Symptom of Evil Eye - বদ নজর কি এবং কি ভাবে বুঝা যাবে যে বদ নজর লেগেছে?

Symptom of Evil Eye – বদ নজর কি এবং কি ভাবে বুঝা যাবে যে বদ নজর লেগেছে?

আজকের আলোচনা আপনার নজর লেগেছে কিনা সে বিষয়ে।এবং নজরে আক্রান্ত হবার লক্ষণ সমুহ।
ইবনে কাসীর (রহঃ) বলেনঃ বদ নজরের প্রতিক্রিয়া হওয়া সত্য যা আল্লাহর নির্দেশেই হয়ে থাকে। (তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ৪/৪১০)
হাফিজ
ইবনে হাজার আসকালানী (রাহিমাহুল্লাহ্) বলেন : বদ নজরের মূল বিষয় হলো, কোন উত্তম বস্তুর প্রতি যখন কোন নিকৃষ্ট চরিত্রের মানুষ হিংসার চোখে দেখে, উহার ফলে তখন সেই মানুষ বা প্রাণী অথবা অন্য বস্তুর ক্ষতি সাধিত হয়। (ফতহুলবারী, ১০ম খন্ড পৃষ্ঠা নং ২০০)
ইবনে আসীর (রহঃ) বলেনঃ বলা হয় (اصابت فلانا عين) অর্থাৎ অমুককে চোখ লেগেছে এটা তখন বলা হয়, যখন কারো প্রতি কোন শক্র অথবা হিংসুক দৃষ্টিপাত করে, আর এর ফলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।” (আন নিহায়াঃ ৩/৩২)
হাফেজ ইবনে কাইয়্যিম (রহঃ) বলেনঃ কতিপয় ব্যক্তিবর্গ নিজের জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে বদ নজরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছেন এবং তারা বলেছেন যে, এর কোন সত্যতা নেই এটা কেবল কুসংস্কার ও ভুল ধারণা। যুগ যুগের জ্ঞানীজনেরা একে অস্বীকার করেনি, যদিও তারা তার কারণ ও দিক নিয়ে মতভেদ করেছেন।
তিনি আরও বলেন যে, আল্লাহ তায়ালা মানুষের শরীর ও আত্মায় বিভিন্ন প্রকারের ক্ষমতা ও প্রাকৃতিক ক্রিয়াশীল দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আর এদের ভেতর অপরকে প্রভাবিত করার ক্ষমতাও দিয়েছেন। আর কোন জ্ঞানী ব্যক্তি শরীর ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে আত্মার প্রতিক্রিয়ার অস্বীকার করতে পারবে না, কেননা এটা এমন একটি বিষয় যা আমরা দৈনন্দিন জীবনে পরিলক্ষিত ও অনুভব করতে পারি। যেমন মানুষের চেহারা লাল রং ধারণ করে যখন তার দিকে কোন লজ্জাকারী ব্যক্তির দৃষ্টি পড়ে। তেমনি ভাবে ভয়ের কিছু দেখলে হলদে রং ধারণ করে। আর লোকজন বাস্তবে দেখতে পেয়েছে যে, বদ নজরের জন্যে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর এসব আত্মার প্রভাবে হয়ে থাকে। আর যেহেতু আত্মার সম্পর্ক চোখের সাথে খুবই গভীর এজন্য এটাকে চোখ লাগা বলা হয় কিন্তু চোখের নিজস্ব এমন কোন প্রভাব নেই বরং প্রতিক্রিয়া কেবল আত্মার মাধ্যমে হয়ে থাকে। আর আত্মার মতা, প্রকৃতি ও এর গুণ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। সুতরাং হিংসুক থেকে হিংসার মাধ্যমে হিংসাকৃতের উপর স্পষ্ট কষ্টের প্রভাব পড়ে।
এজন্য আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তিনি যেন হিংসাকারীদের থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে।
বদনজর কখনও যোগাযোগে হয় আর কখনও সামনা সামনি হয় কখনও দৃষ্টিপাতে, আবার কখনও আত্মার দ্বারা ঘায়েল করে আর কখনও এর প্রভাব বদ দুআ তাবিজের মাধ্যমে হয়ে থাকে। আর কখনও ধ্যানের মাধ্যমে হয়।
পূর্বে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে যে, বদ নজর কেবল দৃষ্টির দ্বারা হয় না বরং কখনও অন্ধ ব্যক্তিরও বদ নজর লাগে আর তা এভাবে যে, তার সামনে কারো প্রশংসা বর্ণনা করা হয় আর তা শুনে অন্ধ ব্যক্তির আত্মা সেই প্রশংসিত ব্যক্তির উপর প্রভাব বিস্তার লাভ করে । এটা একটা বিষাক্ত তীরের ন্যায় যা বদ নজরকারী ব্যক্তির আত্মা হতে বের হয়ে অন্য ব্যক্তির উপর আঘাত হানে। আর এই তীরের লক্ষ্য বস্তু কখনও সঠিক হয় আবার কখনও হয় না।
অতএব এর প্রকৃতি হলো বদ নজরকারীর আশ্চর্য হয়ে চোখ লাগানো এরপর তার খবীস আত্মা তার অনুসরণ করে যা তার বিষাক্ত দৃষ্টিকে সহযোগিতা করে। কখনও মানুষ নিজেকেই নিজের নজর লেগে থাকে, কখনও তার ইচ্ছার বাইরেও বদনজর লেগে থাকে। (যাদুল মা’আদ থেকে সংক্ষিপ্তাকারেঃ ১/১৬৫)
জ্বিনের বদ নজর মানুষকে লাগতে পারে
উদাহারনসরুপ নিচের দুটি হাদীস লক্ষ করুন।
আবু সাঈদ খুদরী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জ্বিনের নজর থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন এবং এরপর মানুষের বদ নজর থেকেও পানাহ চাইতেন; সুতরাং যখন সূরা ফালাক ও নাস অবতীর্ণ হল তখন অন্য দু’আ ছেড়ে দিয়ে এই সূরাদ্বয় দিয়ে প্রার্থনা করতেন। (ইমাম তিরমিয়ী চিকিৎসা বিষয়ক অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেনঃ ২০৫৯, ইবনে মাযাহঃ ৩৫১১l
২। উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার ঘরে একটি বালিকা দেখলেন, যার মুখমন্ডলে জ্বিনের বদনজরের কাল দাগ। তা দেখে তিনি বলেনঃ তাকে ঝাড়-ফুক কর কেননা তাকে জিনের বদনজর লেগেছে।” (বুখারীঃ ২০১০/১৭১ ও মুসলিমঃ ২১৯৭)
উপরোক্ত হাদীসদ্বয় হতে বুঝা যায়, মানুষ হতে যেমন বদনজর লাগে অনুরূপ জ্বিন হতেও লাগে। এজন্য প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সে যখন পোশাক খুলবে, আয়না দেখবে বা সে যে কর্ম করবে তখন যেন দু’আযিকির পড়ে যাতে সে নিজের, মানুষের ও জিনের বদনজর বা অন্য কোন কষ্ট হতে নিরাপদ বা সংরক্ষিত থাকতে পারে।
নজরের লক্ষ্যগুলো। উপরোক্ত লক্ষণ গুলো বর্ণনা করেন মুফতি জুনায়েদ আন্দাহারী সাহেব মুম্বাই ভারতের ।
[১] শরীরের সাধারণ দুর্বলতা থাকা, ক্ষুধা হ্রাস এবং বমি বমি ভাব।
[২]চেহারাতে ফ্যাকাশে ফিতে/ধূসর / হলুদ হয়ে যাওয়া।
[৩]স্থায়ীভাবে উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রা/ জ্বর থাকা [থার্মোমিটার না উঠা]
[৪]কোন কারণ ছাড়াই কান্নাকাটি করার আশ্বাস।
[৫]কনস্ট্যান্ট জাগ্রত (ঘুমিয়ে আছেন কিন্তু মনে হচ্ছে জাগ্রত)
[৬]উভয় হাত এবং পায়ের মধ্যে প্রায়ই ব্যথা, শরীরের ব্যথা আবর্তিত, শরীরের ব্যথা এক জায়গায় স্থির না হওয়া।
[৭]চিরস্থায়ী মাথাব্যাথা ( সব সময় মাথাব্যথা)
[৮] বিভিন্ন অসুখ লেগে থাকা, অনেক চিকিৎসার পরেও ভালো না হওয়া (ঠান্ডা,কাশি, জ্বর)
[৯] পঞ্চমুখী মমুলাট,( কাজে মন না বসা, লেখাপড়া মন না বসা, নামাজ, যিকিরে মন না বসা)
[১০] মহিলাদের/পুরুষদের অত্যধিক চুল পড়ে যায়(যা শ্যাম্পু ব্যবহার করেও কাজ হয়না)
[১১] আত্মীয়, বন্ধু ও সহকর্মীদের সাথে দেখা করতে অপছন্দ লাগা।
[১২]ব্যবসা, কাজ বা পেশায় বিঘ্ন এবং ক্ষতি, ঝামেলা লেগে থাকা।
[১৩] বুকে ধড়ফড় করা, দমবন্ধ বা অসস্তি লাগা।
[১৪] পেটে প্রচুর গ্যাস জমে থাকা।
[১৫] মেজাজ খিটখিটে থাকা, কোন কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া।
[১৬]একটি প্রাথমিক / বিশেষজ্ঞ কাজ সম্পাদন করতে অক্ষম। যদি কেউ তার প্রাথমিক / বিশেষজ্ঞ কাজ করতে ইচ্ছুক হয়, তবে সে অত্যন্ত অলস হবে অথবা সেখান থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া।
উপরোক্ত লক্ষনগুলো অধিকাংশ আপনার সাথে মিলে গেলে বুঝতে হবে আপনার নজরের সমস্যা রয়েছে। আবার অনেক সময় এসব লক্ষ্যগুলো অন্য কারণেও হয়ে থাকে।অতএব অধিকাংশ লক্ষ্যগুলোর মিল পাওয়া গেলে ভয় পাবার কিছু নেই। প্রথমে আপনি ডাক্তারে চিকিৎসা নিন যদি ডাক্তার চিকিৎসা ভাল না হয় তখন আপনি নজরের জন্য চিকিৎসা শুরু করুন।

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

Islami Dawah Center Cover photo

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )

IDC Partner