Riya in Islamic Sharia Its definition and provisions

 

ভূমিকাঃ

রিয়া শব্দের শাব্দিক ও আভিধানিক অর্থঃ আরবী الرِّيَاءُ শব্দটি الرُّؤْيَة শব্দ থেকে নির্গত হয়েছে। الرِّيَاءُ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে— প্রদর্শন, আত্মপ্রদর্শন, ভান, কপটতা, মুনাফেক্বী, ভণ্ডামি প্রভৃতি

 

রিয়ার সংজ্ঞাঃ রিয়া অর্থ লোক দেখানো ইবাদত। ইবাদত একান্ত আল্লাহর জন্য। ইবাদত করা দেখে অন্য কেউ দেখে ভালো বলুক এরূপ মনোভাব নিয়ে ইবাদত করলে প্রকৃত পক্ষে সে ইবাদত আল্লাহর উদ্দেশ্যে করা হয় না। এ কারণে রিয়াকে গোপন শিরক বলা হয়।

আমাদের সমাজে উল্লেখিত বিশেষ কয়েকটি রিয়া এর আলোচনা করা নিম্নে বর্ণনা করা হলঃ 

১) নামায শেষ করে উঠে যাওয়ার সময় জানতে পারলাম মেহমান চলে এসেছে। এজন্য মেহমান ঘরে প্রবেশ করা পর্যন্ত জায়নামাজে বসে থাকলাম। সম্পুর্ন ইচ্ছাকৃত না হলেও অবচেতন মন চাইছে নামায যে পড়তেছি মেহমান দেখুক! এটি ই রিয়া।

২) কেউ জিজ্ঞেস করলো-আপনি কি করছেন?
উত্তরে বললাম-আমি নামায পড়ে উঠে নাস্তা করতেছি বা নামায পড়ে উঠে এখন রান্না করতেছি।এখানে শুধু নাস্তা বা রান্না করার কথা বললেই হতো, সাথে -নামায পড়ে উঠে” কথাটি জুড়ে দিয়ে অতি সুক্ষভাবে নামাযকে প্রচারে নিয়ে আসা হল। এটি ই রিয়া।

৩) ফজরে যে নামায পড়তে উঠলাম কিন্তু কেউ জানলো না, তাই সেটা মানুষকে জানানোর জন্য দিলাম ফেসবুকে একটা পোস্ট, লিখলাম : “সবাই নামায পড়তে উঠুন/ঐ সময় ই ফজর নামাজের ফযীলত সম্পর্কিত/শাস্তি নিয়ে পোস্ট করলাম।” আমি জানি আমার এই পোস্টে কারো ঘুম ভাংগবেনা,তাও দিলাম। মোদ্দাকথা নামাযের ব্যাপারটা সবাইকে জানাতেই হবে। এটি ই রিয়া।

৪) নফল রোজা রেখে দুপুরে বন্ধুর সাথে চ্যাট করছি, হঠাৎ তাকে জিজ্ঞেস করেছি,ভাত খেয়েছিস কিনা?অথচ আজীবন তার ভাতের খবর নেয়নি,সে হ্যাঁ/না উত্তরের সাথে যে “তুই খেয়েছিস?”এটা জিজ্ঞেস করবে সেটার গ্যারান্টি সূর্য উঠার মতই,সে সুযোগে না দোস্ত রোজা রেখেছি বলে রোজার প্রচার করে দিলাম, এটি ই রিয়া।

৫) কুরবানির গরু কিনলাম, অফলাইনের আশেপাশের সবাই দেখলেও অনলাইন বন্ধুদের সামনে তো আর শো আপ করা হলো না।তাই প্রাইভেসি পাবলিক করে দিয়ে দিলাম পোস্ট, আলহামদুলিল্লাহ্‌ Done এইটি রিয়া।

৬) বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় মজার ছলেই টেকনিকে বলে দিলাম, তুই বেটা কিপটা, কিছুই দান করিস না। প্রতিউত্তরে, “তুই কি দান করে উল্টিয়ে ফেলছিস? এই প্রশ্নটা যে করবে তা জানুয়ারির পর ফেব্রুয়ারি আসার মতই নিশ্চিত আমি, সাথে সাথেই দিয়ে দিলাম আমার দানের লিস্ট, সম্পূর্ণ ডিটেল সহকারে। এইটি রিয়া।
উপরের প্রত্যেক উদ্দীপক পড়ে কিছু আয়ত্ত করতে পারলেন কি? একেই বলে রিয়া। এতক্ষণ যে ইবাদত গুলো করলাম সেগুলা কি আল্লাহর জন্য, নাকি লোক দেখানো? লোক দেখানো মানেই রিয়া।
কখনো ভেবেছেন, এসব ইবাদত আদৌ কবুল হবে কি? উপরোক্ত প্রত্যেকটি ইবাদতই হলো “রিয়া”
আল্লাহ আমাদের রিয়ামুক্ত ইবাদতের তৌফিক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমিন।

রিয়া সম্পর্কিত পবিত্র কোরানের আয়াতঃ 

وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ

অর্থঃ বিশুদ্ধচিত্ত একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করা ব্যতীত তাদেরকে আর কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি ( সুরা বাইয়িনাহ )

সতর্ক বার্তাঃ 

লোক দেখানো আমল শিরকের অন্তর্ভুক্তঃ সাধারণত মানুষ নিজের খ্যাতি অন্যকে জানাতে পছন্দ করে। তার সুনাম ও সুখ্যাতির কথা সবাই জানুক তা সে মনে মনে চায়। অথচ মানুষকে দেখানোর জন্য বা সুনাম অর্জনের জন্য আমল করা শরীআতে নিষিদ্ধ। এরূপ আমল শিরকের সমপর্যায়ভুক্ত। এমন কর্মকে রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খুব বেশি ভয় পেতেন। তিনি এ বিষয়ে ছাহাবীদের কঠোর ভাষায় সাবধান করে গেছেন। মাহমূদ ইবনু লাবীদ (রাযিয়াল্লা-হু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

হাদিস শরিফঃ

إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الشِّرْكُ الأَصْغَرُ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الشِّرْكُ الأَصْغَرُ قَالَ الرِّيَاءُ إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ يَوْمَ تُجَازَى الْعِبَادُ بِأَعْمَالِهِمُ اذْهَبُوا إِلَى الَّذِينَ كُنْتُمْ تُرَاءُونَ بِأَعْمَالِكُمْ فِى الدُّنْيَا فَانْظُرُوا هَلْ تَجِدُونَ عِنْدَهُمْ جَزَاءً

হাদিসের অর্থঃ তোমাদের ব্যাপারে আমি সবচেয়ে যে বিষয়ের বেশি ভয় পাই, তা হলো শিরকে আছগার। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! শিরকে আছগার কী? তিনি বললেন, রিয়া তথা লোক দেখানো আমল’। যখন (কিয়ামতে) লোকদের আমলসমূহের প্রতিদান প্রদান করা হবে, তখন আল্লাহ তাআলা সকলের উদ্দেশ্যে বলবেন, ‘তোমরা তাদের নিকটে যাও, যাদের দেখানোর জন্য দুনিয়াতে তোমরা আমল করেছিলে। অতঃপর দেখো, তাদের নিকট কোনো প্রতিদান পাও কি না’লোক দেখানো আমল শিরকের অন্তর্ভুক্ত, যা উল্লিখিত হাদীছের দ্বারা সুস্পষ্ট প্রমাণিত। এরূপ ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ ব্যঙ্গ করে তাদের নিকটে ফিরে যেতে বলবেন, যাদের দেখানোর জন্য সে আমল করেছিল। যা তার জন্য ভীষণ লজ্জা ও লাঞ্ছনার কারণ হবে। এমন কাজকে গোপন শিরকও বলা হয়েছে। এ মর্মে অন্য হাদীছে বর্ণিত হয়েছে,

IDC Partner

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

Islami Dawah Center Cover photo

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )