রুকইয়া সংক্রান্ত কিছু হাদিস, সংশয় ও পর্যালোচনা / Some-Hadiths-Regarding-Ruqyah

 

 

Some-Hadiths-Regarding-Ruqyah

 

 

রুকইয়া সংক্রান্ত কিছু হাদিস, সংশয় ও পর্যালোচনা / Some-Hadiths-Regarding-Ruqyah

বিসমিল্লাহ। রুকইয়া অর্থাৎ মন্ত্র পড়া, ঝাড়ফুঁক করা, তাবিজ-কবচ মাদুলি এসবও হয়। তবে শাব্দিক অর্থ যাইহোক, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে পারিভাষিক অর্থ, বা এই শব্দটি আরবরা কোন অর্থে ব্যবহার করে সেটা। রুকইয়া বলতে বুঝায় ঝাড়ফুঁক করা। সেটা যেমন ইসলামি পদ্ধতিতে হতে পারে, আবার শিরকি কুফরি পদ্ধতিতেও হতে পারে। এখন কিছু কিছু হাদিসে রুকইয়ার ব্যাপারে কঠিন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যেমনটা তাবিজ-মাদুলি বা রক্ষা কবচের ক্ষেত্রে হয়েছে। তবে হাদিসের গ্রন্থসমূহ খুললে আবার আমরা এর বিপরীতও দেখতে পাই, কখনো দেখা যায় জিবরীল আমিন এসে রাসুল স.কে রুকইয়া করেছে, কখনো দেখা যায় রাসুল স. নিজেই রুকইয়া করেছেন, এক্সোরসিজম করেছেন, এমনকি কখনো সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন – “এর নজর লাগছে, কোরআন দিয়ে ঝাড়ফুঁক করো!” এখন একজন সাধারণ মুসলিম পাঠক যখন এই দুধরনের হাদিস পাশাপাশি দেখেন, তিনি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ব্যাপারটা আসলে কি? এটা জায়েজ নাকি নাজায়েজ?

 

সুনানে আবু দাউদে দেখা যাচ্ছে রাসুলুল্লাহ স. বলছেন- ‘রুকইয়াহ শিরক’ আবার বুখারির হাদিসে দেখা যাচ্ছে সাহাবাদের রুকইয়া করার ঘটনা শুনে রাসুল স. হাসছেন, এর পারিশ্রমিকে নিজের জন্যও অংশ রাখতে বলছেন। মানে এখানে শুধু রুকইয়া করা না, বরং এজন্য পারিশ্রমিক নেয়ার বৈধতাও দিচ্ছেন। বিরাট কনফিউজিং ব্যাপার তাইনা? চলুন আজ এই ব্যাপারটা পরিষ্কার হওয়া যাক। প্রথম হাদিসটা বুখারির, সারকথা এমন- একদিন রাসুল স. কথা প্রসঙ্গে বললেন, আমার উম্মাতের মাঝে বিরাট এক জামাত কোন হিসাব-কিতাব ছাড়াই জান্নাতে যাবে, তাদের সংখ্যা ৭০,০০০! …. সাহাবা রা. মাঝে কেউ জিজ্ঞেস করল, এরা কারা হবে? রাসুল স. বললেন- “যারা আগুনের ছ্যাঁক দিয়ে চিকিৎসা করেনি, রুকইয়া করায়নি, শুভ অশুভ লক্ষণ মানেনি। বরং কেবল আল্লাহর ওপরেই ভরসা করেছে।” এখন এই হাদিসটা দেখে অনেকে ধারনা করেন, তাহলে কাউকে দিয়ে রুকইয়া করালে কি আর জান্নাতে যাওয়া যাবেনা? এক্ষেত্রে আলেমদের দুটি মত আছে- 

 

প্রথমত: কেউ এই হাদিসের তাবিল করে বলেন, এখানে রুকইয়া বলতে শিরকি রুকইয়া উদ্দেশ্য। তাঁরা নিজেদের মতের পক্ষে মুসলিম শরিফের হাদিসটি উল্লেখ করেন- “রাসুলুল্লাহ স. বলেছেন, রুকইয়ার মাঝে যদি শিরক না থাকে তবে কোনও সমস্যা নেই”। প্রথমে এই মতটা আমিও মেনে নিয়েছিলাম, কিন্তু কেন যেন তৃপ্তি পাইনি… . দ্বিতীয়ত: যারা একান্ত প্রয়োজন ছাড়া তাবিল করা অনুচিত মনে করেন, এমন মুহাদ্দিসিনদের ভিন্ন মত। আমার উস্তায জুনাইদ বাবুনগরি [হাফিযাহুল্লাহু ওয়ানাফা’না বিউলুমিহি কাসিরান কাসিরা..] আমাদের বুখারির দরসে এই হাদিস পড়ানোর সময় বলেছেন- “আলোচ্য হাদিসে ‘রুকইয়া’ শব্দটি দ্বারা জায়েজ না জায়েজ সব রুকইয়া-ই উদ্দেশ্য, রাসুল স. শুধু রুকইয়া বলেছেন, এখানে পার্থক্য আবিষ্কার করা অনুচিত। তবে…. এটা আজীমাতের কথা বলেছেন! অর্থাৎ রুকইয়া করানো নিঃসন্দেহে জায়েজ! (কারণ জিবরীল আ. রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রুকইয়া করেছেন, রাসুল স. নিজে করেছেন অন্যদের, সাহাবাদের অনুমতি দিয়েছেন) অনুরূপভাবে এই হাদিসে বলা ছ্যাঁক দিয়ে চিকিৎসা করাও দরকার হলে জায়েজ, এব্যাপারে কারো দ্বিমত নাই। তবে আজিমত বা উঁচু স্তরের ঈমানের দাবী হচ্ছে, কেউ যদি এসব কিছুই না করে, বরং স্রেফ আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল করে জীবন পার করে দেয়। তবে তাদের জন্য ওঁই সৌভাগ্যবান ৭০ হাজারের মাঝে একজন হবে, যাদেরকে আল্লাহ বিনা হিসাবে জান্নাত দিবেন।” হুজুরের মুখে এই তাওযিহ শোনার পর আমার খুব খুব বেশি খুশি লেগেছে। মনে হল যেন রূহকে শুধু খাবার নয়, বরং হাইফাই কোন রেস্তোরায় আনলিমিটেড পিজ্জা অফার করা হয়েছে! অন্যান্য হাদিস যেখানে বলা হয়েছে রুকইয়া শিরক, সেসবের কি হবে? এক্ষেত্রেও দুই ধরণের মতামত দেখা যায়, প্রথমত: তাবিল। উনারা বলেন ‘এখানে জাহিলি জামানার শিরকি – কুফরি রুকইয়া উদ্দেশ্য। কোরআনের আয়াত অথবা হাদিসে বর্ণিত দোয়া দিয়ে ঝাড়ফুঁক করলে শিরক হবে না।” সুন্দর তাবিল! তবে তাবিল না করেও এটার সামঞ্জস্য বিধান করা সম্ভব। একদল মুহাদ্দিসিনের মতে, রাসুল স. প্রথমত ফিতনা একদম বন্ধ করার জন্য সবধরনের ঝাড়ফুঁক নিষিদ্ধ করেছিলেন, এসব হাদিস সেই সময়ের। পরবর্তিতে বিভিন্ন দোয়া বা আয়াত শিখিয়েছেন, আস্তে আস্তে অনুমতি দিয়েছেন। জাহেলি জামানার ঝাড়ফুঁকও পাইকারি হারে হারাম বলে দেননি, বরং বলেছেন- “তোমাদের মন্ত্রগুলো আমার কাছে পেশ করতে থাকবে, (আমি যাচাই করে দেখব) যদি রুকইয়ার মাঝে শিরক না থাকে তাহলে কোনো সমস্যা নেই” (মুসলিম শরিফের হাদিস) যাবের রাদিয়াল্লাহু আনহুর অন্যান্য হাদিসেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। আশা করছি এব্যাপারটাও ক্লিয়ার। আরও বিস্তারিত জানতে এই লেখাটা পড়ে নিন –

 

রুকইয়াহ করলে কি জান্নাতে যাওয়া যাবে না?  

 

এখন প্রশ্ন আসে তাবিজের ব্যাপারে, ফাতওয়া যেটাই হোক! আমার দিলের কথা হচ্ছে ‘তাবিজ ব্যবহার করা উচিত না, চাই সেটা জায়েজ হোক বা শিরক’ উপরন্তু অনেক ভণ্ড কবিরাজকে দেখা যায় রুকইয়ার হাদিসগুলো শয়তানি তাবিজের দলিল হিসেবে ব্যবহার করতে। এটা কখনই সম্ভব না, হাদিস যেখান থেকে নিতে হয়, হাদিসের অর্থও সেখান থেকেই নিতে হয়। আপনি ১০০ বার মরে আবার জিন্দা হলেও প্রমাণ করতে পারবেন না রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা কোন সাহাবা রাযিয়াল্লাহু আনহু “ঘরঘর এঁকে তারমধ্যে ১২৩৪ সংখ্যা লিখে তাবিজ বানিয়েছেন, নিজে ব্যবহার করেছেন অথবা কাউকে ব্যবহার করতে দিয়েছেন”। আর অধিকাংশ (প্রোবাবলি ৯৯%) তাবিজে কুফরি-শিরকি কথাবার্তা তো থাকেই। এগুলো জায়েজ হওয়া তো কল্পনাতেও আসে না… এরপরের কথা হচ্ছে, ভাই খুব ভালোভাবে জেনে রাখেন, কোরআনের আয়াত দিয়ে ভয়াবহতম যাদু করা যায়! আর এসব সংখ্যা দিয়ে ঘর ঘর বোঝাই করা এগুলো শুধুমাত্র যাদু; আর কিচ্ছু না!! চাই কেউ সেটা জেনে লিখুক অথবা না জেনে লিখুক। এছাড়া কোরআন হাদিসের অন্যান্য দোয়া বা শুধু কোরআন এর আয়াত লিখে দেয়ার ব্যাপারে আলেমদের ফাতওয়া ফাতওয়া আছে সেসবে বিস্তারিত আলোচনা পাবেন। কিন্তু প্রিয় ভাই, বাস্তব কথা হচ্ছে তাবিজ যেমনই হোক, সেটা আপনার তাওয়াককুল নষ্ট করে। আর তাওয়াককুল হচ্ছে, ঈমানের অংশ।  

 

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার (রুকইয়াহ) হাদিয়া।

  • ঢাকার মধ্যে রুকইয়ার হাদিয়া প্রতি রোগী প্রথমবার ৫০০০ টাকা, ২য়/তয় বার ৪০০০ টাকা, আর ঢাকার বাহিরে হলে প্রথমবার ১০,০০০ টাকা, ২য়/৩য়  বার  ৮০০০ টাকা ।
  • বি. দ্রঃ খুব বেশি দূরত্ব, অসুস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বড় বেশি কঠিন রোগীর ক্ষেত্রে হাদিয়া আলোচনা সাপেক্ষে কম বেশি হতে পারে।
  • এই ইসলামিক চিকিৎসা পদ্ধতি দিয়ে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে, কোরআন হাদিসের চিকিৎসা সমাজে কায়েম করানো, আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে দীন-ইসলামের খাদেম হিসাবে কবুল করুন, আমীন, সুম্মা আমীন।

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

 

Islami Dawah Center Cover photo

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )

ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )