাড়াও এসব বাক্য দ্বারা আমাদের পারস্পারিক সালাম লেনদেন প্রসঙ্গে আলাদা সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসটি হলো:
 
أنَّ رجُلًا مرَّ على رسولِ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم وهو في مجلسٍ فقال: سلامٌ عليكم فقال: ( عشرُ حسناتٍ ) ثمَّ مرَّ رجُلٌ آخَرُ فقال: سلامٌ عليكم ورحمةُ اللهِ فقال: ( عشرونَ حسنةً) فمرَّ رجُلٌ آخَرُ فقال: سلامٌ عليكم ورحمةُ اللهِ وبركاتُه فقال: ( ثلاثونَ حسنةً ) فقام رجُلٌ مِن المجلسِ ولم يُسلِّمْ فقال النَّبيُّ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم: (ما أوشَك ما نسي صاحبُكم ! إذا جاء أحدُكم إلى المجلسِ فلْيُسلِّمْ فإنْ بدا له أنْ يجلِسَ فلْيجلِسْ فإنْ قام فلْيُسلِّمْ فليستِ الأُولى بأحقَّ مِن الآخِرةِ
 
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। তিনি তখন এক মজলিসে ছিলেন।
 
সে বলল, আসসালামু আলাইকুম (অর্থ: আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সালামের জবাব দিয়ে বললেন): “দশ নেকি।” অতঃপর অপর এক ব্যক্তি যাওয়ার সময় বলল: সালামুন আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ (অর্থ: আপনার/ প্রতি শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক)।
 
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “বিশ নেকি।” আরেক ব্যক্তি সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় বলল: সালামুন আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ (অর্থ: আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)।
 
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সালামের জবাব দিয়ে বললেন) বললেন: “তিরিশ নেকি।” অতঃপর এক ব্যক্তি মজলিস থেকে উঠে চলে গেলো কিন্তু সালাম দিলো না।
 
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনে, “হয়তো তোমাদের সাথী ভুলে গেছে। তোমাদের কেউ বৈঠকে এসে পৌছলে যেন সালাম দেয়। তারপর বৈঠকে বসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে বসবে। আবার সে যখন চলে যাবে তখনও যেন সালাম দেয়। কেননা পরের সালাম পূর্বের সালামের চেয়ে কম মর্যাদাপূর্ণ নয়।” (তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে হিব্বান, আহমাদ, আবু দাউদ-সহিহ)
 
❒ ‘স্লামালিকুম’ এর কি কোনও অর্থ আছে? এভাবে কি সালাম দেয়া যাবে?
 
উত্তর:’স্লামালিকুম’ মূলত: ‘আসসালামু আলাইকুম’ এর বিকৃত রূপ। আমাদের সমাজের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানহীন কতিপয় মানুষ বা তথাকথিত উচ্চ ডিগ্রীধারী শিক্ষিত মূর্খরা এভাবে বলে থাকে।
 
এর কোনও অর্থ নাই। তাই জেনেবুঝে ‘স্লামালিকুম’ এ বিকৃত শব্দ দ্বারা সালাম দেয়া বৈধ নয়। বরং আমাদের কতর্ব্য, সঠিক পদ্ধতি ও বিশুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দেয়া। আল্লাহ তাওফিক দান করুন এবং। আমিন। লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল, দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব  

সম্মানিত ভাই ও বোনেরা, সালাম দেওয়া সুন্নত এবং উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। আমাদের অনেকেরই সালাম দিতে গিয়ে বা সালামের উত্তর দিতে গিয়ে অজান্তেই ভুল হয়ে যায়। যেমনঃ আমরা প্রতিদিন অনেককেই এভাবে সালাম দিতে শুনি যে, স্লামালাইকুম, আস সালামালাইকুম, সেলামালাইকুম, ইত্যাদি। আবার উত্তর দেয়ার সময়ও শোনা যায় ভুল শব্দের ব্যবহার।

যেমন, অলাইকুম সালাম, অলাইকুম আস-সালাম ইত্যাদি। সালাম একটি দুআ। ইসলামের শেআর ও প্রতিক পর্যায়ের একটি আমল। এর সহীহ উচ্চারণের প্রতি গুরুত্ব দেয়া জরুরি। কমপক্ষে এতটুকু বিশুদ্ধ উচ্চারণ অবশ্যই জরুরি, যার দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে।

সালাম এর সঠিক উচ্চারণ হলো, السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি, ওয়া বার-কাতুহ্। وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ ‘ওয়া আলাইকুমুস-সালাম, ওয়া রহমাতুল্লাহি, ওয়া বার-কাতুহ্।

আরবী দেখে এর সহীহ উচ্চারণ শিখে নেয়া উচিত অন্যথায় কন্ঠ বাদ পড়ে যায়- ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম’-এর স্থলে ‘অলাইকুম আস সালাম’ হয়ে যায়, যা স্পষ্ট ভুল। ইসলামে সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। সালাম শান্তির প্রতীক। সালামে রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। সালাম এভাবে দিতে হয়, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।’ সালাম মুসলমানদের পরস্পরে ভালোবাসা, হৃদ্যতা সৃষ্টি করে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা ইমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর ইমানদার হতে পারবে না পরস্পরে ভালোবাসা না হলে। তোমাদের কি এমন একটি বিষয়ের কথা বলব, যা করলে তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটাও।’ (মুসলিম : ৫৪)

এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ইসলামের কোন কাজ সবচেয়ে ভালো? রাসুল (সা.) বললেন, ‘খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া।’ (বোখারি : ১২)

সালামের প্রতিটি বাক্যে দশ নেকি। সালামে মোট তিনটি বাক্য আছে। সুতরাং যে পূর্ণ সালাম দেবে তার ত্রিশটি নেকি অর্জন হবে। একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম’, রাসুল তার উত্তর দিলেন, তারপর সে বসল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘দশ নেকি।’ অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।’

রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। পরে ওই ব্যক্তি বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘বিশ নেকি।’ অতঃপর অন্য একজন এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।’ রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। সেও বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘ত্রিশ নেকি।’

(তিরমিজি : ২৬৮৯) সালামের বিধান ও তার পদ্ধতি : প্রথমে সালাম দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত, উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। যদি সালামের দ্বারা কোনো দলকে উদ্দেশ্য করা হয়, তাহলে তার উত্তর দেওয়া ওয়াজিবে কেফায়া।

অর্থাৎ একজন উত্তর দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে, তবে সবারই উত্তর দেওয়া উত্তম। উত্তর দেওয়ার সময় সালামের চেয়ে বাড়িয়ে উত্তর দেওয়া সুন্নাত। যেমন কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলবে।

কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’ বলবে। চিঠি বা মেসেজ ইত্যাদির শুরুতে সালাম দেওয়া সুন্নাত। এর মৌখিক বা লিখিত উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। (তিরমিজি ২/১০১)

সালামের আদবসমূহ : মানুষের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো প্রয়োজন, যাতে তা মুসলমানদের প্রতীকে পরিণত হয়। বিশেষ কোনো দলকে সালাম দেওয়া বা শুধু বড়দের দেওয়া কিংবা ছোটদের না দেওয়া উচিত নয়।

অনুরূপভাবে অপরিচিতকে বাদ দিয়ে শুধু পরিচিতকে সালাম দেওয়াও কাম্য নয়। (বুখারি : ১২) উত্তম হলো- ছোট বড়কে প্রথমে সালাম দেবে। পথচারী উপবিষ্টকে সালাম দেবে। আরোহণকারী পথচারীকে সালাম দেবে। কম লোক বেশি লোককে সালাম দেবে।

(বুখারি : ৬২৩১) উচ্চ স্বরে সালাম দেওয়া ও উত্তর দেওয়া সুন্নাত। কেননা সালাম উচ্চারণ করতে হয়। হাত বা মাথার ইশারা ইত্যাদি সালাম বলে বিবেচিত হবে না।

হ্যাঁ, দূরে হলে বা উত্তর শুনতে কোনো কিছু বাধা হলে মুখে উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে হাত বা মাথার ইশারায় উত্তর দেওয়ার কথা জানিয়ে দেবে। কাছে হলে সালামে হাত ওঠানো অপ্রয়োজনীয় ও সুন্নাতের খেলাফ। (তিরমিজি ২/৯৯)

সুন্নাত হলো দুজন আলাদা হওয়ার পর পুনরায় সাক্ষাৎ হলে আবার সালাম দেওয়া। সাহাবায়ে কেরাম যখন হাঁটতেন, তখন তাঁদের সামনে কোনো গাছ অথবা স্তূপ পড়ত, তাঁরা ডানে-বাঁয়ে আলাদা হয়ে যেতেন। অতঃপর আবার সাক্ষাৎ হলে একে অন্যকে সালাম দিতেন।

সালাম শুধু মুমিনদের অভিবাদন, কাফেরদের সালাম দেওয়া বৈধ নয়। হ্যাঁ, যদি এমন জায়গায় উপস্থিত হয় যেখানে কাফের-মুসলমান একত্রে থাকে, সেখানে সালাম দেওয়ার সময় মুসলমানের নিয়ত করবে। (সুনানে আবি দাউদ : ৫২০৫)

যদি কোনো অমুসলিম সালাম দেয় তাহলে তার জবাবে ‘আস্সালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলবে। (মুসনাদে আহমাদ : ২৪৩০৪) কিংবা ‘ওয়ালাইকা’ বা ওয়ালাইকুম’ বলবে। অমুসলিমদের বিশেষ প্রয়োজনে সালাম ছাড়া অন্য কোনোভাবে অভিবাদন জানানো বৈধ। যেমন শুভ সকাল বা শুভ রাত্রি ইত্যাদি।

তবে এমন বাক্য ব্যবহার করা যাবে না, যা অন্য ধর্মের জন্য নির্ধারিত। অন্যের মাধ্যমে কারো কাছে সালাম পৌঁছানোও সুন্নাত। যার কাছে সালাম পৌঁছানো হবে উত্তর দেওয়া তার দায়িত্ব। (তিরমিজি ২/৯৯) মাহরাম (যাদের দেখা বৈধ) নারীদের বা স্ত্রীদেরও সালাম দেওয়া সুন্নাত।

আর ফেতনা থেকে নিরাপদ হলে পরনারীদেরও সালাম দেওয়া জায়েজ। অনুরূপ নারীরাও পরপুরুষদের ফেতনার আশঙ্কা না হলে সালাম দিতে পারবে। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬৯) কাউকে ঝুঁকে সালাম দেওয়া জায়েজ নেই। (তিরমিজি : ২৭২৮)

যেসব অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ : যে ব্যক্তি সালামের উত্তর দিতে অক্ষম তাকে সালাম দেওয়া মাকরুহ। যথা : নামাজ, আজান-ইকামত, জিকির, তিলাওয়াত, ধর্মীয় জ্ঞানচর্চা, খানাপিনা ও ইস্তিঞ্জারত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ। (রদ্দুল মুহতার ১/৪১৪) লেখক : ফতোয়া গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার

কিছু কিছু ক্ষেত্র সালাম দেয়া যাবে না

১. আযানরত, ইকামতরত কিংবা খুদবা পড়া অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।

২. যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে খেল-তামাশায় মগ্ন তাকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।

৩. বার্থ রুম এ থাকা অবস্থায় সালাম দেওয়া উচিত নয়।

৪. অমুসলিমকে সালাম দেওয়া উচিত নয়। তাই আমরা আমাদের সমাজে, পরিবারে, অফিসে সালামের প্রচলন করব। সেই সাথে আমরা ইসলামকে মেনে চলব। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

অমুসলিমকে সালাম দেওয়ার বিধান কী? এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা কি জায়েজ?

অমুসলিমকে ‘সালাম’ দেওয়া বৈধ নয়। কোনো প্রয়োজনে দিতে হলে ‘আসসালামু আল মানিত্তাবাআল হুদা’ বলবে। আর অমুসলিমরা সালাম দিলে তদুত্তরে শুধু ‘ওয়া আলাইকুম’ বলবে। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে মুসলিমদের ওপর অমুসলিমদের প্রাধান্য দেওয়া নিন্দনীয়।

তবে তাদের সঙ্গে যাবতীয় লেনদেন, সদাচরণ ও সাধারণ সম্পর্ক রাখা বৈধ। (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৫১, সুরা আল ইমরান, আয়াত : ১১৮, আল বাহরুর রায়েক : ৮/৩৭৪, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৯/৫৪৫, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ১২/১০৩)

 

সালাম আদান-প্রদানে যে ১২ ভুল করা উচিত নয়

 

  ১. অশুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দেওয়া: এটি মারাত্মক ভুল কাজ। আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ হচ্ছে পূর্ণ সালাম। শুধু আসসালামু আলাইকুম বললেও চলবে। তবে উচ্চারণে ভুল করা যাবে না।

২. ছোটদের প্রতি বড়দের সালাম না দেওয়া: এটিও ভুল প্রচলন। বড় বা বয়স্ক মানুষ ছোটদের সালাম দিতে কোনো বাধা নেই। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের এবং বাবা-মা সন্তানদের সালাম দেবেন। আগে সালামকারী বেশি সওয়াব ও মর্যাদার অধিকারী হয়ে থাকেন।

৩. অপরিচিত কাউকে সালাম না দেওয়া: পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। তাই পরিচিত ও মুখ চিনে সালাম দেওয়া গর্হিত ও নিন্দিত কাজ।

৪. সালাম দেওয়ার সময় মাথা ও বুক ঝুঁকে নিচু করা: সালাম দেওয়ার সময় মাথা ও বুক ঝুঁকে নিচু হয়ে সালাম দেওয়া নিষেধ। অনেকে পদস্থ বা বড় কোনো ব্যক্তিকে সালাম দেওয়ার সময় এমন করে থাকে। হাদিসে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এ থেকে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়।

৫. সালামের উত্তর দিয়ে আবার সালাম: আপনাকে কেউ সালাম দিল, আপনি উত্তর দেওয়ার পর ওই সালামকারীকে আবার সালাম দিলেন। অনেকে এ কাজটি অজ্ঞতাবশত করে থাকেন। উত্তম হলো, কারো সালামের অপেক্ষা না করে নিজেই আগে সালাম দেওয়া। কিন্তু কেউ আগে সালাম দিয়ে ফেললে তার সালামের উত্তর দেওয়াই নিয়ম। তাকে আবার সালাম দিতে হবে না।

৬. সালামের উত্তর না দিয়ে আবার সালাম: সালাম পাওয়ার পর উত্তর দেওয়াই বিধান। কিন্তু অনেকে সালাম দেওয়ার পর উত্তর না দিয়ে সালামদাতাকে আবার সালাম দেয়। এমনটি ঠিক নয়। দুজনের একজন সালাম দেবেন, অপরজন সালামের উত্তর দেবেন এটাই বিধান।

৭. সালাম দেওয়ার পর সালাম দিয়েছি বলা: কাউকে সালাম দেওয়ার পর সালাম না শুনলে বা উত্তর না-দিলে আমরা বলি, ‘আপনাকে সালাম দিয়েছি’। এভাবে বলা ঠিক নয়। তাকে আবার পূর্ণ সালাম দেওয়াই নিয়ম।

৮. কতক্ষণ বসার পর সালাম দেওয়া: সাক্ষাতের শুরুতেই সালাম দেওয়া সুন্নত। কতক্ষণ বসার পর সালাম করা অনুচিত।

৯. সালাম পাঠানোর পদ্ধতি: কারো কাছে সালাম পাঠানোর দরকার হলে আমরা বলি, অমুককে গিয়ে আমার সালাম দেবেন/বলবেন। এভাবে বলা ঠিক নয়। নিয়ম হল এভাবে বলা, অমুককে আমার পক্ষ থেকে আসসালামু আলাইকুম… বলবেন। তেমনি, সালাম পৌঁছানোর পরও ‘অমুকে আপনাকে সালাম দিয়েছেন’ এ রকম না বলে বলা উচিত, অমুক আপনাকে আসসালামু আলাইকুম… বলেছেন। 

এক্ষেত্রে সালামের উত্তরদাতাও কেবল প্রেরককে উত্তর দেবেন না। বরং প্রেরক ও বাহক উভয়কে দোয়ায় শরিক করবেন। তিনি এভাবে উত্তর দেবেন, ওয়া আলাইকা ওয়া আলাইহিস সালাম।

১০. ফোনে বা সাক্ষাতে সালামের আগে হ্যালো বা অন্যকিছু বলা: ফোন বা মোবাইল ফোনে সালাম দেওয়ার আগে হ্যালো বা অন্য কোনো কথা বলা ঠিক নয়। আগে সালাম দিয়ে তারপর অন্য কথা বলবেন। হ্যালো বলার দরকার হলে সালাম দেওয়ার পর বলবেন। ফোন ছাড়া সাক্ষাতের বেলায়ও কথাবার্তার আগেই সালাম দেওয়াই সুন্নত। কেননা রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কথাবার্তা বলার আগে সালাম দিতে হয়। (তিরমিযি, হাদিস নং- ২৬৯৯)

১১. অনুষ্ঠান শেষে বা বিয়ের আকদ হওয়ার পর সালাম: অনেক জায়গায় দেখা গেছে, কোনো অনুষ্ঠান- বিশেষত দোয়া বা এ ধরনের কোনো মজলিস শেষ হওয়ার পর সালাম দেন অনেকে। এছাড়া বিয়ের আকদ হওয়ার পর বর উপস্থিত সবাইকে সালাম দেন।

বর সালাম না দিতে চাইলে বা ভুলে গেলে অন্যরা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সালাম দাও। না দিলে খারাপ এবং বেয়াদবি মনে করা হয়। এসব কুসংস্কার ও ভুল প্রচলন। সালাম হবে সাক্ষাতের সময়। সুতরাং কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর কারো সঙ্গে দেখা হলে তাকে সালাম করবেন। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে সালামের প্রথা বর্জন করা উচিত।

১২. বক্তব্যে প্রথমেই সালাম দেওয়া: সাক্ষাতের শুরুতেই সালাম দিয়ে কথাবার্তা শুরু হবে- এটিই ইসলামের নিয়ম। কিন্তু আজকাল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায়, বক্তা বিভিন্ন কথা বলার পর সালাম দেন।

যেমন তিনি বলেন, মঞ্চে উপবিষ্ট মান্যবর সভাপতি, অতিথিরা… সবাইকে আমার সালাম আসসালামু আলাইকুম। এভাবে সালাম বলা ইসলামী রীতির পরিপন্থি। শ্রোতা ও দর্শকদের মুখোমুখি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই  সালাম দেওয়া নিয়ম।-প্রিয়.কম লিখেছেন: মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেমী, সম্পাদনা: সোহেলুর রহমান  

 

অনেকেই সালাম দেওয়ার সময় দেখি কপালে হাত ঠেকান। এটা করা কি ঠিক?

  উত্তর : সালাম দেওয়ার সময় হাত উঠানো বা কপালে ঠেকানো নিতান্তই অর্থহীন ব্যাপার। মুখে ‘আসসালামু আলাইকুম’ স্পষ্ট করে বলাই সালাম।

হাত উঠানো বা কপালে ঠেকানো দেশিয় রীতি, সুন্নত বা শরীয়তের বিধান নয়। এসব রীতি যথাসম্ভব বর্জনীয়। উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী, সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ। প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন। info@IslamiDawahCenter.com

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।