The child has to do for the parents – বাবা মার জন্য সন্তানের দোয়া ও করণীয়
The child has to do for the parents – বাবা মার জন্য সন্তানের দোয়া ও ১২ করণীয়
দুনিয়ার জীবনে সন্তানের জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পদ বাবা-মা। যার বাবা-মা বেঁচে নেই দুনিয়তে ওই ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি অসহায়। বাবা-মার অভাব কখনো ধন-সম্পদ দিয়ে হয় না। বাবা-মার অভাব পূরণে কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনাও চলে না। সে কারণেই বাবা-মার জীবিত থাকুক আর না থাকুক তাদের জন্য সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করার বিকল্প নেই। আবার মৃত বাবা-মার জন্য কুরআন-সুন্নাহ নির্দেশিত অনেক করণীয় রয়েছে। কী সেই করণীয়?
বাবা মার জন্য দোয়া
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বাবা-মার জন্য বিশেষ ৩টি দোয়া উল্লেখ করেছেন। বাবা জীবিত থাকুক আর না থাকুক, তাদের জন্য সব সময় কুরআনে বর্ণিত দোয়াগুলো জরুরি। এ সব দোয়ায় আছে নিজেদের জন্য কল্যাণ পাওয়া ঘোষণা। তাহলো-
১. رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’
অর্থ : (হে আমাদের) পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি দয়া কর; যেভাবে তারা আমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৪)
২. رَبَّنَا ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ ٱلْحِسَابُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ : ‘হে আমাদের রব! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
৩. رَّبِّ ٱغْفِرْ لِى وَلِوَٰلِدَىَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيْتِىَ مُؤْمِنًا وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَٰتِ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارًۢا
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও ওয়া লিলমুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত ওয়া লা তাযিদিজ জ্বালিমিনা ইল্লা তাবারা।’
অর্থ : ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার বাবা-মাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন আর আপনি জালিমদের ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ : আয়াত ২৮)
বাবা-মার জন্য করণীয়
দুনিয়ার সবচেয়ে মধুময় শব্দ ‘বাবা ও মা’। শব্দ দুইটির কোনো পরিমাপ বা তুলনা হয় না। কেননা প্রতিটি বাবা-মা সন্তানের জন্য যে অকৃত্রিম ভালো ও শ্রম দেন তা পরিমাপ করার কোনো উপায় নেই। সে কারণে বাবা-মার জন্য সন্তানের রয়েছে বেশ কিছু করণীয়। তাহলো-
১. বাবা-মার জন্য দান-সাদকাহ করা
বাবা-মা বেঁচে থাকতে সন্তানের যত্ন নিতে গিয়ে কিংবা কোনো কারণে দান-সাদকাহ করে যেতে পারেননি অথবা বেঁচে থাকলে হয়তো আরও বেশি দান-সদকাহ করতেন। সে জন্য বাবা-মার পক্ষ থেকে সন্তানের উচিত বেশি বেশি দান করা। হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! হঠাৎ করে আমার মা মারা গেছেন এবং কোনো ওয়াসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয়- তিনি যদি কথা বলতে পারতেন তাহলে ওয়াসিত করে যেতেন। এখন আমি যদি তার পক্ষ থেকে সাদকাহ করি তাহলে কি তিনি এর সাওয়াব পাবেন? উত্তরে তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’।’ (মুসলিম)
সুতরাং বাবা-মার জন্য সাদকায়ে জারিয়া করাই উত্তম। তা হতে পারে- পানির কুপ খনন করা, (নলকুপ বসানো), দ্বীনী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা, কুরআন শিক্ষার জন্য মক্তব ও প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, স্থায়ী জনকল্যাণমূলক কাজ করা ইত্যাদি কাজ করা।
২. মা-বাবার জন্য রোজা রাখা
মা-বাবা জীবিত নেই। যদি তাদের কোনো মানতের বা কাজা রোজা থাকে তবে তাদের পক্ষ থেকে এ রোজা পালন করার নির্দেশ রয়েছে হাদিসে। এতে তাদের মানতের ও কাজা রোজা আদায় হয়ে যাবে। এছাড়াও সন্তানরা তাদের উদ্দেশ্যে যে কোনো দিনে রোজা রাখতে পারেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রোজার কাজা (যিম্মায়) রেখে যদি কোনো ব্যক্তি মারা যায় তবে তার অভিভাবক (রেখে যাওয়া সন্তান বা আপনজন) তার পক্ষ থেকে সওম বা রোজা আদায় করবে।’ (বুখারি)
তবে অনেক ইসলামিক স্কলার বাবা-মার জন্য সন্তানের রোজা রাখার বিষয়ে শুধু ফরজ ও ওয়াজিব রোজা রাখার বিষয়টি নির্ধারণ করেছেন। নফল রোজা রাখার ব্যাপারে কোনো প্রমাণ যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন।
৩. বাবা-মার জন্য হজ ও ওমরাহ করা
মা-বাবার পক্ষ থেকে হজ ও ওমরাহ করা। বাবা-মার উদ্দেশ্যে হজ ও ওমরাহ করলে তা আদায় হয়ে যাবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, জুহাইনা গোত্রের এক নারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, আমার মা হজের মান্নত করেছিলেন; তবে তিনি হজ করার আগেই ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারি?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তার পক্ষ থেকে তুমি হজ আদায় কর। তুমি এ ব্যাপারে কি মনে কর যে, ‘যদি তোমার মার উপর কোনো ঋণ থাকত, তাহলে কি তুমি তা আদায় করতে না?
সুতরাং আল্লাহর হক (হজের মান্নত) আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহর হকই সবচেয়ে বেশি আদায়যোগ্য।’ (বুখারি)
তবে বাবা-মার পক্ষ থেকে হজ আদায় করার আগে নিজের হজ বা ওমরাহ আদায় করতে হবে। নিজের হজ-ওমরাহ আদায়ের পর বাবা-মার পক্ষ থেকে হজ ও ওমরাহ আদায় করবে।
৪. মা-বাবার জন্য কুরবানি
মৃত বাবা-মার জন্য সাওয়াবের উদ্দেশ্যে বাবা-মার পক্ষ থেকে সন্তনরা কুরবানি করতে পারবে। তাতে তারা সাওয়াবের অধিকারী হবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানি করার জন্য দুই শিং বিশিষ্ট দুম্বা আনতে আদেশ দেন। যেটি কালোর মধ্যে চলাফেরা করতো (সেটির পায়ের গোড়া কালো ছিল)। কালোর মধ্যে শুইতো (পেটের নিম্নাংশ কালো ছিল)। আর কালোর মধ্য দিয়ে দেখতো (চোখের চারদিকে কালো ছিল)। সেটি আনা হলে তিনি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বললেন, ‘ছুরিটি নিয়ে এসো। তারপর বললেন, ওটা পাথরে ধার দাও। আমি (হজরত আয়েশা) ধার দিলাম। পরে তিনি সেটি নিলেন এবং দুম্বাটি ধরে শোয়ালেন। অতঃপর সেটা জবেহ করলেন এবং বললেন-
بِاسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ
অর্থ : আল্লাহর নামে (জবাই করছি)। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ, মুহাম্মাদ পরিবার ও তার উম্মাতের পক্ষ থেকে এটা কবুল করে নাও। এরপর এটা কুরবানি করেন।’ (মুসলিম)
৫. বাবা-মার ওসিয়ত পূরণ করা
বাবা-মা যদি ইসলামি শরিয়ত সম্মত কোনো ওসিয়ত করে যান তবে তা পূরণ করা সন্তানের ওপর আবশ্যক। হাদিসে এসেছে-
হজরত শারিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তাঁর মা তাঁকে তাঁর (মায়ের) পক্ষ থেকে একজন মুমিন দাসী আজাদ করার জন্য ওসীয়ত করে যান। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা (তাঁর মৃত্যুর সময়) তাঁর পক্ষে একজন মুমিন দাসী আজাদ করার জন্য ওসিয়ত করে গেছেন। এখন আমার কাছে হাবশের ‘নূবিয়্যা’ অঞ্চলের একজন দাসী আছে। এরপর আগের হাদিসে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে, তাহলো-
‘তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাঁকে আমার কাছে নিয়ে আস। রাবি বলেন, তখন আমি তাকে নিয়ে আস। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করেন- আল্লাহ কোথায়? সে বলে, আসমানে। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন- আমি কে? সে বলে, আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তাকে আজাদ করে দাও। সে মুমিন।’ (আবু দাউদ)
৬. বাবা-মার বন্ধু-বান্ধবীদের সম্মান করা
বাবা-মার বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, উত্তম আচরণ করা, সম্মান করা এবং তাদেরকে দেখতে যাওয়া ও তাদের জন্য হাদিয়া (উপহার) নেওয়া। হাদিসে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, মক্কার এক রাস্তায় আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে এক বেদুঈনের দেখা হলো। আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে সালাম দিলেন এবং তিনি যে গাধার পিঠে আরোহণ করতেন, সে গাধটি তাকে আরোহণের জন্য দিয়ে দিলেন। তিনি তার মাথার পাগড়ীটিও তাকে দান করলেন।
তখন (উপস্থিত) আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাকে বললেন যে, আমরা তাকে বললাম-
‘আল্লাহ আপনার কল্যাণ করুন। বেদুঈনরা তো অল্পেই সন্তুষ্ট হয়ে যায়। (এতো দেওয়ার প্রয়োজন কী ছিল?)
তখন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এ ব্যক্তির (বেদুইনের) বাবা ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর বন্ধু ছিলেন।
আর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, ‘কোনো ব্যক্তির সর্বোত্তম নেকির কাজ হচ্ছে তার বাবার বন্ধুর সঙ্গে সহমর্মিতার সম্পর্ক বজায় রাখা।’(মুসলিম)
৭. বাবা-মার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা
বাবা-মার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা সন্তানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে বিশ্বনবি বলেছেন-
مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَصِلَ أَبَاهُ فِي قَبْرِهِ،فَلْيَصِلْ إِخْوَانَ أَبِيهِ بَعْدَهُ
‘যে ব্যক্তি তার বাবার সঙ্গে কবরে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ভালোবাসে, সে যেন বাবার মৃত্যুর পর তার ভাইদের সাথে সুসম্পর্ক রাখে।’ (ইবন হিববান)
৮. বাবা-মার ঋণ পরিশোধ করা
দুনিয়াতে বেঁচে থাকাকালীন সময়ে বাবা-মা কোনো ঋণ করার পর তা পরিশোধ করার আগে মারা গেলে সন্তানের জন্য আবশ্যক বাবা-মার ঋণ পরিশোধ করা। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঋণ পরিশোধ করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুমিন ব্যক্তির রূহ তার ঋণের কারণে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে, যতক্ষণ না তা পরিশোধ করা হয়।’ (ইবনে মাজাহ)
এমনকি ঋণ পরিশোধ না করার কারণে জান্নাতের যাওয়ার পথও বন্ধ হয়ে যায়; যদি সে আল্লাহর রাস্তায় শহিদও হয়। হাদিসে এসেছে-
‘যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দার ঋণ পরিশোধ না করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (নাসাঈ, তাবরানি, মুসতাদরাকে হাকেম)
৯. বাবা-মার কাফফারা আদায় করা
শপথ, ভুলকৃত হত্যাসহ যে কোনো কারণে যদি বাবা-মার কাফফারা বাকি থাকে তবে তা আদায় করা সন্তানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গভীর রাত পর্যন্ত দেরি করে (ইশার নামাজ পড়ে)। এরপর তার পরিবারের কাছে গিয়ে দেখে যে, বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়েছে। তার স্ত্রী তার খাবার নিয়ে এলে সে সন্তানদের কারণে কসম করলো যে, সে খাবে না। পরে তার ভাবান্তর ঘটলো এবং সে খেয়ে নিল। তারপর সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসে ও তাঁকে এ ঘটনা বলে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি কোনো বিষয়ে কসম করে, পরে তার বিপরীতটিকে তা থেকে উত্তম মনে করে, সে যেন তা করে ফেলে এবং নিজের কসমের কাফফারা দেয়।’ (মুসলিম)
কাফফারার এ বিধান জীবিত-মৃত সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। যদি কোনো বাবা-মার এ রকম কোনো কাফফারা বাকি থাকে তবে সন্তানের ওপর তা আদায় করা আবশ্যক।
১০. বাবা-মার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা
মা-বাবার জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা গুরুত্বপূর্ণ আমল। সন্তান মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, মৃত্যুর পর কোনো বান্দাহর মর্যাদা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তখন সে বলে- হে আমার রব! আমি তো এতো মর্যাদার আমল করিনি, কীভাবে এ আমল এলো? তখন বলা হবে- তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায় এ মর্যাদা তুমি পেয়েছ।’ (আদাবুল মুফরাদ)
১১. বাবা-মার কবর জিয়ারত করা
বাবা-মার কবর জিয়ারত করা সন্তানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। এর মাধ্যমে সন্তান এবং মা-বাবা উভয়ই উপকৃত হয়। হাদিসে এসেছে-
হজরত সুলাইমান ইবনে বুরাইদা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি তোমাদের কবর জিয়ারাত করতে নিষেধ করেছিলাম। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তার মায়ের কবর জিয়ারত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা কবর জিয়ারত কর। কেননা, তা পরকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (তিরমিজি)
তবে কবর জিয়ারতে কোনো দিনকে নির্দিষ্ট না করা উত্তম। কবর জিয়ারত করার সময় এ দোয়া পড়া-
السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ لَلَاحِقُونَ أَسْأَلُ اللَّهَ لَنَا وَلَكُمْ الْعَافِيَةَ
উচ্চারণ :‘ আস-সালামু আলাইকুম আহলাদদিয়ারি মিনাল মুমিনিনা ওয়াল মুসলিমনিা ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু লা লাহিকুনা আসআলুল্লাহু লানা ওয়া লাকুমুল আফিয়াতি।’
অর্থ : ‘হে ক্ববরবাসী ঈমানদার মুসলিমগণ! তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হব। আমি আমাদের ও তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানাচ্ছি।’ (মুসলিম)
১২. কোনো গোনাহের কাজ করে গেলে তা বন্ধ করা
বাবা-মা বেঁচে থাকতে কোনো গোনাহের কাজের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে বা চালু করে গেলে তা বন্ধ করা আবশ্যক। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হবে না।’ (মুসলিম)
অল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবিত-মৃত বাবা-মার জন্য বেশি বেশি দোয়া করা। বাবা-মার মৃত্যুর পর হাদিসে নির্দেশিত করণীয়গুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।
আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )
Related Posts
Leave a Reply Cancel reply
Categories
- advices
- Ahle Hadis
- Allah
- Amal
- Arabic Communication
- Arabic Grammar
- Arif Azad
- Bangladesh
- Biography
- Child care
- Country
- Death
- Dowry
- Dua
- Education
- family
- Fasting
- Fatwa
- Gazwatul Hind
- Hadith
- Hajj
- Halal or Haram
- Humble
- Husband & Wife
- Iman
- Interest
- Islamic Books
- Islamic Days
- Islamic Economi
- Islamic Education
- Islamic FAQ
- Islamic Future
- Islamic History
- Islamic Lectures
- Islamic Life
- Islamic Politics
- Islamic Rules
- islamic song
- islamic story
- Jihad
- Jinn
- let's learn arabic
- Magic
- Marriage
- Mosque
- Motivation
- Muhammad SM
- Muslims
- News
- Parenting
- Patriotism
- Pending
- Personal Development
- poet
- Pornography
- Prophets
- Quran
- Quran and Science
- Quran Interpretation
- qurbani
- relations
- Rizq
- Ruqyah
- Sacrifice
- Sadaqah
- Safety
- Sahaba
- Salah
- Salat
- Sex
- Sin
- society
- story
- Tajweed
- Taqwa
- Tasawwuf
- Tawba
- Tawhid
- Veil
- weed
- Zakat
Recent Posts
- Biography of Talha Ibn Ubaidullah – হযরত তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ (রা:) এর জীবনী। May 11, 2022
- Biography of Muaz Ibn Jabal – হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাঃ এর জীবনী। May 11, 2022
- পুরুষ ও মহিলাদের হাত, পা এবং বুকের লোম কাঁটা কি জায়েয? May 8, 2022
- Is it Possible to Perform Fasting and Eid on the Same Day? একই দিনে রোজা ও ঈদ করা কি সম্ভব? May 2, 2022
- Sharing Positive Speech is Sunnah – ইতিবাচক বক্তব্য শেয়ার করা সুন্নত April 28, 2022