Tahajjud-তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত!
Tahajjud-তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত!
ফজর নামাজে উঠতে পারতেন না। এটা নিয়ে তার আফসোসও ছিল অনেক। কিন্তু কোনভাবেই কিছু হচ্ছিল না। তাকে বলা হলো, আপনি তাহাজ্জুদের সময় উঠেন। নামাজ পড়া লাগবে না। কেবল দুআ করেন, আল্লাহ যেন এই দুর্বলতাটা দুর করে দেন। এরপর আবার ঘুমিয়ে যান।
মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাপার। এই ভাই নিজ মুখে বলেছেন, রাতে এখন কোন কারনে অনেক দেরি করে ঘুমালেও ফজরের সময় তার এমনিতেই ঘুম ভেঙে যায়।
আরেক ভাই বহুদিন ধরে অসুস্থ। বড় কোন রোগ না। তবে ছোট রোগগুলোও একটার পর একটা লেগে থাকে। তাকেও একই প্রেসক্রিপশনই দেয়া হয়েছিল।
আলহামদুলিল্লাহ তার অবস্থার আজ অনেক পরিবর্তন। প্রতিকুল অবস্থাকে অনুকুলে আনার একচ্ছত্র ক্ষমতা যেই মহান রবের, সেই রব নিজে তাহাজ্জুদের সময় ডাকতে থাকেন- -আছে কোন প্রার্থনাকারী, আমি তার প্রার্থনা কবুল করবো।
– আছে কোন অসুস্থতা থেকে মুক্তি চাচ্ছে এমন কেউ, আমি তাকে আরোগ্য দান করবো। – আছে কেউ ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবো।
– (সহিহ বুখারী) হয়তো এই পোস্টের শুরু অংশে আমাদের অনেকের মনে অবিশ্বাসের দানা বাঁধতে পারে, কত কিছু করলাম কিছু হলো না, তাহাজ্জুদে দুআ করলেই প্রবলেম সলভ হবে? উত্তর সহজ- “নিশ্চয়ই ঈমানদারেরা একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা করে।”- সুরা তাওবা।
© সানিন ভাই।
আরও পড়ুন…
Salam-সঠিক ভাবে সালাম দেওয়া ও নেওয়ার নিয়ম ও পদ্ধতি
সালাম ইসলামের সৌন্দর্যময় একটি দিক। সালাম আদান প্রদানের ফলে শত্রু থেকে সখ্যে পরিণত হয়। দুই ব্যাক্তির মাঝে ভালবাসা ফয়দা হয়। চেনা পরিচিতদের মাঝে ভালবাসা বৃদ্ধি পায়। অচেনা মানুষকে আপন করে নেওয়া যায়। এই মনোহর রূপমাধুরী শুধুমাত্র ইসলামেই রয়েছে। যা অন্য কোন ধর্মে নেই।
জনৈক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল (ﷺ)-কে জিজ্ঞেস করলেন— ইসলামে কোন্ জিনিসটি উত্তম? তিনি বললেন, তুমি খাদ্য খাওয়াবে ও চেনা অচেনা সকলকে সালাম দিবে। সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১২
“সালাম” মানেই শান্তি কামনা করা। আমি খুব অবাক হয় মাদ্রাসার ছাত্রদের দেখে! তাদের মাঝে রয়েছে সালামের প্রচার-প্রসার। ছোট-বড় সবাইকে সালাম দেয়। ছোট-বড় কোন ভেদাভেদ নেই। অধুনা আমাদের সমাজে এর বড়ই অভাব।
আমি বড় বলে ছোটরা আমাকে সালাম দিবে। আমি বড়, আমি কেন ছোটদের সালাম দেব? আর একটু নাম করা ব্যাক্তিত্ব হলে তো কথায় নেই। না দিলে পিছনে গিয়ে শেকায়ত করে— অমুকের ছেলে বড় বিয়াদব। আমি পাশ দিয়ে আসতেছি দেখা সত্বেও সালাম দেয়নি।
রাসূল সা. এরকম ভেদাভেদ করতেন না। রাসূল (ﷺ) ছোট-বড় সবাইকে সালাম দিতেন। আমরাও এই অভ্যাসকে নিজেদের মাঝে ফিট্ করে নেওয়ার প্রয়াস চালাব-ইন শা আল্লাহ!
সালাম মানেই শান্তি। কোন মুসলমান ভাইকে দেখামাত্র বললাম, “আসসালামু আলাইকুম।” অর্থ হলো, “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।” সালামের উত্তরে বলল, “ওয়ালাইকুমুস সালাম”। অর্থ হলো, “আপনার উপরেও শান্তি বর্ষিত হোক।” এভাবে পরিচিত অপরিচিত সবার জন্য শান্তি কামনা করা একমাত্র ইসলামেই রয়েছে।
যে আগে সালাম দেয়, সে অহংকার মুক্ত হয়। কারণ, অহংকার ব্যাক্তিরা আগে সালাম দিতে লজ্জাবোধ করে। বরং তাঁরা অন্যের সালামের প্রতি মুখাপেক্ষী। আমি একজন নামকরা ব্যাক্তি। আমি কীভাবে দিনমজুরকে সালাম দিব? অহংকারীরা সর্বসাধারণ জনগণকে তুচ্ছ মনে করে। কিন্তু, ইসলাম এই ভেদাভেদকে দূরীভূত করতেই সালামকে প্রাধান্য দিয়েছে। হাদীসে আছে—
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন—মানুষের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক উত্তম ঐ ব্যক্তি, যে আগে সালাম দেয়। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫১৯৭
আল্লাহ তাআলা এরশাদ ফরমান—
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যখন তোমাদের সালাম দেওয়া হবে, তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে অথবা জবাবে তাই দেবে।’ সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৮৬
তবে অধুনা আমাদের সমাজে কিছু কুসংস্কার এখনো রয়ে গেছে। যখন কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে দেখা হয়, সালাম দিয়ে মুসাফাহা করত। কিন্তু, এখন বলে হাত নাড়িয়ে হাই (hi)। অথচ তাঁর মাঝে কোন বরকত নেই। না আছে নেকি, না আছে বরকত!
আরেকটি কুসংস্কার হলো— মাথা নিছু করে পা ধরে সালাম করা। যেটি সম্পূর্ণ শরীয়তবহির্ভূত কাজ। একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করা সম্পূর্ণ হারাম। পা ধরে সালাম বিধর্মীদের সংস্কার, যেটি আঁকড়ে ধরছে মুসলমানরা।
ইসলামের মনোহারিত্ব নিয়ে লিখতে গেলে অনেক লিখা। তন্মধ্যে সালাম হলো ইসলামের সৌন্দর্যময় একটি দিক। সালাম নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করলাম।
সালামের সঠিক ও সুন্নতি পদ্ধতি কি?
সালামের সঠিক ও সুন্নতি পদ্ধতি:
সম্মানিত ভাই ও বোনেরা, সালাম দেওয়া সুন্নত এবং উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। আমাদের অনেকেরই সালাম দিতে গিয়ে বা সালামের উত্তর দিতে গিয়ে অজান্তেই ভুল হয়ে যায়। যেমনঃ আমরা প্রতিদিন অনেককেই এভাবে সালাম দিতে শুনি যে, স্লামালাইকুম, আস সালামালাইকুম, সেলামালাইকুম, ইত্যাদি। আবার উত্তর দেয়ার সময়ও শোনা যায় ভুল শব্দের ব্যবহার।
যেমন, অলাইকুম সালাম, অলাইকুম আস-সালাম ইত্যাদি। সালাম একটি দুআ। ইসলামের শেআর ও প্রতিক পর্যায়ের একটি আমল। এর সহীহ উচ্চারণের প্রতি গুরুত্ব দেয়া জরুরি। কমপক্ষে এতটুকু বিশুদ্ধ উচ্চারণ অবশ্যই জরুরি, যার দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে।
সালাম এর সঠিক উচ্চারণ হলো, السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি, ওয়া বার-কাতুহ্। وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ ‘ওয়া আলাইকুমুস-সালাম, ওয়া রহমাতুল্লাহি, ওয়া বার-কাতুহ্।
আরবী দেখে এর সহীহ উচ্চারণ শিখে নেয়া উচিত অন্যথায় কন্ঠ বাদ পড়ে যায়- ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম’-এর স্থলে ‘অলাইকুম আস সালাম’ হয়ে যায়, যা স্পষ্ট ভুল। ইসলামে সালামের গুরুত্ব অপরিসীম। সালাম শান্তির প্রতীক। সালামে রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। সালাম এভাবে দিতে হয়, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।’ সালাম মুসলমানদের পরস্পরে ভালোবাসা, হৃদ্যতা সৃষ্টি করে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা ইমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর ইমানদার হতে পারবে না পরস্পরে ভালোবাসা না হলে। তোমাদের কি এমন একটি বিষয়ের কথা বলব, যা করলে তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটাও।’ (মুসলিম : ৫৪)
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ইসলামের কোন কাজ সবচেয়ে ভালো? রাসুল (সা.) বললেন, ‘খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া।’ (বোখারি : ১২)
সালামের প্রতিটি বাক্যে দশ নেকি। সালামে মোট তিনটি বাক্য আছে। সুতরাং যে পূর্ণ সালাম দেবে তার ত্রিশটি নেকি অর্জন হবে। একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম’, রাসুল তার উত্তর দিলেন, তারপর সে বসল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘দশ নেকি।’ অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।’
রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। পরে ওই ব্যক্তি বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘বিশ নেকি।’ অতঃপর অন্য একজন এলো। সে বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।’ রাসুল (সা.) উত্তর দিলেন। সেও বসে পড়ল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘ত্রিশ নেকি।’
(তিরমিজি : ২৬৮৯) সালামের বিধান ও তার পদ্ধতি : প্রথমে সালাম দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত, উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। যদি সালামের দ্বারা কোনো দলকে উদ্দেশ্য করা হয়, তাহলে তার উত্তর দেওয়া ওয়াজিবে কেফায়া।
অর্থাৎ একজন উত্তর দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে, তবে সবারই উত্তর দেওয়া উত্তম। উত্তর দেওয়ার সময় সালামের চেয়ে বাড়িয়ে উত্তর দেওয়া সুন্নাত। যেমন কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলবে।
কেউ ‘আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বললে উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’ বলবে। চিঠি বা মেসেজ ইত্যাদির শুরুতে সালাম দেওয়া সুন্নাত। এর মৌখিক বা লিখিত উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। (তিরমিজি ২/১০১)
সালামের আদবসমূহ : মানুষের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো প্রয়োজন, যাতে তা মুসলমানদের প্রতীকে পরিণত হয়। বিশেষ কোনো দলকে সালাম দেওয়া বা শুধু বড়দের দেওয়া কিংবা ছোটদের না দেওয়া উচিত নয়।
অনুরূপভাবে অপরিচিতকে বাদ দিয়ে শুধু পরিচিতকে সালাম দেওয়াও কাম্য নয়। (বুখারি : ১২) উত্তম হলো- ছোট বড়কে প্রথমে সালাম দেবে। পথচারী উপবিষ্টকে সালাম দেবে। আরোহণকারী পথচারীকে সালাম দেবে। কম লোক বেশি লোককে সালাম দেবে।
(বুখারি : ৬২৩১) উচ্চ স্বরে সালাম দেওয়া ও উত্তর দেওয়া সুন্নাত। কেননা সালাম উচ্চারণ করতে হয়। হাত বা মাথার ইশারা ইত্যাদি সালাম বলে বিবেচিত হবে না।
হ্যাঁ, দূরে হলে বা উত্তর শুনতে কোনো কিছু বাধা হলে মুখে উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে হাত বা মাথার ইশারায় উত্তর দেওয়ার কথা জানিয়ে দেবে। কাছে হলে সালামে হাত ওঠানো অপ্রয়োজনীয় ও সুন্নাতের খেলাফ। (তিরমিজি ২/৯৯)
সুন্নাত হলো দুজন আলাদা হওয়ার পর পুনরায় সাক্ষাৎ হলে আবার সালাম দেওয়া। সাহাবায়ে কেরাম যখন হাঁটতেন, তখন তাঁদের সামনে কোনো গাছ অথবা স্তূপ পড়ত, তাঁরা ডানে-বাঁয়ে আলাদা হয়ে যেতেন। অতঃপর আবার সাক্ষাৎ হলে একে অন্যকে সালাম দিতেন।
সালাম শুধু মুমিনদের অভিবাদন, কাফেরদের সালাম দেওয়া বৈধ নয়। হ্যাঁ, যদি এমন জায়গায় উপস্থিত হয় যেখানে কাফের-মুসলমান একত্রে থাকে, সেখানে সালাম দেওয়ার সময় মুসলমানের নিয়ত করবে। (সুনানে আবি দাউদ : ৫২০৫)
যদি কোনো অমুসলিম সালাম দেয় তাহলে তার জবাবে ‘আস্সালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলবে। (মুসনাদে আহমাদ : ২৪৩০৪) কিংবা ‘ওয়ালাইকা’ বা ওয়ালাইকুম’ বলবে। অমুসলিমদের বিশেষ প্রয়োজনে সালাম ছাড়া অন্য কোনোভাবে অভিবাদন জানানো বৈধ। যেমন শুভ সকাল বা শুভ রাত্রি ইত্যাদি।
তবে এমন বাক্য ব্যবহার করা যাবে না, যা অন্য ধর্মের জন্য নির্ধারিত। অন্যের মাধ্যমে কারো কাছে সালাম পৌঁছানোও সুন্নাত। যার কাছে সালাম পৌঁছানো হবে উত্তর দেওয়া তার দায়িত্ব। (তিরমিজি ২/৯৯) মাহরাম (যাদের দেখা বৈধ) নারীদের বা স্ত্রীদেরও সালাম দেওয়া সুন্নাত।
আর ফেতনা থেকে নিরাপদ হলে পরনারীদেরও সালাম দেওয়া জায়েজ। অনুরূপ নারীরাও পরপুরুষদের ফেতনার আশঙ্কা না হলে সালাম দিতে পারবে। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬৯) কাউকে ঝুঁকে সালাম দেওয়া জায়েজ নেই। (তিরমিজি : ২৭২৮)
যেসব অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ : যে ব্যক্তি সালামের উত্তর দিতে অক্ষম তাকে সালাম দেওয়া মাকরুহ। যথা : নামাজ, আজান-ইকামত, জিকির, তিলাওয়াত, ধর্মীয় জ্ঞানচর্চা, খানাপিনা ও ইস্তিঞ্জারত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, গুনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, স্ত্রী সহবাস ইত্যাদি অবস্থায় সালাম দেওয়া মাকরুহ। (রদ্দুল মুহতার ১/৪১৪) লেখক : ফতোয়া গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার
কিছু কিছু ক্ষেত্র সালাম দেয়া যাবে না
১. আযানরত, ইকামতরত কিংবা খুদবা পড়া অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
২. যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে খেল-তামাশায় মগ্ন তাকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৩. বার্থ রুম এ থাকা অবস্থায় সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৪. অমুসলিমকে সালাম দেওয়া উচিত নয়। তাই আমরা আমাদের সমাজে, পরিবারে, অফিসে সালামের প্রচলন করব। সেই সাথে আমরা ইসলামকে মেনে চলব। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
অমুসলিমকে সালাম দেওয়ার বিধান কী? এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা কি জায়েজ?
অমুসলিমকে ‘সালাম’ দেওয়া বৈধ নয়। কোনো প্রয়োজনে দিতে হলে ‘আসসালামু আল মানিত্তাবাআল হুদা’ বলবে। আর অমুসলিমরা সালাম দিলে তদুত্তরে শুধু ‘ওয়া আলাইকুম’ বলবে। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে মুসলিমদের ওপর অমুসলিমদের প্রাধান্য দেওয়া নিন্দনীয়।
তবে তাদের সঙ্গে যাবতীয় লেনদেন, সদাচরণ ও সাধারণ সম্পর্ক রাখা বৈধ। (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৫১, সুরা আল ইমরান, আয়াত : ১১৮, আল বাহরুর রায়েক : ৮/৩৭৪, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৯/৫৪৫, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ১২/১০৩)
সালাম আদান-প্রদানে যে ১২ ভুল করা উচিত নয়
১. অশুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দেওয়া: এটি মারাত্মক ভুল কাজ। আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ হচ্ছে পূর্ণ সালাম। শুধু আসসালামু আলাইকুম বললেও চলবে। তবে উচ্চারণে ভুল করা যাবে না।
২. ছোটদের প্রতি বড়দের সালাম না দেওয়া: এটিও ভুল প্রচলন। বড় বা বয়স্ক মানুষ ছোটদের সালাম দিতে কোনো বাধা নেই। যেমন- শিক্ষক ছাত্রদের এবং বাবা-মা সন্তানদের সালাম দেবেন। আগে সালামকারী বেশি সওয়াব ও মর্যাদার অধিকারী হয়ে থাকেন।
৩. অপরিচিত কাউকে সালাম না দেওয়া: পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। তাই পরিচিত ও মুখ চিনে সালাম দেওয়া গর্হিত ও নিন্দিত কাজ।
৪. সালাম দেওয়ার সময় মাথা ও বুক ঝুঁকে নিচু করা: সালাম দেওয়ার সময় মাথা ও বুক ঝুঁকে নিচু হয়ে সালাম দেওয়া নিষেধ। অনেকে পদস্থ বা বড় কোনো ব্যক্তিকে সালাম দেওয়ার সময় এমন করে থাকে। হাদিসে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এ থেকে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়।
৫. সালামের উত্তর দিয়ে আবার সালাম: আপনাকে কেউ সালাম দিল, আপনি উত্তর দেওয়ার পর ওই সালামকারীকে আবার সালাম দিলেন। অনেকে এ কাজটি অজ্ঞতাবশত করে থাকেন। উত্তম হলো, কারো সালামের অপেক্ষা না করে নিজেই আগে সালাম দেওয়া। কিন্তু কেউ আগে সালাম দিয়ে ফেললে তার সালামের উত্তর দেওয়াই নিয়ম। তাকে আবার সালাম দিতে হবে না।
৬. সালামের উত্তর না দিয়ে আবার সালাম: সালাম পাওয়ার পর উত্তর দেওয়াই বিধান। কিন্তু অনেকে সালাম দেওয়ার পর উত্তর না দিয়ে সালামদাতাকে আবার সালাম দেয়। এমনটি ঠিক নয়। দুজনের একজন সালাম দেবেন, অপরজন সালামের উত্তর দেবেন এটাই বিধান।
৭. সালাম দেওয়ার পর সালাম দিয়েছি বলা: কাউকে সালাম দেওয়ার পর সালাম না শুনলে বা উত্তর না-দিলে আমরা বলি, ‘আপনাকে সালাম দিয়েছি’। এভাবে বলা ঠিক নয়। তাকে আবার পূর্ণ সালাম দেওয়াই নিয়ম।
৮. কতক্ষণ বসার পর সালাম দেওয়া: সাক্ষাতের শুরুতেই সালাম দেওয়া সুন্নত। কতক্ষণ বসার পর সালাম করা অনুচিত।
৯. সালাম পাঠানোর পদ্ধতি: কারো কাছে সালাম পাঠানোর দরকার হলে আমরা বলি, অমুককে গিয়ে আমার সালাম দেবেন/বলবেন। এভাবে বলা ঠিক নয়। নিয়ম হল এভাবে বলা, অমুককে আমার পক্ষ থেকে আসসালামু আলাইকুম… বলবেন। তেমনি, সালাম পৌঁছানোর পরও ‘অমুকে আপনাকে সালাম দিয়েছেন’ এ রকম না বলে বলা উচিত, অমুক আপনাকে আসসালামু আলাইকুম… বলেছেন।
এক্ষেত্রে সালামের উত্তরদাতাও কেবল প্রেরককে উত্তর দেবেন না। বরং প্রেরক ও বাহক উভয়কে দোয়ায় শরিক করবেন। তিনি এভাবে উত্তর দেবেন, ওয়া আলাইকা ওয়া আলাইহিস সালাম।
১০. ফোনে বা সাক্ষাতে সালামের আগে হ্যালো বা অন্যকিছু বলা: ফোন বা মোবাইল ফোনে সালাম দেওয়ার আগে হ্যালো বা অন্য কোনো কথা বলা ঠিক নয়। আগে সালাম দিয়ে তারপর অন্য কথা বলবেন। হ্যালো বলার দরকার হলে সালাম দেওয়ার পর বলবেন। ফোন ছাড়া সাক্ষাতের বেলায়ও কথাবার্তার আগেই সালাম দেওয়াই সুন্নত। কেননা রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কথাবার্তা বলার আগে সালাম দিতে হয়। (তিরমিযি, হাদিস নং- ২৬৯৯)
১১. অনুষ্ঠান শেষে বা বিয়ের আকদ হওয়ার পর সালাম: অনেক জায়গায় দেখা গেছে, কোনো অনুষ্ঠান- বিশেষত দোয়া বা এ ধরনের কোনো মজলিস শেষ হওয়ার পর সালাম দেন অনেকে। এছাড়া বিয়ের আকদ হওয়ার পর বর উপস্থিত সবাইকে সালাম দেন।
বর সালাম না দিতে চাইলে বা ভুলে গেলে অন্যরা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সালাম দাও। না দিলে খারাপ এবং বেয়াদবি মনে করা হয়। এসব কুসংস্কার ও ভুল প্রচলন। সালাম হবে সাক্ষাতের সময়। সুতরাং কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর কারো সঙ্গে দেখা হলে তাকে সালাম করবেন। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে সালামের প্রথা বর্জন করা উচিত।
১২. বক্তব্যে প্রথমেই সালাম দেওয়া: সাক্ষাতের শুরুতেই সালাম দিয়ে কথাবার্তা শুরু হবে- এটিই ইসলামের নিয়ম। কিন্তু আজকাল বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায়, বক্তা বিভিন্ন কথা বলার পর সালাম দেন।
যেমন তিনি বলেন, মঞ্চে উপবিষ্ট মান্যবর সভাপতি, অতিথিরা… সবাইকে আমার সালাম আসসালামু আলাইকুম। এভাবে সালাম বলা ইসলামী রীতির পরিপন্থি। শ্রোতা ও দর্শকদের মুখোমুখি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সালাম দেওয়া নিয়ম।-প্রিয়.কম লিখেছেন: মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেমী, সম্পাদনা: সোহেলুর রহমান
অনেকেই সালাম দেওয়ার সময় দেখি কপালে হাত ঠেকান। এটা করা কি ঠিক?
উত্তর : সালাম দেওয়ার সময় হাত উঠানো বা কপালে ঠেকানো নিতান্তই অর্থহীন ব্যাপার। মুখে ‘আসসালামু আলাইকুম’ স্পষ্ট করে বলাই সালাম।
হাত উঠানো বা কপালে ঠেকানো দেশিয় রীতি, সুন্নত বা শরীয়তের বিধান নয়। এসব রীতি যথাসম্ভব বর্জনীয়। উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী, সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ। প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন। info@IslamiDawahCenter.com
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।
আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )
ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )