The Day of Judgment in the Light of the Quran and Hadith

কোরআন ও হাদীসের আলোকে কিয়ামত! – The Day of Judgment in the Light of the Quran and Hadith

 


🔥 কিয়ামতের দিন: ইসলামি আকীদার ভিত্তি

ইসলামে কিয়ামতের দিবস বা يَوْمُ ٱلْقِيَـٰمَةِ বিশ্বাস করা ঈমানের অন্যতম স্তম্ভ। কিয়ামতের দিন এমন একটি বাস্তবতা যা ঘটবেই — এতে কোনো সন্দেহ নেই। কোরআন ও সহীহ হাদীসসমূহে কিয়ামত সম্পর্কে ব্যাপক বর্ণনা রয়েছে, যা মানুষের মধ্যে সতর্কতা, ভয় ও আত্মশুদ্ধির বোধ জাগিয়ে তোলে।


📖 কোরআন মাজীদে কিয়ামতের আলোচনা

১. কিয়ামত আসবেই, এতে কোনো সন্দেহ নেই

اللَّهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ لَيَجْمَعَنَّكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ ۚ وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ ٱللَّهِ حَدِيثًا ﴿٨٧﴾
“আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে কিয়ামতের দিনে একত্র করবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর আল্লাহর চেয়ে বেশি সত্য কথা কে বলতে পারে?”
— (সূরা আন্ নিসা, ৪:৮৭)


২. কিয়ামতের হঠাৎ আগমন

يَسْأَلُكَ ٱلنَّاسُ عَنِ ٱلسَّاعَةِ ۖ قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ ٱللَّهِ ۚ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ تَكُونُ قَرِيبًا ﴿٦٣﴾
“মানুষ তোমাকে কিয়ামতের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। বলো, কিয়ামতের জ্ঞান তো আল্লাহর কাছেই আছে। হয়তো কিয়ামত খুব কাছেই।”
— (সূরা আহ্‌যাব, ৩৩:৬৩)


৩. যেদিন সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে

يَوْمَ تَكُونُ ٱلسَّمَآءُ كَٱلْمُهْلِ ﴿٦﴾ وَتَكُونُ ٱلْجِبَالُ كَٱلْعِهْنِ ﴿٧﴾
“সেদিন আকাশ গলে যাওয়া তামার মতো হবে, আর পর্বতমালা হবে রং করা উলের মতো।”
— (সূরা আল-মাআরিজ, ৭০:৬-৭)


৪. পুনরুত্থান ও হিসাবের দিন

ثُمَّ إِنَّكُم بَعْدَ ذَٰلِكَ لَمَيِّتُونَ ﴿১৫﴾ ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ تُبْعَثُونَ ﴿١٦﴾
“এরপর নিশ্চয়ই তোমরা মৃত্যুবরণ করবে। তারপর কিয়ামতের দিন পুনরুত্থিত হবে।”
— (সূরা আল-মু’মিনূন, ২৩:১৫-১৬)


৫. সমগ্র সৃষ্টিই ধ্বংস হবে

كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ ﴿٢٦﴾ وَيَبْقَىٰ وَجْهُ رَبِّكَ ذُو ٱلْجَلَـٰلِ وَٱلْإِكْرَامِ ﴿٢٧﴾
“যে কেউ পৃথিবীতে আছে সে ধ্বংস হবে। আর তোমার প্রতিপালকের মুখমণ্ডলই অবশিষ্ট থাকবে, যিনি মহিমান্বিত ও সম্মানের অধিকারী।”
— (সূরা আর-রাহমান, ৫৫:২৬-২৭)


📜 সহীহ হাদীসে কিয়ামতের নিঃসন্দেহ বার্তা

১. কিয়ামত আসবে হঠাৎ করে

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ‏:‏
‏”تُقَاتِلُكُمُ السَّاعَةُ فَجْأَةً، وَأَنْتُمْ تُصْلِحُونَ مَوَازِينَكُمْ، وَتَأْكُلُونَ طَعَامَكُمْ، وَتَبِيعُونَ وَتَشْتَرُونَ”.

“কিয়ামত হঠাৎ তোমাদের উপর এসে যাবে, যখন তোমরা তোমাদের পাল্লা ঠিক করছ, খাবার খাচ্ছ, বিক্রি করছ ও কিনছ।”
— (সহীহ বুখারী: ١٠٣٦)


২. সদকা দেওয়া থেকে বিরত না থাকো, কিয়ামত এলেও

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ‏:
‏”إِنْ قَامَتِ السَّاعَةُ وَفِي يَدِ أَحَدِكُم فَسِيلَةٌ، فَإِنِ اسْتَطَاعَ أَنْ لَا تَقُومَ حَتَّى يَغْرِسَهَا فَلْيَغْرِسْهَا”

“যদি কিয়ামত কায়েম হয়ে যায় আর তোমার হাতে একটি খেজুর গাছের চারা থাকে, তবে যদি সম্ভব হয় তা রোপণ করে ফেলো।”
— (মুসলিম: ৬৭৫৯)


৩. কিয়ামতের বড় বড় নিদর্শনসমূহ

عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ‏:‏
‏”إِنَّ السَّاعَةَ لَا تَقُومُ حَتَّى تَرَوْا عَشْرَ آيَاتٍ…”

“নিশ্চয় কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষণ না তোমরা দশটি বড় নিদর্শন দেখবে…”
এরপর তিনি দাজ্জাল, সূর্য পশ্চিম থেকে উদয়, ইমাম মাহদী, ইয়াজুজ-মাজুজ, ধোঁয়া, পশু, তিনটি ভূমিধস (পূর্ব, পশ্চিম, আরব উপদ্বীপে), আগুন — এসবের কথা বলেন।
— (সহীহ মুসলিম: ২৯০১)

📘 বাংলা অনুবাদ:

হুযাইফা ইবন আসীদ আল-গিফারী (রাযিয়াল্লাহু ‘আনহু) বর্ণনা করেন,
একদিন নবী করীম ﷺ আমাদের কাছে উপস্থিত হলেন, যখন আমরা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছিলাম।
তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কী আলোচনা করছো?”
তারা বলল, “আমরা কিয়ামতের আলোচনা করছি।”
তিনি বললেন:

“কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে না যতক্ষণ না তোমরা এর আগে দশটি নিদর্শন দেখতে পাও:

১. ধোঁয়া (الدُّخَانُ),
২. দাজ্জাল (الدَّجَّالُ),
৩. জানোয়ার (الدَّابَّةُ),
৪. সূর্যের পশ্চিম দিক থেকে উদয় হওয়া (طُلُوعُ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا),
৫. ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)-এর অবতরণ (نُزُولُ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ),
৬. ইয়াজুজ ও মাজুজ (يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ),
৭. পূর্বাঞ্চলে ভূমিধ্বস (خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ),
৮. পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধ্বস (خَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ),
৯. আরব উপদ্বীপে ভূমিধ্বস (خَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ),
১০. এবং সর্বশেষ নিদর্শন হবে — ইয়েমেন থেকে আগুন বের হবে, যা মানুষকে তাদের মহাশরণভূমির দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে।”**

📚 (সহীহ মুসলিম, হাদীস: 2901)


✅ কিয়ামতের দশটি বড় নিদর্শন বিস্তারিতভাবে:

📜 হাদীসের আরবি মূল:

**عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ أُسَيْدٍ الْغِفَارِيِّ، قَالَ: اطَّلَعَ النَّبِيُّ ﷺ عَلَيْنَا وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ، فَقَالَ: «مَا تَذَاكَرُونَ؟» قَالُوا: نَذْكُرُ السَّاعَةَ، قَالَ: «إِنَّهَا لَنْ تَقُومَ حَتَّىٰ تَرَوْا قَبْلَهَا عَشْرَ آيَاتٍ:
الدُّخَانُ، وَالدَّجَّالُ، وَالدَّابَّةُ، وَطُلُوعُ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا، وَنُزُولُ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ﷺ، وَيَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ، وَثَلَاثَةُ خُسُوفٍ: خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ، وَخَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ، وَخَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ، وَآخِرُ ذَٰلِكَ نَارٌ تَخْرُجُ مِنَ الْيَمَنِ، تَطْرُدُ النَّاسَ إِلَىٰ مَحْشَرِهِمْ»
📚 [সহীহ মুসলিম, হাদীস: 2901]


১. الدُّخَانُ — ধোঁয়া

কিয়ামতের আগমনের একটি নিদর্শন হলো এক ভয়াবহ ধোঁয়া যা সমগ্র পৃথিবী ঢেকে ফেলবে। মুমিনগণ এতে সামান্য প্রভাবিত হবে, কিন্তু কাফিরদের জন্য এটি হবে ভয়ানক শাস্তির রূপ।

📖 القرآن الكريم:

فَٱرْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِى ٱلسَّمَآءُ بِدُخَانٍۢ مُّبِينٍ ﴿١٠﴾ يَغْشَى ٱلنَّاسَ ۖ هَـٰذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ ﴿١١﴾
“অপেক্ষা কর, যেদিন আকাশ স্পষ্ট ধোঁয়া আনবে, যা মানুষকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে — এটা হবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।”
— (সূরা আদ্-দুখান, ৪৪:১০–১১)


২. الدَّجَّالُ — দাজ্জাল

সবচেয়ে ভয়ানক ফিতনা, যার আগমন হবে কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে। সে নিজেকে ঈশ্বর দাবি করবে, এবং অসাধারণ মিরাকল দেখাবে।

📜 হাদীস:

مَا بَيْنَ خَلْقِ آدَمَ إِلَىٰ قِيَامِ السَّاعَةِ أَمْرٌ أَكْبَرُ مِنَ الدَّجَّالِ
“আদম (আঃ) থেকে কিয়ামত পর্যন্ত দাজ্জালের চেয়ে বড় কোনো ফিতনা নেই।”
— (সহীহ মুসলিম: 2946)


৩. الدَّابَّةُ — জন্তু (পৃথিবী থেকে বের হওয়া প্রাণী)

এটি কাবা শরীফ থেকে বের হবে এবং মানুষের মুখে সিল মেরে দিবে— কারা মুমিন ও কারা কাফির তা স্পষ্ট হবে।

📖 القرآن الكريم:

وَإِذَا وَقَعَ ٱلْقَوْلُ عَلَيْهِمْ أَخْرَجْنَا لَهُمْ دَآبَّةًۭ مِّنَ ٱلْأَرْضِ تُكَلِّمُهُمْ أَنَّ ٱلنَّاسَ كَانُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَا لَا يُوقِنُونَ ﴿٨٢﴾
“যখন তাদের ওপর আমার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে, তখন আমরা তাদের জন্য মাটি থেকে একটি প্রাণী বের করব, যা মানুষের সঙ্গে কথা বলবে, যে তারা আমার নিদর্শনে বিশ্বাস করত না।”
— (সূরা আন্-নামল, ২৭:৮২)


৪. طُلُوعُ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا — সূর্যের পশ্চিম থেকে উদয় হওয়া

যেদিন সূর্য পশ্চিম থেকে উদয় হবে, তখন তওবা আর কবুল হবে না।

📖 الحديث:

لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّىٰ تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا، فَإِذَا طَلَعَتْ آمَنَ النَّاسُ أَجْمَعُونَ، فَذَٰلِكَ حِينَ لَا يَنفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا
— (সহীহ বুখারী: ٤٢١٣, সহীহ মুসলিম: ১৫৮)


৫. نُزُولُ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ — ঈসা (আঃ)-এর আগমন

ঈসা (আঃ) দাজ্জালকে হত্যা করবেন এবং পৃথিবীতে ন্যায় বিচার কায়েম করবেন।

📖 الحديث:

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمُ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا عَدْلًا
“সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, শিগগিরই মারইয়ামের পুত্র তোমাদের মাঝে ন্যায়পরায়ণ বিচারক হিসেবে আগমন করবেন।”
— (সহীহ বুখারী: ৩৪৪৮)


৬. يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ — ইয়াজুজ ও মাজুজ

মানবজাতির এক ভয়ঙ্কর ধ্বংসাত্মক গোষ্ঠী যারা পুনরায় মুক্ত হয়ে পড়বে ঈসা (আঃ)-এর সময়কালে।

📖 القرآن الكريم:

حَتَّىٰٓ إِذَا فُتِحَتْ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَهُم مِّن كُلِّ حَدَبٍۢ يَنسِلُونَ ﴿٩٦﴾
“যখন ইয়াজুজ ও মাজুজ মুক্ত করা হবে এবং তারা প্রতিটি উচ্চস্থান থেকে নেমে আসবে।”
— (সূরা আল-আম্বিয়া, ২১:৯৬)


৭-৯. ثَلَاثَةُ خُسُوفٍ — তিনটি স্থানে ভূ-ধ্বস

১) পূর্বে, ২) পশ্চিমে, ৩) আরব উপদ্বীপে। এই ভূ-ধ্বসগুলো হবে অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক এবং মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি।


১০. نَارٌ تَخْرُجُ مِنَ الْيَمَنِ — ইয়েমেন থেকে আগুন বের হওয়া

এ আগুন মানুষকে মহাশরণভূমির দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে, যেখানে কিয়ামতের হিশাব শুরু হবে।

📜 হাদীস:

وَآخِرُ ذَٰلِكَ نَارٌ تَخْرُجُ مِنَ الْيَمَنِ، تَطْرُدُ النَّاسَ إِلَىٰ مَحْشَرِهِمْ
“সবচেয়ে শেষ নিদর্শন হবে ইয়েমেন থেকে আগুন বের হওয়া, যা মানুষকে মহাশরণভূমিতে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে।”
— (সহীহ মুসলিম: ২৯০১)

🕌 প্রথম প্রশ্ন:

“রাসূল ﷺ আঙ্গুল দেখিয়ে বললেন, কিয়ামত এতই নিকটবর্তী…” — এই হাদীস কি সহীহ?

হ্যাঁ, এই হাদীসটি সহীহ এবং বহু নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত।

🔹 হাদীসের মূল বর্ণনা (সহীহ বুখারী ও মুসলিম):

عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ:
«بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةُ كَهَاتَيْنِ» وَيُشِيرُ بِإِصْبَعَيْهِ فِيَضُمُّهُمَا

📚 [সহীহ বুখারী, হাদীস: 4936; সহীহ মুসলিম, হাদীস: 2951]


🗣️ বাংলা অনুবাদ:

সহল ইবন সা’দ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ
“আমাকে এবং কিয়ামতকে এ দুটো (আঙ্গুলের মতো) একসাথে পাঠানো হয়েছে।”
এ কথা বলে তিনি তাঁর তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দেখিয়ে খুব কাছাকাছি করে দেখান।


🔎 হাদীসের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা:

রাসূলুল্লাহ ﷺ বোঝাতে চেয়েছেন যে,
তিনি যেহেতু সর্বশেষ নবী, তাই তাঁর আগমনের পর কিয়ামতের সময় খুব কাছাকাছি এসেছে।
তাঁর ও কিয়ামতের মাঝে আর কোনো নবী আসবে না।
অর্থাৎ, নবুওয়তের যুগের সমাপ্তি মানেই কিয়ামতের যুগ শুরু।
সেদিক থেকে এই সময়কালকে ‘নিকটবর্তী’ বলা হয়েছে।


📘 দ্বিতীয় প্রশ্ন:

“কিয়ামত কীভাবে কাছে হলো? তো ১৪৪৫+ বছর তো পার হয়ে গেছে!”

🕰️ উত্তর: কিয়ামতের সময় ‘আল্লাহর স্কেলে’ আমাদের সময়ের মতো নয়।

কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:

📖 وَإِنَّ يَوْمًا عِندَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ

“তোমরা যে দিনগুলো গণনা করো, তোমার রবের কাছে একটি দিন এক হাজার বছরের সমান।”
📚 [সূরা হাজ্জ: 47]

👉 মানুষের দৃষ্টিতে ১৪৪৫ বছর অনেক, কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টিতে তা মাত্র দেড় দিন
তাই রাসূল ﷺ যখন বলেন কিয়ামত কাছে, সেটা আল্লাহর সময় স্কেল অনুযায়ী একদম সঠিক।


🧠 আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক:

রাসূল ﷺ যুগে কিয়ামতের কিছু ছোট নিদর্শন (أشراط الساعة الصغرى) শুরু হয়ে গেছে:

  • রাসূল ﷺ-এর আগমন,

  • দাসীর নিজ মনিব জন্ম দেওয়া (বুখারীর হাদীস),

  • লম্বা অট্টালিকা নির্মাণ (আজকের দুনিয়ায় স্পষ্ট),

  • ফিতনা, হত্যা বৃদ্ধি,

  • সময় দ্রুত চলে যাওয়া…

এসব নিদর্শন শুরু হয়ে গেছে, এখন কেবল অপেক্ষা কিয়ামতের বড় নিদর্শনগুলোর,

📌 উপসংহার

কিয়ামত এমন একটি চূড়ান্ত বাস্তবতা, যা প্রত্যেক ঈমানদারকে সদা প্রস্তুত থাকতে বাধ্য করে। এটি হঠাৎ আসবে — কেউ জানে না কখন। কাজেই, এই বিশ্ব ও আখিরাতের চূড়ান্ত পরিণতি জানার পর আমাদের উচিত, আমল করা, আত্মশুদ্ধি অর্জন করা, এবং আল্লাহর নিকট প্রত্যাবর্তনের জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকা।


🕋 اللَّهُمَّ اجْعَلْنَا مِنَ الْمُسْتَعِدِّينَ لِيَوْمِ ٱلْقِيَامَةِ وَٱجْعَلْنَا فِي زُمْرَةِ ٱلرَّاشِدِينَ. آمِينَ

✍️ লিখেছেন:মাহবুব ওসমানী


মাহবুব ওসমানী — একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক এবং IslamiDawahCenter.com এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 

To learn more, comment below or message us on wa.me/+966549485900 or  wa.me/+8801716988953 or call us at +44-73801-27019. Email at hi@islamidawahcenter.com

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।