Sahara Desert – সাহারা মরুভূমি – Savanna

 

আরবি ‘সাহার’ ( سَّاهِرَةِ ) শব্দের অর্থ হলো-মরুভূমি। সাহারা শব্দের অর্থ হলো- শ্রেষ্ঠ মরুভূমি। ধারণা করা হয়, প্রায় ১০,৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতো। এই সময়ের বেশ কিছু হ্রদ ও ছোট নদীর অবস্থানের প্রমাণ পাওয়া যায়। এই সময় এই অঞ্চলে গভীর অরণ্য ছিল। এই অঞ্চলে তখন আদিম মানুষের একটি অংশ বসবাস করতো। প্রায় ৭,৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে শুরু করে। এই সময় এর অরণ্য বিলুপ্ত হতে থাকে। ৫,০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে সাহারার মরুভূমিতে পরিণত হয়। এই সময় এই অঞ্চল জনশূন্য হয়ে পড়ে।

 

ভূবিজ্ঞানীরা সাহারা মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার পিছনে দুটি কারণ উল্লেখ করে থাকেন। কারণ দুটি হলো-

১৮ কোটি ৪০ লক্ষ পূর্বাব্দে, গোণ্ড্‌ওয়ানা মহামহাদেশর মধ্যাঞ্চলে ছিল আফ্রিকা। এই অংশ থেকে এ্যান্টার্ক্টিকা, মাদাগাস্কার, ভারত এবং অষ্ট্রেলিয়া পৃথক হয়ে গিয়েছিল। ৬.৬ কোটি খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে আফ্রিকা উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এই সময় আফ্রিকা ও ইউরোপের মাঝে ছিল টেথিস সাগর। পৃথিবীর পাত সঞ্চালনের সূত্রে আফ্রিকা ও ইউরোপ একীভূত হয়ে যায়। এই সময় আফ্রিকার উত্তরাংশ সঙ্কুচিত হয়ে সাগরপৃষ্ঠ থেকে উপরে উঠে যায়। এছাড়া আফ্রিকার স্থান পরিবর্তনের ফলে, মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তন ঘটে। উভয় মিলে সাহারার বনাঞ্চল ধ্বংস হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয়ে যায়।

প্রতি ২০ হাজার বছর পর পর পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে সামান্য উত্তর দিকে কাত হয়ে যায়। এর ফলে পৃথিবীর মৌসুমী বায়ুর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। এর ফলে সাহারাতে মৌসুমী বায়ু প্রবাহে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। মৌসুমী বায়ু প্রত্যাহার রীতির কারণে, সাহারায় বৃষ্টিপাত কমে যায় এবং ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয়।

সাহারার আয়তন
আফ্রিকার উত্তরাংশে বিশাল অংশ জুড়ে এই মরুভূমিটি অবস্থিত। এর পূর্বে লোহিত সাগর, উত্তরে ভূমধ্যসাগর, পশ্চিমে আট্‌লান্টিক মহাসাগর, দক্ষিণে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রায়-অনুর্বর শুষ্ক অঞ্চল সাহেল, আলজেরিয়া, চাদ, মিশর, লিবিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, নাইজার, পশ্চিম সাহারা, সুদান এবং তিউনিসিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল।

আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উষ্ণ মরুভূমি। ভূতাত্ত্বিকদের মতে যেখানে বৃষ্টিপাতের হার বছরে ১০ ইঞ্চির কম হয়ে থাকে, সেই অঞ্চলকে মরুভূমি বলা হয়। এই বিচারে আর্কটিক এবং এন্টার্কটিকা মহাদেশকেও মরুভূমি বলা হয়। এই দুটি মরুভূমিকে বলা হয় শীতল মরুভূমি। আয়তনের দিক থেকে সাহারা তৃতীয় স্থান দখল করে আছে। পরিসংখ্যানের বিচারে সাহারাকে তৃতীয় বৃহত্ত্বম মরুভূমি বলা হয়। উত্তর আফ্রিকার ৩১% অংশ জুড়ে সাহারা মরুভূমি অবস্থিত। এর আয়তন ৯০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। আর যদি এর সাথে বছরে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়া এলাকাগুলোকে যোগ করা যায়, তাহলে সাহারার মোট আয়তন দাঁড়াবে ১১০ লক্ষ বর্গকিলোমিটার।

 

সাহারার বালিয়াড়ি – সাহারার ভূপ্রকৃতি

সাহারা মরুভূমি মূলত পাথুরে মালভূমি ও বালির সমুদ্র দিয়ে গঠিত। ঢেউ খেলানো মরু বালি দ্বারা আবৃত এই মরুভূমির কোথাও কোথাও সুউচ্চ বালিয়াড়ি দেখা যায়। এদের বেশিরভাগের উচ্চতা ১৮০ মিটারের বেশি হয়ে থাকে। বাতাস এবং হাল্কা বৃষ্টিপাতের কারণে এ সকল বালিয়াড়ি তৈরি হয়ে থাকে। এর বুক জুড়ে রয়েছে প্রায় সমতল দীর্ঘ বালুকাময় প্রান্তর। এই প্রান্তরকে অনেক সময় বালির সাগর বলা হয়। এছাড়া রয়েছে বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু পর্বতমালা। এদের মধ্যে এয়ার পর্বতমালা, আহাগার পর্বতমালা, সাহারান অ্যাটলাস, তিবেস্তি পর্বতমালা, আদ্রার দে ইফোরাস এবং রেড সি হিলস উল্লেখযোগ্য।

সাহারা মরু অঞ্চলের বেশিরভাগই অনুর্বর। তাই বিশাল অঞ্চল জুড়ে গাছপালা দেখা যায় না। তবে ওয়াদিস এর মত মরুভূমির উত্তর এবং দক্ষিণ অংশসহ উঁচু এলাকাগুলোতে মরুদ্যান, তৃণভূমি, ঝোপঝাড় এবং কিছু গাছপালার দেখা পাওয়া যায়। মধ্য সাহারার এলাকাগুলোর মধ্যে তানেযরফ্ত, তেনেরে, লিবিয়ান মরুভূমি, পূর্বাঞ্চলের মরুভূমি, নুবিয়ান মরুভূমি এবং অন্যান্য এলাকাগুলো সাহারার সবচেয়ে শুষ্ক এলাকা। এসব অঞ্চলের কখনও কখনও স্থানে সারা বছরে কোন সময়েই বৃষ্টি হয় না।

 

সাহারার আবহাওয়া

সাহারা মরুভূমির আকাশ সাধারণত মেঘমুক্ত পরিষ্কার থাকে। দিনের স্থায়িত্ব কালও অত্যন্ত দীর্ঘ। এর বেশিরভাগ অংশ বছরে ৩,৬০০ ঘণ্টা বা ৮২% এর বেশি সূর্যরশ্মি পেয়ে থাকে এবং পূর্বাঞ্চলে এর পরিমাণ ৪,০০০ ঘণ্টা বা ৯১% এর বেশি। দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের আলো ও তাপের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া গাছ-পালা না থাকা, স্বল্প মাত্রার বৃষ্টিপাত এবং কম আর্দ্রতার ফলে সাহারা সবচেয়ে উত্তপ্ত মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। গ্রীষ্মে এই মরুভূমির প্রায় সব জায়গায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কোনো অঞ্চলে এই তাপামাত্রা ৪৬-৪৭ সেলসিয়াসে পৌঁছায়। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল আলজেরিয়ান মরুভূমির বোউ বারনোস শহরের দখলে, ৪৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এটিই এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি গড় তাপমাত্রার স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বাতাসের তাপমাত্রার চেয়ে মরুভূমির বালুর তাপমাত্রা আরও বেশি হয়ে থাকে। মধ্য সাহারার গাছপালাহীন মরু সাগরে বালির তাপমাত্রা প্রায় ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। উল্লেখ্য, সুদানে মরুবালুর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮৩.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। লিবিয়ার আল‍-আজিজিয়াকে পৃথিবীর উষ্ণতম স্থান।

বাতাসে কম আর্দ্রতা এবং আকাশে মেঘ স্বল্পতার কারণে মরুভূমিতে সাধারণত প্রতিদিন দিন ও রাতের তাপমাত্রার বিশাল পার্থক্য ঘটে। দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা কেবল প্রচলিত বিশ্বাস মাত্র। রাতের বেলা সাহারার দৈনিক গড় তাপমাত্রা সাধারণত ১৩ থেকে ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কখনও কখনও তাপমাত্রা উপকূলীয় এলাকায় ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নামে।

 

সাহারার জীব-বৈচিত্র্য

মরুভূমি হলেও সাহারার আছে মরু অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ভিত্তিক বিচিত্র জীবজগৎ। সাহারা মরুভূমিতে প্রায় ২৮০০ প্রজাতির বৃক্ষ দেখা যায়। এর প্রায় এক-চতুর্থাংশ সাহারার স্থানীয় উদ্ভিদ। এর ভিতরে মধ্য সাহারায় ৫০০ প্রজাতির গাছ। এর ভিতরে খেজুর, সাকুলেন্ট, মরুকাঁটা গাছই বেশি। এছাড়া রয়েছে মরুঘাস। মরুভূমির শুষ্ক পরিবেশ এবং মরু ঝড়ের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকার উপযোগী দৈহিক গঠন বিশেষভাবে এখানকার প্রায় সকল বৃক্ষের ভিতরে দেখা যায়। এদের কাণ্ডগুলো বেশ স্থূলকায় হয়ে থেকে। এদের শিকড়গুলো মাটির বেশ গভীরে প্রবেশ করে। গাছগুলোর পাতাগুলো হয় ছোট এবং মোটা। কাঁটাগাছগুলো পাতা অথবা কাঁটা যা আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।

 

ফেনেক ফক্স

 

সাহারা মরুভূমির প্রাণীকুলও বেশ সমৃদ্ধ। এখানে সাপ, গিরগিটি ও খেঁকশিয়ালের মত প্রাণী বাস করে। সাহারায় বেশ কয়েক প্রজাতির শিয়ালের বাস। তাদের মধ্যে ফেনেক ফক্স, পেল ফক্স এবং রুপেলস ফক্স অন্যতম। এডেক্স নামক বিশাল এন্টিলোপরা সাহারা মরুভূমিতে বাস করে। এরা পানি ছাড়া প্রায় এক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এছাড়া রয়েছে উট। আলজেরিয়া, তোগো, নাইজার, মালি, বেনিন এবং বুরকিনা ফাসো অঞ্চলে সাহারান চিতার দেখা মেলে। এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এরা সূর্যকিরণে বের হয় না। এই চিতাবাঘগুলো সাধারণত ফ্যাকাসে বর্ণের হয়। সাহারান চিতা ছাড়া অন্যান্য প্রজাতির চিতাগুলো চাদ, সুদান এবং নাইজারের পূর্বাঞ্চলে বাস করে। এছাড়া সাহারা মরুভূমিতে মনিটর লিজার্ড, হাইরেক্স, স্যান্ড ভাইপার, রেড-নেক অস্ট্রিচ, আফ্রিকান সিলভার বিল, ব্ল্যাক ফেইসড ফায়ারফিঞ্চ এবং কিছু সংখ্যক আফ্রিকান বুনো কুকুর বাস করে। মৌরিতানিয়া এবং এনেদি মালভূমিতে কিছু ছোট প্রজাতির কুমির বাস করে।

 

ডেথ স্টকার বিছা

 

এই মরুভূমির ভয়ঙ্কর প্রাণী হলো ডেথস্টকার বিছা। এরা প্রায় ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এই বিছার বিষে অনেক বেশি পরিমাণে এজিটক্সিন এবং সাইলাটক্সিন থাকে। এই বিষ সাপের বিষের মতই ভয়ঙ্কর। সাহারান সিলভার অ্যান্ট সাহারা মরুভূমির উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে এবং শিকারির কবল থেকে বাঁচার জন্য দিনে কেবল ১০ মিনিটের জন্য এরা আস্তানা থেকে বের হয়। সাধারণত পালিত পশু হিসেবে বিবেচ্য ড্রমেডেরি উট এবং ছাগলের দেখা মেলে সাহারা মরুভূমিতে। দ্রুত গতি এবং সহ্য ক্ষমতার জন্য এই দুই জাতের পশু যাযাবরদের কাছে জনপ্রিয়।

 

সাহারার অধিবাসী

সাহারার প্রান্তদেশ জুড়ে রয়েছে বহু আধুনিক শহর এবং জনঅধ্যুষিত অঞ্চল। দিনের উত্তাপ এবং রাতের শীতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আধুনিক ব্যবস্থায় বসবাস করে। এর বাইরে রয়েছে বেশ কিছু যাযাবর গোষ্ঠী। প্রায় ১০ হাজার আগে এই অঞ্চলে মানুষের বসতি ছিল। এই অঞ্চলের পাহাড়ের গুহায় আদিম মানুষের বসবাসের চিহ্ন (গুহাচিত্র ও পাথরের যন্ত্রপাতি) পাওয়া গেছে। এই সভ্যতা গড়ে তুলেছিল কিফিয়ান সংস্কৃতি জনগোষ্ঠী।

৫,০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে সাহারা মরুভূমিতে পরিণত হলে। এই সময় এই অঞ্চল প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। এর ভিতরে কিছু মানুষ মরুভূমিতে বেঁচে থাকার কৌশল আয়ত্ব করেছিল। এরা এই চরমভাবাপন্ন অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। এরা মূলত পশুচারণকারী। এরা ছাগল, ভেড়া, ও উট পালন করে এবং মরুভূমিতে জলের উৎসগুলো জানে। এরা স্থানান্তরে চলাচলের জন্য উট ব্যবহার করে। উল্লেখ্য মরুভূমির ভিতর দিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার উপযোগী উটকে বলা হয় ‘মরুভূমির জাহাজ’।

 

সাহারার খনিজ সম্পদ

সাহারার লিবিয়া ও আলজেরিয়া অংশে প্রচুর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া গেছে। তা ছাড়া এই মরুভূমিতে তামা, লোহা, ফসফেট ইত্যাদি অনেক খনিজ দ্রব্যও আছে।

সাহারা মরুভূমি – পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বালির স্তূপ, বিস্তার ও আয়তন

 

সাহারা মরুভূমি সোনালি বালির এক অপরূপ রাজ্য । পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উষ্ণ মরুভূমি এবং আয়তনের দিক থেকে ৩য় বৃহত্তম মরুভূমি। মরুভূমি বলতে সেই সব এলাকাকে বুঝায় যেখানে বৃষ্টিপাতের হার বছরে ১০ ইঞ্চির কম হয়ে থাকে। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী  আর্কটিক এবং এন্টার্কটিকা মরুভূমি হওয়ার শর্ত পূরণ করে। এই দুই মরুভূমির পরেই সাহারা মরুভূমির স্থান। তবে অনেক সময় সাহারা মরুভূমিকে ভুলবশত “পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মরুভূমি” হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বালির স্তূপ সাহারা মরুভূমি সম্পর্কে জানব শুকতারা Tv র এই পর্বে।

‘সাহারা’ শব্দটির অর্থ 

সাহারা শব্দের উৎপত্তি ঘটেছে আঞ্চলিক আরবি শব্দ “শাহরা” থেকে যার অর্থ “মরুভূমি। “সাহারা” শব্দের আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায় “শ্রেষ্ঠ মরুভূমি”।

সাহারা মরুভূমির বিস্তার

উত্তর আফ্রিকার বৃহদাংশ জুড়ে সাহারা মরুভূমির রাজত্ব। এই রাজত্বের পূর্বে লোহিত সাগর, উত্তরে মেডিটেরিয়ান সাগর এবং পশ্চিমে আছে আটলান্টিক সাগর। দক্ষিণে এই সীমানা ধরা হয়েছে সাহেল পর্যন্ত, এক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রায়-অনুর্বর শুষ্ক অঞ্চল। আলজেরিয়া, চাদ, মিশর, লিবিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, মরক্কো, নাইজার, পশ্চিম সাহারা, সুদান এবং তিউনিসিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল জুড়ে সাহারা মরুভূমি। বালির রাজ্য হলেও সাহারা মরুভূমির অনেকগুলো অংশ রয়েছে যেখানে কিছু পর্বতমালা এবং তৃণভুমি আছে।

সাহারা মরুভূমির আয়তন

উত্তর আফ্রিকার ৩১% অংশ জুড়ে সাহারা মরুভূমি অবস্থিত। এর আয়তন ৯ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার বা ৩,৫০০,০০০ বর্গমাইল। আর যদি বছরে ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়া এলাকাগুলোকে যোগ করা হয়, তাহলে সাহারার মোট আয়তন দাঁড়াবে ১১ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটারে বা ৪,২০০,০০০ বর্গমাইলে। সাহারা মরুভূমির মোট আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তনের প্রায় সমান।

সাহারা মরুভূমিকে কয়েকটি অঞ্চলে বিভক্ত করা যায়- পশ্চিম সাহারা, তিবেস্তি পর্বতমালা, এয়ার পর্বতমালা, তিনেরি মরুভূমি এবং লিবিয়ান মরুভূমি।

সাহারা মরুভূমির পিছনের ইতিহাস

সাহারা মরুভূমি সবসময় কিন্তু মরুভূমি ছিল না। ১০,০০০ বছর আগে সাহারার আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত আর্দ্র ও শীতল ছিল, বেশ কিছু হ্রদ ও ছোট নদীর অবস্থানের প্রমাণ পাওয়া যায়।আইস এজ এর পর সাহারার চিত্র আজকের শূন্য এবং শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হয়। তবে, প্রায় ১০,৫০০ বছর আগে আকস্মিক ভারি বৃষ্টিপাত এই মরুভূমিকে বাসযোগ্য মরু প্রান্তরে পরিণত করে। পরবর্তী ১০০ বছর নিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে সাহারায় জনবসতি বৃদ্ধি পায় এবং ছাগল ও ভেড়ার মত পশুপালন শুরু হয়। কিন্তু প্রকৃতি আবার তার রুক্ষতায় ফিরে আসে। প্রায় ৭,৩০০ বছর আগে বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করে এবং প্রায় ৫,৫০০ বছর আগে সাহারার জনবসতি পুনরায় নীলনদের উপত্যকায় ফিরে আসে।

বর্তমানে শুষ্ক মরুভূমি, এমন কিছু অঞ্চলের পাহাড়ের গুহায় আদিম মানুষের বসবাসের চিহ্ন (গুহাচিত্র ও পাথরের যন্ত্রপাতি) পাওয়া গেছে যা থেকে বোঝা যায় ঐ এলাকা থেকে এক সময়ে সহজে পানির নাগাল পাওয়া যেত।

মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে মাত্র দেড়শ কিলোমিটার দূরে সাহারা মরুভূমির একটি অংশের নাম ওয়াদি আল হিতান। আরবি ভাষায় ওয়াদি আল হিতান অর্থ তিমির উপত্যকা। প্রায় ৩৬ লক্ষ বছর আগে বিলুপ্ত ডোরাডান প্রজাতির তিমির জীবাশ্ম পাওয়া গেছে এখানে। সাহারা মরুভূমি যে অতীতে সমুদ্র ছিল তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ এই ওয়াদি আল হিতান। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জীবাশ্ম এখানেই পাওয়া গেছে।

সাহারা মরুভূমি কে দেখলে মনে হবে যেন প্রকৃতি থেকে সবুজ রং মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু সমুদ্র থেকে মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার পরও বহুবার, সাহারা মরুভূমি সজীব হয়ে উঠেছে। প্রতি ২০ হাজার বছর পর পর সাহারা মরুভূমি জলাভূমি ও তৃনভূমি তে পরিণত হয়। এর কারণ হল পৃথিবী তার নিজ অক্ষপথে প্রতি বিশ হাজার বছর পর পর সামান্য উত্তরে কাত হয়ে যায়। এরফলে পৃথিবীর মৌসুমী বায়ুর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। আর ঠিক সে সময়কালে সাহারা মরুভূমিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং এ অঞ্চল সবুজে পরিণত হয়। সর্বশেষ ৫ থেকে ৭ হাজার বছর আগে সাহারা অঞ্চলে মানুষ ও পশুপাখির বসবাস ছিল। ধারণা করা হয় ১৫ হাজার বছর পর সাহারা মরুভূমি আবারও সবুজ হয়ে উঠবে।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বালির স্তূপ

সাহারা মরুভূমি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বালির স্তূপ। এ মরুভূমির বালি দিয়ে সমগ্র পৃথিবীকে ৮ ইঞ্চি পুরু করে ঢেকে ফেলা যাবে। সাহারায় একবার বালিঝড় শুরু হলে তা টানা ৪ দিন পর্যন্ত চলতে পারে। এই বালিঝড়ের সাথে বয়ে আসা প্রচুর বালি তৈরী করে ছোট খাট বালির পাহার। এসব বালির পাহার প্রায় ১৫ তলা বিল্ডিংয়ের সমান উঁচু হতে পারে। মরুঝড়ের ফলে সৃষ্ট বালির পাহাড় গুলোও স্থায়ী নয়, এগুলোও বছরে প্রায় ৫০ ফুট পর্যন্ত স্থানান্তরিত হয়।

সাহারা মরুভূমির তাপমাত্রা

সাহারা মরুভূমিতে সূর্যের অবিরত অবস্থান, কম গাছ-পালা, স্বল্প বৃষ্টিপাত এবং কম আর্দ্রতার ফলে সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত মরুভূমি এবং গ্রীষ্মে সবচেয়ে উত্তপ্ত এলাকা  সাহার মরুভূমি। গ্রীষ্মে এই মরুভূমির প্রায় সব জায়গায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ১০০.৪ থেকে ১০৪.০ ডিগ্রী ফারেনহাইটে পৌঁছায়। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল আলজেরিয়ান মরুভূমির বোউ বারনোস শহরের দখলে, ৪৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ১১৬.৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিকে প্রতিদ্বন্দ্বী রেখে এটিই এই পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি গড় তাপমাত্রা।

মরুভূমির বালুর তাপমাত্রা আরও বেশি! দিনের বেলা বালু প্রচণ্ড গরম থাকে। ৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ১৭৬ ডিগ্রী ফারেনহাইটে উঠে যায় নিমেষেই! সুদানে বালুর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮৩.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস (১৮২.৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট)।

সাহারা মরুভূমিতে দিন ও রাতের তাপমাত্রার বিশাল পার্থক্য

বাতাসে কম আর্দ্রতা এবং আকাশে মেঘ স্বল্পতার কারণে মরুভূমিতে সাধারণত প্রতিদিন দিন ও রাতের তাপমাত্রার বিশাল পার্থক্য ঘটে। দিনে প্রচণ্ড গরম আর রাতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা কেবল প্রচলিত বিশ্বাস মাত্র। রাতের বেলা সাহারার দৈনিক গড় তাপমাত্রা সাধারণত ১৩ থেকে ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস অথবা ২৩.৪ থেকে ৩৬.০ ডিগ্রী ফারেনহাইট। কখনও কখনও তাপমাত্রা উপকূলীয় এলাকায়  ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ১৮ ডিগ্রী ফারেনহাইটের নিচে নামে, যেখানে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি।

সাহারা মরুভূমির জীব-বৈচিত্র্য

মরুভূমি হলেও সাহারার আছে মরু অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ভিত্তিক বিচিত্র জীবজগৎ। বৃষ্টিপাতের ভিত্তিতে সাহারার বৃক্ষরাজি বিভক্ত তিনটি প্রধান এলাকায়- উত্তরাঞ্চল (মেডিটেরিয়ান), মধ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চল। সাহারা মরুভূমিতে উদ্ভিদ জগতের প্রায় ২৮০০ প্রজাতির বৃক্ষের উপস্থিতি লক্ষণীয়। এই সংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ সাহারার স্থানীয় উদ্ভিদ। মধ্য সাহারায় ৫০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে যা এলাকার বিশালতার কাছে সামান্যই বটে। আকাসিয়া, খেজুর, সাকুলেন্ট, কাঁটাবন এবং ঘাসগুলো মরুভূমির শুষ্ক পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে- শক্তিশালী বাতাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে আকারে ছোট, শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখার জন্য স্থূলকায় কাণ্ড, পানির সন্ধান করার জন্য মাটির নিচে প্রশস্ত মূল এবং ছোট মোটা পাতা অথবা কাঁটা যা আর্দ্রতা ধরে রাখে।

সাহারা মরুভূমির খনিজ পদার্থ   

সাহারার লিবিয়া ও আলজেরিয়া অংশে প্রচুর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া গেছে। তা ছাড়া এই মরুভূমিতে তামা, লোহা, ফসফেট ইত্যাদি অনেক খনিজ দ্রব্যও আছে।

সাহারা মরুভূমির আবহাওয়া   

সাহারা মরুভূমিতে অত্যন্ত উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া লক্ষ্য করা যায়। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২০ সেমি-র বেশি হয় না। দিনে প্রচন্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা(প্রায় ৪°সে.)। কখনো কখনো পাহাড়ের চূড়ায় বরফও জমে থাকতে দেখা যায়। শীতকাল থেকে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সে. থেকে ৪৩ ডিগ্রী সে. পর্যন্ত ওঠানামা করে। লিবিয়ার আল‍-আজিজিয়া পৃথিবীর উষ্ণতম স্থান।

সাহারা মরুভূমির অধিবাসী

সাহারা মরুভূমিতে অধিকাংশই যাযাবর শ্রেণীর মানুষ বাস করে । তারা ছাগল, ভেড়া, ও উট পালন করে এবং জলের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। খেজুর, গম, বার্লি ইত্যাদি চাষ জীবনযাপন করে । স্থানীয় তুয়ারেগ জাতির মানুষেরা বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করে।

সাহারা মরুভূমির গাছপালা

সাহারা মরুভূমির কোনো কোনো জায়গায় ঘাস, গুল্ম ও ছোট গাছ দেখা যায়। জলের সন্ধানে গাছ গুলোর মূল মাটির খুব গভীরে পৌঁছায় এবং অনেক ক্ষেত্রেই বাতাস থেকে পাতার মাধ্যমে জল গ্রহণ করে। আর্টেজীয় কূপের সাহায্যে জলসেচ করে সাহারা মরুভূমিতে কৃষিকাজ করা হয়।

সাহারা মরুভূমির পশুপাখী

সাহারা মরুভূমির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রাণী হলো উট ।যাযাবর ও পণ্যবাহকেরা যাতায়াতের জন্য উট ব্যবহার করে। একে ‘মরুভূমির জাহাজ’ বলা হয়। সাহারা মরুভূমিতে সাপ, গিরগিটি ও খেঁকশিয়ালের মত প্রাণী বাস করে। ৭০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৯০ প্রজাতির পাখি, ১০০ প্রজাতির সরীসৃপ আর কিছু আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীর বসবাস করে সাহারা মরুভূমিতে।

সাহারা মরুভূমি – QNA

  1. সাহারা” শব্দের আক্ষরিক অর্থ কি ?

Ans: সাহারা” শব্দের আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায় “শ্রেষ্ঠ মরুভূমি”।

  1. ওয়াদি আল হিতান এর অর্থ কি ?

Ans: আরবি ভাষায় ওয়াদি আল হিতান অর্থ তিমির উপত্যকা।

  1. ‘মরুভূমির জাহাজ’ কাকে বলা হয়? 

Ans: উট কে ‘মরুভূমির জাহাজ’ বলা হয়।

  1. সাহারা মরুভূমিতে বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নির্দেশক হিসেবে কারা কাজ করে?

Ans:স্থানীয় তুয়ারেগ জাতির মানুষেরা বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করে।

  1. পৃথিবীর উষ্ণতম স্থান কোনটি ?

Ans: লিবিয়ার আল‍-আজিজিয়া পৃথিবীর উষ্ণতম স্থান।

  1. পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বালির স্তূপ কোনটি ?

Ans: পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বালির স্তূপ হলো সাহারা মরুভূমি ।

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  এই লিংক দুটি ( লিংক০১ ও লিংক০২ ) ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

 

Islami Dawah Center Cover photo

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )

ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )