Shab e Barat বা লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বানের দলিল

 

 

Shab e Barat

 

শবে বরাত বা লাইলাতুন নিসফে মিন শাবানের আমল!

 
শবে বরাত বা লাইলাতুন নিসফে মিন শাবানের হাদিস সমূহ থেকে উল্লেখযোগ্য তিনটি আমল পাওয়া যায়।
 
  • ১/ কবরস্থানে গিয়ে মৃতদের জন্য দোয়া করা। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে দোয়া করেছেন। তবে যেহেতু রাসূলের পুরো জীবনে একবারের আমল পাওয়া যায়, তাই কেউ পুরো জীবনে ইত্তেবায়ে সুন্নতের আসায় কোন এক শবে বরাতে এই আমল করলেও সুন্নতের অনুসরণ হয়ে যাবে হবে।
  • ২/ এই রাতে নফল নামাজ, জিকির-আজকার তেলাওয়াত থেকে যা খুশি আমল করার ইহতেমাম করা। তবে নফল আমলের ক্ষেত্রে একাকী করা অধিক উত্তম নির্দিষ্ট কাইফিয়াত বা নফল নামাজের নির্দিষ্ট রাকাত অথবা নির্দিষ্ট সূরাকে লাজেম করা বা নামাজের জামাত করা বৈধ নয়।
  • ৩/ দিনে রোযা রাখা। এসম্পর্কেতো হযরত আলী রা. এর হাদিস রয়েছে। আবার রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও প্রত্যেক মাসে আইয়ামে বীযের রোযা রাখতেন, তাই নফল রোযা রাখা অনেক বড় সাওয়াবের কাজ।
 
তবে এই শবে বরাতকে ঘিরে কিছু খোরাফাত ও বেদআত প্রবেশ করেছে যা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। বিশেষ করে শিয়ারা মনে করে এই রাতে তাদের ইমাম জন্মগ্রহণ করে, তাই তারা খাবারদাবার, আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে। তাই এসবে গুরুত্ব দেয়া বা তাদের অনুসরণ করা মোটেও কাম্য নয়।

 

প্রজন্ম পরম্পরায় শবেবরাত / Shab e Barat

 
ইমাম শাফিয়ি (২০৪ হি.) রহ. বলেন,
‘পাঁচ রাতে দুয়া কবুলের ব্যাপারে আমাদের কাছে বর্ণনা পৌঁছেছে। জুময়ার রাত, ইদুল ফিতর ও ইদুল আযহার রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, চৌদ্দ শাবানের দিবাগত রাত।’—কিতাবুল উম্ম, ১/২৬৪
 
ইবনুল আব্বাস মাক্কি (২৭২ হি.) রহ. বলেন,
‘নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মক্কাবাসী সর্বসাধারণ শবেবরাতে মসজিদে যেতেন, সালাত আদায় করতেন, বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করতেন, সারারাত জেগে তিলাওয়াত করতেন, কুরআন খতম করতেন।’—আখবারু মাক্কাহ
 
শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়াহ (৭২৮ হি.) রহ. বলেন,
‘শবেবরাতের ফযিলত রয়েছে। সালাফরা এ রাতে নফল সালাত আদায় করতেন।’—ফাতাওয়া আলকুবরা
 
মুসা আলহাজ্জাওয়ি (৯৬০ হি.) রহ. বলেন,
‘শবেবরাতের ফযিলত রয়েছে। সালাফরা এ রাতে নফল সালাত আদায় করতেন।’—আলইকনা, ১/১৫৪
 
ইবনু নুজাইম (৯৭০ হি.) রহ. বলেন,
‘রমাদানের শেষ দশরাত, দুই ইদের রাত, যুলহিজ্জার দশরাত এবং শবেবরাতে রাত্রিজাগরণ করা মুসতাহাব। হাদিসে এমনটাই বর্ণিত হয়েছে।’—বাহরুর রায়িক
 
আল্লামা মুবারকপুরী (১৩৫৩ হি.) রহ. বলেন,
‘জেনে রাখুন, শবেবরাতের ফযিলতের ব্যাপারে বহুসংখ্যক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সামষ্টিকভাবে এগুলো প্রমাণ করছে যে, ব্যাপারটা ভিত্তিহীন নয়।’—তুহফাতুল আহওয়াযি
 
আনওয়ার শাহ কাশ্মিরি (১৩৫৩ হি.) রহ. বলেন,
‘এই রাতকে লাইলাতুল বারায়াত বলা হয়। আর এ রাতের ফযিলত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।’—আরফুশ শাযি, ২/১৭২
 
শাইখ সালিহ আলউসাইমিন (১৪২১ হি.) রহ. বলেন,
‘শবেবরাতের ফযিলতের ব্যাপারে বেশ কিছু হাদিস বর্ণিত হয়েছে, সালাফরাও এ রাতে কিয়ামুল লাইল আদায় করতেন।’—মাজমুয়ু ফাতাওয়া, ৭/১৫৬
.
.
শাবানের মধ্যরজনী (শবেবরাত) আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। অতিবিশুদ্ধতা দেখাতে গিয়ে মুবাহ, মুস্তাহাবগুলো ওঠিয়ে দেয়ার দরকার নাই। এগুলোর জায়গাটা অন্যকিছু (জাহিলিয়াত/পশ্চিমা অসভ্যতা) ঠিকই দখল করে নেবে। মদ্যপ লোকটা মসজিদে আসুক, জুয়াড়িটাও আসুক, চোখের পানি ছেড়ে কান্না করুক। অনুশোচনার ঢেউ ওঠুক হারাম/ফাহিশায় লিপ্ত যুবকটার বুকেও।

শুধু ভুলগুলো সংশোধন করে দিন, উত্তম নসিহতের মাধ্যমে। তার হৃদয়ের আবেগটাকে অবমূল্যায়ন করবেন না, তার হৃদয় চিড়ে বেরিয়ে আসা অশ্রুফোঁটাগুলোকে ঠুনকো ভাববেন না। শুধু বলে দিন—
 
# শিরক এবং বিদ্বেষ থেকে পবিত্র হতে হবে। পূর্ণ তাওহিদের ওপর অটল থাকতে হবে। ইসলামকে একমাত্র দীন হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
# পুরা শাবান মাসেই বেশি বেশি নফল নামায, রোযা, দান-সাদাকাহ, তিলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, যিকির-আযকার করতে হবে।
# এ রাতে ভাগ্যবন্টন হয়—এ বিশ্বাস রাখা যাবে না। ভাগ্যবন্টন হয় শবেকদরে।
# নফল নামাযের নিয়তে ‘শবে বরাতের নামায পড়তেছি’ উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। সাধারণভাবে নফলের নিয়ত করলেই হবে।
# বেশি রাতজাগার প্রয়োজন নেই, বরং ফজর জামায়াতে পড়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
 

Shab e Barat / লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বানঃ শরীয়তের দলিল ভিত্তিক প্রমাণাদিঃ-

 বিশেষ কোন গোষ্ঠী অপপ্রচার চালায় যে, লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান বা শবে বরাত বলে হাদিসে কিছু নেই, এটা স্রেফ একটা বিদয়াত। নিম্নে আমরা এর পক্ষে দালিলিক প্রমাণাদি উপস্থাপন করব ইনশাআল্লাহ।

 

Shab e Barat / শবে বরাত সম্পর্কিত হাদীস ও সনদঃ

১) আয়িশা ছিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আল্লাহর হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে কোন এক রাত্রিতে রাত যাপন করছিলাম। এক সময় উনাকে বিছানায় না পেয়ে আমি মনে করলাম যে, তিনি হয়ত অন্য কোন আহলিয়া রাদ্বিয়ালাহু আনহা-এর হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর আমি তালাশ করে উনাকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেলাম। সেখানে তিনি উম্মতের জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। এ অবস্থা দেখে আমি স্বীয় হুজরা শরীফে ফিরে এলে তিনিও ফিরে এলেন এবং বললেনঃ আপনি কি মনে করেন আল্লাহর হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার সাথে আমানতের খিয়ানত করেছেন? আমি বললামঃ ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি ধারণা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো আপনার অন্য কোন আহলিয়ার হুজরা শরীফে তাশরীফ নিয়েছেন। অতঃপর হুযুর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর তিনি বনী কালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে তার চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন। (সুনানে তিরমিযি: ২/১২১, ১২২, মুসনাদে আহমাদ: ৬/২৩৮, ইবনে মাযাহ, রযীন, মিশকাত শরীফ)  সনদের মানঃ ইবন তাইমিইয়্যার ফাওজুল ক্বাদীর, ২য় খণ্ড, পৃ ৩১৭ ২) মধ্য শাবানের রাতে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিলোকের দিকে দৃষ্টি দান করেন এবং সবাইকে মাফ করে দেন, কেবল মুশরিক ব্যক্তি ছাড়া ও যার মধ্যে ঘৃণা বিদ্বেষ রয়েছে তাকে ছাড়া। বর্ণনায়, মুয়ায বিন জাবাল।

(a) আল-মুনযিরী তাঁর আত-তারগীব ওয়াত-তারহীবে (২/১৩২) বলেন, “সহিস হাদিস।”

(b) আহলে হাদিস ইমাম আলবানী বলেন, “হাদিসটি সহিহ।” (আস-সিলসিলাহ আস-সাহীহাহ: ৩/১৩৫)

৩) আল্লাহ তা’আলা মধ্য শাবানের রাতে তাঁর বান্দাদের দিকে দৃষ্টিপাত করেন। তিনি বিশ্বাসীদেরকে মাফ করেন ও অবিশ্বাসীদের ক্ষমা স্থগিত করেন এবং হিংসা-বিদ্বেষীদেরকে তাদের নিজ অবস্থায় রেখে দেন (সেদিনের জন্য যখন তারা সংশোধিত হয়ে তাঁকে ডাকবে)। বর্ণনায় আবু সা’বাহ আল খাশানী (রা.)। (a) আল-মুনযিরী বলেন, ‘হাদিসটির সূত্র সহীহ বা হাসান বা এই দু’য়ের কাছাকাছি।” (আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব, ৩/৩৯২)

Shab e Barat / শবে বরাত সম্পর্কিত আরো হাদিসঃ

১) আয়িশা ছিদ্দীক্বা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত। একদা আল্লাহর হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়িশা ছিদ্দীক্বা, আপনি কি জানেন, লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাতে কি সংঘটিত হয়? তিনি বললেন, হে আল্লাহর হাবীব, এ রাত্রিতে কি কি সংঘটিত হয়? আল্লাহর হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ রাতে আগামী এক বছরে কতজন সন্তান জম্মগ্রহণ করবে এবং কতজন লোক মৃত্যূবরণ করবে তা লিপিবদ্ধ করা হয়। আর এ রাতে বান্দার (এক বছরের) আমলসমূহ আল্লাহর নিকট পেশ করা হয় এবং এ রাতে বান্দার (এক বছরের) রিযিকের ফায়সালা হয়। (বাইহাক্বী, ইবনে মাজাহ্, মিশকাত শরীফ)

২) আবূ বাকর (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহ তা’আলা মধ্য শাবানের রাতে (দুনিয়ার আসমানে) আসেন এবং সকলকে মাফ করে দেন কেবল সেই ব্যক্তি ছাড়া যার হৃদয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ রয়েছে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরিক সাব্যস্ত করে (অর্থাৎ মুশরিক)।  আলবানী বলেন, “হাদিসটি অন্য সূত্রে সহীহ।” (তাখরীজ মিশকাত আল মাসাবীহ, ক্রম ১২৫১ , ইবন হাজর আসক্বালানী তাঁর আল-আমাল আল-মুতলাক্বাহ গ্রন্থ, ক্রম ১২২)

৩) আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ননা করেন, আল্লাহর হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাত উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাতে সজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনের বেলায় রোযা রাখবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উক্ত রাতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষণা করতে থাকেন, কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি ক্ষমা করে দিব। কোন রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোন মুছিবতগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিব। এভাবে সুবহে ছাদিক পর্যন্ত ঘোষাণা করতে থাকেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস: ১৩৮৪)

৪) আবু মুসা আশয়ারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ননা করেন, আল্লাহর হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ শা’বান মাসের ১৫ তারিখ রাত্রিতে ঘোষণা করেন যে, উনার সমস্ত মাখলুকাতকে ক্ষমা করে দিবেন। শুধু মুশরিক ও হিংসা-বিদ্বেষকারী ব্যতীত। (ইবনে মাযাহ্, আহমদ, মিশকাত শরীফ)

 

Shab e Barat / শবে বরাত ও সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)

শবে বরাতের সাথে সংশ্লিষ্ট হাদীছসমূহের বর্ণনাকারীদের মধ্যে অনেক বড় বড় (এক ডজনের মত) সাহাবা রয়েছেন যাদের কয়েকজনের নাম নিম্নে প্রদত্ত হলোঃ

১) আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)

২) আলী (রাঃ)

৩) আয়েশা (রাঃ)

৪) আবু হুরায়রা (রাঃ)

৫) আব্দুল্লাহ ইবনে আ’মর (রাঃ)

৬) আবু মুসা আশআরী (রাঃ)

৭) আউফ ইবনু মালিক (রাঃ)

৮) মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ)

৯) আবু ছালাবাহ আল খুসানী (রাঃ)

১০) কাছীর ইবনে মুররা আল হাজরামী (রাঃ)

 

Shab e Barat / শবে বরাত ও তাবেয়ীঃ

শামের বিশিষ্ট তাবেয়ী যেমনঃ

১) খালেদ ইবনে মা’দান (রহঃ)

২) ইমাম মাকহূল (রহঃ)

৩) লোকমান ইবনে আমের (রহঃ) প্রমূখ উচ্চ মর্যাদাশীল তাবেয়ীগণ শা’বানের পনেরতম রজনীকে অত্যন্ত মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখতেন এবং এতে খুব বেশী বেশী ইবাদত ও বন্দেগীতে মগ্ন থাকতেন বলে গ্রহণযোগ্য মত পাওয়া যায়।

 

Shab e Barat / শবে বরাত ও অন্যান্য হাদীছগ্রন্থঃ

সিহাহ সিত্তার বাইরেও অনেক ইমামগণ তাদের জগতবিখ্যাত বড় বড় হাদীসগ্রন্থে শবে বরাত ও তার ফজীলত নিয়ে হাদীস বর্ণনা করেছেন। যেমনঃ

১) ইমাম তাবরানী রচিত “আল কাবীর” এবং “আল আওসাত”

২) ইমাম ইবনে হিব্বান রচিত “সহীহ ইবনে হিব্বান”

৩) ইমাম বায়হাকী রচিত “শুআবুল ঈমান”

৪) হাফেয আবু নুআইম রচিত “হিলয়া”

৫) হাফেয হায়ছামী রচিত “মাজমাউয যাওয়ায়েদ”

৬) ইমাম বাযযার তাঁর “মুসনাদ”

৭) হাফিয যকী উদ্দীন আল-মুনযিরী রচিত “আততারগীব ওয়াত-তারহীব”

৮) ইমাম আহমদ তাঁর “মুসনাদ”

৯) মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা

১০) হাফেয আব্দুর রাজ্জাক এর “মুসান্নাফ”

Shab e Barat / শবে বরাত ও মুহাদ্দিসীনে কেরামঃ

শবে বরাতের ফজীলত সম্পর্কিত হাদীসগুলোকে মুহাদ্দিসীনে কেরাম বরাবরই সনদসহ বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছেন। এ রাতে সাহাবারা, সলফে সালেহীনরা ইবাদতে মগ্ন থাকতেন বলে তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন। এসব মুহাদ্দিসীনদের মধ্যে অন্যতম হলেনঃ

১) হাফিয নুরুদ্দীন আলী ইবনে আবু বকর আল হাইসামী (রহঃ)

২) হাফিয ইবনে রজব আল হাম্বলী (রহঃ)

৩) ইবনু হিব্বান (রহঃ)

৪) আদনান আবদুর রহমান (রহঃ)

৫) ইমাম বায়হাকী (রহঃ)

৬) হাফিয যকী উদ্দীন আল মুনযিরী (রহঃ)

৭) ইমাম বাযযার (রহঃ)

৮) ইমাম উকায়লী (রহঃ)

৯) ইমাম তিরমিযী (রহঃ)

১০) হামযা আহমাদ আয যায়্যান (রহঃ)

১১) ইমাম যুরকানী (রহঃ)

১২) আল্লামা ইরাকী (রহঃ) প্রমুখ।

 

Shab e Barat / শবে বরাত ও অন্যান্য বুজুর্গানে দ্বীনঃ

উপরে উল্লেখিত সাহাবা, তাবেয়ীন, মুফাসসিরে কেরাম, মুহাদ্দিসীন ছাড়াও অনেক বড় বড় বুজুর্গানে দ্বীনও শবে বরাতের ফজীলত স্বীকার করেছেন এবং এ দিনে অনেক নফল ইবাদত করেছেন বলে বর্ণনায় পাওয়া যায়। যেমনঃ

১) উমর বিন আবদুল আযীয (রহঃ)

২) ইমাম আল-শাফী (রহঃ)

৩) ইমাম আল আওযায়ী (রহঃ)

৪) আতা ইবনে ইয়াসার (রহঃ)

৫) হাফিয যয়নুদ্দীন আল ইরাক্বী (রহঃ)

৬) আল্লামা ইবনুল হাজ্ব আল-মক্কী (রহঃ)

৭) ইমাম সুয়ুতী (রহঃ)

৮) ফিক্বহে হানাফীর ইমাম মুহাম্মদ ইবনু আলী আল হাসফাকী (রহঃ)

৯) ইমাম নববী (রহঃ)

১০) হাম্বলী মাযহাবের সুপ্রসিদ্ধ ফক্বীহ আল্লামা শায়খ মানসূর ইবনু ইউনুস (রহঃ)

১১) আল্লামা ইসহাক ইবনুল মুফলিহ (রহঃ)

১২) আল্লামা ইবনু নুজাইম হানাফী (রহঃ)

১৩) আল্লামা হাসান ইবনু আম্মার ইবনু আলী আশ-শারাম্বলালী আল হানাফী (রহঃ)

১৪) আল্লামা আব্দুল হাই লখনভী (রহঃ)

১৫) আল্লামা আবুল ফারাজ ইবনুল জাওযী (রহঃ)

১৬) শায়খ আলা উদ্দীন আবুল হাসান আল-হাম্বলী (রহঃ)

১৭) মোল্লা আলী কারী (রহঃ)

১৮) ইমাম গাযালী (রহঃ)

১৯) আব্দুল ক্বাদের জ্বীলানী (রহঃ)

২০) ইমাম মুহাম্মদ আল জাযারী (রহঃ)

২১) ইসলামুল হক্ব মুযাহেরী (রহঃ)

২২) শায়খুল আদব আল্লামা এযায আলী (রহঃ)

২৩) ইমাম আহমাদ (রহঃ)

২৪) আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ)

২৫) কারামত আলী জৌনপুরী (রহঃ)

২৬) হাফিয মুহাম্মদ আব্দুর রহমান ইবনু আব্দির রহিম আল মুবারকপূরী (রহঃ)

২৭) মুহাদ্দিছুল আসর আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী (রহঃ)

২৮) আশরাফ আলী থানভী (রহঃ)

২৯) মুফতী আজীজুর রহমান সাহেব (রহঃ)

৩০) মুফতী মোহাম্মদ শফী (রহঃ)

৩১) আল্লামা মুফতী মুহাম্মদ তাকী উছমানী (দাঃবাঃ) প্রমুখ সহ আরও অনেক বুজুর্গানে দ্বীন।

 

Shab e Barat / শবে বরাত ও কিতাবঃ

মুসলিম বিশ্বের মহামনীষীগণ কুরআন করীমের নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ, হাদীছের ব্যাখ্যাগ্রন্থ এবং প্রায় বড় বড় আলেম নিজেদের রচিত কিতাবাদীতে কেউ সংক্ষেপিত আকারে কেউবা সবিস্তারে শবে বরাতের ফজীলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করেছেন। তাঁরা যেমন শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয় দিকসমূহ আপন আপন গ্রন্থে লেখেছেন তেমনি বাস্তব জীবনে রাতটিকে কিভাবে চর্চায় আনা হবে তার নমুনা দেখিয়ে গেছেন। যেমনঃ

ক) পাঁচশত হিজরীর ইমাম গাযালী (রহঃ) রচিত এহইয়াউ উলুমিদ্দীন (الدين علوم احياء)

খ) ৬০০ হিজরীর প্রারম্ভে বড়পীর আব্দুল ক্বাদের জ্বীলানী (রহঃ) এর গুনিয়াতুত তালেবীন (الطالبين غنية)

গ) ৭০০ হিজরীর ইমাম মুহাম্মদ আল জাযারী (রহঃ) এর আদ-দোয়াউ ওয়াস সালাত ফী যওইল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ (والسنة القرآن ضوء فى والصلوة الدعاء)

ঘ) ৭০০ হিজরীর ইমাম আবু জাকারিয়া ইবনে ইয়াহইয়া ইবনে শারফুদ্দীন নববী (রহঃ) এর রিয়াজুস সালেহীন (الصالحين رياض)

ঙ) এগারশত হিজরীর শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) এর মা ছাবাতা বিস সিন্নাহ (بالسنة ثبت ما) চ) তেরশত হিজরীর মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (রহঃ) রচিত মিফতাহুল জান্নাহ (الجنة مفتاح)

ছ) চৌদ্দশত হিজরীর আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) এর ওয়াজ ও তাবলীগ (وتبليغ وعظ) জ) মুফতী আজম মুফতী মোহাম্মদ শফী (রহঃ) এর হাকীকতে শবেবরাত (براءت شب حقيقت)

ঝ) আল্লামা মুফতী মুহাম্মদ তাকী উছমানীর (দাঃবাঃ) শবে বরাত (براءت شب) ঞ) মুফতী মীযানুর রহমান সাঈদ এর কুরআন-হাদীছের আলোকে শবে বরাত (গবেষণামূলক একটি অনবদ্য রচনা) সহ অসংখ্য মূল্যবান গ্রন্থে লাইলাতুল বারাআত এবং মাহে শাবান প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শবে বরাতের তাৎপর্য, মাহাত্ম ও মর্যাদার উপর সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করে।

 

Shab e Barat / শবে বরাতের রাতে যে সকল লোকের আমল কবুল হয় নাঃ

এমন লোকের সংখ্যা প্রায় এগার সেগুলি হলঃ

এক) মুশরিক অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে যে কোন প্রকারের শিরকে লিপ্ত হয়।

দুই) যে ব্যক্তি কারো প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী।

তিন) আত্মহত্যার ইচ্ছা পোষণকারী।

চার) যে ব্যক্তি অপরের ভাল দেখতে পারে না অর্থাৎ পরশ্রীকাতর।

পাঁচ) যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে, চাই তা নিকটতম আত্মীয় হোক বা দূরবর্তী আত্মীয় হোক।

ছয়) যে ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হয়।

সাত) নেশাকারী।

আট) যে ব্যক্তি গণকগীরি করে বা গণকের কাছে গমণ করে।

নয়) যে ব্যক্তি জুয়া খেলে।

দশ) যে ব্যক্তি মাতা-পিতার অবাধ্য হয়।

এগার) টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী পুরুষ ইত্যাদি ব্যক্তির দুআ তওবা না করা পর্যন্ত কবুল হয় না।

 তাই শবে বরাতের পূর্ণ ফযীলত ও শবে বরাতের রাতে দুআ কবুল হওয়ার জন্য উল্লেখিত কবীরা গুনাহসমূহ থেকে খাঁটি দিলে তওবা করা উচিত। অন্যথায় সারারাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করেও কোন লাভের আশা করা যায় না।

 

Shab e Barat / শবে বরাতের আমল বা করনীয়ঃ

এক) এই রাতে কবর যিয়ারত করা যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই দলবদ্ধ ও আড়ম্বরপূর্ণ না হয়ে একাকী হওয়া উচিত।

দুই) শবে বরাতের রাত্রিতে নামায, দুআ, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, দরূদ শরীফ ইত্যাদিতে লিপ্ত থাকা ভাল।

তিন) এই রাত্রিতে দীর্ঘ সিজদায় রত হওয়া উচিত।

চার) শবে বরাতের পরের দিন অর্থাৎ ১৫ই শাবান রোযা রাখা।

 

Shab e Barat / শবে বরাত সম্পর্কিত প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস ও আমলঃ

১) এ রাতে কুরআন মাজীদ লাওহে মাহফুজ হতে প্রথম আকাশে নাযিল করা হয়েছে।

২) এ রাতে গোসল করাকে সওয়াবের কাজ মনে করা ।

৩) মৃত ব্যক্তিদের রূহ এ রাতে দুনিয়ায় তাদের সাবেক গৃহে আসে।

৪) এ রাতে হালুয়া রুটি তৈরী করে নিজেরা খায় ও অন্যকে দেয়া।

৫) বাড়ীতে বাড়ীতে এমনকি মসজিদে মসজিদেও অযথা লোক জমায়েত, আড্ডাবাজি ও ঘোরাঘুরি করা।

৬) আতশবাযী করা, সরকারী-বেসরকারী ভবনে আলোক সজ্জা করা। কবরস্থানগুলো আগরবাতি ও মোমবাতি দিয়ে সজ্জিত করা।

৭) লোকজন দলে দলে কবরস্থানে যাওয়া।

 

Shab e Barat সম্পর্কে শেষ কথাঃ

আল্লাহ এই রাতে যদি দুনিয়ার আকাশে আসেন, যদি তিনি তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন, যদি অসংখ্য পাপীতাপী লোক আল্লাহর কৃপা লাভ করেন, যদি তারা মুক্তচিত্তে পুণ্যপথে অগ্রসর হন, তবে কোন যুক্তিতে বাধা আসবে? কোন বিষয় নিয়ে প্যাঁচাপ্যাঁচি করতে গেলে জট কেবল বাড়তেই থাকবে। জট বাঁধাতে ইচ্ছে করলে অনেক বিষয়ে ‘সহীহ হাদিস’ টেনেও বাঁধানো যেতে পারে। ঝামেলা সৃষ্টি করা যেতে পারে। হাদিস না মানার অভিযোগ আনা যেতে পারে।

 মনে রাখা দরকার, যেখানে বিদআতের স্থান নেই সেখানে বিদআত আবিষ্কার করা ঠিক নয়। মধ্য শাবানের রাতে যদি কেউ বিদআত করে তবে সেই বিদআতের বিপক্ষেই কথা বলা উচিৎ, সেই দুষ্কর্ম দূর করা করা উচিৎ। এই রাতে নামাজ পড়া, কোরআন পড়া ও জিকির আযকার করা এসব ঠিক আছে। কিন্তু যারা রাসূলের তরিকার বাইরে গিয়ে নানান গৎবাঁধা প্রথা তৈরি করে তা থেকে মানুষকে সতর্ক করা দরকার। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে হক্ব বুঝে সঠিকভাবে ইবাদত করার তাওফিক দান করেন আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

শবে বরাতের সমর্থনে ২২ সহিহ হাদীস নিম্নে দেওয়া হলো।

শবে বরাত সমর্থনে ২২ টি সহিহ আছে, যারা অস্বীকার করে তাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন তারপরও কি মেনে নিবেন না??? কোনো মুসসলমান কি সহিহ হাদিস অস্বীকার করতে পারে??? না কখনোও না। ________________________________

 

(১) উম্মুল মুমীনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তুমি কি এ রাত তথা শাবানের ১৫তম রজনী সম্পর্কে কিছু জান? তিনি আরজ করলেন এ রাতে কি রয়েছে? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এ রাতে যে সকল বনী আদম জন্মগ্রহন করবে তাদের নাম চূড়ান্ত করা হবে আর যে সকল বনী আদম মৃত্যুবরন করবে তাদের নামও লিপিবদ্ধ করা হবে। এ রাতে তদের পুরো বছরের আমলসমূহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে পেশ করা হবে আর এ রাতে তাদের রিজিক/জিবিকা নির্ধারণ করা হবে। অতপর তিনি আরজ করলেন, নিশ্চই আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত কেও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চই আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত কেও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা তিনি এ বাক্য তিনবার বলেন। অতপর তিনি আরজ করলেন, আপনিও হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত মুবারক মাথা মুবারকের উপর রেখে ইরশাদ করেন, নিশ্চই আমি আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করব। এ বাক্য তিনি তিনবার ইরশাদ করেন। বায়হাক্বী শরীফ-দাওয়াতে কবীর হাদীস নং-৫৩০; মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃঃ হাদীস নং-১৩০৫

 

(২) উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেনন, একরাতে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে ঘরে পেলামনা বা তাঁর খোঁজে বের হলাম। তখন দেখলাম তিনি জান্নাতুল বাক্বী কবরস্থানে আসমানেকে মাথা মুবারক উত্তোলন করে অবস্থান করছেন। আমাকে সেখানে দেখে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন- হে আয়েশা! তুমি কি এ ভয় করছ যে, আল্লাহ তাঁর রসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তোমার প্রতি অবিচার করবে? তিনি আরজ করলেন আপনি বলছেন, এমন কিছু আসলে আমার মনে নেই বরং; আমি ধারণা করেছি যে, আপনি আপনার কোন স্ত্রীর হুজরায় তাশরীফ নিয়েছেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা শা’বানের পনেরতম রাতে প্রথম আসমানে তাশরীফ আনেন। অতঃপর বনী ক্বলব এর মেষগুলোর লোম এর সংখ্যার চেয়েও অধিক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। ইবনে মাজা শরীফ,হাদীস নং-১৩৮৯; জামে আত তিরমিযি-৭৩৯; মুসনাদে আ’ব্দ বিন হুমায়দ-১৫০৯; মুসান্নাফে আবী শায়বাহ-২৯৮৫৮; মুসনাদে আহমদ-২৬০১৮,২৬০৬০; বায়হাক্বী ফাজায়িলুল আওকাত-২৮; শো’আবুল ঈমান-৩৫৪৩,৩৫৪৪,৩৫৪৫; আন নুযুল দারে ক্বুতনী-৯০; বগভী শরহুস সুন্নাহ-৯৯২; সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরদুখান-৭:৪০২; তাফসীরে রূহুল মা’আনী, সুরা দুখান ১৮:৪২৩/১৩:১১০; তাফসীরে কাশশাফ, সুরা দুখান, ৪:২৭০; তাফসীরে কবীর, সুরা দুখান ২৭:৬৫৩

 

(৩) হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রাদ্বিল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,যখন শাবানের পনেরতম রাত হয়, তখন তোমরা রাতে নামাজ পড় এবং রোজা রাখ। কেননা ঐ দিন সূর্যাস্তের সময় আল্লাহ তা’আলা প্রথম আসমানে তাশরীফ এনে বান্দাদের উদ্দেশ্যে বলেন- ক্ষমা প্রার্থনাকারী কেও আছ, আমি তাকে ক্ষমা করব, রিজিক আন্বেষণকারী কেও আছ, আমি তাকে রিজিক দিব, আসুস্থ কেও আছ আমি তাকে সুস্থতা দান করব, এভাবে অন্যান্য বিষয়েও বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত। ইবনে মাজাহ ,হাদীস নং-১৩৮৮; ফাকেহী আখবারে মক্কা-১৮৩৭,৩:৮৪; বায়হাক্বী ফাজায়িলুল আওকাত-২৪; শো’আবুল ঈমান-৩৫৪২; মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃঃ, হাদীস নং-১৩০৮; কানযুল উম্মাল-৩৫১৭৭; তাফসীরে রূহুল মা’আনী, সুরা দুখান, ১৮:৪২৪/১৩:১১০; তাফসীরে ক্বুরতুবী, সুরা দুখান ১৬:১২৭

 

(৪) হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন- আল্লাহ তায়ালা শাবানের পনেরতম রাতে স্বীয় সৃষ্টির প্রতি রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুশরিক, হিংসুক ব্যতীরেকে সবাইকে ক্ষমা করেছেন। তাবরানী মু’জামুল আউসাত হাদীস নং-৬৭৭৬; মু’জামুল কবীর-২০:১০৮,২১৫, মুসনাদে শামেয়ীন-২০৩,২০৫,৩৫৭০; ইবনে আসেম আস সুন্নাহ-৫১২; সহীহ ইবনে হিব্বান- ৫৬৬৫; বায়হাক্বী ফাজায়িলুল আওকাত-২২; শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫২, ৬২০৪; দারে ক্বুতনী আন নুযুল-৭৭; হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ-১২৯৬০; আলবানী সহীহ আত তারগীব ওয়াত তাহরিব-১০২৬,২৭৬৭; সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩, কানযুল উম্মাল-৩৫১৮০

 

৫) হযরত আবু মুসা আশয়ারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বরনিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন- নিশ্চই আল্লাহ তা’আলা শাবানের পনেরতম রাতে সৃষ্টির প্রতি কৃপা দৃষ্টি দেন এবং সকলকে ক্ষমা করেন, মুশরিক এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীরেকে। ইবনে মাজা শরীফ হাদীস নং-১৩৯০; ইবনে আসেম আস সুন্নাহ-৫১০; বায়হাক্বী ফাজায়িলুল আওকাত-২৯; দারে ক্বুতনী আন নুযুল-৯৪; কানযুল উম্মাল-৩৫১৭৫; আলবানী সহীহুল জামে-১৮১৯ হাদীসটি হাসান/ সহীহ লিগাইরিহি

 

(৬) হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,যখন পনেরই শাবানের রাত হয়, তখন আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে তশরীফ আনেন এবং সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, মুশরিক ও অপর ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত। মুসনাদে বাযযার ১:২০৬, হাদীস নং-৮০; ইবনে আসেম আস সুন্নাহ-৫০৯; দারে ক্বুতনী আন নুযুল-৭৫,৭৬; ইবনে খুযাইমাহ আত তাওহীদ-৪৮; আলী মুরুযী মুসনাদে আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)-১০৪; আবু নুয়াইম তারিখে ইস্পাহান-২:২; হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ-১২৯৫৭; সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩

 

(৭) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- আল্লাহ তায়ালা শ’বানের পনেরতম রাতে সিদ্ধান্তসমুহ চুড়ান্ত করেন এবং শবে ক্বদরে তা বাস্তবায়নকারী ফেরেশতাদের সোপর্দ করেন। তাফসীরে খাজিন ৪র্থ খণ্ড,পৃষ্ঠাঃ১১২ /১১৬; তাফসীরে বগভী আল ইহিয়ায়ুত তুরাস, ৪:১৭৪, সুরা দুখান; তাফসীরে ক্বুরতুবী, ১৬:১২৭, সুরা দুখান; ইবনে আ’দিল আল লুবাব ফি উলুমিল কিতাব-১৭:৩১১

 

(৮) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন এমন পাঁচটি রাত আছে যে রাতগুলোয় দু’আ ফেরত হয়না। ওইগুলো হল- জুমু’আর রাত, রজব মাসের প্রথম রাত, শ’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত এবং দুই ঈদের রাত অর্থাৎ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, কিতাবুস সিয়াম হাদীস নং-৭৯২৭; বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান-৩৪৪০; ফাজায়িলুল আওকাত-১৪৯

 

(৯) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে স্বীয় মাখলুকের প্রতি রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। অতঃপর দু শ্রেণীর বান্দা ব্যতীত সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। তারা হল মুসলমান ভাইয়ের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারী এবং অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যাকারী। মুসনাদে আহমদ-৬৬৪২; আত তাগরীব; হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ-১২৯৬১; তাফসীরে রূহুল মা’আনী, সুরা দুখান, ১৮:৪২৩/১৩:১১০

 

(১০) হযরত কাসীর বিন মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- শাবানের মধ্য রাত্রিতে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা মুশরিক ও কলহকারী ব্যতীত সকল দুনিয়াবাসীদের ক্ষমা করে দেন। বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫০; আলবানী সহীহ আত তারগীব ওয়াত তাহরিব-২৭৭০

 

(১১) হযরত কাসীর বিন মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- শাবানের মধ্য রাত্রিতে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুশরিক ও কলহকারী ব্যতীত সকল ক্ষমাপ্রার্থী দুনিয়াবাসীদের ক্ষমা করে দেন। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, কিতাবুস সাওম-৭৯২৩; মুসান্নাফে আবী শায়বাহ-২৯৮৫৯; আন নুযুল দারে ক্বুতনী-৮২, ৮৩, ৮৪; বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং ৩৫৫০, ৩৫৪৯

 

(১২) হযরত আবু সা’অলাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- যখন পনেরই শাবানের রাত হয়,আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুমিনদের ক্ষমা করে দেন ও কাফিরদের অবকাশ দেন। আর হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারীদের আহ্বান করেন অবকাশ দেন (তাওবার জন্য) যতক্ষণ তাদের হিংসার কারণে তারা তার নিকট তওবা না করে। বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫১; ইবনে আসেম আস সুন্নাহ-৫১০; তাবরানী আল মু’জামুল কবীর ২২: ২২৩, ২২৪, হাদীস নং ৫৯০, ৫৯৩; বায়হাক্বী আস সুনানুস সগীর-১৪২৬; ফাজায়িলুল আওকাত-২৩; দার ক্বুতনী আন নুযুল-৭৮,৮১; হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ ১২৯৬২; আলবানী সহীহ আত তারগীব ওয়াত তাহরিব ২৭৭১;সহীহুল জামে ৭৭১; সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩, কানযুল উম্মাল-৩৫১৮৩

 

(১৩) হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন পনেরই শাবানের রাত হয়, তখন আল্লাহ তায়ালা সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, মুশরিক ও অপর ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত। মুসনাদে বাযযার ১৬:১৬১ হাঃনং-৯২৬৮; হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ ১২৯৫৮; নুজহাতুল মাজালিস ওয়া মুনতাখাবুন নাফাইস, বাব,ফাদলু শ’বান ওয়া ফাদলু সালাতুত তাসবীহ, ১:১৪৬/১:১৬১

 

(১৪) হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম একদা রাতে সালাত আদায় করছিলেন। তিনি সিজদায় গিয়ে দীর্ঘ সময় সিজদায় থাকলেন। এমনকি আমার মনে হলো যে, তাঁর ওফাত হয়ে গেছে। আমি যখন এমনটি দেখলাম, তখন শোয়া থেকে উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, ফলে তিনি নড়ে উঠলেন। তখন আমি (বিছানায়) ফিরে গেলাম। অতঃপর যখন তিনি সিজদা থেকে মস্তক উঠালেন এবং নামায শেষ করলেন তখন বললেন, হে আয়েশা, তুমি কি মনে করেছিলে যে নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তোমার সাথে প্রতারণা করছেন? আমি বললাম, আল্লাহর শপথ, আমি এমনটি মনে করিনি। বরং আপনার দীর্ঘ সিজদার কারনে আমার মনে হয়েছে যে, আপনার ওফাত হয়ে গেছে। তখন তিনি বললেন, তুমি কি জান এটি কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম অবগত। তিনি বললেন এটি মধ্য শাবানের রাত। আল্লাহ তাআলা এ রাতে তার বান্দাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন। যারা ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদেরকে ক্ষমা করেন, যারা দয়া প্রার্থনা করে তাদেরকে দয়া করেন এবং যারা বিদ্বেষী তাদেরকে তাদের অবস্থাতেই রেখে দেন। বায়হাক্বী শোয়া’বুল ঈমান-৩৬৭৫/৩৫৫৪; ফাযায়িলুল আওকাত-২৬; সুয়ুতী আদ দুররুল মান্সুর,সুরা দুখান,৭:৪০৩

 

(১৫) হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, চারটি রাত এমন রয়েছে যেগুলোর ফযীলত তাদের দিনের ন্যায় দিনের ফযীলত রাতের ন্যায়। যাতে আল্লাহ তা’আলা বান্দাহদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেন, তাঁর বান্দাদের মুক্ত করেন এবং অফুরন্ত নি’আমত প্রদান করেন। তা হল- কদরের রাত ও তার পরবর্তী দিন, আরাফার রাত ও তার পরবর্তী দিন, শাবানের মধ্য রাত্রি (শবে বরাত) ও তার পরবর্তী দিন, জুম’আর রাত ও তার পরবর্তী দিন। দায়লামি, কানযুল উম্মাল-৩৫২১৪; সুয়ুতী জামেউল আহাদীস-৩০৮০

 

(১৬) হযরত উসমান বিন আবীল আ’স রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,যখন পনেরই শাবানের রাত হয়,তখন আহবানকারী আহবান করবে এই বলে, আছে কেউ মুক্তিকামী গুনাহ হতে ? তাকে ক্ষমা করা হবে। কেউ আছে যে কিছু চাইবে তাকে তা দান করা হবে। প্রত্যেক কামনাকারীকে প্রদান করা হবে শুধুমাত্র মুশরিক ও ব্যভিচারকারী মহিলা ব্যতীত। বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫৫; ফাজায়েলু আওকাত-২৫; কানযুল উম্মাল-৩৫১৭৮; সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩

 

(১৭) আতা বিন ইয়াসার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, শা’বানের মধ্য রজনীতে (শবে বরাতে) মানুষের হায়াত পূর্ণ করা হয়। অথচ লোকটি ভ্রমণকারী হিসেবে বের হয়েছে, এমতাবস্থায় তার হায়াত পূর্ণ করা হয়েছে এবং মৃত্যু তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং বিবাহ করেছে এমতাবস্থায় তার হায়াত শেষ করা হয়েছে ও মৃত্যু তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ জীবন, মৃত্যু ইত্যাদি এ রাতে নির্ধারিত হয়। মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, কিতাবুস সাওম-৭৯২৫; সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩

 

(১৮) হযরত ইকরামা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি সুরা দুখানের আয়াত (এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ কাজের ফয়সালা দেওয়া হয়। আয়াত-৪)এর তাফসীরে বলেন, শাবানের মধ্য রজনীতে আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী বছরে যে সকল ঘটনা সংগঠিত হবে (বাজেট) তা লিপিবদ্ধ করবেন যারা মৃত্যু বরণ করবে তাদের মধ্য থেকে কারো কারো হায়াত বৃদ্ধি করা হবে এবং যারা আল্লাহর পবিত্র গৃহের তাওয়াফ করবে অর্থাৎ হজ্জ্ব আদায় করবে তাদের নাম লিপিবদ্ধ করা হবে। অতঃপর দের মধ্যে কোন কিছু বৃদ্ধি পাবে না এবং তাদের মধ্য হতে কমতিও হবে না। সুয়ুতী আদ দুররুল মান্সুর,সুরা দুখান,৭:৪০১; শিহাব উদ্দীন আলুসী রুহুল মা’আনী, সুরা দুখান,১৩:১১২/ ১৮:৪২৭; ইবনে জারীর তাবারী তাফসীরে ত্ববারী জামেউল বয়ান, সুরা দুখান,২২:১০; তাফসীরে সা’লাবী ৮:৩৪৯; তাফসীরে বগভী, সুরা দুখান ৪:১৭৩; তাফসীরে মাযহারী ৮:৩৬৮

 

(১৯) উসমান বিন মুগীরাহ বিন আখফাশ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, শবে বরাতে এক শা’বান হতে আর এক শা’বানের মধ্যকার হায়াত কর্তন করা হয়। অথচ মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় সন্তান সন্ততি জন্ম দেয় এমতাবস্থায় তার নাম মৃত্যুর তালিকায় নেয়া হয়। (হাদিসটি হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতেও বর্ণিত হয়েছে।) বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫৮; শিহাব উদ্দীন আলুসী রুহুল মা’আনী, সুরা দুখান,১৩:১১২/১৮:৪২৭; ইবনে জারীর তাবারী তাফসীরে ত্ববারী জামেউল বয়ান, সুরা দুখান,২২:১০; কানযুল উম্মাল-৪২৭৮০; তাফসীরে সা’লাবী ৮:৩৪৯; তাফসীরে খাজিন ৪:১১২/১১৬; শওকানী ফাতহুল ক্বাদীর, সুরা দুখান,৪:৬৫৫; সুয়ুতী জামেউল আহাদীস-১০৯১৭; দায়লামী ২:৭৩-২৪১০; তাফসীরে বগভী সুরা দুখান ৪:১৭৪; তাফসীরে মাযহারী ৮:৩৬৮ সুয়ুতী আদ দুররুল মান্সুর, সুরা দুখান,৭:৪০১; শওকানী ফাতহুল ক্বাদীর, সুরা দুখান ৪:৬৫৫; মুসনাদে দায়লামী-২৪১০

 

(২০) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়ায়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, শা’বানের মধ্য রজনীতে যাবতীয় বিষয়ের ফয়সালা করা হয় এবং উহা রমযানের ২৭ তারিখ ক্বদরের রাতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বশীলদের নিকট সোপর্দ করা হয়। শিহাব উদ্দীন আলুসী রুহুল মা’আনী,সুরা দুখান,১৩:১১২/১৮:৪২৭

 

(২১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়ায়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নিশ্চই আল্লাহ্ তা’আলা শা’বানের মধ্য রজনীতে যাবতীয় বিষয়ের ফয়সালা করেন এবং উহা ক্বদরের রাতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বশীলদের নিকট সোপর্দ করেন। তাফসীরে বগভী, সুরা দুখান ৪:১৭৪; তাফসীরে খাযিন, সুরা দুখান ৪:১১৬, আল লুবাব ফি উলুমিল কিতাব ১৭:৩১১; তাফসীরে মাযহারী ৮:৩৬৮

 

(২২) হযরত আবু উমামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন এমন পাঁচটি রাত আছে যে রাতগুলোয় দু’আ ফেরত হয়না। ওইগুলো হল-জুমু’আর রাত,রজব মাসের প্রথম রাত,শ’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত এবং দুই ঈদের রাত অর্থাৎ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত। সুয়ুতী জামেউল আহাদীস-১১৯৭৯; দায়লামী

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

 

Islami Dawah Center Cover photo

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )

ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )