The importance of mother tongue in Islam – ইসলামের দৃষ্টিতে মাতৃভাষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
The importance of mother tongue in Islam – ইসলামের দৃষ্টিতে মাতৃভাষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
মায়ের ভাষার কথা বলা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। মাতৃভাষা মহান আল্লাহর অপার দান। এ ভাষা দিয়ে মানুষ নিজের মনের ভাষা প্রকাশ করে। তাই ইসলাম মায়ের প্রতি যেমন অকৃত্রিম শ্রদ্ধাবোধের শিক্ষা দিয়েছে, তেমনি মাতৃভাষার প্রতিও অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছে।
মহান আল্লাহ সব নবী-রাসূলকে স্ব-জাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছেন। যাতে তারা স্বীয় জাতিকে দ্বীনের দাওয়াত স্পষ্টভাবে পৌঁছাতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, আমি রাসূলগণকে তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি, যাতে তাদের (দ্বীন) স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন। -সূরা ইবরাহিম: ৪
কোরআনে মাজিদের এ আয়াত থেকে ইসলামের দৃষ্টিতে মাতৃভাষার গুরুত্ব প্রতিভাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বীনের পথে দাওয়াত দানকারীদের জন্য মাতৃভাষায় পারদর্শিতা অর্জনের নির্দেশনাও পাওয়া যায়। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি আপনার রবের পথে দাওয়াত দিন কৌশল ও উত্তম ভাষণের মাধ্যমে। ’ –সূরা নাহল: ১২৫
কোরআনের এসব বর্ণনা দ্বারা এ কথা বুঝতে বাকী থাকে না যে, স্বজাতিকে উত্তম ভাষণের মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়ার জন্য বিশুদ্ধ মাতৃভাষার ওপর পারদর্শিতা অর্জন অনিবার্য।
প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি আরবদের মধ্যে সবচে’ বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জলভাষী। ’ রাসূলের এ বাণী থেকে প্রমানিত হয়; বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জল মাতৃভাষায় কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করা রাসূল (সা.)-এর আদর্শ।
আল্লাহদ্রোহী সম্রাট ফেরআউনকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার লক্ষ্যে হজরত মুসা (আ.) নিজ ভাই হজরত হারুন (আ.) কে সঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন। কারণ হজরত হারুন (আ.) খুব সুন্দর ও স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে ও বুঝাতে পারতেন। এ প্রসেঙ্গে কোরআনে কারিমে এসেছে, ‘(হে প্রভূ) আমার ভ্রাতা হারুন আমার ছেয়ে সুন্দর ও স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারে। সুতরাং তাকে আমার সঙ্গে সাহায্যকারী হিসেবে প্রেরণ করুন। ’ –সূরা ক্বাসাস: ৩৪
তথাপি মহান আল্লাহর নিদর্শন হিসেবেও মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও যত্নবান হওয়া ঈমানি কর্তব্য। কোরআন মজিদের বর্ণনা অনুযায়ী ভাষা বৈচিত্র মহান আল্লাহর অনুপম নিদর্শন। পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে এক নিদর্শন এই যে, নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডলের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে। ’ –সূরা রুম: ২২
বর্ণিত এই আয়াত থেকে বুঝা যায়, আমাদের মাতৃভাষা বাংলাও মহান আল্লাহ পাকের নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত। তাই এ ভাষার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শনসহ যত্নশীল হওয়া আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও যত্নবান হওয়ার নির্দেশনায় শামিল।
আমি রাসূলগণকে তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি, যাতে তাদের (দ্বীন) স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন
আমি রাসূলগণকে তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করে প্রেরণ করেছি, যাতে তাদের (দ্বীন) স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি আমাদের ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল। মরিয়া হয়ে উঠেছিল উর্দূকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দিতে। তাদের এই অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে বাংলাভাষাভাষীরা গড়ে তুলেন তীব্র আন্দোলন। কিন্তু বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানে মুখরিত করে তুলেন রাজপথ। এই দূর্বার আন্দোলনে শামিল হয়ে মায়ের ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত উৎসর্গ করেন এদেশের বহু ছাত্র-জনতা।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সংগ্রামরত অবস্থায় পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে শাহাদতবরণ করেন বরকত, সালাম, জব্বার, শফিক ও রফিকসহ নাম না জানা আরও অনেক বীর সন্তানেরা। এভাবে মাতৃভাষার জন্য রক্তদান বা শাহাদত বরণের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার দীপ্ত শপথে উৎসর্গকৃত তাজা রক্তের বদৌলতে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি লাভ করে এবং রক্তে রঞ্জিত ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় ভূষিত হয়। আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা সৃষ্টিতে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনই প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে। ভাষা আন্দোলনের এই গৌরবোজ্জ্বল রক্তিম ইতিহাস জাতিকে অনুপ্রাণিত করবে যুগ থেকে যুগান্তরে এটি আমাদের প্রত্যাশা।
কিন্তু তিক্ত হলেও সত্য, যে লক্ষ্য, চেতনা ও আবেগ নিয়ে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল আন্দোলনের এতো বছর পরও এই সময়ের সে চেতনার প্রতিফলন তথা মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠাত লাভ করেনি। যে আবেগ ও প্রেরণা নিয়ে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল মাতৃভাষা বাংলার প্রতি নবপ্রজন্মের সেই ভালোবাসা নেই বলে মনে হচ্ছে। হিন্দি সিনেমা ও সিরিয়াল দেখে শিশুরা হিন্দি কথা বলতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। উচ্চবিত্তরা তাদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এটিকে অনেকে এক ধরণের আভিজাত্য বলে মনে করছেন।
বাংলা ভাষার প্রতি এ রকম উদাসীনতা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা ও ভাষা শহীদের আত্মত্যাগকে অবমূল্যায়ন করার শামিল নয় কি? এ জন্য কি ভিনদেশী ভাষা ও বিজাতীয় সংস্কৃতিকে ফ্যাশন হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা চালুকারী অতি প্রগতিবাদীরা দায়ী নয়?
তাই আসুন! ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত এই মাসে শপথ নিই, মায়ের ভাষাকে ভিনদেশী আগ্রাসনমুক্ত করার। পরিহার করি ভিনদেশী ভাষাকে ফ্যাশন হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা। রুখে দাঁড়াই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে। মাতৃভাষার বিশুদ্ধ চর্চা ও প্রয়োগে সচেষ্ট হই এবং বিশাল এ নিয়ামতের জন্য মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করি। সেই সঙ্গে যারা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে শাহাদাৎবরণ করেছেন তাদের রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করি।
লেখক: যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কক্সবাজার ইসলামী সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদ, ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: hi@islamidawahcenter.com The importance of mother tongue in Islam – মাতৃভাষায় ইসলাম চর্চার গুরুত্ব | ইসলামীদাওয়াহসেন্টার.কম | www.islamidawahcenter.com
মাতৃভাষায় ইসলাম চর্চার গুরুত্ব
পৃথিবীতে মানবজাতির আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ভাষার উৎপত্তি হয়েছে। প্রথম মানব ও নবী হজরত আদম (আ.) এবং হজরত হাওয়া (আ.) নিজেদের মনের কথা প্রকাশের জন্য বেহেশত থেকে আরবি ভাষা শিখে এসেছিলেন।
আল্লাহতায়ালা তাদের সবকিছুর নাম শিক্ষা দিয়েই তবে দুনিয়াতে পাঠান। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর তিনি (আল্লাহ) আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিয়েছেন। ’ -সূরা আল বাকারা : ৩১
ইসলামের শিক্ষা মানুষকে বিভিন্ন ভাষাচর্চায় দারুণভাবে উৎসাহিত করে ও বিশেষ অনুপ্রেরণা জোগায়। ইসলাম মাতৃভাষার উৎকর্ষ সাধনে যথাযথ গুরুত্বারোপ করেছে। জ্ঞানার্জন করতে হলে মানুষের অবশ্যই প্রয়োজনীয় ভাষাজ্ঞান থাকা জরুরি। প্রকৃত অর্থে জ্ঞানী-গুণী হতে হলে ভাষা সম্পর্কে ব্যাপক অনুশীলন করা উচিত। পড়াশোনার মাধ্যমে জ্ঞানার্জনের সঙ্গে ভাষাচর্চাও যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। কোরআনে কারিমের বিভিন্ন আয়াতে ভাষাচর্চার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোরআনে কারিমের নাজিলকৃত প্রথম আয়াত ‘ইক্বরা’য় জ্ঞানার্জনের জন্য মানবজাতির প্রতি উদাত্ত আহ্বান রয়েছে।
এ ছাড়াও আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক জাতির স্বীয় মাতৃভাষাকে যথাযথ মর্যাদা প্রদান করে নিজ নিজ জাতির নিজস্ব ভাষায় আসমানি কিতাবগুলো নাজিল করেছেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রধান প্রধান চারটি আসমানি কিতাবের মধ্যে হজরত মূসা (আ.)-এর প্রতি ‘তাওরাত’ হিব্রু ভাষায়, হজরত ঈসা (আ.)-এর প্রতি ‘ইঞ্জিল’ সুরিয়ানি ভাষায়, হজরত দাউদ (আ.)-এর প্রতি ‘যাবুর’ ইউনানি ভাষায় এবং শেষ নবী হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ‘কোরআনে কারিম’ আরবি ভাষায় নাজিল হয়।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মাতৃভাষা ছিল আরবি। তার কাছে সর্বশেষ আসমানি কিতাব ‘কোরআন’ নাজিল হয় আরবি ভাষায়। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মাতৃভাষায় কোরআন নাজিল হওয়া প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি কোরআনকে তোমার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে তুমি তা দিয়ে মুত্তাকিদের সুসংবাদ দিতে পার এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পার। ’ -সূরা মরিয়ম : ৯৭
আল্লাহতায়ালার একত্ববাদ ও রিসালাতের দাওয়াত সফলভাবে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে সেই এলাকার নিজস্ব ভাষায় প্রচার চালানো দরকার। এ ক্ষেত্রে দাওয়াত প্রদানকারীর প্রয়োজনীয় ভাষাজ্ঞান না থাকলে সফলভাবে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানো সহজ নয়; এটা অসম্ভবও বটে। যথার্থ ভাষাজ্ঞান না থাকলে দাওয়াতের দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। ইসলামী আদর্শ যেমন সর্বজনীন, ইসলামে ভাষা তেমনি সর্বজনীন। এভাবে ভাষা, বর্ণ ও আঞ্চলিকতার সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে ইসলাম চিরন্তন শাশ্বত সত্য-সুন্দর ধর্ম প্রচারে মাতৃভাষা চর্চার জোরালো তাগিদ দিয়েছে। কোরআনে কারিমে বুদ্ধিমত্তা ও উত্তম বাক্য দ্বারা ইসলাম প্রচারের আহ্বান জানিয়ে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে হিকমত (বিজ্ঞানসম্মত) ও সদুপদেশ দ্বারা আহ্বান কর এবং তাদের সঙ্গে সদ্ভাবে আলোচনা কর। ’ -সূরা আন নাহল : ১২৫
এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে যুগে যুগে ইসলাম ধর্মের মহান প্রচারকগণ পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করতে গিয়েছেন সেই অঞ্চলের ভাষা আয়ত্ত করেই তবে সে ভাষায় ইসলামের বাণী সেই অঞ্চলের মানুষের কাছে সহজ ও সাবলীলভাবে তুলে ধরেছেন। এভাবেই ইসলামের অগ্রযাত্রা সাধিত হয়েছে।
ইসলাম প্রচারকদের কেউ কেউ সেসব অঞ্চলের মাতৃভাষায় কোরআনে কারিম অনুবাদ করে অনুসারীদের মাঝে কোরআন-হাদিসের জ্ঞানদান করেছেন এবং ইসলামের বিধিবিধান ও নিয়মকানুন শিক্ষা দিয়েছেন। মাতৃভাষার প্রতি দ্বীন প্রচারকদের অত্যধিক গুরুত্বারোপের কারণে মুসলিম মননে জন্ম নিয়েছে মাতৃভাষার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা। মাতৃভাষার প্রতি এই অবারিত ভালোবাসার পরিপ্রেক্ষিতেই হয়তো ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার দেশবাসীর জন্য মাতৃভাষা ফারসিতে কোরআন অনুবাদ করার ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং তা নামাজে তেলাওয়াতের অভিমত প্রদান করেন। অবশ্য এ অভিমত তিনি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের স্বার্থে পরে প্রত্যাহার করে নেন। এ ঘটনায়ও ইসলামী পণ্ডিতদের মাতৃভাষা মূল্যায়নের প্রমাণ মেলে।
সব ভাষাই আল্লাহর দান। বাঙালি হিসেবে স্বভাবতই বাংলা ভাষা আমাদের প্রতি আল্লাহতায়ালার সেরা দান। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যে দেশের দামাল ছেলেরা নিজ ভাষা বাংলাকে রক্ষা করার জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। ভাষাশহীদদের এই আত্মদানে দেশবাসী তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু আমরা পরবর্তী সময়ে তাদের এই আত্মত্যাগকে কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারিনি।
ভাষা আন্দোলনের এত বছর পরে যখন বিশ্বের আনাচে-কানাচে অজস্র বাংলাভাষী ছড়িয়ে পড়েছে, তখনও আমরা বাংলা ভাষায় ইসলামকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছি। ইসলামের নান্দনিকতা ও সামগ্রিকতার সঙ্গে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারিনি। আমি মনে করি, এই ব্যর্থতার দায়ভার ইসলামী স্কলারদের। আমাদের সমাজের অনেককেই দেখা যায় যে, তারা ভালো আরবি বা ইংরেজি পারে না বলে তাদের দুঃখ আর আফসোস আছে অথচ তারা যে ভালো বাংলাও পারে না সে ব্যাপারে তাদের মনে কোনো দুঃখ নেই; অনুশোচনা নেই। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি এলেই কেবল আমাদের মাঝে ভাষাপ্রেমের চেতনা জাগ্রত হয়। একুশ আসে, একুশ যায়। কিন্তু সর্বস্তরে মাতৃভাষার চর্চা এখনও কাগুজেই রয়ে গেছে।
সুতরাং একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বাংলা ভাষার স্বকীয়তা রক্ষা করা আমাদের একান্ত অপরিহার্য। এ লক্ষ্যেই আমাদের মাতৃভাষাকে জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণের কাজে ব্যবহার করতে হবে। মাতৃভাষায় ইসলাম চর্চায় মনোযোগী হতে হবে। কোরআন-হাদিসসহ আরবি-উর্দু-ফার্সি ভাষার বিশাল ভাণ্ডার বাংলা ভাষায় অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে।
এ ছাড়া পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী ভাবধারা সমন্বিত সাহিত্য রচনা করে মাতৃভাষায় ইসলামের প্রচার-প্রসারে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি মানবতার সার্বিক কল্যাণে মাতৃভাষার চর্চা, অনুশীলন, সংরক্ষণ ও উৎকর্ষ সাধনে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রত্যেক নবী-রাসূল (আ.) নিজেদের মাতৃভাষায় মানুষের কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন এবং বিপথগামী মানুষকে চিরসত্য ও সুন্দরের পথে আহ্বান করেছেন। নবীর ওয়ারিশ হিসেবে আলেম-ওলামাদের এই পথ ও পদ্ধতি ছেড়ে দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: hi@islamidawahcenter.com The importance of mother tongue in Islam – মাতৃভাষায় ইসলাম চর্চার গুরুত্ব | ইসলামীদাওয়াহসেন্টার.কম | www.islamidawahcenter.com
আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।
আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।
আইডিসি মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আপনি আইডিসি মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.
আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।
কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।
ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।
বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।
আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী (এম. এ. ইন ইংলিশ)
Related Posts
Leave a Reply Cancel reply
Categories
- advices
- Ahle Hadis
- Allah
- Amal
- Arabic Communication
- Arabic Grammar
- Arif Azad
- Bangladesh
- Biography
- Child care
- Country
- Death
- Dowry
- Dua
- Education
- Eid
- Family
- Fasting
- Fatwa
- Gazwatul Hind
- Hadith
- Hajj
- Halal or Haram
- Humble
- Husband & Wife
- IDCM
- Iman
- Interest
- Islamic Books
- Islamic Days
- Islamic Economi
- Islamic Education
- Islamic FAQ
- Islamic Future
- Islamic History
- Islamic Lectures
- Islamic Life
- Islamic Politics
- Islamic Rules
- islamic song
- islamic story
- Jihad
- Jinn
- let's learn arabic
- Magic
- Marriage
- Mosque
- Motivation
- Muhammad SM
- Muslims
- News
- Parenting
- Patriotism
- Pending
- Personal Development
- Poet
- Pornography
- Press Release
- Prophets
- Quran
- Quran and Science
- Quran Interpretation
- Qurbani
- Relations
- Rizq
- Ruqyah
- Sacrifice
- Sadaqah
- Safety
- Sahaba
- Salah
- Salat
- Sex
- Sin
- Tajweed
- Taqwa
- Tasawwuf
- Tawba
- Tawhid
- Veil
- Weed
- Zakat
Recent Posts
- ব্যাংকে রাখা ফিক্সড ডিপোজিটের উপর কি প্রতি বছর যাকাত আবশ্যক? – Zakat on Fixed Deposit – সমিতির টাকার ওপর জাকাত আসবে কি? March 25, 2023
- Symptoms of Bad and Good Death – খারাপ এবং ভালো মৃত্যুর আলামত সমূহ March 20, 2023
- Taweez in Islam – ইসলামে তাবিজ জায়েজ হলেও কেন তাবিজ থেকে দূরে থাকা উত্তম? March 20, 2023
- Dua to be rich – ধনী হওয়ার দোয়া/আমল- আজ থেকেই শুরু হোক ধনী হওয়ার পথচলা March 7, 2023
- Islam has never encouraged polygamy – ইসলাম একাধিক বিয়েকে কখনো উৎসাহিত করে নি! January 9, 2023