Bees in Quran – মৌমাছি নিয়ে কুরআন থেকে গবেষণা করে যিনি নোবেল পেয়েছেন ।

 

Bees in Quran

 

 

 

বিংশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, মৌমাছি দুই রকমের। যথাঃ

(১) পুরুষ মৌমাছি এবং
(২) স্ত্রী মৌমাছি

পুরুষ মৌমাছিদের কাজ হল সন্তান উৎপাদন কার্যে স্ত্রী মৌমাছিদের সহায়তা করা, গৃহ (মৌচাক) নির্মাণ, গৃহ পাহারা দেওয়া, ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা ইত্যাদি। আর স্ত্রী মৌমাছিদের কাজ হল শুধু সন্তান উৎপাদন করা।

শেক্সপিয়ারের রচিত নাটক ‘Henry The Fourth’ এর একপর্যায়ে বলা হয়েছে, পুরুষ মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে এবং তাদের একজন রাজা থাকে। এই রাজা মৌমাছির কাছে দিনশেষে সব সৈনিক মৌমাছিদের কৈফিয়ত দিতে হত যে সারাদিন তারা কি কি কাজ করেছে।

শেক্সপিয়ারের সময়কার লোকদের মৌমাছি নিয়ে এই ধারণা ছিল।

অষ্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী  ‘Karl Von-Frisch’  ১৯৭৩ সালে তার ‘Physiology or Medicine’ বিষয়ে সফল গবেষণার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। ‘মৌমাছির জীবনচক্র’ ছিল তার গবেষণার বিষয়।

এই গবেষণা করতে গিয়ে তিনি এমন সব আশ্চর্যজনক জিনিস মানুষের সামনে নিয়ে এলেন যা শেক্সপিয়ারের সময়কার পুরো ধারণাকে পাল্টে দিলো। ফটোগ্রাফি এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে তিনি প্রমাণ করেন যে, মৌমাছি আসলে তিন প্রকার।

প্রথমটি হলো- স্ত্রী মৌমাছি।এই মৌমাছিদেরকে বলা হয় ‘Queen Bee’।  এদের কাজ শুধু সন্তান উৎপাদন করা।

দ্বিতীয়টি হল- পুরুষ মৌমাছি। এরা শুধু স্ত্রী মৌমাছিদের প্রজনন প্রক্রিয়া সহায়তা করে।

তৃতীয়টি হল- কর্মী মৌমাছি।এরাও স্ত্রী মৌমাছি কিন্তু প্রাকৃতিকভাবেই এরা ‘বন্ধ্যা’ হয়ে থাকে। মধু সংগ্রহ করা, মৌচাক নির্মাণসহ তাদের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করে থাকে এই কর্মী স্ত্রী মৌমাছিরা।এদেরকে ‘Queen Bee’ বলা হয় না,এদেরকে  ‘Worker Bee’ বলা হয়।

তাছাড়া  ‘Karl Von-Frisch’ আরো  প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে, কর্মী মৌমাছি যখনই কোন নতুন ফুলের বাগান বা উদ্যানের সন্ধান পায় সাথে সাথে সে গিয়ে  অন্য কর্মী মৌমাছিদের এই নতুন ফুলের বাগান বা উদ্যানের সঠিক দিকনির্দেশনা জানিয়ে দেয়। তিনি এটার নাম দিয়েছেন ‘Waggle Dance’।

‘Karl Von-Frisch’ এই পুরো বিষয়ের উপর একটি বইও লিখেছেন যার নাম ‘The Dancing Bees’।

এ বিষয়ে কুরআন কি বলে এখন দেখা যাক-

পবিত্র কুরআনে ‘সূরা আন-নাহল’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা রয়েছে।এই সূরার ৬৮ নাম্বার আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন,

 

وَاَوۡحٰی رَبُّکَ اِلَی النَّحۡلِ اَنِ اتَّخِذِیۡ مِنَ الۡجِبَالِ بُیُوۡتًا وَّمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا یَعۡرِشُوۡنَ ۙ 

 

 

আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেনঃ পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরী কর।

 

লক্ষণীয় যে,এখানে সন্তান জন্মদানের কথা বলা হচ্ছে না বরং গৃহ (মৌচাক) নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে। ‘Karl Von-Frisch’ বলেছেন মৌচাক নির্মাণের কাজ করে স্ত্রী কর্মী মৌমাছি।

আরবিতে পুরুষ মৌমাছির জন্য ব্যবহৃত শব্দ হলো ‘ইত্তাখিজ’ আর স্ত্রী মৌমাছির জন্য ব্যবহৃত শব্দ হলো ‘ইত্তাখিজি’। উপরের আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ‘ইত্তাখিজ’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘ইত্তাখিজি’  শব্দ ব্যবহার করেছেন। তাহলে নিশ্চিতভাবে বুঝা যায়, এই আয়াতে  মৌমাছির  প্রতি যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই স্ত্রী মৌমাছির জন্য। যদি এই নির্দেশ পুরুষ মৌমাছির জন্য  হত তাহলে উক্ত আয়াতে ‘ইত্তাখিজি’ ব্যবহার না করে ‘ইত্তাখিজ’ শব্দ ব্যবহার করা হত। আর যদি ‘ইত্তাখিজ’  শব্দ ব্যবহার হত তাহলে সেটা আরবি ব্যাকরন অনুসারে ভুল তো হতোই,  আধুনিক বিজ্ঞান  অনুসারেও সেটা ভুল প্রমাণ হত।(মৌমাছি নিয়ে কোরআনের আয়াত)

কারণ ‘Karl Von-Frisch’  প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে মধু সংগ্রহ করা, মৌচাক নির্মাণ এগুলো পুরুষ মৌমাছি নয় বরং স্ত্রী মৌমাছি করে থাকে। সুবহানাল্লাহ!! বিজ্ঞান  যা জানতে পারলো ১৯৭৩ সালে কুরআন তা কত আগেই সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছে।

 

সূরা নাহলের ৬৯ নাম্বার আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন,

ثُمَّ کُلِیۡ مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسۡلُکِیۡ سُبُلَ رَبِّکِ ذُلُلًا ؕ یَخۡرُجُ مِنۡۢ بُطُوۡنِہَا شَرَابٌ مُّخۡتَلِفٌ اَلۡوَانُہٗ فِیۡہِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ 

(আন নাহল – ৬৯)

এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার সহজ পথে  চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।

 

এই আয়াতে,

খাবার এর ক্ষেত্রেঃ আরবি ‘কুল’ পুরুষবাচক; আর ‘কুলি’ মহিলা বাচক। কিন্তু পবিত্র কুরআনের ‘কুলি (মহিলা বাচক)’ ব্যবহার হয়েছে।

পথ অনুসরণঃ আরবি ‘উসলুক’ পুরুষবাচক; আর ‘উসলুকি’ মহিলা বাচক। কিন্তু পবিত্র কুরআনে ‘উসলুকি (মহিলা বাচক)’ ব্যবহার হয়েছে।

তাদের পেটঃ আরবি ‘বুতুনিহিম’ পুরুষবাচক; আর ‘বুতুনিহা’ মহিলা বাচক। কিন্তু পবিত্র কুরআনে ‘বুতুনিহা (মহিলা বাচক)’ ব্যবহার হয়েছে।

যদি মহান আল্লাহ তা’য়ালা বা রাসূল (স) এর মাধ্যমে এদের পুরুষ বলা হত তাহলে এতদিনে পবিত্র কুরআনকে ভুল বলে আখ্যা দেওয়া হত!!

এখন আসি, এই আয়াতে আল্লাহ কেন বললেন ‘আপন পালনকর্তার সহজ পথে চলমান হও’। এটাকে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা যায় ‘মৌমাছির নৃত্য (Waggle Dance)’ এর সাহায্যে।

‘Karl Von-Frisch’ প্রমাণ করেছেন যে, একটি কর্মী মৌমাছি যখন নতুন কোন ফুলের উদ্যানের সন্ধান পায়, সাথে সাথে সে অন্য কর্মী মৌমাছিদের ঐ উদ্যান সম্পর্কে অবহিত করে। মৌমাছিটি ঠিক যে পথে গিয়ে সেই ফুলের উদ্যানের সন্ধান পায়, অন্যদেরও ঠিক একই পথের সন্ধান দেয়। মৌমাছিটি পথের এই সন্ধান দানে কোনোরকম হেরফের করে না।ঠিক যে পথে গিয়ে দেখেছে, তাই-ই অন্যদের জানায়।এটাই তাদের জন্য সহজ পথ নয় কি? ‘Karl Von-Frisch’ এর ভাষায় এটি হল ‘Waggle Dance’। কুরআনও ঠিক একই কথা বলছে।সঠিক যে পথ,য তারা জানে,যা তার জন্য সহজ এবং যা অন্যান্যদের জন্যও সহজ। (মৌমাছি নিয়ে কুরআন থেকে গবেষণা)

আয়াতে আরো বলা হয়েছে, ‘তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার’।

আমরা আগে জানতাম,মৌমাছি বিভিন্ন ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে অতঃপর তা সরাসরি মৌচাকে মজুদ করে রাখে।কিন্তু বিজ্ঞান কিছুদিন আগে প্রমাণ করেছে,মধু মৌমাছির শরীর থেকে বের হয়।যা কুরআনের উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে । কুরআন আরো বলেছে মধুর ওষুধীগুণের কথা।আজ আমরা জানতে পেরেছি, মধুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর খাদ্যগুণ,ভিটামিন কে আর ফ্রুক্টোজ, আরো আছে মাঝারি এন্টিসেপ্টিক গুণ।পুড়ে যাওয়া বা কেটে যাওয়া জায়গায় মধু লাগিয়ে রাখলে কোন রকম ইনফেকশন হয় না বরং কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বালাপোড়া ভাব কমে যায়।

মহান আল্লাহ তা’য়ালা কত সুন্দর এবং নিখুঁতভাবে দুই আয়াতের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন।

 

Post Credit: https://shottanneshon.blogspot.com/

IDC Partner

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

Islami Dawah Center Cover photo

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )