জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত
Special deeds of the first 10 days of Zilhajj
আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের জন্য কিছু মর্যাদাপূর্ণ সময় নির্ধারণ করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন। এই দিনগুলোকে কোরআন ও হাদীসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত এই দিনগুলোকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা এবং বেশি বেশি ইবাদতের মাধ্যমে নাজাত ও জান্নাত অর্জনের চেষ্টা করা।
কোরআনে জিলহজের প্রথম দশ দিনের ফজিলত
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন:
وَٱلْفَجْرِ١ وَلَيَالٍ عَشْرٍ٢
“শপথ ফজরের, এবং দশ রাতের।”
(সূরা আল-ফাজর: ১-২)
🔸 ইমাম ইবনে কাসীর (রহ.) বলেন, “এখানে ‘দশ রাত’ বলতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাত্রিকে বোঝানো হয়েছে।”
📚 তাফসীর ইবনে কাসীর, সূরা আল-ফাজর
হাদীসে জিলহজের দশ দিনের ফজিলত
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
مَا مِنْ أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيهِنَّ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ الْأَيَّامِ الْعَشْرِ
“এই দশ দিনের চেয়ে উত্তম দিনে কোনো নেক আমল আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দনীয় হয় না।”
সাহাবিরা বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! জিহাদও না?
রাসূল ﷺ বললেন:
وَلَا الْجِهَادُ، إِلَّا رَجُلٌ خَرَجَ يُخَاطِرُ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ، فَلَمْ يَرْجِعْ بِشَيْءٍ
“জিহাদও না, তবে সেই ব্যক্তি ব্যতিক্রম যে নিজের জান ও মাল নিয়ে বের হলো এবং কিছুই ফিরে আনলো না।”
📚 সহিহ বুখারি, হাদীস: ৯৬৯
জিলহজের প্রথম দশ দিনের বিশেষ আমলসমূহ
১. ❖ বেশি বেশি তাকবীর, তাহলীল, তাহমীদ, ও তাসবীহ
اللَّهُ أَكْبَرُ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللَّهُ، الْحَمْدُ لِلَّهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ
এই জিকিরগুলো পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
فَأَكْثِرُوا فِيهِنَّ مِنَ التَّهْلِيلِ، وَالتَّكْبِيرِ، وَالتَّحْمِيدِ
“তোমরা এই দিনগুলোতে বেশি বেশি করে তাহলীল (لَا إِلٰهَ إِلَّا اللَّهُ), তাকবীর (اللَّهُ أَكْبَرُ) ও তাহমীদ (الْحَمْدُ لِلَّهِ) বলো।”
📚 মুসনাদ আহমাদ: ৫৪৪৬
২. ❖ রোজা রাখা (১ থেকে ৯ জিলহজ পর্যন্ত)
জিলহজের প্রথম নয়দিন রোজা রাখা সুন্নত। বিশেষ করে ৯ জিলহজ অর্থাৎ আরাফার দিন রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ وَالْبَاقِيَةَ
“আরাফার দিনের রোযা বিগত এক বছর ও আগামি এক বছরের গুনাহ মোচন করে দেয়।”
📚 সহিহ মুসলিম, হাদীস: ১১৬২
বাংলাদেশে ২০২৫ সালে ৯ জিলহজ, অর্থাৎ আরাফার দিন, সম্ভাব্যভাবে ৫ জুন, বৃহস্পতিবার পড়বে। এই তারিখটি চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল, তাই চূড়ান্ত তারিখ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। দৈনিক জনকণ্ঠ
২০২৫ সালের সম্ভাব্য ইসলামিক তারিখসমূহ বাংলাদেশে:
- ১ জিলহজ: ২৮ মে, বুধবার
- ৯ জিলহজ (আরাফার দিন): ৫ জুন, বৃহস্পতিবার
- ১০ জিলহজ (ঈদুল আযহা): ৬ জুন, শুক্রবার । দৈনিক জনকণ্ঠ || Daily Janakantha
এই তারিখগুলো অনুমানভিত্তিক এবং স্থানীয়ভাবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে সাধারণত এক দিনের পার্থক্য থাকে, কারণ চাঁদ দেখার সময় ও অবস্থান ভিন্ন। সৌদি আরবে ৯ জিলহজ হলে, বাংলাদেশে তখন ৮ জিলহজ হতে পারে। তবে শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে, প্রতিটি দেশ তার নিজস্ব চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ইসলামিক তারিখ নির্ধারণ করে। দৈনিক জনকণ্ঠ || Daily Janakantha
৩. ❖ তাওবা ও ইস্তেগফার
এই দিনগুলোতে বেশি বেশি তাওবা করা ও আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া উচিত।
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا ٱلْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“হে মু’মিনগণ! তোমরা সকলেই আল্লাহর দিকে তওবা কর, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।”
📚 সূরা আন-নূর: ৩১
৪. ❖ কুরবানী করা (১০ জিলহজ)
আল্লাহ তা‘আলার জন্য কুরবানী করা এই মাসের অন্যতম প্রধান আমল।
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنْحَرْ
“অতএব, তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো ও কুরবানী করো।”
📚 সূরা আল-কাওসার: ২
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
مَا عَمِلَ آدَمِيٌّ مِنْ عَمَلٍ يَوْمَ النَّحْرِ أَحَبَّ إِلَى اللَّهِ مِنْ إِهْرَاقِ الدَّمِ
“নহর (কুরবানীর) দিনে আদম সন্তানের এমন কোনো কাজ নেই যা আল্লাহর কাছে রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে অধিক প্রিয়।”
📚 তিরমিযি, হাদীস: ১৪৯৩তাকবীরে তাশরীক পড়া?
‘তাকবীরে তাশরীক’ (تَكْبِيرُ التَّشْرِيْقِ) পড়া জিলহজ মাসের বিশেষ আমলগুলোর অন্যতম। এটি জিলহজ মাসের নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনে পুরুষ-মহিলা সকল মুসলমানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল হিসেবে বিবেচিত।
তাকবীরে তাশরীক কী?
تَكْبِيْرُ التَّشْرِيْق হলো:
اللّٰهُ أَكْبَرُ، اللّٰهُ أَكْبَرُ، لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ، وَاللّٰهُ أَكْبَرُ، اللّٰهُ أَكْبَرُ، وَلِلّٰهِ الْحَمْدُ
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।”
তাকবীরে তাশরীক কবে থেকে কবে পর্যন্ত পড়া হয়?
🔹 সময়সীমা:
👉 ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ থেকে শুরু করে
👉 ১৩ জিলহজ আসরের নামাজ পর্যন্ত
সর্বমোট ৫ দিন
(৯, ১০, ১১, ১২, ১৩ জিলহজ)🔹 নামাজের পর পড়া হয়:
ফরজ নামাজের পর (জামাআতে হোক বা একা), সালাম ফেরানোর পরে, তাকবীরে তাশরিক একবার পাঠ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য?
হ্যাঁ, পুরুষ ও নারী, মুকীম ও মুসাফির—সব মুসলিমের জন্য এটি পড়া মুস্তাহাব (হানাফি মতে পুরুষদের জন্য ওয়াজিবের কাছাকাছি গুরুত্ব)।
দলীল ও ফিকহি ব্যাখ্যা
🔹 আল্লাহ বলেন:
وَذَكِّرْهُمْ بِأَيَّامِ اللَّهِ
“তাদের আল্লাহর দিবসগুলোর কথা স্মরণ করাও।”
(সূরা ইব্রাহীম: ৫)🔹 উমর (রাযি.) ও আলী (রাযি.)সহ সাহাবিগণ এই দিনে বাজারে গিয়ে উচ্চস্বরে তাকবীর দিতেন।
كَانَ عَلِيٌّ رضي الله عنه يُكَبِّرُ مِنْ صَلَاةِ الفَجْرِ يَوْمَ عَرَفَةَ إِلَى العَصْرِ مِنْ آخِرِ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ، وَيَقُولُ: لَا يُكَبِّرُ بَعْدَ العَصْرِ.
“আলী (রাযি.) عرفہ দিবসের ফজর নামাজ থেকে তাশরীকের শেষ দিন আসর পর্যন্ত তাকবীর দিতেন এবং বলতেন: এরপর আর তাকবীর নেই।”
(ইবনে আবি শাইবা, ২/১৬৫)🔹 ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে:
هُوَ وَاجِبٌ عَلَى الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ
“এটি পুরুষ ও নারীদের জন্য ওয়াজিব।”
(الدر المختار و رد المحتار ٢/١٧٧)
সংক্ষেপে:
বিষয় ব্যাখ্যা আমল তাকবীর বলা সময়সীমা ৯ জিলহজ ফজর থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত নামাজ প্রতিটি ফরজ নামাজের পর কাদের জন্য পুরুষ-মহিলা, মুকীম-মুসাফির ফজিলত আল্লাহর যিকির, কুরবানির দিনসমূহের মহিমা বৃদ্ধি
আরাফার দিনে / শবে কদরের রাতে/ দোয়া কবুলের বিশেষ বিশেষ স্থানে এবং সময়ে আল্লাহর কাছে চাওয়ার মতো কিছু দোয়া নিজের মত করে লিখা!
১. আল্লাহ, আমাকে পরিপুর্ন হালাল রিজিকের রাস্তা দেখাও, আমি যেন কষ্ট ছাড়াই হালাল উপায়ে বড় এবং ভালো কিছু করতে পারি, যা আমার এবং পৃথিবীর মানুষের উপকারে আসবে।
২. আল্লাহ, আমার মা-বাবাকে সুস্থ রাখো, ভালো রাখো, হাসিখুশি রাখো, আর আমাকে ওনাদের জন্য গর্ব করার মতো কিছু করতে পারি, সেই তাওফিক দাও।
৩. আল্লাহ, আমাকে এমন একটা কাজ দাও, যেটা আমি মন দিয়ে করতে পারি, যেটা দিয়ে মানুষও উপকার পাবে, আর আমিও পরিবার চালাতে পারবো কোন দুশ্চিন্তা ব্যাতিত।
৪. আল্লাহ, জানা-অজানা, ইছাকৃত-অনিচ্ছাকৃতভাবে করা সকল গুনাহ মাফ করে দাও, নুন্যতম ছোট গুনাহ রাখে আমাকে/আমাদের কাউকে কবরে নিওনা এবং বিনা হিসাবে আমাদেরকে জান্নাত দিও, কারন হিসাব দিয়ে তোমার আজাব থেকে বাঁচতে পারবোনা।
৫. ইয়া হাইয়ু, আমাকে এমন জীবনসঙ্গী দাও যেই আমাকে তোমার পথে টানবে, ভালোবাসবে, আর আমিও তাকে অনেক ভালোবাসবো, মৃত্যু পর্যন্ত আমাকে কখনো একা রেখনা।
৬. আল্লাহ, আমার মনটা পরিষ্কার করো, খারাপ হিংসা, রাগ, অভিমান এগুলো মন থেকে সম্পুর্ন দূর করে দাও।
৭. আল্লাহ, যেইসব কাজ গোপনে করছি, যেগুলা ঠিক না, সেগুলো থেকে আমাকে বের করে আনো এবং সেসব গুনাহের জন্য আমাকে মাফ করে দাও।
৮. আল্লাহ, আমাকে মানুষ হিসেবে গ্রো করতে শেখাও, ভুল থেকে শিখতে দাও, আমার ভেতর কখনো অহংকার যেন না আসে।
৯. আল্লাহ, আমার চিন্তাগুলা পরিষ্কার করে দাও, আমি যাতে over thinking এবং procrastinate না করি। আমি যেন বুঝতে পারি কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল।
১০. ইয়া কাইয়ুম, আমি যাতে নামাজে আর অবহেলা না করি, ৫ ওয়াক্ত নামাজে জামাতে এবং তাহাজ্জুদ আদায় করার তাওফিক দাও।
১১. আল্লাহ, আমাকে এমন বানাও যেন আমার মাধ্যমে কমপক্ষে ১,০০০,০০,০০০ পরিবারে রিজিকের ব্যবস্থা হয়।
১২. আল্লাহ, আমাকে সময়ের মূল্য বুঝতে শেখাও, ফালতু জিনিসে যেন সময় নষ্ট না করি।
১৩. আল্লাহ, আমার কষ্টগুলা তুমি কমিয়ে দাও, আমাকে পরিপুর্ন সুস্থ করে দাও।
১৪. আল্লাহ, যেইসব মানুষ আমার ক্ষতি চায়, তুমি তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করো, সেসব মানুষকে তুমি হেদায়েত দাও, আর তারা হেদায়েতের যোগ্য না হলে তাদেরকে ধ্বংস করে দাও।
১৫. হে মহান সর্বশক্তিশালী প্রভু, আমার পছন্দের মানুষটা যদি আমার জন্য ভালো হয়, তাহলে তুমি পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও, আর যদি আমার জন্য সে ভালো না হয়, তাকে তুমি আমার মন থেকে ভুলিয়ে দাও এবং আমার জন্য যে ভালো, তাকে তুমি দ্রুত আমার কাছে পাঠাও।
১৬. আল্লাহ, আমার প্রতি আমার স্ত্রীর ভালবাসা এতটাই শক্তিশালী কর, যাতে আমার স্ত্রীর আমাকে দেখলে তার মন ভরে যায় এবং একই ভাবে তাকে দেখলে যাতে আমার মন ভরে যায়।
১৭. আল্লাহ, যদি কখনো তোমাকে ভুলে সম্পুর্ন দুনিয়ার পেছনে ছুটি, তখন তুমি টেনে ধরবা, যেন তোমাকে ভুলে না যাই।
১৮. হে আল্লাহ, আমি যেন ততক্ষণ পর্যন্ত মারা না যাই, যতক্ষণ পর্যন্ত না, তুমি আমার প্রতি পরিপুর্ন সন্তুষ্ট হও।
১৯. আল্লাহ, যখন আমি বিভ্রান্ত হই, তুমি আমাকে পথ দেখাইয়ো, কারন তুমি জানো আমার জন্য আসলেই কি ভালো আর কি খারাপ।
২০. ইয়া রব, আমি যদি হারাম ইনকামের সাথে কোনভাবে যুক্ত হয়ে যাই, তুমি আমাকে ওই পথ থেকে ফিরিয়ে নিও এবং আমাকে হালাল ইনকামের ব্যবস্থা করে দিও সবসময়।
২১. আল্লাহ, আমাকে খারাপ বন্ধু, মিথ্যা বন্ধু আর এমন বন্ধুদের থেকে বাঁচাও, যারা আমাকে তোমার থেকে দূরে নিয়ে যায়।
২২. আল্লাহ, আমাকে সেই কষ্টগুলো থেকে দূর করে দাও, যেগুলো আমি সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখি।
২৩. আল্লাহ আমাকে চক্ষুশীতল কারী সন্তান দাও, পুর্নবতি, স্নেহশিলা স্ত্রী দাও, এবং আমার কাছে যতটুকু আছে ততটুকুতেই তুমি আমাকে সবর করার তাওফিক দাও।
২৫. হে খোদা, যখন আমি দুর্বল হই, তুমি আমার শক্তি হও। যখন আমি পড়ে যাই, তুমি আমাকে তুলে নিও।
২৬. আল্লাহ, আমাকে সেই মানুষদের মধ্যে রাখো যারা, হাশর কিয়ামতের দিনে তোমাকে গর্বিত করে।
২৭. আল্লাহ, আমার ক্যারিয়ারের জন্য যেসব মানুষ ভালো, আমার চারপাশে তাদের দিয়ে সবসময় পরিপুর্ন করে রাখ, আর যাবতীয় টক্সিক মানুষদের আমার জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দাও।
২৮. আল্লাহ, আমাকে এতটুকু শক্তি দাও, যেন আমি নফসের ধোঁকায় পড়ে গুনাহ না করি।
২৯. ইয়া আল্লাহ, আমাকে এমন একটা জীবন দাও যেখানে আমি টাকা, মানসিক শান্তি আর ঈমান, তিনটাই ব্যালেন্স করে চলতে পারি।
৩০. হে সৃষ্টিকর্তা, আমার রাতের ঘুম ফিরিয়ে দাও, যেন আমি প্রতিরাতে ঠিক সময়ে ঘুমাতে পারি।
৩১. আল্লাহ, আমার ভেতরের ইনসিকিউরিটিগুলো দূর করে দাও।
৩২. আল্লাহ, আমার শরীরকে এমনভাবে শক্তিশালী করো, যাতে আমাকে দেখতে ভালো লাগে এবং বিপদে-আপদে আমি দুর্বল হয়ে না যাই।
৩৩. ইয়া রাব্বে কারিম, আমার চোখের পানি যেন শুধু তোমার জন্য পড়ে, এই দুনিয়ার কোন কারনে নয় এবং তুমি কখনো আমাকে অন্য মানুষের মুখাপেক্ষি করোনা।
৩৪. হে চিরঞ্জীব, আমাকে একটা সুস্থ জীবনের রুটিন দাও, যাতে আমি পরিপুর্ন সুস্থতার সাথে জীবনকে উপভোগ করতে পারি।
৩৫. আল্লাহ, আমার সব কাজগুলোতে এমন বরকত দাও, যাতে সময় কম ব্যয় করে, চাপ মুক্ত থেকে, রেজাল্ট সবচেয়ে বেশি আসে।
৩৬. ইয়া যালযালালি ওয়াল ইকরাম, আমি যাদের ভালোবাসি, তুমি তাদের হেফাজত করো even যদি তারা আমাকে ভুলেও যায়।
৩৭. আল্লাহ, আমার মা-বাবা যেন আমার সফলতা দেখে যেতে পারে, আমি যেন তাদের জন্য চক্ষুশীতল কারি হয় এবং তারা যেন আমার জন্য চক্ষু শীতলকারী হয়।
৩৮. ইয়া রাহমান, যাদের আমি না বুঝে কষ্ট দিয়েছি, মৃত্যুর পর্বেই তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ করে দিও, যাদের হক আমার দ্বারা খেয়ানত হয়েছে, তাদের হক আদায় করে যেন মরতে পারি।
৩৯. আল্লাহ, আমার অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যতের সব দোয়া কল্যাণের সাথে কবুল করে নিও।
৪০. আল্লাহ, প্রতি রাতে যেন আমি ফোন/ডিভাইস স্ক্রল না করি বরং তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে পারি আমার অন্তরে সেই ইচ্ছা এবং শারীরিক শক্তি তৈরি করে দাও।
৪১। ইয়া রাহিম, আমাকে উভয় জাহানে ইজ্জত ও তাকওয়ার জিন্দেগী দিও এবং সর্বচ্চো সম্মানিত কর, তোমার সুমহান ইজ্জত এবং পবিত্র নামগুলোর উছিলায়, তোমার বন্ধু নবীজির ইজ্জতের খাতিরে, আমার ছোট ছোট নেক কাজগুলোর উছিলায়, আমার জীবনের সকল দোয়া তুমি কবুল করে নাও, আমিন, আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।
–
এগুলো আমি আমার মত করে লিখেছি। এছাড়াও আপনি আপনার কাছে থাকা কিছু ভালো আইডিয়া নিচে শেয়ার করতে পারেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি সাজেস্ট করবো আপনার দোয়া গুলো কোথাও লিখে রাখতে, এরপর ১ বছর পর ওই লিস্ট চেক করতে যে কোন কোন দোয়া কবুল হয়েছে এবং ওই দোয়াগুলো কবুল করার জন্য আপনি কি কি করেছেন। এটা করলে আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরো বাড়বে এবং নিয়মিত দোয়া করতে থাকলে আল্লাহ্ অবশ্যই কবুল করবেন।
জিলহজের ১০ দিনকে হেলায় হারাবেন না!
এই ১০ দিন আমাদের জন্য একটি স্বর্ণালি সুযোগ। সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন, এবং সালাফে সালেহীন এই দিনগুলোতে বিশেষভাবে ইবাদত করতেন। সুতরাং আমাদের উচিত এই দিনগুলোকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য যথাযথভাবে কাজে লাগানো।
উপসংহার
জিলহজের প্রথম ১০ দিন এমন এক সময়, যা ইবাদত ও নেক আমলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরআন ও হাদীসে বারবার এর গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এই দিনগুলোতে আমরা আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করবো, বেশি বেশি নামায, রোযা, দান-সদকা, জিকির, কুরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য নেক আমল করবো। যেন এই বরকতময় দিনগুলো আমাদের জাহান্নাম থেকে মুক্তির এবং জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম হয়।
✍️ লিখেছেন:মাহবুব ওসমানী
মাহবুব ওসমানী — একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক এবং IslamiDawahCenter.com এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।To learn more, comment below or message us on wa.me/+966549485900 or wa.me/+8801716988953 or call us at +44-73801-27019. Email at hi@islamidawahcenter.com
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।
- আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
- আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
- কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
- ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।