জাদু: ইসলামিক দৃষ্টিকোণ ও রুকইয়াহ শারিয়্যাহ দ্বারা প্রতিকার
Ruqyah of Magic – জাদু: ইসলামিক দৃষ্টিকোণ ও রুকইয়াহ শারিয়্যাহ দ্বারা প্রতিকার
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মানব সভ্যতার শুরু থেকেই জাদু একটি ঘৃণিত ও অভিশপ্ত বিষয় হিসেবে বিবেচিত। কোরআন ও হাদিসে এর অস্তিত্ব এবং ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। এমনকি অনেক নবী-রাসূলকেও তাঁদের কওম যাদুকর অপবাদ দিয়েছে। এই প্রবন্ধে আমরা ইসলামে জাদুর ধারণা, এর ক্ষতিকারক দিক এবং রুকইয়াহ শারিয়্যাহ (ইসলাম-সমর্থিত ঝাড়ফুঁক) এর মাধ্যমে এর প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ইসলামে জাদুর আক্বিদা
ইসলাম জাদুর অস্তিত্বকে স্বীকার করে, তবে এটি আল্লাহর ইচ্ছার অধীন। যাদুকররা আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কারো কোনো ক্ষতি করতে পারে না। কোরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় জাদুর কথা এসেছে, প্রায় ৫০টিরও বেশি স্থানে এর উল্লেখ রয়েছে। অধিকাংশ আয়াতে নবীদেরকে যাদুকর হিসেবে অপবাদ দেওয়ার ঘটনা এসেছে, যা প্রমাণ করে যে মানব সমাজে জাদু ঘৃণিত।
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
১. “এমনিভাবেই তাদের পূর্ববর্তীদের কাছে যখনই কোনো রসূল এসেছে, তারা বলেছে: যাদুকর, না হয় উম্মাদ!” (সূরা যারিয়াত, আয়াত ৫৬)
كَذَلِكَ مَا أَتَى الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا قَالُوا سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ
২. “যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোনো দরজাও খুলে দেই আর তাতে ওরা দিনভর আরোহণও করতে থাকে। তবুও ওরা একথাই বলবে যে, আমাদের চোখ ভুল দেখছে? না আমরা যাদু আক্রান্ত হয়ে পড়েছি।” (সূরা হিজর, ১৪ – ১৫)
وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ السَّمَاءِ فَظَلُّوا فِيهِ يَعْرُجُونَ لَقَالُوا إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَّسْحُورُونَ
মূসা (আ.) ও ফেরাউনের যাদুকরদের ঘটনা কোরআনের বিভিন্ন সূরায় উল্লেখ আছে। সূরা আরাফের একটি আয়াতে এসেছে:
৩. “তিনি (মূসা আ.) বললেন, তোমরাই নিক্ষেপ কর। যখন তারা নিক্ষেপ করল তখন তাদের যাদু লোকদের চোখগুলোকে ধাঁধিয়ে দিল, ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলল এবং তাঁরা বিরাট যাদু প্রদর্শন করল। তারপর আমি মূসাকে ওহী পাঠালাম, তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর। এরপর, যাদু দিয়ে তারা যা বানিয়েছিল সঙ্গে সঙ্গে সেটি (লাঠি) সবকিছু গিলতে লাগল।” (সূরা আরাফ, ১১৫-১১৬)
قَالُوا يَا مُوسَىٰ إِمَّا أَن تُلْقِيَ وَإِمَّا أَن نَّكُونَ نَحْنُ الْمُلْقِينَ قَالَ أَلْقُوا ۖ فَلَمَّا أَلْقَوْا سَحَرُوا أَعْيُنَ النَّاسِ وَاسْتَرْهَبُوهُمْ وَجَاءُوا بِسِحْرٍ عَظِيمٍ
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) এর ওপরও জাদু করা হয়েছিল। তখন আল্লাহ তাঁকে দোয়া শিখিয়ে দিলেন:
৪. “বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে, আর অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, এবং গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে…” (সূরা ফালাক, ১-৪)
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ
জাদু দ্বারা মানুষের ক্ষতি করা যায়, যা সূরা বাকারার ১০২ নম্বর আয়াতের অংশবিশেষ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়:
৫. “…অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন যাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না…” (সূরা বাকারা, ১০২ আয়াতের অংশ)
…فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ…
এই আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট হয় যে, জাদু একটি বাস্তব বিষয় এবং এর মাধ্যমে মানুষের ক্ষতি করা সম্ভব, তবে সবকিছুই মহান আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। জাদুর নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই, বরং এটিও আল্লাহর ঐশ্বরিক শক্তির ওপর নির্ভরশীল।
হাদিসের আলোকে জাদু
কোরআনের পাশাপাশি অসংখ্য হাদিসেও জাদুর বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
১. হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “সাতটি ধ্বংসকারী জিনিস থেকে দূরে থাকো। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন: হে আল্লাহর রাসূল! সে জিনিসগুলো কি? তিনি বললেন: আল্লাহর সাথে কোনো কিছু শরীক করা, যাদু বিদ্যা শেখা ও তার চর্চা করা, যে জীবনকে হত্যা করা আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন, তাকে অবৈধভাবে হত্যা করা, সূদী লেনদেন করা, ইয়াতীমের ধন আত্মসাৎ করা, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাওয়া, পবিত্র চরিত্রের অধিকারী মুমিন নারীর ওপর অপবাদ দেয়া।” (বুখারী, মুসলিম)
২. আবু বাকর ইবন আবি শায়বা (রহ.) সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: “আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি করে আজওয়া খেজুর (মদীনা শরীফে উৎপন্ন এক জাতীয় উৎকৃষ্ট মানের খেজুর) আহার করে, সেদিন তাকে কোনো বিষ বা যাদু ক্ষতি করতে পারে না।” (মুসলিম)
৩. রাসূল (সা.) কে জাদু করার ব্যাপারে বুখারীর দীর্ঘ হাদিসটি রয়েছে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত: “লাবীদ ইবনে আসাম নামক এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে যাদু করে। একরাত্রে রাসুল স. বারবার দু‘আ করতে থাকেন। তারপর তিনি বলেন: হে ‘আয়েশা! তুমি কি বুঝতে পেরেছ, আমি আল্লাহর কাছে যা জানতে চেয়েছিলাম, তিনি আমাকে তা জানিয়ে দিয়েছেন। আমার নিকট দু’জন লোক এসেছিলো। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অপরজন দু‘পায়ের কাছে বসেন। একজন জিজ্ঞেস করলো: এ লোকটির কি ব্যথা? আরেকজন বললো, যাদু করা হয়েছে। প্রথমজন বলেন: কে যাদু করেছে? দ্বিতীয়জন বলেন: লাবীদ ইন আ‘সাম। প্রথমজন জিজ্ঞাসা করেন: কি দিয়ে? দ্বিতীয়জন উত্তর দেন: চিরুনী, মাথা আচড়ানোর সময় উঠা চুল এবং পুরুষ খেজুর গাছের খোসার মাধ্যমে…।” (বুখারী ৫৪৩০)
৪. আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “যে ব্যক্তি জ্যোতিষ বিদ্যার কিছু শিক্ষা করলো, সে যেন যাদু বিদ্যার একটা শাখা আয়ত্ত করলো, এখন তা যত বাড়ায় বাড়াক।” (আহমাদ, আবূ দাউদ)
৫. ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন: “যে কুলক্ষণ নির্ণয় করে, আর যার জন্য নির্ণয় করা হয়। যে যাদু করে, আর যার জন্য যাদু করা হয়। এবং যে গণকের নিকট এলো এবং তাঁর কথা বিশ্বাস করলো…। এরা আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (মুসনাদে বাযযার, সনদ হাসান)
এই হাদিসগুলো স্পষ্ট করে যে, ইসলামে জাদুর চর্চা অত্যন্ত গর্হিত কাজ এবং এর থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মানুষের ওপর জাদু কিভাবে করা হয়?
জাদুর বিভিন্ন ধরণ রয়েছে এবং একেকটা একেকভাবে করা হয়। মানুষের ক্ষতি করার জন্য প্রচলিত জাদুগুলোকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়:
১. যেসব যাদুতে শয়তান পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে।
২. যেসব যাদুর জন্য জিন-শয়তানদের কাছে সরাসরি সাহায্য চাওয়া হয়।
কর্মপদ্ধতির দিক থেকে জাদু চারভাগে ভাগ করা যায়:
১. যাকে জাদু করা হবে তাঁর ব্যবহৃত কোনো জিনিস/কাপড় অথবা শরীরের কোনো অংশ যেমন: চুল, নখ ইত্যাদি কোনো গাছের ডাল, ভুডু ডল বা এরকম কিছুতে রেখে জাদু করা হয়।
২. কখনো যাদুকর নিজে পারে না, তখন জিন দিয়ে জাদু করায়।
৩. কখনো নিজে জাদু করে, সাথে জিনও পাঠায় ক্ষতি করার জন্য।
৪. কখনো ব্যবহারের জিনিস না পেলে মন্ত্র পড়া পানি বাড়ির সামনে ফেলে যায়, ওর ওপর দিয়ে হেঁটে গেলে জাদু লেগে যায়।
জাদু আসলে প্রকৃতির নিয়ম উল্টাপাল্টা করা, যা মোটেও সোজা নয়। এর জন্য অনেক কিছু উৎসর্গ করতে হয় এবং এর অনেক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। শয়তানকে সন্তুষ্ট না করলে জাদু সফল হয় না।
সতর্কতা:
১. কোনো কবিরাজের কাছে চিকিৎসা করতে গেলে যদি আপনার কাপড় চায়, ভুলেও দিবেন না।
২. বাড়িতে মেহমান এসেছিল, কদিন পর হঠাৎ খেয়াল করলেন কোনো কাপড়ের কোনা কাটা! সাথে-সাথে সাবধান হয়ে যান, মাসনুন আমলে গুরুত্ব বাড়িয়ে দিন, সমস্যার সন্দেহ হলে রুকইয়া করুন।
৩. সিহরের জন্য রুকইয়া করতে লাগলে কখনো রোগীর ওপর জিন চলে আসে। এজন্য রাক্বির মানসিক প্রস্তুতি থাকা জরুরি।
জাদুর লক্ষণসমূহ
যারা নিজেদেরকে জাদুগ্রস্ত মনে করছেন অথবা বুঝতে পারছেন না কিভাবে যাচাই করবেন আসলে আপনি জাদুগ্রস্ত কিনা তাদের জন্য নিচের লক্ষণগুলো উপকারী হবে:
১। চোখের অবস্থা অস্বাভাবিক বা অসুন্দর লাগা।
২। কোনো কারণ ছাড়াই শরীর গরম থাকা।
৩। ব্যাকপেইন। বিশেষত মেরুদণ্ডের নিচের দিকে ব্যথা করা।
৪। (মহিলাদের ক্ষেত্রে) অনিয়মিত মাসিক (পুরুষদের ক্ষেত্রে) প্রস্রাবে ইনফেকশন এর সমস্যা।
৫। প্রায়সময় পেট ব্যথা থাকা।
৬। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করেও কোনো রোগ ভালো না হওয়া। ৭। তীব্র মাথা ব্যথা, ঔষধ খেয়েও তেমন লাভ হয় না।
৮। হঠাৎ করে কারো প্রতি তীব্র ঘৃণা বা তীব্র ভালোলাগা অনুভব হওয়া।
৯। পরিবার, বাসা, সমাজের প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা থাকা।
১০। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত খুব অস্বস্তিতে ভোগা অথবা মেজাজ খারাপ থাকা।
১১। কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ি থেকে দৌড় দিয়ে বের হয়ে যেতে ইচ্ছা হওয়া।
১২। শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে অতিরিক্ত ব্যথা হওয়া।
১৩। ঠিকমতো ঘুমাতে না পারা। ঘুমালেও ভয়ংকর স্বপ্ন দেখা।
১৪। স্বপ্নে কোনো গাড়ি বা প্রাণীকে আক্রমণ করতে বা ধাওয়া করতে দেখা (যেমন: কুকুর, বিড়াল, গরু, মহিষ, বাঘ, সিংহ, সাপ)।
১৫। স্বপ্নে কোনো ফাঁকা বাড়ি, মরুভূমি বা গোরস্থানে হাঁটাচলা করতে দেখা।
১৬। স্বপ্নে বিভিন্ন জায়গায় পানি দেখা (যেমন সাগর, নদী, পুকুর, ইত্যাদি)।
১৭। স্বপ্নে ঘনঘন কোথাও আগুন জ্বলতে বা কিছু পোড়াতে দেখা।
১৮। স্বপ্নে নিজেকে উড়তে দেখা বা কোনো পাখি অথবা বড়বড় গাছ দেখা।
করণীয়:
- যদি ২-১টি লক্ষণ মিলে যায়: রুকইয়াহ করা লাগবে না। ফরজ কাজগুলোর পাশাপাশি নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যা এবং ঘুমানোর আগের মাসনুন আমল এবং বেশি বেশি দোয়া করলেই যথেষ্ট হবে।
- যদি ৫টি বা তারও বেশি লক্ষণ মিলে যায়: আপনার উচিত রুকইয়াহ তিলাওয়াত শুনে টেস্ট করা। বিভিন্ন ক্বারিদের সাধারণ রুকইয়াহ অডিও শুনে টেস্ট করতে পারেন। এক্ষেত্রে শাইখ সুদাইস (১১ নাম্বার) এবং শাইখ লুহাইদানের (২০ নাম্বার) অডিও শুনতে পারেন। গায়ে বা ঘরে তাবিজ থাকলে, সেটা খুলে নষ্ট করে তাওবা করার পর রুকইয়াহ শুনবেন। জাদু বা সিহরের সমস্যা থাকলে রুকইয়াহ অডিও শুনে বেশকিছু প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেমন: বমি হওয়া অথবা বমি বমি ভাব হওয়া, পেটে অথবা ঘাড়ে অথবা মাথায় তীব্র ব্যথা হওয়া, কান্না পাওয়া ইত্যাদি। রুকইয়াহ শুনে যদি এরকম যেকোনো প্রতিক্রিয়া হয় তাহলে আপনার উচিত অন্তত দুই সপ্তাহ জাদুর রুকইয়াহ করা।
- জিন সংক্রান্ত সমস্যার লক্ষণ থাকলে: রুকইয়াহ শুরুর পূর্বে এডমিনদের পরামর্শ নিন। যদি ৩-৪টি লক্ষণ মিলে তাহলে সিহরের রুকইয়াহ করতে কোনো অসুবিধা নেই। তারও বেশি লক্ষণ মিলে গেলে সিহরের পোস্টে বলা নিয়মে রুকইয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন একঘন্টা আয়াতুল কুরসির অডিও শুনবেন। আর প্রায় সব লক্ষণ মিলে গেলে অবশ্যই এডমিন ভাইদের পরামর্শ নিবেন।
নোট: ১. মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হলেও রুকইয়াহ করতে পারবে। গোসলের পানি অন্য কেউ পড়ে দিবে।
২. একজন পানি তৈরি করে দিলে অন্য জন গোসল করতে পারবে।
৩. রুকইয়াহ শুরু করলে প্রথমদিকে শরীর খারাপ করতে পারে। তখন বন্ধ করা যাবে না। ধৈর্য্য ধরে রুকইয়াহ চালিয়ে যেতে হবে।
৪. গায়ে/ঘরে কোনো তাবিজ থাকলে অবশ্যই নষ্ট করে ফেলতে হবে আগে। কোনো মূর্তি, পুতুল, ছবি ইত্যাদি থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে। ঘরে কুকুর থাকা চলবে না।
জাদুগ্রস্তের চিকিৎসার প্রস্তুতি
রুকইয়াহ করার পূর্বে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর ব্যক্তিগত প্রস্তুতির পাশাপাশি ঘরের পরিবেশও উপযুক্ত হওয়া প্রয়োজন।
১. চিকিৎসার পূর্বে ঘর টাঙানো বা সাজিয়ে রাখা কোনো জীবের ছবি এবং ভাস্কর্য থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে, যেন রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে।
২. কোনো মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে।
৩. রোগীর সাথে কোনো তাবিজ থাকলে খুলে ফেলতে হবে। তাবিজ আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুলের প্রতিবন্ধক।
৪. সেখানে উপস্থিত কেউ যেন অনৈসলামিক অবস্থায় না থাকে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। যেমন: কোনো পুরুষ স্বর্ণ পরে আছে, অথবা কোনো মহিলা বেপর্দা হয়ে আছে।
৫. রোগী এবং তার পরিবারকে সংক্ষেপে ইসলামিক দর্শন সম্পর্কে বলুন, যেমন: এই চিকিৎসায় আমার কোনো ক্ষমতা নেই, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা’আলার। আল্লাহ তা’আলা কোরআন এর মাঝে শিফা (আরোগ্য) রেখেছেন, আর রাসূল (সা.) কোরআন দ্বারা চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন এজন্য আমরা রুকইয়াহ পারফর্ম করবো। আর শিরকি ঝাড়ফুঁক বিষয়েও সতর্ক করবেন।
৬. রোগী মহিলা হলে… রোগীকে সম্পূর্ণ পর্দাবৃত অবস্থায় থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় যদি মাহরাম পুরুষ রুকইয়াহ করে, তাহলে অতিরিক্ত কোনো ঝামেলা হবে না।
৭. আর মহিলা রোগীর কোনো মাহরাম যেন অবশ্যই উপস্থিত থাকে, যেমন: বাবা, ভাই অথবা স্বামী থাকতে পারে। এছাড়া সেখানে অন্য গাইরে মাহরাম কেউ যেন না থাকে। পর্দার বিধান যেন লঙ্ঘন না হয়, এব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।
৮. প্রতিটা জাদুর যেসব লক্ষণ রয়েছে (পর্যায়ক্রমে বলা হবে ইনশাআল্লাহ) সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করে নিন। জিনের সমস্যার লক্ষণগুলোর ব্যাপারেও প্রশ্ন করুন। যেমন: স্বপ্নে কোনো প্রাণী ধাওয়া করে কি না। বোবায় ধরে কি না। অনেক উঁচু থেকে পড়তে দেখে কিনা। ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে বা ভুল বকে কিনা। ইত্যাদি ইত্যাদি। মোটকথা, জিনের সমস্যা লক্ষণ এবং জাদুর যে সমস্যা মনে হচ্ছে তার লক্ষণগুলো নিয়ে প্রশ্ন করে, অবস্থা সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা নিয়ে রুকইয়াহ শুরু করবেন।
৯. চিকিৎসা করার পূর্বে রোগী এবং আপনি; উভয়েরই ওযু করে নেয়া উচিত। উত্তম হচ্ছে কোনো নামাজের পরপরই রুকইয়াহ করা। এবং নামাজ পড়া নিষিদ্ধ এমন কোনো সময়ে রুকইয়াহ না করা।
১০. সবশেষে, মনে মনে ইস্তিগফার-দরুদ পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে চিকিৎসা শুরু করুন।
Increase Your Business with Expert Digital Solutions!
Get Unlimited Facebook Ad Credit, Guaranteed SEO Rankings, & Professional Web Development – all under one roof at MahbubOsmane.com!
14+ Years of Experience – Guaranteed SEO Rankings 800+ Satisfied Clients – Unlimited Facebook Ad Credit Proven Results, Maximum ROI – Professional Web Development
Contact us ( +8801716988953 WhatsApp ) today and take your business to the next level! Visit: MahbubOsmane.com
জাদুগ্রস্তের জন্য রুকইয়ার আয়াতসমূহ
রুকইয়াহ করার সময় কোরআনের নির্দিষ্ট কিছু আয়াত তিলাওয়াত করা হয়। এই আয়াতগুলো হলো:
১. সূরা ফাতিহা بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
২. সূরা বাকারা ১-৫ الم ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ أُولَٰئِكَ عَلَىٰ هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
৩. সূরা বাকারা ১০২ وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَىٰ مُلْكِ سُلَيْمَانَ ۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَٰكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ ۚ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَا إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلَا تَكْفُرْ ۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ ۚ وَمَا هُم بِضَارِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۗ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنفَعُهُمْ ۚ وَلَقَدْ عَلِمُوا لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الْآخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۚ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهِ أَنفُسَهُمْ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
৪. সূরা বাকারা ১৬৩-১৬৪ وَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ لَّا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِن مَّاءٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَابَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
৫. সূরা বাকারা ২৫৫ (আয়াতুল কুরসি) اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
৬. সূরা বাকারা ২৮৫-২৮৬ آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ ۚ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ ۚ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۖ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِ ۖ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا ۚ أَنتَ مَوْلَانَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
৭. সূরা আলে ইমরান ১৮-১৯ شَهِدَ اللَّهُ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَالْمَلَائِكَةُ وَأُولُو الْعِلْمِ قَائِمًا بِالْقِسْطِ ۚ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ ۗ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ ۗ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
৮. সূরা আ’রাফ ৫৪-৫৬ إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا ۚ إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ
৯. সূরা আ’রাফ ১১৭-১২২ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ
১০. সূরা ইউনুস ৮১-৮২ فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ
১১. সূরা ত্বহা ৬৯ وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ
১২. সূরা মু’মিনুন ১১৫-১১৮ أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ وَمَن يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِندَ رَبِّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ وَقُل رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
১৩. সূরা সফফাত ১-১০ وَالصَّافَّاتِ صَفًّا فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا إِنَّ إِلَٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ رَّبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشَارِقِ إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ وَحِفْظًا مِّن كُلِّ شَيْطَانٍ مَّارِدٍ لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ إِلَّا مَنْ خَطِفَ الْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُ شِهَابٌ ثَاقِبٌ
১৪. সূরা আহকাফ ২৯-৩২ وَإِذْ صَرَفْنَا إِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُونَ الْقُرْآنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوا أَنصِتُوا ۖ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا إِلَىٰ قَوْمِهِم مُّنذِرِينَ قَالُوا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا كِتَابًا أُنزِلَ مِن بَعْدِ مُوسَىٰ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِي إِلَى الْحَقِّ وَإِلَىٰ طَرِيقٍ مُّسْتَقِيمٍ يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ وَمَن لَّا يُجِبْ دَاعِيَ اللَّهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْأَرْضِ وَلَيْسَ لَهُ مِن دُونِهِ أَوْلِيَاءُ ۚ أُولَٰئِكَ فِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
১৫. সূরা আর-রাহমান ৩৩-৩৬ يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ إِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَن تَنفُذُوا مِنْ أَقْطَارِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ فَانفُذُوا ۚ لَا تَنفُذُونَ إِلَّا بِسُلْطَانٍ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ يُرْسَلُ عَلَيْكُمَا شُوَاظٌ مِّن نَّارٍ وَنُحَاسٌ فَلَا تَنتَصِرَانِ فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
১৬. সূরা হাশর ২১-২৪ لَوْ أَنزَلْنَا هَٰذَا الْقُرْآنَ عَلَىٰ جَبَلٍ لَّرَأَيْتَهُ خَاشِعًا مُّتَصَدِّعًا مِّنْ خَشْيَةِ اللَّهِ ۚ وَتِلْكَ الْأَمْثَالُ نَضْرِبُهَا لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ ۚ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
১৭. সূরা জিন ১-৯ قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ ۖ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا وَأَنَّهُ تَعَالَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا وَأَنَّهُ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى اللَّهِ شَطَطًا وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن تَقُولَ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ اللَّهُ أَحَدًا وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاءَ فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَن يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَّصَدًا
১৮. সূরা ইখলাস قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ اللَّهُ الصَّمَدُ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
১৯. সূরা ফালাক قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
২০. সূরা নাস قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ مَلِكِ النَّاسِ إِلَٰهِ النَّاسِ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
রুকইয়াহ করার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
১. সিহরের জন্য রুকইয়াহ করলে: ‘সূরা বাকারার ১০২, আরাফ ১২০, ইউনুস ৮১এর মাঝের অংশ (إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ), ত্বহা ৬৯, সূরা ফালাক ৪’ -এসব আয়াত বারবার পড়বেন। এক্ষেত্রে প্রতিবার বিসমিল্লাহ পড়ার দরকার নেই, শুধু প্রথমে পড়বেন।
২. তিলাওয়াতের সময় অবশ্যই সহীহ-শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করবেন। উদাহরণ হিসেবে পছন্দের কোনো ক্বারির তিলাওয়াত শুনে নিন।
৩. তিলাওয়াতের সময় (জিনের সমস্যা থাকলে) রোগী চিল্লাচিল্লি করলে থামবেন না। পড়তে থাকবেন। যদি জিন চলে যেতে চায় ওয়াদা করাবেন যেন আর না আসে।
৪. এত কিছু পড়তে ইচ্ছা না হলে সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস এগুলো বারবার পড়ে রুকইয়াহ করতে পারেন, এতেও উপকার হবে।
বিশেষ লক্ষণীয়:
১. জাদুর জিনিস খুঁজে পাওয়া গেলে: যদি কী দিয়ে জাদু করেছে তা পাওয়া যায়, অথবা কোনো সন্দেহজনক তাবিজ পাওয়া যায়, তাহলে তাবিজের কাগজটি বের করবেন। (সতর্কতা হিসেবে জাদুর কোনো জিনিস খালি হাতে ধরা উচিত নয়)। এরপর একটি পাত্রে পানি নিবেন, তারপর “সূরা আ’রাফ ১১৭-১২২, ইউনুস ৮১-৮২, সূরা ত্বহা ৬৯” একবার, এরপর সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস ৩ বার পড়বেন, এবং পানিতে ফুঁ দিবেন। তারপর জাদুর জিনিসগুলো পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখবেন। তাবিজ হলে, কাগজ, ঠোঙা, সুতা সব ডুবাবেন। তারপর কাগজটা নষ্ট করে দিবেন। তাহলে ইনশাআল্লাহ জাদু ধ্বংস হয়ে যাবে।
২. জাদুর জিনিস খুঁজে না পাওয়া গেলে: যদি জাদুর জিনিসগুলো খুঁজে না পাওয়া যায়, তবে বাড়িতেই কোথাও পুঁতে রাখা আছে এমন জানা যায়। তাহলে উপরের আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে তিনদিন পুরো বাড়িতে ছিটিয়ে দিলে ইনশাআল্লাহ জাদু নষ্ট হয়ে যাবে।
দোয়ার গুরুত্ব
জাদু আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি জাদুর জিনিসগুলো যদি পাওয়া যায় এবং সেগুলো নষ্ট করে ফেলা হয়, তাহলে মানুষ খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। তাই তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত যেন আল্লাহ জানিয়ে দেন, জাদুর জিনিসগুলো কোথায় পাওয়া যাবে, কিভাবে পাওয়া যাবে, কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বুখারিতে বর্ণিত ঘটনায় এসেছে, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জাদু করা হয়েছিল, তিনি কয়েকদিন খুব বেশি বেশি দোয়া করেছেন, এরপর একদিন হঠাৎ বললেন “আয়েশা তুমি কি বুঝতে পেরেছ যে ব্যাপারে আমি দোয়া করছিলাম আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন?” ওই সময়েই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রুকইয়ার জন্য সূরা ফালাক ও সূরা নাস নাযিল হয়। রাসূলুল্লাহকে জানিয়ে দেয়া হয়, আপনাকে এভাবে জাদু করা হয়েছে, অমুক জায়গায় আছে জাদুর জিনিস। ইত্যাদি… (বুখারী ৫৪৩২, মুসলিম, নাসাঈ, ইবনে মাযাহ, মুসনাদে আহমাদ)
দোয়া রুকইয়ার একটি অপরিহার্য অংশ। যে রুকইয়াহতে দোয়া নেই, তা অসম্পূর্ণ। তাই আমাদের অবশ্যই বেশি বেশি দোয়া করা উচিত।
১. বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “তোমাদের সম্পদ হিফাজত কর যাকাত প্রদানের মাধ্যমে, তোমাদের রোগের চিকিৎসা কর সাদকার মাধ্যমে, আর তোমাদের বিপদ দূর কর দু’আর মাধ্যমে।” (মুজামুল আওসাত ২০০৬, বায়হাক্বি ৩২৭৪)
وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ حَصِّنُوا أَمْوَالَكُمْ بِالزَّكَاةِ وَدَاوُوا مَرْضَاكُمْ بِالصَّدَقَةِ وَأَعِدُّوا لِلْبَلَاءِ الدُّعَاءَ
২. জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবী ﷺ কে বলতে শুনেছি, “রাতে এমন একটি সময় রয়েছে যে, কোনো মুসলমান ব্যক্তি আল্লাহর কাছে দুনিয়া-আখিরাতের কোনো কল্যাণের প্রার্থনা করা অবস্থায় যদি সময়টি পেয়ে যায়, তবে আল্লাহ অবশ্যই তাকে তা দান করবেন। আর এই সময় আছে প্রতিটি রাতেই।” (মুসলিম ৭৫৭)
سَمِعْتُ النَّبِيَّ ﷺ يَقُولُ إِنَّ فِي اللَّيْلِ لَسَاعَةً لَا يُوَافِقُهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللَّهَ خَيْرًا مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا أَعْطَاهُ إِيَّاهُ وَذَلِكَ كُلَّ لَيْلَةٍ
৩. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “আমাদের বরকতময় ও মহান প্রতিপালক প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকার সময় পৃথিবীর আসমানে নেমে আসেন এবং বলতে থাকেন, কে আছে আমাকে ডাকবে, তাহলে আমি তার ডাকে সাড়া দিব। কে আছে আমার কাছে চাইবে, তবে আমি তাকে দিয়ে দিব। কে আছে আমার কাছে ইস্তিগফার করবে, তবে আমি তাকে মাফ করে দেব।” (বুখারী ৫৯৬২, তিরমিযি)
يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ فَيَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে এমন আরোগ্য দান করুন যাতে আর কোনো রোগ বাকি না থাকে। আমীন।
✍️ লিখেছেন:মাহবুব ওসমানী
মাহবুব ওসমানী — একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক এবং IslamiDawahCenter.com এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
To learn more, comment below or message us on wa.me/+966549485900 or wa.me/+8801716988953 or call us at +44-73801-27019. Email at hi@islamidawahcenter.com
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।
- আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
- আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
- কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
- ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।