From Tomorrow-কাল থেকে ভালো হয়ে যাবো
by
admin
May 2, 2021
Death
0
From Tomorrow-কাল থেকে ভালো হয়ে যাবো
আমরা অনেকেই ধর্মে বিশ্বাস করি। কিন্তু ছোটবেলা থেকে এই নষ্ট সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে ধর্মের বিধিনিষেধ গুলো জানা হয়ে / শিক্ষা হয়ে উঠে নি। তাই যখন আমরা ইসলামকে ভালোবেসে এই বিধি নিষেধ মানতে অগ্রসর হই তখন আমাদের ছোটবেলা থেকে শেখা কালচার, মজা করার স্মৃতি, বন্ধুদের আড্ডা, আশেপাশের মানুষের প্রশংসা আরো অনেক কিছুই আমরা ফেলে দিয়ে পুরোপুরি দ্বীনের পথে আসতে পারি না। শয়তান ওয়াসওয়াসা দেয় আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যাবো। কিন্তু আমরা অনেকে সেই সুযোগ পেলেও সবাই পাই না। কখনো কি ভেবে দেখেছি ফিরে আসার সময় পেলে তো আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু যদি কোনো কারণে সময় টা না পাই। এই অবস্থায় যদি রব্বে করিমের সামনে দাড়াতে হয়???
এক মুহূর্ত পরেই একজন ফেরেশতার মত কেউ আমার সামনে দাঁড়ালো!
কে এই লোক? জ্বীন নাকি? নাকি………
নাহ, অল্প বয়স আমার! কি ভাবছি আমি এসব?
ধুর, ভুল দেখছি নাকি?
আরে এই লোক বলে কি আবার আমাকে?
‘এই খবিশ দেহের মধ্যে থাকা খবিশ রুহ, বের হ, তৈরি হয়ে যা ভয়ানক শাস্তির জন্য, উত্তপ্ত পানির জন্য, কাটাযুক্ত বিষাক্ত বস্তুর জন্য, সব ভয়ানক শাস্তির জন্য’
আমাকে এটা কেন বলা হলো? আমি কি এখন মরব?
আশ্চর্য আমি কথা বলতে পারছি না ! আমার জবান বন্ধ, আরে আমাকে তওবা করতে দিচ্ছে না কেন?
আমার ভেতর থেকে আমাকে যেন টেনে ফেলা হচ্ছে !
মৃত্যু সুনিশ্চিত জেনে তওবা করলে তওবা গৃহীত হয়না মনে পড়ছে আবছা আবছা! ফিরাউন মারা যাওয়ার সময় আল্লাহকেই রব্ব হিসেবে স্বীকার করেছিল তার তওবা ছিল একদম মৃত্যুরই সময়ে.. কিন্তু তার এই তওবা আল্লাহ কবুল করেন নি!
আমার কপালে কি তাহলে ফিরআউনের মত তওবা নেই?
কি করব এখন? ভেবেছিলাম মৃত্যুর আগে তওবা করে নিব, জীবনে কত রকম গুনাহ করেছি আল্লাহ !!
কত জায়গায় কত পিক রেখে এসেছি নিজের, ছোটবেলার কাজা নামাজগুলো পড়া হয়নি, হ্যা গত রমজানের ভাঙতি রোজাও তো বাকি আছে কাজা করা! ফেসবুক, ইন্সটা আইডিগুলো ডিয়েক্টিভেট করার জন্যও এই ফেরেশতা আমাকে এক মিনিট দিচ্ছে না?
আরে এখনই মরব নাকি আমি? এই কম বয়সে? অসম্ভব!
আশ্চর্য! আযরাইল আলাইহি ওয়া সাল্লাম একা আসেন নি, সাথে করে ৪জন ফেরেশতাদেরকে নিয়ে এসেছেন!
আরে! আমাকে ৪জন ফেরেশতা মারছে কেন?
আমার মুখে আঘাত করছে, পিছনেও আঘাত করছে!!
আম্মু.. বাঁচাও! থামো তোমরা! কেন এভাবে মারছো?
কখনো ফেইল করলেও তো আমার বাবা মা আমাকে মারে নি?
আমাকে মারছো কেন? আমি তো ছোটবেলা থেকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছিলাম, প্রেম করিনি, রমজানে রোজা রাখতাম!
আমার আত্মাটা বের হতে চাচ্ছে না। কারণ আমি মরতে একদমই প্রস্তুত নই, আমি ভয় পাচ্ছি.. আমার ফেরেশতারা আমার রুহটা টেনে নিচ্ছে ,
প্রত্যেকটি রগে যেন আমার রুহ আটকে আছে, প্রত্যেকটি রগ, মাংস কেটে কেটে রুহটাকে বের করে ফেলছে তারা..
-“ভাইরে… আমি বলছি তো, আমাকে একটু সময় দিন, আমার সবকিছুর জন্য তওবা করতে হবে, ভাই এখন থেকে আমি ঠিক হয়ে যাব, এবার আমি প্রকৃত মুমিন বান্দার মত আচরণ করব! ভাই শুনুন তো??”
আমি আর সহ্য করতে পারলাম না, বাঁচতে পারলাম না
আমার পুরো অস্তিত্ব ভেঙ্গে গেল। এই কষ্ট সারা দুনিয়ার সব কষ্টের থেকে বড় ছিল, অথচ আমি ভয় পাইনি এই কষ্টকে, একে ভোগ করার আগে।
আমার রুহ বের করে ফেলেছে, আমাকে নিয়ে আসমানে চলা শুরু করেছে –
আসমানের দরজার ওপাশের ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করলো – “এটা কে?”
তারা উত্তর দেয় – “এ হচ্ছে এর সন্তান”
তখন আসমানের দরজা খোলা হলো না, আসমানের ফেরশতারা বললো – “এটা তো সেই খবিশ রুহ যেটা খবিশ দেহের মধ্যে ছিল। এটা তো ওই হতভাগ্য রুহ, যেটা হতভাগ্য দেহের মধ্যে ছিল। এর জন্য আসমানের দরজা খোলা যাবে না একে ফেরত পাঠাও”
আমার জন্যে আসমানের দরজা খোলা হলো না, জান্নাতের দরজা খোলা হলো না, আমাকে নিয়ে তারা এখন সেখান থেকে আল্লাহর তৈরি কারাগার ‘সিজ্জিনে’ নিয়ে আসলো! ৭ম জমিনের এই জায়গাটাতে আমাকে ছুড়ে ফেলে দিলো ওরা, এখানে এত বিষধর সাপ বিচ্ছু, হ্যা এই তো সেই সাপ যা দুনিয়াতে নিঃশ্বাস ফেললে কখনোই দুনিয়াতে কোন শস্য ফলতো না, আমাকে কি কামড়াবে এরা? প্লিজ না, আমি একবার দুনিয়াতে যাব, এক সেকেন্ডের জন্য আমাকে যেতে দাও, আমার খুব প্রয়োজন একটা সেকেন্ড! আমি সাপের কামড় অনেক ভয় পেতাম.. এখানের একেকটা সাপ তো পৃথিবীর সব সাপের বাপেরও বাবা!
বিষে নীল হয়ে শুয়ে আছি, হাত পা নাড়াতে পারছি না, আমার হাত পা আমার কোন অর্ডার শুনে না, এখানে সবাই আল্লাহর অর্ডারে কাজ করে, আমার কান্নার কোন পাত্তা দেয়না এরা, এরা আমাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে দুই পাশের মাটি একসাথে চাপ দিয়ে আমার পাজরের হাড্ডিগুলো একটা আরেকটার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে। অনেক ব্যথা দিয়েছে.. অনেক…!
এখানেই আমার রুহকে বন্দী রাখা হবে যতক্ষণ না কিয়ামত কায়েম হবে.. আমাকে ততদিন আযাব দেয়া হবে! আমি বাঁচতে চাই.. আমি দুনিয়াতে ফিরতে চাই?
আমার কোন জ্ঞান ছিল না এই সপ্তম জমিনের সবচেয়ে ভয়ংকর কারাগারের আযাব সম্পর্কে!!
সত্যিই আমার কবরটা একটা জাহান্নামের গর্ত, এইতো সেদিন বেঁচে ছিলাম, কোন শাস্তিই দেন নি আল্লাহ আমাকে দুনিয়াতে, নামাজ না পড়ে পর্দা না করেও আল্লাহর দেয়া কোন নিয়ামত থেকেই বঞ্চিত হইনি। কত শান্তি ছিল আমার দুনিয়ার জীবনে। কিন্তু আমি এখন জাহান্নামের একটা গর্তে আছি, ছোট্ট একটা জাহান্নামে আমি আছি এখন..
আমি মনে করতে পারছি হাদিসটি।
ফেসবুক আর ইন্সটাগ্রাম আইডিতে রেখে আসা ছোট বোনটার তুলে দেয়া আমার এত সুন্দর পিকগুলো আমাকে প্রত্যেকদিন আমার নতুন ঘর- “কবরে”
হ্যা আমি তো আমার বোনকে আমার মৃত্যুর ৩দিন আগেও মনে হয় কয়েকটা মুভি দিয়ে এসেছিলাম, ও কি আরো অনেককে মুভিটা দিলো? আমার আযাব থামছে না কেন? ওদের জন্যই, সব দোষ ওদের, একটা মূর্খও জানতো না গুনাহে জারিয়া কাকে বলে.. নতুন নতুন গুনাহ আসছেই আমার কাছে ওদের জন্যই.. ওরা বেঁচে আছে কেন? ওদেরও শাস্তি হওয়া উচিত এখনই।
আমার তুলে দেয়া গ্রুপ পিক সবাই ফেসবুকে আপলোড করেছে, এজন্যও আমার কেন আযাব হবে?
ইশ আমি তো পিকটায় ছিলাম ও না.. শুধু ওদের বেপর্দার কোন প্রতিবাদ না করে পিক তুলে গুনাহ করতে সাহায্য করেছি!
ওদের পাপকাজে সাহায্য করে নিজে কষ্ট পাচ্ছি এখন..
ওরা তো প্রতিদিন ছবি দিয়েই যাচ্ছে, আর আমার কি হয়ে গেল?
শখ করে নবীনবরণ প্রোগ্রামে গান গেয়েছিলাম! ওটাও তো ইউটিউবে আপলোড করেছে বড় ভাইয়ারা, সব ছেলেগুলো রেকর্ড করেছিল! আমার আযাব কি থামবে না ওদের জন্য? আহ! সহ্য হচ্ছে না এত ব্যথা!
কাকে দিচ্ছি দোষ? কি লাভ অন্যদের দুষে?
দোষ তো আমারই, আমিই গুনাহে জারিয়া রেখে আজ কবরে আসলাম।
বেশিরভাগ ফ্রেন্ডই তো আমাকে সাহায্য করেছে আজকে বিষাক্ত সাপ ও বিচ্ছুগুলোর কামড় খেয়ে নীল হয়ে পড়ে থাকার জন্য.. ওরা জানে না এই সাপ কেমন বিষ ঢুকায় আমার শরীরে.. আমি ছাড়া কেউ বুঝবে না।
হুম, সূরা যুররুখে ছিল সেদিন বন্ধুবর্গ একে অপরের শত্রুতে পরিণত হবে। হুম, মৃত্যু তো ছোট বিচারদিবস। দোস্ত, তোরা এখন আমার শত্রু।
বাবা মা ছাড়া কেউ আমার জন্য দুয়া করছে না কেন? আমার জন্য একটু কিছু নেক আমল পাঠাও আযাব থামাতে! আমাকে তোমরা কেউ ভালোবাসো না? প্লিজ আমার জন্য কিছু পাঠাও। ভুলে গেলে নাকি আমার কথা? এখন আমার সবার দুয়া, সদকা কত প্রয়োজন ছিল.. এরা আস্তে আস্তে একেবারে ভুলে যাবে আমাকে। আমার নামটা এদের মন থেকেই উঠে যাবে একদিন।
এখন আমার কবরে এমন সব ফেরেশতারা আমার মাথায় বাড়ি দিতে থাকবে, সারা শরীরে মারতে থাকবে যারা বধির ও অন্ধ!
আমি এত চিল্লাচ্ছি, এরা কেউ আমার চিৎকার শুনছে না, কোন মানুষ ও শুনছে না, জ্বীনও শুনছে না!
শুধু সমগ্রজগতের জীবেরা শুনবে আমার চিৎকার আর আল্লাহর আযাবের ভয়ে কাঁপতে থাকবে.. কি লাভ?
যাদের শোনা এখন উচিত ছিল তাদের কারো কানে যাবে না এই চিৎকার, কেউই শুধরাবে না। শুধু প্ল্যান করবে আমারই মত “আমি একদিন ঠিকই ভালো হয়ে যাব”
সত্যিই কি সময় পাইনি? নাকি আল্লাহর কাছে ফিরে আসা, তওবা করাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আরো কিছুদিন পাপের মধ্যে ডুবে থাকার দুঃসাহস করেছি!
কেন আমি সেদিন আল্লাহর অবাধ্যতা করতে করতেই আরেকটা দিন ‘বেশি’ বাঁচার মত রিস্ক নিয়েছিলাম? কেন??
হাদিসে ছিল, “তোমরা যদি মৃতের কবরের আযাবের চিৎকার শুনতে তোমরা কোনদিন কাউকে দাফন দিতে না লাশ ফেলে পালাতে”
আফসোস আমি জানতাম না!
আমি মুসলিম হয়েও কবরে শান্তি পেলাম না!
না! সত্যি আমি পাল্টাতে চেয়েছিলাম, আমি সত্যি বলছি, তোমরা থামো, আমি সত্যিই পাল্টামতাম।
প্রত্যেকটা দিন তোমার জন্য নতুন একটা সুযোগ, তওবার দরজা খোলা আছে ২৪ঘণ্টা.. আল্লাহর ওয়াস্তে কবিরা গুনাহ গুলো ধুয়ে আসো এক মিনিটের তওবাতে..
আমার মত হয়ো না, আমার পাপ আমাকে জাহান্নামের আগুনে ঝলসাচ্ছে, এটাই বাস্তবতা, কুরআন অস্বীকার করো? আল্লাহর আযাবকে অস্বীকার করো? ভয় পাও না জাহান্নামের আগুনকে তাইনা? কাউকে কোনদিন আগুনে পুড়ে মরতে দেখেছো তুমি? ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মরতে থাকা সারা শরীর আগুনে ঝলসে যাওয়া মানুষদের কষ্ট কোনদিন দেখেছো? কিভাবে পুড়তে দিবে তোমার এত সুন্দর স্কিনকে? যেটার পেছনে এত সময় আর টাকা ব্যয় করছো? আসলে তোমার শরীরকে তুমি একটুও ভালোবাসো না। তুমি তোমার নিজেকে একটুও ভালোবাসো না। মিথ্যুক তুমি।
আল্লাহর বান্দা তুমি, আর আল্লাহর অবাধ্য হয়ে বেঁচে যাবে ভাবছো?
আমিও তো অনেক সুন্দর ছিলাম, কতদিন জাংক ফুড, মিল্কশেইক খাইনি, ফিগারের জন্য.. সুন্দর আউটফিটের জন্য। আর মরার ঠিক ৭২ঘণ্টার মাথায় সারা শরীরটা ফুলে গোল হয়ে যাচ্ছিল আমার।
তারপর পচা গন্ধ বের হতে শুরু করেছিল। এই শরীরের জন্য কি না করেছিলাম আমি, সেগুলো কোন লাভই দেয় নি। যদি আরো কিছু ভালো কাজ নিয়ে আসতাম, কবরে আজ আমি এই পচা দুর্গন্ধ নিয়ে মার খেতাম না.. অনেক ভালো থাকতাম।
কাল সকালটা হয়ত তোমার নাও দেখা হতে পারে। তওবা করলে আজই করো, এখন করো। ওজু করে এই ওয়াক্তের নামাজটা পড়ে আসো। কাল সকাল থেকে তোমার নতুন জীবন শুরু হবে। হ্যা, তোমার সমস্ত পাপ তওবার পর নেকিতে পাল্টে যাবে, কুরআনে আছে। তোমাকে আল্লাহ ভালোবেসে ফেলবেন। তোমার জীবন রিস্টার্ট হয়েছে। কেন আসছো এই পৃথিবীতে তুমি? _আল্লাহর ইবাদত করতে! তোমাকে এই সুস্থ শরীর এই চোখ নাক মুখ কেন দেওয়া হয়েছে? _আল্লাহর আদেশে ঢেকে রাখার জন্য, এখনো তুমি গাফেল (উদাসীন) ?
আজই তওবা করে সব পাপগুলোকে মুছে শান্তিতে ঘুমাতে যাও। শয়তান তোমাকে “আগামীকাল” “আগামী মাস” “আগামী বছর” বলে ধোঁকা দিচ্ছে! কবরে না যাওয়া পর্যন্ত এই আগামীকাল কোনদিনও শেষ হবে না। যারা বলে আগামীকাল নামাজ পড়া শুরু করব তাদের এই জীবনে কখনোই হয়ত নামাজ হবে না! সে নিজেকেই নিজে প্রত্যেকটা দিন ধোঁকা দিচ্ছে..! কবরে পৌঁছে দিবে তোমাকে তোমার এই ধোঁকাবাজি..
তোমার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো তোমাকে সাবধান করেছিল –
“বিকাল হয়ে গেলে সকালের অপেক্ষা কারো না, আর সকাল হয়ে গেলে বিকালের অপেক্ষা করো না, সুস্থতাকে অসুস্থতার আগে গুরুত্ব দাও এবং মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে গুরুত্ব দাও।”
যেদিন আমি মারা যাই সেদিনও আমি ভেবেছিলাম পরদিন সকাল আমি বাঁচব, আমার এই হাদিসটা সত্যি জানা ছিল না!
তাও তুমি ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করতে চাও?
আরও কটা দিন সময় চাও বেহায়াপনা নিয়ে পড়ে থাকার জন্যে? তাহলে আমার গল্পটাই শুরু থেকে পড়ো।
নাহলে এই বডির মালিকের হুকুমই এই বডির উপর কায়েম হবে আজ বা কাল। আর তুমি সেই মজা আস্বাদন করবে, প্রস্তুত?
আরও পড়ুন…
Duas Of The Quran-কুরআনের সব দু’আ
আলহামদুলিল্লাহ! কুরআন শরীফের প্রায় সমস্ত দোয়াগুলি এক জায়গায় অর্থ সহ লিপিবদ্ধ করে দেয়া হলো। এ দোয়াগুলি নিজে মুখস্থ করুন এবং অপরকে পড়ার ও মুখস্থ করার সুযোগ করে দিন।

“হে আমাদের প্রভূ! তুমি আমাদের থেকে (সব দোয়া) কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি সবকিছু শুনতে পাও ও সব কিছু জানো। আর তুমি আমাদের তাওবাহ্ কবুল করো। অবশ্যই তুমি একমাত্র তাওবাহ্ কবুলকারী ও দয়াময়”।

“হে আমাদের প্রভু! তুমি দুনিয়া ও আখিরাতে আমাদেরকে কল্যাণ দান করো। আর দোজখের আগুন থেকে তুমি আমাদেরকে বাঁচাও”।

“হে আমাদের রব! আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দাও, আমাদের পা অটল রাখ এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে (জয়যুক্ত করার জন্য) সাহায্য করো”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমাদের ভুল ত্রুটি হয়, তবে তুমি আমাদের অপরাধী করো না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর যেমন গুরুভার অর্পন করেছিলে, আমাদের ওপর তেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করো না। যে ভার সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তা আমাদের ওপর আরোপ করো না। আমাদেরকে ক্ষমা করো, আমাদেরকে দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। তাই কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে (জয়যুক্ত করার জন্য) সাহায্য করো।

“হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ দেখানোর পর তুমি আমাদের অন্তরকে আর বাঁকা করে দিও না। এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান করো। তুমিই সব কিছুর দাতা।”

“হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি মানুষকে একদিন অবশ্যই একত্রিত করবে- এতে কোন সন্দেহ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেন না।”

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা অবশ্যই ঈমান এনেছি। অতএব, তুমি আমাদের পাপ ক্ষমা করে দাও। আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে পরিত্রাণ দাও”।

“হে প্রভু! আমাকে তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র সন্তান দান করো। নিশ্চয়ই তুমি সকল দোয়া শুনতে পাও”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি যা অবতরণ করেছ তার ওপর আমরা ঈমান এনেছি এবং রসূলের অনুসরণ করেছি। তাই আমাদের নাম শহীদদের নামের অন্তর্ভুক্ত করে দাও”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপ ক্ষমা করো। কাজে কর্মে আমাদের বাড়াবাড়ি মাফ করে দাও। আমাদের পদক্ষেপগুলো সুদৃঢ় করে দাও এবং কাফির সম্প্রদায়ের উপর আমাদেরকে সাহায্য করো।”

“হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এসব বৃথা সৃষ্টি করনি। তুমি অর্থহীন কাজ থেকে পবিত্র। তাই দোজখের আগুন থেকে তুমি আমাদেরকে রক্ষা করো।”

“হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি যদি কাউকে অন্যায় কাজের জন্য দোযখের আগুনে নিক্ষেপ কর, তাহলে নিশ্চয়ই সে লাঞ্ছিত হবে। আর সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।”

“হে আমাদের প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমরা এক আহবানকারীকে ঈমানের দিকে আহবান করতে শুনেছি যিনি বলছিলেন, তোমরা নিজ প্রতিপালকের ওপর ঈমান আন। তাতেই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের অপরাধগুলো ক্ষমা করো এবং আমাদেরকে পূণ্যবানদের সাথে মৃত্যু দান করো।”

“হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার রসূলগণের মাধ্যমে আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ, সে অনুযায়ী আমাদের ওপর রহম কর। আর কিয়ামতের দিন আমাদেরকে লাঞ্ছিত করোনা। নিশ্চয়ই তুমি অঙ্গীকারের ব্যতিক্রম কিছু করোনা।”

“হে আমাদের প্রতিপালক! জালেমের এই জনপদ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তোমার কাছ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক কর এবং তোমার কাছ থেকে আমাদের জন্য কোন সাহায্যকারী পাঠাও।”

“(তাঁরা দু’জন বললেন) হে আমাদের প্রভু! আমরা আমাদের নিজেদের উপর অত্যাচার করেছি। যদি তুমি আমাদেরকে ক্ষমা না কর ও আমাদের উপর দয়া না কর, তাহলে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব”।

“হে আমাদের রব! আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে যথাযথভাবে ফায়সালা করে দাও। আর তুমিই সবচেয়ে উত্তম ফায়সালাকারী”।

“হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের মনে ধৈর্য সৃষ্টি করে দাও এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখ। আর আমাদেরকে সাহায্য কর কাফের জাতির বিরুদ্ধে”।

“হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদেরকে কাফেরদের জন্য পরীক্ষার পাত্র করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে ক্ষমা কর। নিশ্চয়ই তুমি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”।

“হে আমার পালনকর্তা! আমার যা জানা নেই এমন কোন দরখাস্ত করা হতে আমি তোমার কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তুমি যদি আমাকে ক্ষমা না কর, দয়া না কর, তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হবো”।

“হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতাও দান করেছ এবং আমাকে বিভিন্ন তাৎপর্যসহ ব্যাখ্যা করার বিদ্যা শিখিয়ে দিয়েছ। হে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টা! তুমিইই আমার ইহকাল ও পরকালের অভিভাবক। আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যুদান কর এবং আমাকে স্বজনদের সাথে মিলিত কর।

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা যা গোপন করি এবং যা প্রকাশ করি তা নিশ্চয় তুমি জানো। আর পৃথিবী ও আকাশের কোন কিছুই আল্লাহর নিকট গোপন থাকে না”।

“হে আমার পালনকর্তা! আমাকে নামায কায়েমকারী কর এবং আমার সন্তানদের মধ্যে থেকেও। হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি কবুল কর আমাদের দোয়া। হে আমার প্রতিপালক! হিসাব গ্রহণের দিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং বিশ্বাসীগণকে ক্ষমা কর।”

“হে আমার রব? আমাকে প্রবেশ করাও উত্তমভাবে এবং বের কর উত্তমভাবে। আর তোমার পক্ষ থেকে আমাকে সাহায্যকারী শক্তি দান কর”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি নিজের তরফ থেকে আমাদেরকে করুণা দান কর এবং আমাদের কাজ-কর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা কর”।

“(আমি ঘোষণা করছি) পবিত্র তিনি, যিনি এদেরকে (যানবাহন) আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন এবং আমরা এদেরকে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আমরা অবশ্যই আমাদের পালনকর্তার দিকে ফিরে যাব”।

“হে আমার রব! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে তোমার কাছে সাহায্য চাই। আর হে আমার রব! আমার কাছে তাদের উপস্থিতি থেকে তোমার কাছে সাহায্য চাই”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান এনেছি, তুমি আমাদেরকে ক্ষমা ও দয়া কর। আর তুমিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি নিবৃত্ত কর। জাহান্নামের শাস্তি তো নিশ্চিতভাবে ধ্বংসাত্মক”।

“হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর”।

“হে আমার পালনকর্তা! আমাকে প্রজ্ঞা দান কর, আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর। আর আমাকে নেয়ামতসম্পন্ন উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর। এবং আমার পিতাকে ক্ষমা কর। সে তো পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এবং পূনরুত্থান দিবসে আমাকে লাঞ্ছিত করো না, যে দিবসে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি কোন উপকারে আসবে না। কিন্তু যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে সে লাঞ্ছিত হবেনা।

“হে আমার রব! আমাকে ও আমার পরিবার পরিজনকে এদের কুকর্ম থেকে মুক্তি দাও৷”

“হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি তুমি যে অনুগ্রহ করেছ তার জন্য এবং যাতে আমি তোমার পছন্দমত সৎকাজ করতে পারি। আর তুমি নিজ করুণায় আমাকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ দাসদের শ্রেণীভুক্ত করে নাও”।

“ওগো আমার প্রভু! আমি আমার উপর অত্যাচার করেছি। তাই আমাকে ক্ষমা করে দাও”।

“হে আমার প্রতিপালক! ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠির হাত থেকে বাঁচতে আমাকে সাহায্য কর”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী। অতএব যারা তওবা করে ও তোমার পথ অবলম্বন করে, তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা কর”।

“হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তাদেরকে স্থায়ী জান্নাতে প্রবেশশধিকার দান কর; যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাদেরকে দিয়েছ (এবং তাদের) পিতা-মাতা, পতি-পত্নী ও সন্তান সন্ততিদের মধ্যে (যারা) সৎকাজ করেছে তাদেরকেও (জান্নাত প্রবেশের অধিকার দাও)। নিশ্চয়ই তুমি পরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়”।
(নোটঃএখানে সূরাগুলো ক্রমান্বয়ে দেয়া আছে,সূরা বাকারা থেকে শুরু হয়েছে)
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
Related Posts
Leave a Reply Cancel reply
Categories
- advices
- Ahle Hadis
- Allah
- Amal
- Arabic Communication
- Arabic Grammar
- Arif Azad
- Bangladesh
- Biography
- Child care
- Country
- Death
- Dowry
- Dua
- Education
- Eid
- Family
- Fasting
- Fatwa
- Gazwatul Hind
- Hadith
- Hajj
- Halal or Haram
- Humble
- Husband & Wife
- IDCM
- Iman
- Interest
- Islamic Books
- Islamic Days
- Islamic Economi
- Islamic Education
- Islamic FAQ
- Islamic Future
- Islamic History
- Islamic Lectures
- Islamic Life
- Islamic Politics
- Islamic Rules
- islamic song
- islamic story
- Jihad
- Jinn
- let's learn arabic
- Magic
- Marriage
- Mosque
- Motivation
- Muhammad SM
- Muslims
- News
- Parenting
- Patriotism
- Pending
- Personal Development
- Poet
- Pornography
- Press Release
- Prophets
- Quran
- Quran and Science
- Quran Interpretation
- Qurbani
- Relations
- Rizq
- Ruqyah
- Sacrifice
- Sadaqah
- Safety
- Sahaba
- Salah
- Salat
- Sex
- Sin
- Tajweed
- Taqwa
- Tasawwuf
- Tawba
- Tawhid
- Veil
- Weed
- Zakat
Recent Posts
- ব্যাংকে রাখা ফিক্সড ডিপোজিটের উপর কি প্রতি বছর যাকাত আবশ্যক? – Zakat on Fixed Deposit – সমিতির টাকার ওপর জাকাত আসবে কি? March 25, 2023
- Symptoms of Bad and Good Death – খারাপ এবং ভালো মৃত্যুর আলামত সমূহ March 20, 2023
- Taweez in Islam – ইসলামে তাবিজ জায়েজ হলেও কেন তাবিজ থেকে দূরে থাকা উত্তম? March 20, 2023
- Dua to be rich – ধনী হওয়ার দোয়া/আমল- আজ থেকেই শুরু হোক ধনী হওয়ার পথচলা March 7, 2023
- Islam has never encouraged polygamy – ইসলাম একাধিক বিয়েকে কখনো উৎসাহিত করে নি! January 9, 2023