রুকইয়াহ করলে কি জান্নাতে যাওয়া যাবে না / Ruqyah-And-Jannah

 

 

Ruqyah-And-Jannah

 

রুকইয়াহ করলে কি জান্নাতে যাওয়া যাবে না / Ruqyah-And-Jannah

 

একটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার, আর তা হচ্ছে রুকইয়াহ করলে কি মানুষ জান্নাতে যেতে পারবে না? প্রশ্নটি অদ্ভুত মনে হলেও অনেক মানুষ সত্যিই এমন ধারণা রাখে। ফলে সমস্যা আক্রান্ত হওয়ার পরেও ভয়ে প্রতিকার করে না। শরঈ রুকইয়াও না, কুফরি ঝাড়ফুঁকও না। এটা মূলতঃ আলেমদের সাথে সম্পর্ক না রেখে, নিজে নিজে বাংলা বই পড়ে মুহাদ্দিস হওয়ার অপচেষ্টার ফল। . এই ভুল ধারণার উৎপত্তি হয় হাদিসে সাবউন থেকে। হাদিসটিতে রাসুল স. উম্মতের ৭০ হাজার লোক কোন হিসাব বা আযাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে বলে সুসংবাদ দিয়েছেন, আর তাদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে রাসুলুল্লাহ বলেছেন:

هم الذين لايسترقون, ولا يتطيرون, ولا يكتوون, وعلى ربهم يتوكلون

অর্থাৎ তাঁরা ওই সব লোক, যারা অন্যকে রুকইয়ার জন্য অনুরোধ করে না, দাগ দিয়ে চিকিৎসা করায় না, শুভ-অশুভ নির্ণয় করায় না, বরং তাদের রবের ওপর ভরসা করে। (বুখারি ৬১৭৫, ইফা ৬০৯৮) এখানে প্রথম সমস্যা হচ্ছে হাদিসের لايسترقون শব্দের ভুল অর্থ করা হয়। এর অর্থ হচ্ছে, যা অন্য কাউকে রুকইয়াহ করার জন্য অনুরোধ করে না। অথচ এর অনুবাদ করা হয় “রুকইয়াহ করে না!” আরেকটু বিস্তারিত বলতে চাইলে বলব, এটা বাবে ইস্তিফ’আলের শব্দ। আর ইস্তিফআলের বৈশিষ্ট হচ্ছে ইস্তাগাসা তথা প্রার্থনা বুঝানো। যেমনঃ ইস্তিগফার = ক্ষমা চাওয়া, ইস্তিফতা = ফাতওয়া চাওয়া। সুতরাং ইস্তিরক্বা অর্থ হচ্ছে, রুকইয়ার জন্য কারও কাছে চাওয়া। যেমনঃ বিন বায রহ. বলেছেন –

لا يسترقون, يعني لا يسألون الناس أن يرقوهم،

লা-ইয়াস্তারক্বুন, অর্থাৎ তাঁরা মানুষের কাছে প্রার্থনা করে না, যে তাঁদের ওপর রুকইয়াহ করা হোক। দ্বিতীয়তঃ এই হাদিসটা পড়ার পর অনেকে মনে করেন, রুকইয়াহ করা হারাম, রুকইয়াহ করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে না। এটাও ভুল বরং এখানে বলা হচ্ছে বিনা হিসাবে জান্নাতে যাওয়ার কথা, অর্থাৎ এই ৭০,০০০ ছাড়া বাকিরা স্বাভাবিকভাবে জান্নাতে যাবে। উপরন্তু বিনা হিসাবে জান্নাতে যাওয়া এছাড়াও অন্য অপশন আছে, যেমন আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে শহীদ হওয়া। তৃতীয়তঃ এখানে আজিমতের কথা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ এটা আবশ্যক কিছু না, তবে কেউ যদি এ থেকে বেঁচে থাকতে পারে, তাহলে সে এই পুরস্কারটা পাবে। এর চমৎকার উদাহরণ হতে পারে মোবাইল অপারেটরের বিশেষ অফার। যেমন, বলা হলো ডিসেম্বর থেকে যাদের সিম বন্ধ আছে, তারা বিনামূল্যে ৫০০এমবি ইন্টারনেট ডেটা পাবে। এখন আপনার বুঝা উচিত, এই ফ্রি অফারের বাহিরেও অন্য ইন্টারনেট অফার আছে, অথবা কেউ চাইলে টাকা দিয়ে ইন্টারনেট কিনতে পারে। সুতরাং ‘অন্যকে দিয়ে রুকইয়াহ না করানো’ মানে এটা কখনই এটা না যে, একদমই রুকইয়াহ করানো যাবে না, বরং কেউ যদি এ থেকে বেঁচে থাকতে পারে, তাহলে সে এই পুরস্কারটা পাবে। আর যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে করানো যেতে পারে। তখন অন্যান্য স্বাভাবিক মুসলিমদের মধ্যে গণ্য হবে। কারণ এই সত্তর হাজারের বাহিরেও তো মানুষ জান্নাতে যাবে। তাইনা? এবিষয়ে আমরা আরেকটু আলোচনা করতে চাই।

তিনটি বিষয় আমাদের সামনে আসছে –

১. রুকইয়াহ করা

২. রুকইয়াহ করানো

৩. রুকইয়াহ করতে বাধা দেয়া

প্রথমটি হচ্ছে রুকইয়াহ করা, এটা জিবরীল আলাইহিস সালাম করেছেন, রাসূলুল্লাহ করেছেন, সাহাবায়ে কিরাম করেছেন, এবং অন্যান্য সালাফে সালহীনরাও করেছেন। সুতরাং শরিয়তের সীমা লঙ্ঘন না হলে, এটা নিয়ে আপত্তির কিছু নাই, সংশয়েরও কিছু নাই।

দ্বিতীয়তঃ রুকইয়াহ করানো। এটা অবস্থার উপর নির্ভর করবে। যদি আপনি নিজে রুকইয়াহ করতে সক্ষম হন, তাহলে আপনার জন্য উচিত না অন্য কাউকে দিয়ে করানো। যদি কোন ওজর ছাড়াই যদি অন্যকে গিয়ে বলেন, “ভাই আমার ওপর রুকইয়াহ করেন প্লিজ!” তাহলে আপনি এই সত্তর হাজার থেকে বাদ পড়ে যাবেন। কিন্তু যদি প্রয়োজন থাকে, তাহলে অন্যের সহায়তা নেয়া যেতেই পারে। যেমন, কেউ জ্বীন দ্বারা পজেসড হয়েছে, তাই সে সালাত বা তিলাওয়াত করতে পারে না। অথবা কেউ যাদুতে আক্রান্ত হয়ে শরীর এতটা অসুস্থ বা দুর্বল হয়ে গেছে, যে নামাজ পড়তে বা রোজা রাখতে পারছে না। এরকম পরিস্থিতিতে যদি সে নিজে রুকইয়াহ করতে না পারে, তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে রুকইয়াহ করানো তার জন্য ওয়াজিব! কারণ, এই যাদু বা জ্বিন তাকে আল্লাহর ইবাদত থেকে দূরে রাখছে, আর আল্লাহ ইবাদতের জন্যই আমাদের পাঠানো হয়েছে। সুতরাং ইবাদতের ক্ষেত্রে বিশেষ কোন প্রতিবদ্ধকতা থাকলে সেটার প্রতিকার করা ওয়াজিব। এছাড়াও যদি ব্যাপারটা এমন হয়, নিজের রুকইয়াহ করতে গেলে অনেক কষ্ট হচ্ছে অথবা আপনি ঠিক মত বুঝতে পারছেন না, কিভাবে রুকইয়াহ করতে হয়। এক্ষেত্রেও অন্যকে দিয়ে করানো জায়েজ। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন

لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا

আল্লাহ কারো উপর সাধ্যের চেয়ে বেশি চাপিয়ে দেন না। (সুরা বাক্বারা, আয়াত ২৮৬) সুতরাং এক্ষেত্রেও আপনি সত্তর হাজার থেকে বাদ পড়বেন না। ইনশাআল্লাহ! তৃতীয়তঃ রুকইয়াহ করতে বাধা দেয়া, অর্থাৎ কেউ কোন সমস্যা আক্রান্তের উপর রুকইয়াহ করছে, অথবা আপনি আক্রান্ত হয়েছে, আর আপনার উপর রুকইয়াহ করতে চাইছে তাকে বাধা দেয়া। এটা অপরাধ! কেননা, সমস্যা আক্রান্তের ওপর রুকইয়াহ করার নির্দেশ স্বয়ং রাসুলুল্লাহ দিয়েছেন এবং নিজেও সাহাবাদের ওপর, নিজ পরিবারের ওপর রুকইয়াহ করেছেন। আর রাসুলুল্লাহ সমস্যায় আক্রান্ত হলে আল্লাহ তায়ালা জিব্রাইল আলাইহিস সালামকে পাঠিয়েছেন, রাসুলুল্লাহর উপর রুকইয়াহ করার জন্য।

 

** সুতরাং আপনি যদি কাউকে রুকইয়াহ করতে বাধা দেন, তাহলে আপনি অপরাধী হবেন। গুনাহগার হবেন। এমনকি আপনি অসুস্থ হলে কেউ যদি আপনার উপর রুকইয়াহ করতে চায়, তাহলে তাকে আপনি বাধা দিবেন না, এটা সুন্নাতের খেলাফ। রাসুলুল্লাহ যখন শেষ সময়ে অসুস্থ হয়ে ছিলেন, আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা রাসূলের উপর রুকইয়াহ করেছেন, রাসুলুল্লাহ বাধা দেননি। বরং যখন সাহাবায়ে কিরাম ঔষধ দিতে চাইছেন, তখন কখনও কখনও রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানা করেছে। সুতরাং আপনারও অধিকার নেই কেউ রুকইয়াহ করতে চাইলে বাধা দেওয়ার। আপনি যেই হন না কেন, কোন ভাবেই রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চেয়ে বড় পরহেজগার হতে পারেন না। আশা করছি ব্যাপারটি এখন পরিষ্কার। **এপ্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু হাদিস প্রকাশিতব্য “রুকইয়াহ” বইয়ের সুন্নাহসম্মত যত রুকইয়াহ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে।  

 

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার (রুকইয়াহ) হাদিয়া।

  • ঢাকার মধ্যে রুকইয়ার হাদিয়া প্রতি রোগী প্রথমবার ৫০০০ টাকা, ২য়/তয় বার ৪০০০ টাকা, আর ঢাকার বাহিরে হলে প্রথমবার ১০,০০০ টাকা, ২য়/৩য়  বার  ৮০০০ টাকা ।
  • বি. দ্রঃ খুব বেশি দূরত্ব, অসুস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বড় বেশি কঠিন রোগীর ক্ষেত্রে হাদিয়া আলোচনা সাপেক্ষে কম বেশি হতে পারে।
  • এই ইসলামিক চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে, কোরআন হাদিসের চিকিৎসা সমাজে কায়েম করানো, আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে দীন-ইসলামের খাদেম হিসাবে কবুল করুন, আমীন, সুম্মা আমীন।

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

 

Islami Dawah Center Cover photo

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )

ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )