Importance of Durood Sharif – দরুদ শরীফের ফজিলত ও গুরুত্ব

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -১ম পর্ব দেখুন:[1 to 9]

★১. রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পাঠ করে, আল্লাহ্ তাআলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করেন, আর যে আঁমার উপর দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করে আল্লাহ্তা আলা তার প্রতি একশত রহমত নাযিল করেন। যে আঁমার উপর একশবার দরূদে পাক প্রেরণ করে, আল্লাহ্ তাআলা তার উভয় চোখের মধ্যখানে লিপিবদ্ধ করে দেন, এ বান্দা নিফাক ও দোযখের আগুণ থেকে মুক্ত। আর কিয়ামতের দিন তাকে শহীদদের সাথে রাখবেন।”

[মুজামুল আওসাত, ৫ম খন্ড, ২৫২ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ২৭৩৫]

★২. রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর সারা দিনে পঞ্চাশ বার দরূদ শরীফ পড়ে, আঁমি কিয়ামতের দিন তার সাথে মুসাফাহা করব (অর্থাৎ- হাত মিলাব)।”
[আল কুরবাতু ইলা রব্বিল আলামীন, লি ইবনে বশিকওয়াল,৯০ পৃষ্ঠা,হাদিস নং ৯০]

★৩. নূরে মুজাস্সাম, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যে ব্যক্তি আঁমার উপর সারা দিনে এক হাজার বার দরূদে পাক পাঠ করে, সে যতক্ষণ না নিজের স্থান জান্নাতের মধ্যে দেখে নেবে,ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবে না।”

[আত্তারগীব ফি ফাযায়িলিল আমাল লি ইবনে শাহিন,১৪ পৃষ্ঠা,হাদিস নং ১৯]

★৪. রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর জুমার দিন দরূদ শরীফ পড়বে আঁমি কিয়ামতের দিন তার জন্য সুপারিশ করব।”
[জমউল জাওয়ামি লিস্ সূয়ুতী,৭ম খন্ড, ১৯৯ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ২২৩৫২]

★৫.নূরে মুজাস্সাম রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর জুমার রাত ও জুমার দিনে একশ বার দরূদ শরীফ পাঠ করে,আল্লাহ্ তাআলা তার একশটি হাজত পূরণ করবেন।৭০টি আখিরাতের আর ৩০টি দুনিয়ার।”
[শুয়াবুল ঈমান,৩য় খন্ড,১১১ পৃষ্ঠা,হাদিস নং ৩০৩৫]

★৬. রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন,যে ব্যক্তি আঁমার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনার্থে দরূদ শরীফ পেশ করে,আল্লাহ পাক সেই দরূদ শরীফ দ্বারা একজন ফেরেশতা তৈরি করেন, যার একটি পাখা থাকবে পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে আর একটি পাখা থাকবে পশ্চিম প্রান্তে,তার পদযুগল জমিনের স্প্তম স্তরে (যা সর্ব নিম্ন স্তর) দন্ডায়মান হবে। আর তার গর্দান আরশের ছায়াতলে পৌঁছবে, আল্লাহ পাক সেই ফেরেস্তাকে বলবেন, তুমি আঁমার বান্দার প্রতি দরূদ প্রেরণ করতে থাক, যেমন সে আঁমার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর প্রতি দরূদ শরীফ প্রেরণ করেছে। অত:পর সে কিয়ামত পর্যন্ত সে ব্যক্তির প্রতি দরূদ পেশ করতে থাকবে।

[দালায়েলুল খায়রাত,বঙ্গানুবাদ, গাউসিয়া পাবলিকেশন্স, লেখক, আল্লামা আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে সোলায়মান যাজুলী (রহ), অনুবাদ- মাও. মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, পৃষ্ঠা-12]

★৭. রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম,ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পাঠ করে,আল্লাহ তা’আলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করেন।”
[মুসলিম, ২১৬ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৪০৮]

★৮. রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন: “কিয়ামতের দিন আঁমার নিকটতম ব্যক্তি সেই হবে,যে দুনিয়ায় আঁমার উপর বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ পড়েছে।”

[তিরমিযী, ২য় খন্ড,২৭ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৪৮৪]

★৯. রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি আঁমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পড়ে,আল্লাহ তা’আলা তার উপর দশটি রহমত নাযিল করেন এবং তার আমল নামায় দশটি নেকী লিখে দেন।”

[তিরমিযী,২য় খন্ড, ২৮ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৪৮৪]

★১০. হুজুরপূর নূর (ﷺ) ইরশাদ করেন: “মুসলমান যতক্ষণ পর্যন্ত আঁমার উপর দরূদে পাক পড়তে থাকে,ফিরিশতারা তার উপর রহমতরাজি নাযিল করতে থাকে, এখন বান্দার মর্জি সে কম পড়ুক– কিংবা বেশি।”
[ইবনে মাজাহ,১ম খন্ড, ৪৯০ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৯০৭]

★১১. আল্লাহর হাবীব হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান,“আঁমার উপর অধিক হারে দরূদ শরীফ পাঠ কর,নিশ্চয় আঁমার উপর তোমাদের দরূদ শরীফ পাঠ করা তোমাদের জন্য পবিত্রতা।”
[মুসনাদে আবি ইয়ালা,৫ম খন্ড,৪৫৮ পৃষ্ঠা, হাদীস-৬৩৮৩]

★১২. হযরত সায়্যিদুনা উবাই বিন কা’ব(রা:) আরজ করলেন যে, আমি (সমস্ত ভির্দ, ওয়াজিফা ছেড়ে দেব আর) নিজের পরিপূর্ণ সময় দরূদ শরীফ পাঠ করাতে ব্যয় করব। তখন রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করলেন: “তা তোমার পেরেশানী সমূহ দূর করার জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।”

[তিরমিযী, ৪র্থ খন্ড,২০৭ পৃষ্ঠা, হাদীস- ২৪৬৫]

 

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -২য় পর্ব দেখুন:

★১৩. নূরে মুজাস্সাম,রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর সকালে দশ বার ও সন্ধ্যায় দশ বার দরূদ শরীফ পাঠ করে, তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ নসীব হবে।”
[মাজমাউয যাওয়ায়িদ, ১০ম খন্ড, ১৬৩ পৃষ্ঠা, হাদীস- ১৭০২২]

★১৪. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন নিশ্চয় জিব্রাইল (আ:) আঁমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন: “যে (ব্যক্তি) আঁপনি صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উপর দরূদ শরীফ পড়ে, আল্লাহ তাআলা তার উপর রহমত নাযিল করেন।আর যে আঁপনি صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এঁর উপর সালাম প্রেরণ করে,আল্লাহ্ তাআলা তার উপর নিরাপত্তা নাযিল করেন।”

[মুসনাদে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, ১ম খন্ড, ৪০৭ পৃষ্ঠা,হাদিস- ১৬৬৪]

★১৫. আবার এরকম বর্ননাও রয়েছে। হযরত আবু তালহা (রাঃ), রাসূল (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন- তিঁনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বললেন, হযরত জিব্রাইল (আ:) এ মাত্র আঁমার নিকট এসে বলেন- আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন- হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আঁপনি কি একথায় আনন্দিত হবেন না যে,আঁপনার কোন উম্মত যদি আঁপনার প্রতি একবার দুরূদ শরীফ পড়ে,তাহলে আঁমি তাঁর উপর ১০টি রহমত নাযিল করি।আর যদি একবার আঁপনাকে সালাম দেয়,তাহলে আঁমি তার উপর ১০টি সালামতি (নিরাপত্তা বিধান) নাযিল করি।

[আহমদ-৪র্থ খন্ড,পৃষ্টা-৩০,বাগাভী- ৩য় খন্ড,পৃষ্টা-১৯৬]

★১৬. হুজুরপূর নূর (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যে এটা বলে: اَللّٰهُمَّ صَلِّى عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّاَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ المُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ তার জন্য আঁমার সুপারিশ ওয়াজিব হয়ে যাবে।”
[মুজাম কবীর,৫ম খন্ড,২৫ পৃষ্ঠা, হাদিস- ৪৪৮০]

অনুবাদ: হে আল্লাহ্! হযরত মুহাম্মদ এর উপর রহমত নাযিল কর এবং তাঁকে কিয়ামতের দিন তোমার দরবারে নৈকট্যতম স্থান প্রদান কর।

★১৭. রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) কিতাবে আঁমার উপর দরূদ পাক লিখেছে, যতক্ষণ পর্যন্ত আঁমার নাম তাতে থাকবে,ফিরিশতারা তার জন্য ইস্তিগফার (অর্থাৎ- ক্ষমা প্রার্থনা) করতে থাকবে।”

[মুজাম আওসাত,১ম খন্ড, ৪৯৭ পৃষ্ঠা, হাদিস-১৮৩৫]

★১৮. রাহমাতুল্লীল আলামীন নবিজী (ﷺ) ইরশাদ করেন: “হে লোকেরা! নিশ্চয় কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা এবং হিসাব নিকাশ থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে সেই ব্যক্তি,যে তোমাদের মধ্যে আঁমার উপর দুনিয়াতে অধিক হারে দরূদ শরীফ পাঠ করে থাকে।”

[আল ফিরদৌস বিমাসুরিল খাত্তাব, ৫ম খন্ড,২৭৭ পৃষ্ঠা,হাদিস-৮১৭৫]

★১৯. নূরে মুজাস্সাম,রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “আঁমার প্রতি অধিক হারে দরূদ শরীফ পাঠ কর,নিশ্চয় আঁমার প্রতি তোমাদের দরূদ শরীফ পাঠ করা, তোমাদের গুনাহের জন্য মাগফিরাত স্বরূপ।”

[ইবনে আসাকির,৬১তম খন্ড,৩৮১ পৃষ্ঠা]

★২০. নূরে মুজাস্সাম,রাসূলে খোদা (ﷺ) ইরশাদ করেন: জিব্রাইল (আ:) আঁমাকে আরজ করলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন: “হে মুহাম্মদ! আঁপনি কি এ কথার উপর সন্তুষ্ট নন যে,আঁপনার উম্মত আঁপনার উপর এক বার সালাম প্রেরণ করবে,আর আঁমি তার উপর দশ বার সালাম প্রেরণ তথা শান্তি বর্ষণ করব?”
[নাসায়ী, ২২২ পৃষ্ঠা,হাদিস-১২৯২]

★২১. রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পাঠ করে,আল্লাহ্ তাআলা তার উপর দশটি রহমত বর্ষণ করেন, দশটি গুনাহ ক্ষমা করেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।”

[নাসায়ী, ২২২ পৃষ্ঠা,হাদিস-১২৯৪]

★২২.রাহমাতুল্লীল আলামীন নবীজী (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা পোষণকারী যখন দু’জন বন্ধু পরস্পর সাক্ষাত করে। ও মুসাফাহা করে (অর্থা- হাত মিলায়) আর প্রিয় নবী,রাসুলে আরবী দেব আর) নিজের পরিপূর্ণ সময় দরূদ শরীফ পাঠ করতে ব্যয় করব। তখন ছরকারে মদীনা (ﷺ) এঁর উপর দরূদ পাক পাঠ করে,তবে তারা উভয়ে পরস্পর পৃথক হবার পূর্বে আগের ও পরের গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।”

[মুসনাদে আবি ইয়ালা,৩য় খন্ড, ৯৫ পৃষ্ঠা,হাদীস-২৯৫১]

★২৩. আল্লাহ পাকের প্রিয় মাহবুব, হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) ইরশাদ করেন “নামাযের পর হামদ,সানা ও দরূদ শরীফ পাঠকারীকে বলা হয়: দোয়া কর,কবুল করা হবে। প্রার্থনা কর, প্রদান করা হবে।”

[নাসায়ী,২২০ পৃষ্ঠা,হাদিস- ১২৮১]

★২৪. অদৃশ্যের সংবাদ দাতা,নবী করীম রাউফুর রাহীম (ﷺ) ইরশাদ করেন “যে ব্যক্তি আঁমার প্রতি ভালবাসা ও আগ্রহের কারণে প্রতিটি দিন ও রাতে তিন তিন বার করে দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আল্লাহ্ তা’আলা তার বদান্যতার দায়িত্বে একথা অপরিহার্য করে নেন যে, তিঁনি তার ওই দিন ও রাতের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।”
[মু’জামুল কবীর, ১৮তম খন্ড, ৩৬২ পৃষ্ঠা, হাদিস- ৯২৮]

 

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -৩য় পর্ব দেখুন:

★২৫. রহমতে আলম, নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) একথা পছন্দ করে যে,আল্লাহ্ তা‘আলার মহান দরবারে পেশ হবার সময় আল্লাহ্ তাআলা তার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন, তবে তার উচিত আঁমার উপর বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করা।”

[ফিরদৌসুল আখবার,বিমাসুরিল খাত্তাব, ২য় খন্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠা,হাদিস- ৬০৮৩]

★২৬. রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) আঁমার উপর এক বার দরূদে পাক পাঠ করে, আল্লাহ্ তাআলা তার জন্য এক ‘ক্বীরাত’ পরিমাণ সাওয়াব লিখে দেন। ক্বীরাত হচ্ছে: উহুদ পর্বতের সম-পরিমাণ।”
[মুসান্নিফে আবদুর রাজ্জাক,১ম খন্ড,৩৯ পৃষ্ঠা,হাদিস-১৫৩]

★২৭. আল্লাহ পাকের প্রিয় মাহবুব,হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) ইরশাদ করেন “ফরয হজ্ব আদায় করো,নিশ্চয় এটির সাওয়াব বিশটি যুদ্ধে (গাযওয়া) অংশগ্রহণ করার চেয়েও বেশি,আর আঁমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পাঠ করা,এটার সমপরিমাণ সাওয়াব।”
[ফিরদৌসুল আখবার,বিমাসুরিল খাত্তাব,১ম খন্ড, ৩৩৯ পৃষ্ঠা, হাদিস- ২৪৮৪]

★২৮. সুলতানে দো-আলম,নূরে মুজাস্সাম (ﷺ) ইরশাদ করেন: “কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার আরশের ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না।তিন ব্যক্তি (ঐ দিন) আল্লাহ তা‘আলার আরশের ছায়ায় থাকবে। আরজ করা হল: ইয়া রাসুলাল্লাহ (ﷺ) তারা কারা হবে? তিঁনি ইরশাদ করলেন:

*(ক.) ঐ ব্যক্তি যে আঁমার উম্মতের পেরেশানী দূর করে।
*(খ.) আঁমার সুন্নাতকে জীবিতকারী
*(গ.) আঁমার উপর অধিক পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠকারী।”
[আল বাদূরুস সাফিরাতু লিস্ সূয়ুতী,১৩১ পৃষ্ঠা, হাদিস- ৩৬৬]

★২৯. রহমতে আলম,হুজুরপূর নূর (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে ব্যক্তি এটা বলে: جَزَ اللهُ عَنّا مُحَمَّدًا مَّا هُوَ اَهْلُه ৭০ জন ফিরিশতা এক হাজার দিন পর্যন্ত তার জন্য নেকী লিখতে থাকে।”
[মুজাম আওসাত,১ম খন্ড, ৮২ পৃষ্ঠা, হাদিস- ২৩৫]

অনুবাদ: আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের পক্ষ থেকে হযরত মুহাম্মদকে এমন প্রতিদান প্রদান করুন,যেটার তিঁনি উপযুক্ত।

★৩০. রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন “আঁমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করো,আল্লাহ তা’আলা তোমাদের উপর রহমত নাযিল করবেন।”
[আল কামিলু লিইবনে আছি,৫ম খন্ড, ৫০৫ পৃষ্ঠা]

★৩১. নূরে মুজাস্সাম (ﷺ) ইরশাদ করেন: “যখন তোমরা রাসুলগণদের عَلَيْهِمُ السَّلَام উপর দরূদ পাক পড়ো, তখন আঁমার উপরও দরূদ শরীফ পাঠ করো,নিশ্চয় আঁমি সমস্ত জাহানের প্রতিপালকের রাসুল।”
[জমউল জাওয়ামি লিস্ সূয়ুতী,১ম খন্ড, ৩২০ পৃষ্ঠা, হাদিস- ২৩৫৪]

★৩২. একদা হযরত সায়্যিদুনা শায়খ আবূ বকর শিবলী (রহ:) বাগদাদ শরীফের বিজ্ঞ আলিম হযরত সায়্যিদুনা আবূ বকর মুজাহিদ (রহ:) এর নিকট তাশরীফ নিলেন। হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর মুজাহিদ (রহ:) তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন আর কপালে চুমু দিয়ে খুবই সম্মানের সাথে নিজের পাশে বসালেন। সেখানে উপস্থিত লোকেরা আরয করলেন: হে সায়্যিদী! আপনি ও বাগদাদের অধিবাসীরা এতদিন যাবৎ তাঁকে পাগল বলে আসছেন কিন্তু আজকে কেন তাঁকে এমন সম্মান দেখালেন?

জবাবে বললেন: আমি এমনিতেই এরূপ করিনি। الحمد لله عزوجل ! আজ রাতে আমি স্বপ্নে এরূপ ঈমান তাজাকারী দৃশ্য দেখেছি যে, হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর শিবলী (রহ:) বারগাহে রিসালাত (ﷺ) এ উপস্থিত হয়েছেন,তখন ছরকারে দো-আলম, নূরে মুজাস্সাম,নবী করীম (ﷺ) দাঁড়িয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন আর কপালে চুমু দিয়ে তাঁর পাশে বসালেন। আমি আরয করলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ (ﷺ) শিবলীর প্রতি এরূপ দয়া প্রদর্শনের কারণ কি?

আল্লাহর মাহবুব (ﷺ) (অদৃশ্যের সংবাদ দিয়ে) বললেন: সে প্রত্যেক নামাযের পর এ আয়াত পাঠ করে:

لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ

আয়াত পাঠ করার পর আমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করে।
[আল কাওলুল বদী,৪৬ পৃষ্ঠা, মু’সিসাতুর রাইয়ান, বৈরুত]

★৩৩. রহমতে আলম,নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন: “যে (ব্যক্তি) কুরআন পড়লো এবং আপন প্রতিপালকের প্রশংসা করলো, অতঃপর আঁমার উপর দরূদে পাক পড়লো,তারপর নিজ প্রতিপালক থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করল,তবে সে মঙ্গলকে সেটার জায়াগা থেকে তালাশ করে নিলো।”
[শুয়াবুল ঈমান,২য় খন্ড,৩৭৩ পৃষ্ঠা, হাদিস-২০৮৪]

★৩৪. হযরত ওমর ফারুক (রা:) বলেন, “দু’আ আসমান ও যমীনের মধ্যখানে ঝুলন্ত থাকে! তা থেকে কিছুই ওপরে যায়না (অর্থাৎ দু‘আ কবুল হয় না) যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি আঁপন নবীর উপর দুরূদ পাঠ কর।”
[জামে তিরমিযী,২য় খন্ড,পৃ:২৮, হাদিস নং-৪৮৬]

★৩৫. রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন “আঁমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করে তোমরা তোমাদের মজলিশ সমূহকে সজ্জিত করো,কেননা তোমাদের দরূদে পাক পাঠ করা কিয়ামতের দিন তোমাদের জন্য নূর হবে।”
[ফিরদৌসুল আখবার,১ম খন্ড,৪২২ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ৩১৪৯]

★৩৬. হযরত সায়্যিদুনা শায়খ আহমদ ইবনে মনসুর (রহ:) যখন ওফাত প্রাপ্ত হন, তখন একজন শীরাযবাসী তাঁকে স্বপ্নে দেখলেন-তিনি শীরাযের জামে মসজিদের মেহরাবে দাঁড়ানো।আর তাঁর পরনে ছিলো উন্নতমানের পোশাক। মাথার উপর মুক্তা খচিত তাজ শোভা পাচ্ছিলো।স্বপ্নে যে দেখেছে সে স্বপ্নদ্রষ্টা আরয করল,“হযরত কেমন আছেন?”

তিনি বললেন, “আল্লাহ তা’আলা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং আমার উপর দয়া করেছেন। আমাকে তাজ পরিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করিয়েছেন।” লোকটি বললো, “কি কারণে?” বললেন, আমি তাজেদারে মদীনা হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উপর বেশি পরিমাণে দুরূদে পাক পড়তাম, বস্তুত: এই আমলটা কাজে এসেছে।”
[আল কাউলূল বদী,পৃ: ২৫৪]

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -৪র্থ পর্ব দেখুন:

★৩৭. আল্লাহর মাহবুব,হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) ইরশাদ করেন “যে ব্যক্তি আঁমার উপর প্রতিদিন হাজার বার দুরুদে পাক পাঠ করলো,সে যতক্ষণ পর্যন্ত আপন ঠিকানা জান্নাতকে না দেখবে,ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবেনা।”

[আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব,২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩২৮ পৃঃ ২২নং হাদীস]

★৩৮. অসাধারণ মাদানী মুন্নী হযরত সায়্যিদুনা শায়খ মুহাম্মদ ইবনে সোলায়মান জাযুলী (রহ:) বলেন: আমি সফরে ছিলাম।এক স্থানে আসার পর নামাযের সময় হয়ে গেল।সেখানে একটি কূপ ছিল,কিন্তু বালতি আর রশি ছিল না। আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম, তখনি একটি ঘরের উপর হতে এক মাদানী মুন্নী আমাকে আড়াল হতে দেখছিল,আর জিজ্ঞাসা করল: আপনি কী খুঁজছেন? আমি বললাম: কন্যা, রশি আর বালতি। সে জিজ্ঞাসা করল: আপনার নাম? বললাম: মুহাম্মদ ইবনে সোলায়মান জাযুলী।

মাদানী মুন্নীটি আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল: আচ্ছা! আপনিই কি সেই ব্যক্তি, যার প্রসিদ্ধির ডঙ্কা বাজছে চারদিকে। অথচ আপনার অবস্থা এই যে, কূপ থেকে পানিও নিতে পারছেন না! এ কথা বলেই সে কূপে থুথু ফেলল। মুহুর্তেই পানি উপরের দিকে উঠে গেল এবং পানি কুপ থেকে উপচে পড়তে লাগল। তিনি জাযুলী رَحْمَةُ اللهِ تَعَالٰى عَلَيْهِ ওযু করার পর সেই অসাধারণ মাদানী মুন্নীকে বললেন: কন্যা! তুমি সত্যি করে বল তো, এ অসাধারণ ক্ষমতা তুমি কিভাবে অর্জন করেছ?

সে বলল: আমি দরূদ শরীফ পাঠ করে থাকি আর তার বরকতেই এই দয়া হয়েছে। তিনি বলেন: এই অসাধারণ মাদানী মুন্নীর কথায় প্রভাবিত হয়ে আমি সেখানেই সংকল্প করলাম যে, দরূদ শরীফের উপর কিতাব লিখব।

[সা’আদাতুদ দারাইন,পৃষ্ঠা-১৫৯, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া বৈরুত]

অতঃপর শায়খ আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন সুলায়মান জাযুলী (রহঃ) দরূদ শরীফের কিতাব রচনা করেন।যেটি সর্বজন গৃহীত হয়েছে আর সেই কিতাবের নাম হল “দালায়িলুল খায়রাত”।

তাছাড়াও শায়খ আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন সুলায়মান জাযুলী (রহঃ) হলেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি বিশ হাজার মুহাদ্দিস ও ফকীহদের ওস্তাদ এবং ১২৬৩৬ জন আওলিয়ায়ে কেরামের শায়খ বা পীরে কামিল ছিলেন।

বালিকার পঠিত দরূদ শরীফটির নাম “ছালাতু বীর”।দরূদ শরীফটি হল- “আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সায়্যিদিনা মুহাম্মাদিন অ’য়ালা আলি সায়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ছালাওয়াতান দায়িমাতাম মাকবুলাতান তুওয়াদ্দিবিহা আ’ন্না হাক্কাহুল আ’যীম”।

★৩৯.  নূরে মুজাস্সাম নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেন:  “যে  ব্যক্তি  দিনে   ও রাতে আঁমার   প্রতি ভালবাসা ও ভক্তি   সহকারে তিনবার করে  দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আল্লাহ্ তা’আলার  উপর (নিজ  বদান্যতায়)  দায়িত্ব যে,তিঁনি তার  ঐ দিন ও  ঐ  রাতের  গুনাহ   ক্ষমা করে  দিবেন।

[আল  মুজামুল   কবীর   লিখিত তিবরানী,১৮তম খন্ড, ৩৬২  পৃষ্ঠা,  হাদীস-৯২৮]

★৪০. রাসুলদের সরদার,হুযুর  পুরনূর  (ﷺ) ইরশাদ করেছেন:“যে (ব্যক্তি) কুরআন পড়লো,আপন প্রতিপালকের প্রশংসা  করলো,   অতঃপর নবী (ﷺ) এঁর  উপর দরূদ  পড়লো,তারপর নিজ  প্রতিপালক থেকে  ক্ষমা প্রার্থনা করলো, তবে সে মঙ্গলকে  সেটার জায়গা থেকে তালাশ  করে নিলো।”
[শুয়াবুল  ঈমান,২য়  খন্ড,৩৭৩ পৃষ্ঠা,  হাদিস- ২০৮৪]

★৪১. হযরত তোফায়েল ইবন উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,আমি জিজ্ঞেস করলাম,হে আল্লাহর রাসূল! আমি আঁপনার প্রতি অধিকহারে দরূদ পড়তে চাই, অতএব আমার দু‘আর মধ্যে আঁপনার দরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখব? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও।কা‘ব (রা:) বলেন, আমি বললাম,এক চতুর্থাংশ? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে যদি তুমি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম,অর্ধেক? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। কা‘ব (রা:) বলেন, আমি বললাম, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, আমার দু‘আর পুরোটা জুড়েই শুধু আঁপনার দরূদ রাখব। তিঁনি বললেন : তাহলে তা তোমার ঝামেলা ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করা হবে।
[তিরমিযী : ২৬৪৫ ও হাকেম : ৭৬৭৭]

★৪২. রাসূল (ﷺ) বলেছেন,”আল্লাহ তা’আলা বিরাটাকারে এক ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন,যার এক বাহু ভূমণ্ডল পূর্ব প্রান্তে এবং অপর বাহু পশ্চিম প্রান্তে।মস্তক আরশে আযিম এর সন্নিকটে এবং পদদ্বয় সাত তবক জমিন অতিক্রম করেছে । তাকে সমগ্র জগতসম পাখা-পালক দ্বারা সুসজ্জিত করা হইয়াছে ।আঁমার কোন উম্মত যখন আঁমার উপর দুরুদ শরীফ পাঠ করে,তখন উক্ত ফেরেশতা আল্লাহ পাকের আরশের নীচে অবস্থিত নূরের সমুদ্রে ডুব দেয়। অতঃপর আল্লাহর নির্দেশে সে ফেরেশতা নূরের সমুদ্র থেকে বের হয়ে সর্বশরীর ঝাড়া দেয়।ফলে তার অগণিত পাখা ও পালক থেকে অসংখ্য পানির ফোঁটা ঝরে পরে।তা থেকে আল্লাহর কুদরতে এক একজন ফেরেশতা সৃষ্টি হয়।এ অসংখ্য-অগণিত ফেরেশতা কেয়ামত পর্যন্ত দরূদ পাঠকারীর মাগফেরাত জন্য দোয়া করতে থাকে।
[মুকাশাফাতুল কুলূব গ্রন্থের ৩৪ নং এর ১]

★৪৩. রহমাতুল্লিল আলামীন,   শফীউল মুযনীবিন,হুযুর পুরনূর (ﷺ) ইরশাদ করেন: “তোমরা অধিক হারে   আঁমার উপর দরূদ  শরীফ  পাঠ   করো,নিশ্চয়  এটা তোমাদের জন্য  পবিত্রতা।”
[মুসনাদে  আবি ইয়ালা,৫ম খন্ড,৪৫৮  পৃষ্ঠা,হাদিস-৬৩৮৩]

★৪৪. তাবেয়ী বুযুর্গ হযরত সায়্যিদুনা কাবুল আহবার (রহ:) বলেন: আল্লাহ্ তা’আলা হযরত সায়্যিদুনা মুসা কলিমুল্লাহ্ عَلَيْهِ السَّلَام এর নিকট এ মর্মে ওহী পাঠালেন: হে মুসা عَلَيْهِ السَّلَام! তুমি কি কিয়ামতের দিনের পিপাসা থেকে রক্ষা পেতে চাও? আরয করলেন: হে আমার প্রতিপালক! হ্যাঁ! আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করলেন: فَاَكْثِرِ الصَّلَاةَ عَلٰى مُحَمَّدٍ অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা صَلَّی اللّٰہُ  تَعَالٰی عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এঁর উপর বেশি পরিমানে দরূদ শরীফ পড়ো।
[ইবনে আসাকির,৬১তম খন্ড,১৫০ পৃষ্ঠা,সংক্ষিপ্ত]

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -৫ম পর্ব দেখুন:

★৪৫. এক ব্যক্তি স্বপ্নে ভয়ানক বিপদ দেখতে পেল। ভীত হয়ে সে জিজ্ঞাসা করল: তুমি কে? বিপদটি বলল: আমি হলাম তোমার খারাপ আমল। লোকটি জিজ্ঞাসা করল: তোমার থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন উপায় আছে কি? সে জবাব দিল: অধিকহারে দরূদ শরীফ পাঠ করা।
[আল কওলুল বদী,২২৫ পৃষ্ঠা, মুয়াস্সাসাতুর রাইয়ান,বৈরুত]

★৪৬. হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন,যে ব্যক্তি আঁমার উপর একদিনে হাজার বার দুরূদ শরীফ পাঠ করবে,বেহেশতে তার স্থান না দেখা পর্যন্ত সে মৃত্যু বরণ করবে না।
[সা’দাতুদ দারাইন,আল-মাকতাবাতুত তাওফিকিয়্যাহ,তুরস্ক,পৃ-১১৫]

★৪৭. হযরত সায়্যিদুনা আবু বকর সিদ্দীক (রা:) বলেন:“নবী করীম,রাউফুর রাহীম (ﷺ) এঁর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করা গুনাহ সমূহকে এত দ্রুত মিটিয়ে দেয় যে,পানিও আগুণকে তত দ্রুত নিভাতে পারে না,আর রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এঁর উপর সালাম প্রেরণ করা গর্দান সমূহ (অর্থাৎ- গোলামদেরকে) আযাদ করার চেয়েও উত্তম।”
[তারিখে বাগদাদ,৭ম খন্ড,১৭২ পৃষ্ঠা]

★৪৮. হযরত সায়্যিদুনা আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) বলেন: “তোমরা তোমাদের মজলিশ সমূকে আল্লাহর নবী,রাসুলে আরবী (ﷺ) এঁর উপর দরূদ শরীফ পাঠ করে সজ্জিত করো।”
[তারিখে বাগদাদ,৭ম খন্ড,২১৬ পৃষ্ঠা]

★৪৯. হযরত সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আমর বিন আস (রা:) বলেন: “যে (ব্যক্তি) নবী পাক,সাহিবে লাওলাক, হুযুর পুরনূর (ﷺ) এঁর উপর এক বার দরূদে পাক পাঠ করবে, তার উপর আল্লাহ্ তাআলা এবং তার ফিরিশতারা ৭০ বার রহমত প্রেরণ করবেন।”
[মুসনাদে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, ২য় খন্ড,৬১৪ পৃষ্ঠা,হাদিস- ৬৭৬৬]

★৫০. ফাযালা বিন উবায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে নামায আদায় করল, এরপর দু’আ করল: “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মাফ করে দাও, তুমি আমাকে রহম কর’।তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হে নামাযী! তুমি বেশ তাড়াহুড়া করে ফেললে।তুমি নামায আদায় করে যখন বসবে তখন আগে আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করবে, আঁমার ওপর দরুদ পড়বে। এরপর আল্লাহর কাছে দু’আ করবে।”
[সুনানে তিরমিযি,৩৪৭৬]

★৫১. অপর রেওয়ায়েতে এসেছে।
“যখন তোমাদের কেউ নামায শেষ করবে তখন আল্লাহর প্রশংসা ও স্তুতি শুরু করবে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়বে।অতঃপর যা ইচ্ছা দোয়া করবে”।বর্ণনাকারী বলেন: এরপর অপর এক লোক নামায আদায় করল।সে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়ল।তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: “ওহে নামাযী! দোয়া কর, আল্লাহ তোমার দোয়া কবুল করবেন”
[সুনানে তিরমিযি ৩৪৭৭]

*এছাড়া ও নাসীর উদ্দীন আলবানী ও সহিহুত তিরমিযি গ্রন্থে (২৭৬৫), (২৭৬৭) হাদিসটিকে সহিহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

★৫২. অপর বর্ননায় হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে:

وَعَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ كَعْبِ بن عُجْرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ، فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللهِ قَدْ عَلِمْنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكَ، فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ قَالَ: «قُولُوا: اَللهم صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، إنَّكَ حَمِيدٌ مَجيدٌ . اَللهم بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، إنَّكَ حَمِيدٌ مَجْيدٌ» . متفقٌ عَلَيْهِ
আবূ মুহাম্মদ কা‘ব ইবনে ‘উজরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (একদা) আমাদের নিকট এলে। আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আঁপনার প্রতি কিভাবে সালাম পেশ করতে হয় তা জেনেছি, কিন্তু আঁপনার প্রতি দরূদ কিভাবে পাঠাব?’ তিনি বললেন, “তোমরা বলোঃ- ‘আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বা-রাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’
****দলিল****
*(ক.) বুখারী -৩৩৭০,৪৭৯৭,৬৩৫৭,
*(খ.) মুসলিম-৪০৬
*(গ.) তিরমিযী-৪৮৩
*(ঘ.) নাসায়ী,১২৮৭-১২৮৯
*(ঙ.) আবূ দাউদ ৯৭৬
*(চ.) ইবনু মাজাহ ৯০৪
*(ছ.) আহমাদ-১৭৬৩৮,১৭৬৩১, ১৭৬৬৭
*(জ.) দারেমী-১৩৪২

★৫৩. অপর হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে।
وَعَنْ أَبي مَسعُودٍ البَدرِي رضي الله عنه، قَالَ: أَتَانَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَنَحنُ في مَجْلِسِ سَعدِ بن عُبَادَةَ رضي الله عنه، فَقَالَ لَهُ بَشْيرُ بْنُ سَعدٍ رضي الله عنه : أَمَرَنَا الله تَعَالَى أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ، فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ فَسَكَتَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، حَتَّى تَمَنَّيْنَا أَنَّهُ لَمْ يَسْأَلْهُ، ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : «قُولُوا: اَللهم صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْت عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، إنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَالسَّلاَمُ كَمَا قَدْ عَلِمْتُمْ» . رواه مسلم
আবূ মাসঊদ বদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা সায়াদ ইবনে উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর মজলিসে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে এলে। বাশীর ইবনে সা‘আদ তাঁকে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! মহান আল্লাহ আমাদেরকে আপনার প্রতি দরূদ পড়তে আদেশ করেছেন, কিন্তু কিভাবে আপনার উপর দরূদ পড়ব?’ আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরুত্তর থাকলেন। পরিশেষে আমরা আশা করলাম, যদি (বাশীর) তাঁকে প্রশ্ন না করতেন (তো ভাল হত)। ক্ষণেক পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমরা বলো, ‘আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। অবা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বা-রাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম। ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।’
আর সালাম কেমন,তা তো তোমরা জেনেছ।”
****দলিল****
*(ক.) মুসলিম-৪০৫
*(খ.) তিরমিযী-৩২২০
*(গ.) নাসায়ী ১২৮৫,১২৮৬
*(ঘ.) আবূ দাউদ ৯৭৯
*(ঙ.) আহমাদ ১৬৬১৯,১৬৬২৪, ২১৮৪৭
*(চ.) মুওয়াত্তা মালিক-৩৯৮
*(ছ.) দারেমী ১৩৪৩

★৫৪. আবার অপর হাদিস শরীফেও বর্নিত হয়েছে।

وَعَنْ أَبي حُمَيدٍ السَّاعِدِيِّ رضي الله عنه، قَالَ: قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ ؟ قَالَ: «قُولُوا: اَللهم صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيمَ إنَّكَ حَميدٌ مَجِيدٌ» . متفقٌ عَلَيْهِ
আবূ হুমাইদ সায়েদী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকেরা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিভাবে আঁপনার প্রতি দরূদ পেশ করব?’ তিঁনি বললেন, “তোমরা বলো, “আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আযওয়া-জিহি অযুর্রিয়্যাতিহি কামা স্বাল্লাইতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, অবা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউ অআলা আযওয়া-জিহি অযুর্রিয়্যাতিহি কামা বারাকতা আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।”
****দলিল****
*(ক.) সহীহুল বুখারী-২৩৬৯,৬৩৬০
*(খ.) মুসলিম-৪০৭
*(গ.) নাসায়ী-১২৯৪
*(ঘ.) আবূ দাউদ-৯৭৯
*(ঙ.) ইবনু মাজাহ-৯০৫
*(চ.) আহমাদ-২৩০৮৯
*(ছ.) মুওয়াত্তা মালিক-৩৯৭

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -৬ষ্ট পর্ব দেখুন:

★৫৫. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে

ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ :
ﻟَﻘِﻴَﻨِﻲ ﻛَﻌْﺐُ ﺑْﻦُ ﻋُﺠْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻴْﻪُ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻻَ
ﺃُﻫْﺪِﻱ ﻟَﻚَ ﻫَﺪِﻳَّﺔً ﺳَﻤِﻌْﺘُﻬﺎ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨّﺒﻰ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ؟ ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﺑَﻠَﻰ ﻓَﺄَﻫْﺪِﻫَﺎ ﻟِﻲ! ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺳَﺄَﻟْﻨَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﻛَﻴْﻒَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻗَﺪْ
ﻋَﻠَّﻤَﻨَﺎ ﻛَﻴْﻒَ ﻧُﺴَﻠِّﻢُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ؟ ﻗُﻮﻟُﻮْﺍ : ﺍﻟﻠﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ
ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ
ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﺇِﻧَّﻚَ ﺣَﻤِﻴْﺪٌ ﻣَﺠِﻴْﺪٌ , ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ
ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ
ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﺇِﻧَّﻚَ ﺣَﻤِﻴْﺪٌ ﻣَﺠِﻴْﺪٌ . ( ﺻﺤﻴﺢ ، ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ
ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ ، ﺑﺎﺏ ﻗﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﺍﺗﺨﺬ ﺍﻟﻠﻪ
ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ ﺧﻠﻴﻼ (.
“আব্দুর রহমান ইবনু আবি লায়লা রাহিমাহুল্লাহ বলেন,আমার সাথে কা‘ব ইবনু উজরার সাক্ষাৎ হল,তিনি বললেন:
আমি কি সেই হাদিয়াটুকু তোমার কাছে পৌঁছাব না যা আমি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি? আমি বললাম,অবশ্যই আপনি আমাকে সেই হাদিয়া দেন।তারপর বললেন: আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম,আপনি এবং আহলে বাইতের উপর কিভাবে সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? কেননা আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে আঁপনাকে কিভাবে সালাম
জানাব তা বলে দিয়েছেন। তিনি বললেন: তোমরা বল:‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।‘আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা কারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
[বুখারী, হাদিস: ৩৩৭০]

★৫৬. অপর হাদিস শরীফেও ইরশাদ হয়েছে

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴْﺪٍ ﺍﻟْﺨُﺪْﺭِﻱِّ ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﻨَﺎ ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻫﺬَﺍ ﺍﻟﺘَّﺴْﻠِﻴْﻢُ ﻓَﻜَﻴْﻒَ
ﻧُﺼَﻠِّﻲ ﻋَﻠَﻴْﻚَ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻮْﻟُﻮْﺍ : ﺍﻟَّﻠﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ
ﻋَﺒْﺪِﻙَ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟِﻚَ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ ﻋَﻠَﻲ ﺁﻝِ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ
ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻋَﻠَﻲ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻋَﻠﻰ
ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ . ( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺘﻔﺴﻴﺮ ، ﺑﺎﺏ ﻗﻮﻝ
ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻣﻼﺋﻜﺘﻪ ﻳﺼﻠﻮﻥ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺒﻰ .

“আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু
বলেন,আমরা বললাম,ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাম তো আমাদের জানা আছে।
তবে আমরা কিভাবে আঁপনার উপর
সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন
তিনি বললেন: তোমরা বল:‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা,কামা ছাল্লাইতা ‘আলা আলি ইবরাহীমা,ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন
ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা’।
[বুখারী, হাদিস: ৪৭৯৮]

★৫৭. অপর হাদিস শরীফেও ইরশাদ হয়েছে

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴْﺪٍ ﺍﻟْﺨُﺪْﺭِﻱِّ ﺭَﺿِﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﻨَﺎ ﻳَﺎ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻗَﺪْ
ﻋَﺮَﻓْﻨَﺎﻩُ ﻓَﻜَﻴْﻒَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻮْﻟُﻮﺍ : ﺍﻟَّﻠﻬُﻢَّ
ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻋَﺒْﺪِﻙَ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟِﻚَ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ ﻋَﻠَﻰ
ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﺎﺭَﻛْﺖَ
ﻋَﻠِﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ . ( ﺻﺤﻴﺢ ، ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ، ﺻﺤﻴﺢ
ﺳﻨﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻰ ﺍﻟﺠﺰﺀ ﺍﻷﻭﻝ

আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু
বলেন,আমরা বললাম,ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাম তো আমাদের জানা আছে।তবে আমরা কিভাবে আঁপনার উপর সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন তিঁনি বললেন: তোমরা বল:‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা,কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা,ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন
ওয়া আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা’।
[নাসায়ী, হাদিস: ১২২৬।(সহীহ)]

★৫৮. অপর হাদিস শরীফেও বর্নিত হয়েছে

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴْﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪْﺭِﻱِّ ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﻨَﺎ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻗَﺪْ ﻋَﺮَﻓْﻨَﺎﻩُ
ﻓَﻜَﻴْﻒ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻮْﻟُﻮْﺍ : ﺍﻟَّﻠَﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ
ﻋَﺒْﺪِﻙَ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟِﻚَ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻋَﻠَﻰ
ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ .
( ﺻﺤﻴﺢ ، ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ ، ﺻﺤﻴﺢ ﺳﻨﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ
ﺍﻟﺠﺰﺀﺍﻷﻭﻝ .
“আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু
বলেন,আমরা বললাম,ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাম তো আমাদের জানা আছে।
তবে আমরা কিভাবে আঁপনার উপর
সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তখন
তিঁনি বললেন: তোমরা বল:‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন আব্দিকা ওয়া রাসুলিকা,কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা,ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন
ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা’।

[ইবনু মাজাহ,হাদিস: ৭৩৬। (সহীহ)]

★৫৯. অপর হাদিস শরীফেও ইরশাদ হয়েছে

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺣُﻤَﻴْﺪٍ ﺍﻟﺴَّﺎﻋِﺪِﻱِّ ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﻗَﺎﻟُﻮْﺍ :
ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃُﻣِﺮْﻧَﺎ ﺑِﺎﻟﺼَّﻼَﺓِ
ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻓَﻜَﻴْﻒَ ﻧُﺼَﻠِّﻲ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ؟ ﻓﻘﺎﻝ : ﻗُﻮْﻟُﻮﺍ : ﺍﻟَّﻠﻬُﻢَّ
ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻪِ ﻭَﺫُﺭِّﻳَﺘِﻪِ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ ﻋَﻠَﻰ
ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻪِ ﻭَﺫُﺭِّﻳَﺘِﻪِ ﻛَﻤَﺎ
ﺑَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴْﻦَ, ﺇِﻧَّﻚَ ﺣَﻤِﻴْﺪٌ ﻣَﺠِﻴْﺪٌ .
( ﺻﺤﻴﺢ ، ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ ، ﺻﺤﻴﺢ ﺳﻨﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ
ﺍﻟﺠﺰﺀ ﺍﻷﻭﻝ
“আবু হুমাইদ সা‘য়েদী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন:ইয়া রাসূলাল্লাহ!আমাদেরকে আঁপনার উপর দরূদ পড়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।আমরা কিভাবে আঁপনার উপর দরূদ পড়ব?রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন:তোমরা বল:‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন
ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া বারিক‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহী ওয়া যুররিয়্যাতিহী কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ফিল
আলামীনা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।

[ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৭৩৮ । (সহীহ)]

★৬০. অপর হাদিস শরীফেও ইরশাদ হয়েছে

ﻋَﻦْ ﺯَﻳْﺪِ ﺑْﻦِ ﺧَﺎﺭِﺟَﺔَ ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﻧَﺎ ﺳَﺄَﻟْﺖُ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺻَﻠُّﻮْﺍ ﻋَﻠَﻲَّ
ﻭَﺍﺟْﺘَﻬِﺪُﻭْﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻋَﺂﺀِ ﻭَﻗُﻮْﻟُﻮْﺍ : ﺍﻟَّﻠﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ
ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ . ( ﺻﺤﻴﺢ ، ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ، ﺻﺤﻴﺢ
ﺳﻨﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻰ ﺍﻟﺠﺰﺀ ﺍﻷﻭﻝ ).

“যায়েদ ইবনু খারিজাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিঁনি বললেন:তোমরা আঁমার উপর দরূদ পড়
এবং অনেক বেশী চেষ্টা করে দো‘আ’ কর।এভাবে বল:‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন’।

[নাসায়ী, হাদিস: ১২২৫ (সহীহ)]

★৬১. অপর হাদিস শরীফেও ইরশাদ হয়েছে

ﻋَﻦْ ﻣُﻮْﺳَﻰ ﺑْﻦِ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝ : ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧِﻲ
ﺯَﻳْﺪُ ﺑْﻦُ ﺧَﺎﺭِﺟَﺔَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗُﻠْﺖُ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺪْ ﻋَﻠِﻤْﻨَﺎ ﻛَﻴْﻒَ ﻧُﺴَﻠِّﻢُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻓَﻜَﻴْﻒَ ﻧُﺼَﻠِّﻲ
ﻋَﻠَﻴْﻚَ ؟ ﻗَﺎﻝَ ﺻَﻠُّﻮْﺍ ﻋَﻠَﻲَّ ﻭَﻗُﻮْﻟُﻮْﺍ : ﺍﻟَّﻠﻬُﻢَّ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻋَﻠَﻰ
ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻛَﻤَﺎ ﺑَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَﺁﻝِ
ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﺇِﻧَّﻚَ ﺣَﻤِﻴْﺪٌ ﻣَﺠِﻴْﺪٌ . ( ﺻﺤﻴﺢ ، ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺣﻤﺪ ،
ﻓﻀﻞ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﻟﻸﻟﺒﺎﻧﻰ

“মুসা ইবনু ত্বালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,যায়েদ ইবনু খারিজাহ আমাকে বললেন যে,তিনি বলেছেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আঁপনাকে কিভাবে সালাম করব তা আমরা জানি।তবে আঁপনার উপর সালাত তথা দরূদ কিভাবে পাঠ করব? তখন তিঁনি বললেন: তোমরা আঁমার উপর দরূদ পাঠ করতঃ বল:
‘আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন
ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ’।

[মুসনাদু আহমদ,হাদিস: ৬৮। (সহীহ)]

★৬২. অপর হাদিস শরীফেও ইরশাদ হয়েছে

ﻋَﻦْ ﻋُﻘْﺒَﺔَ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﺃَﺗَﻲ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺭَﺟُﻞٌ ﺣَﺘّﻰ ﺟَﻠَﺲَ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ,
ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃَﻣَّﺎ
ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻓَﻘَﺪْ ﻋَﺮَﻓَﻨَﺎﻩُ, ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻓَﺄَﺧْﺒِﺮْﻧَﺎ ﺑِﻬَﺎ
ﻛَﻴْﻒَ ﻧُﺼَﻠِّﻰ ﻋَﻠَﻴْﻚَ؟ ﻓَﺼَﻤَﺖَ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺣَﺘَّﻰ ﻭَﺩَﺩْﻧَﺎ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞَ ﺍﻟَّﺬِﻯ ﺳَﺄَﻟَﻪُ ﻟَﻢْ
ﻳَﺴْﺄَﻟْﻪُ . ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻴْﺘُﻢْ ﻋَﻠَﻲ ﻓَﻘُﻮْﻟُﻮﺍ : ﺍﻟﻠﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ
ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﻟﻨَﺒﻰّ ﺍﻷُﻣِﻲِّ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻛَﻤَﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ
ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴْﻢَ ﺇِﻧَّﻚَ ﺣَﻤِﻴْﺪٌ ﻣَﺠِﻴْﺪٌ .
(ﺣﺴﻦ ، ﺭﻭﺍﻩ ﺇﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻓﻲ ﻓﻀﻞ ﺍﻟﺼﻼﺓ
ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ، ﻓﻀﻞ ﺍﻟﺼﻼﺓ
ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﻟﻸﻟﺒﺎﻧﻰ .

“উকবা ইবনু আমের রাদিয়াল্লাহু আনহু
বলেন,এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে এসে বসল এবং বলল:ইয়া রাসুলাল্লাহ! আঁপনাকে কিভাবে সালাম জানাব তা আমরা জানি। তবে আঁপনার উপর কিভাবে সালাত তথা দরূদ পাঠ করব? তা আমাদের বলে দিন। তখন তিনি চুপ থাকলেন এমনকি আমরা ভাবলাম যদি প্রশ্নকারী প্রশ্ন না করত
তাহলে অনেক ভাল হত।তারপর
তিঁনি বললেন: তোমরা আমাঁর উপর সালাত পাঠ করার জন্য বল:‘আল্লাহুম্মা ছাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিনিন্নাবিয়্যিল
উম্মিয়্যি ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন
কামা ছাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
[ইসমাঈল কাযী, হাদিস: ৫৯ (হাসান)]

 

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -৭ম পর্ব দেখুন:

★৬৩.নবী করীম,রাউফুর রাহীম (ﷺ) এঁর উপর দরূদ ও সালাম পাঠের ফযিলত:

٣٠- عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ – رضي الله عنه – قَالَ: قَالَ رَسُولُ اَللَّهِ ﷺ “إِنَّ أَوْلَى اَلنَّاسِ بِي يَوْمَ اَلْقِيَامَةِ, أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً”. رواه الترمذي و ابن حبان
অনুবাদ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন,কিয়ামতের ময়দানে সে ব্যক্তি আঁমার সবচেয়ে বেশি নিকটবর্তী থাকবে যে ব্যাক্তি (দুনিয়াতে) আঁমার উপর সবচেয়ে বেশি দরূদ ও সালাম পেশ করেছে।

*****দলিল*****
*(ক.) তিরমিজি- ২/৩৫৪ হাঃ ৪৮৪
*(খ.) সহিহ ইবনে হিব্বান-৩/১৯২ হা: ৯১১
*(গ.) বায়হাকীর সুনানে কুবরা-৩/২৪৯ হা: ৫৭৯১

★৬৪. হযরত সায়্যিদুনা আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহু হতে বর্নিত আছে,তাজদারে মদিনা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ
যে ব্যক্তি নিচের শরিফটি পড়বে? সে যদি! দাড়ানো থাকে তাহলে বসার পূর্বে, আর যদি বসা থাকে তাহলে দাড়ানোর পূর্বে তার জীবনের গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। -সুবহানআল্লাহ!
আসুন?
একবার দরুদ শরিফটি পাঠ করে নিই :-
“আল্লাহুম্মা ছল্লি আ’লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিও ওয়াআ’লা আলিহি ওয়া আসহাবিহি ওয়াসাল্লিম।”

[আফদ্বালুস সালাওয়াত আলা সায়্যিদিস সাদাত,৬৫পৃষ্টা]

★৬৫. মহান আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন:

﴿اِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلىٰ النَّبِيِّ- يَا اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْ تَسْلِيْمًا﴾ {الاحزاب:٥٦ }
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহতা’লা এবং তাঁর ফেরেশতাগণ নবী ﷺ -এঁর মহব্বতে ও সম্মানে দরূদ-সালামের মজলিশ করছেন এবং অব্যাহতভাবে করতে থাকবেন; হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবী (ﷺ)-এঁর সম্মানে ও মহব্বতে আদবের সঙ্গে দরূদ ও সালামের মজলিশ কর।

🌴আবার এভাবেও বলা যেতে পারে
“নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং তাঁর ফেরেশতাগণ নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এঁর ওপর দরূদ পড়েন, হে ঈমানদারগণ!তোমরাও তাঁর (ﷺ) ওপর দরূদ পড় এবং অতীব সম্মানের সাথে সালাম পেশ কর।”

[সূরা আহযাব,আয়াত নং ৫৬]

👏লক্ষ্য করুন👏

✌১ম দৃষ্টিকোন: পবিত্র কোরআনুল কারীমের উপরোক্ত আয়াতটি আরবী ব্যাকরণিক (মুযারি’সিগা) মর্ম অনুযায়ী অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে অর্থবহ করে। আয়াতটি বহুবচনাত্নক এবং দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে মহান আল্লাহ তা’লা ও তাঁর ফেরেশতাগণ; অন্যভাগে ঈমানদার মুসলমানগণ। আয়াতটিতে নবী করীমের ﷺ মহব্বত ও সম্মানে দরূদ ও সালামের আদেশ করা হয়েছে। কিন্তু দরূদ ও সালামের এ আদেশটি কীভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে? তা বলা হয়নি।তবে বিষয়বস্তু বহুবচনাত্নক এবং ঈমানদারদের অর্থাৎ,একাধিক ব্যক্তিকে দরূদ-সালাম অনুশীলনের আদেশ করা হয়েছে।

✌২য় দৃষ্টিকোন: স্বয়ং আল্লাহ পাক তাঁর ফেরেশতাদের নিয়ে রাসূল ﷺ এঁর দরুদ -সালাম পাঠ করেন তথা গুন বর্ননা করেন।আর আল্লাহ তা’আলা খালেক হয়ে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ মাখলুকের উপর দরুদ পড়েন।তা কি আশ্চর্যান্বীত হওয়ার কথা নয়?আল্লাহ কী পরিমান ভালোবাসেন তাঁর প্রিয় মাহবুবকে!! একটিবার ভাবুন।আবার দেখুন! ফেরেশতাদের তো কোন গোনাহ নেই, তারাও তো দরুদ-সালাম পেশ করেন।

আবার আ’মভাবে বা সরাসরি সকল মুসলমানকে না বলে শুধুমাত্র ঈমানদার মুসলমানদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে তোমরা আঁমার হাবীবের উঁপর দরুদ শরীফ ও সালাম পেশ কর পরিপূর্ণ তথা অত্যান্ত আদব সহকারে।বেয়াদবির বিন্দুমাত্র লেশও যেন না থাকে।

✌৩য় দৃষ্টিকোন: পবিত্র কোরআনে নামায, রোজা,হজ্ব,যাকাত ইত্যাদির ব্যপারে ব্যাপক আলোচনার করা হয়েছে,যেখানে তা ফরজ বলে ঘোষনা করা হয়েছে বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে।এখন প্রশ্ন হল সকল ঈবাদত করার পূর্বে বারবার বলা হয়েছে তোমরা ঈমান আননয়ন কর।তাহলে ঐ ঈমান কি পরিপূর্ন হবে,যদি রাসূলকে পরিপূর্ণভাবে না মানা হয়।সমস্ত উম্মত এতে একমত পোষন করবে শুধু মুনাফিক,ইয়াজিদের বন্ধুবর, উবাইয়র ইবনে সলুলের দোষর, মালাউন ছাড়া।

*তাহলে নামায,রোজা ইত্যাদি যেরকম আল্লাহর ঘোষনা হওয়ায় তা ফরজ হয়ে গেল। দরুদ শরীফ কি আল্লাহর ঘোষনা নয়।তবে তফাৎ হল এটা পচন্দ করবে শুধু ঈমানদার। আর যেখানে অন্যান্য বিশেষ ঈবাদত পচন্দ করবে ঢালাওভাবে সবাই।তাই এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই,যেহেতু উক্ত আয়াত আল্লাহ শুধু ঈমানদারদের উদ্দশ্যে নাযিল করেছেন।আর এজন্যই উক্ত আয়াতে কারীমা ঈমাদারগনের জন্য এক বিশেষ নেয়ামত সরুপ।কেননা এতে ঈমানদার খুশি হবে,মুনাফিক অসন্তুুষ্ট হবে।

✌৪র্থ দৃষ্টিকোন: ইমাম ইবনে কাসীর (রহ:) বলেন-অত্র আয়াতের উদ্দেশ্য হলো,আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর বান্দাহদেরকে তাঁর প্রিয়তম বান্দা ও নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মালায়ে আ’লায় তাঁর নিকট যে মর্যাদা রয়েছে তা জানিয়ে দিয়েছেন। কেননা তিঁনি (রাব্বুল আলামীন) তাঁর নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাদেরও সামনে তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গুণ বর্ণনা করেন। আর সকল ফেরেশতা নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এঁর উপর দরূদ পড়েন।অতঃপর মহান আল্লাহ তা’আলা জগতবাসীকে তাঁর প্রিয় হাবীবের উপর দরূদ ও সালাম প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে উচ্চ জগতবাসী ও নিন্ম জগতবাসীর পক্ষ থেকে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এঁর প্রতি প্রেরিত গুণগান একত্র হয়ে যায়।

[তাফসীরুল কুরআনিল আযী-ম, খন্ড-০৩, পৃ.৪৩২]

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -৮ম পর্ব দেখুন:

★৬৬. হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعٌوْدِ رَضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: الْتَفَتَ إِلَيْنَا رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم فَقَالَ: إِنَّ اللهَ هُوَ السَّلاَمُ, فَإِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلْ: التَّحِيَّاتُ للهِ وَالصَّلوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَا تُهُ, السّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عَبَادِ اللهِ الصَّالَحِيْنَ ، فَإِنَّكُمْ إِذَا قُلْتٌمٌوْهَا أَصَابَتْ كَلَ عَبْدٍ صَالِحٍ فِي السَّمَآءِ وَالأرْضِ , أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ .( صحيح ، رواه البخاري ، كتاب الصلاة ، باب التشهد فى الآخرة).
“আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা:) বলেন,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন: আল্লাহই হলেন ‘সালাম’। অতএব তোমরা যখন সালাত আদায় করবে তখন বলবে- ‘আতাতহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াচ্ছালাওয়াতু ওয়াত্ত্বাইয়িবাতু আসসালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবিইয়ু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আসসালামু ‘আলাইনা ওয়া ‘আলা ইবাদিল্লাহিচ্ছালিহীন’ -এরূপ বললে আসমান ও জমিনের প্রত্যেক নেককার ব্যক্তি তা প্রাপ্ত হবে। তারপর বলবে ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু’। [বুখারী,হাদিস: ৮৩১]

★৬৭. আযান শুনার পর দো‘আ পড়ার পূর্বে দরূদ পাঠ করা সূন্নাত:

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو بْنِ الْعَاصِ رَضِي اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم يَقُوْلُ : إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُوْلُوْا مِثْلَ مَا يَقُوْلُ ثُمَّ صَلُّوْا عَلَىَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلّيَّ صَلاَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْراً , ثُمَّ سَلُوْا اللهَ لِي الْوَسِيْلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لاَ تَنْبَغِي إِلاَّ لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللهِ وَأَرْجُوْ أَنْ أَكُوْنَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ اللهَ لِي الْوَسِيْلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ . (صحيح ، رواه مسلم ، كتاب الصلاة باب القول مثل قول المؤذن .(

“আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যখন তোমরা মুআয্যিনের আযান শুনবে তখন তার মত বল। তারপর আঁমার উপর দরূদ পড়। কেননা যে ব্যক্তি আঁমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার দরূদ পাঠ করবেন। তারপর তোমরা আল্লাহর কাছে আঁমার জন্য উসীলার দো‘আ করবে। কারণ উসীলা হল জান্নাতে একটি উচ্চতর মর্যাদা, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে শুধু একজনই প্রাপ্ত হবে।আঁমি আশা করি আঁমিই হব সেই ব্যক্তি। অতএব যে ব্যক্তি আমার জন্য আল্লাহর কাছে উসীলার দো‘আ করবে সে আঁমার সুপারিশ প্রাপ্ত হবে।
[মুসলিম,হাদিস: ৩৮৪।

✌শাফায়াত প্রসঙ্গটা যেহেতু এসেছে তাই এ বিষয়ে সামান্য একটু আলোচনা করবো।শাফায়াতের দু’আ কিভাবে করবো:

শাফায়াতের প্রার্থনা একমাত্র আল্লাহর কাছেই করব এবং বলবঃ
اَللهُمَّ شَفِّعْ فِيَّ نَبِيّكَ

*হে আল্লাহ! আঁপনার নবীকে আমার জন্য সুপারিশকারী বানিয়ে দিন।

অথবা বলবঃ
اَللهم ارْزُقْني شَفَاعَةَ نَبِيِّكَ
*হে আল্লাহ! আঁপনার নবীর শাফাআত আমাকে দান করুন।
অথবা বলবঃ

يَارَبِّ اجْعَلْنِيْ مِمَّنْ تُشَفٍّعُ فِيْهِمْ نَبِيكَ

*হে আমার রব! আমাকে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন যাদের জন্য আঁপনি আঁপনার নবীর শাফাআত কবুল করবেন।

অথবা বলবঃ
اَللهم لاَتَحْرِمْنِيْ شَفَاعَةَ نَبِيِّكَ

*হে আল্লাহ! আঁপনার নবীর শাফাআত হতে আমাকে বঞ্চিত করবেন না।[আকীদাতুল মু’মিন-১২৯]

👏কেননা,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন সাহাবীকে শাফাআত প্রার্থনা শিক্ষা দিয়ে বলেছেন,যে তুমি বলঃ

اَللهم شَفِّعْهُ فِيَّ

হে আল্লাহ! আঁপনি তাঁকে আমার জন্য শাফাআতকারী বানিয়ে দিন”। (তিরমিযী)

এবং মৃত শিশুর জানাযায় এ দু’আ পাঠ করতে বলেছেন
وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّ مُشَفَّعًا

হে আল্লাহ! এ শিশুকে আমাদের জন্য শাফায়াতকারী ও মঞ্জুরযোগ্য শাফাআত কারীতে পরিণত করুন”। (মুসলিম)

👌যেমনটি আমরা আজানের দোয়ায় শেষাংশে বলি,হে আল্লাহ! আঁপনার প্রিয় হাবীবের সুপারিশ আমাদের নসীব করুন।আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, “আরবিতে সুপারিশের কথা বাদ দেয়া হয়েছে কিন্তু বাংলায় আবার সুপারিশের কথা বলা হয়।তা কত বড় আফসোসের বিষয়!!🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹

বিরুদ্ধবাদীদের প্রশ্নের জবাবে শুধু একটি দলিল দিচ্ছি:
হাশরের ময়দানে কারও সুপারিশ করার কোনো ক্ষমতা থাকবে না।এমনকি নবীজি (ﷺ) কারও জন্য সুপারিশ করতে পারবেন না। তাদের এ দাবির সমর্থনে তারা পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার ৪৮নং আয়াতটি উল্লেখ করে থাকে। যাতে বলা হয়েছে, ‘অলা ইউক্বাবালু মিনহা শাফা’ অর্থাৎ সেদিন কারও কোনো সুপারিশ কাজে আসবে না।

👌এ আয়াতের ওপর ভিত্তি করে তারা নবী করিম (ﷺ)-এঁর সুপারিশ করার ক্ষমতাকেও অস্বীকার করে।যার কারণে আজানের দোয়া থেকে কেয়ামতের দিন নবীজী (ﷺ) সুপারিশের দোয়াটি বাদ দিয়েছে।(নাউযুবিল্লাহ!)

অথচ দেখুন:

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ النِّدَاءَ اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ، حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏‏.‏

অর্থাৎ আলী ইবনু আইয়্যাশ (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আযান শুনে দু’আ করেঃ ‘হে আল্লাহ-এ পরিপূর্ণ আহবান ও সালাত (নামায/নামাজ)-এর প্রতিষ্ঠিত মালিক, মুহাম্মাদ (ﷺ)–কে ওয়াসীলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকামে মাহমূদে পৌছিয়ে দিন যার অঙ্গিকার আপনি করেছেন’-কিয়ামতের দিন সে আঁমার শাফা’আত লাভের অধিকারী হবে। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ) অধ্যায়ঃ ১০/ আযান হাদিস নম্বরঃ৫৮৭।

[পরবর্তীতে ইনশাআল্লাহ এ ব্যপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে]

★৬৮. মসজিদে প্রবেশ করা ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর সালাম প্রেরণ করা সূন্নাত।

عَنْ فَاطِمَةَ رَضِي اللهُ عَنْهَا بِنْتِ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم قَالَتْ: كَانَ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ يَقُوْلُ : بِسْمِ اللهِ وَالسَّلاَمِ عَلَي رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوْبِي ، وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ ، وَإِذاخَرَجَ قَالَ: بِسْمِ اللهِ وَالسَّلاَمُ عَلَي رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوْبِي وَافْتَحْ لِي اَبْوَابَ فَضْلِكَ . (صحيح ، رواه ابن ماجه ، صحيح سنن ابن ماجة للألبانى الجزء الأول(

“ফাতেমা বিনতু মুহাম্মদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন তখন বলতেন: ‘বিসমিল্লাহি ওয়াসসালামু ‘আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মাগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা’
অর্থাৎ, আল্লাহর নামে আমি মসজিদে প্রবেশ করছি,আল্লাহর রাসূলের উপর শান্তি হোক,হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা কর এবং আমার জন্য আঁপনার রহমতের দরজা খোলে দাও।

✌আর যখন মসজিদ থেকে বের হতেন তখন বলতেন:‘বিসমিল্লাহি ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মাগফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবওয়াবা ফাদলিকা’ অর্থাৎ,আল্লাহর নামে আমি মসজিদ থেকে বের হচ্ছি,আল্লাহর রাসূলের উপর শান্তি হোক, হে আল্লাহ! আমার গুনাহ ক্ষমা কর এবং আমার জন্য আঁপনার করুণার দরজা খোলে দাও।
[ইবনু মাজাহ,৬২৫। (সহীহ)]

✌আবার এভাবেও অনুবাদ করা যেতে পারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এঁর কন্যা ফাতিমা থেকে বর্ণিত। তিঁনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে প্রবেশকালে বলতেনঃ আল্লাহ্‌র নামে (প্রবেশ) এবং আল্লাহ্‌র রাসূলকে সালাম। হে আল্লাহ্! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আঁপনার দয়ার দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দিন। তিঁনি (মাসজিদ থেকে) বের হওয়ার সময় বলতেনঃ আল্লাহ্‌র নামে (প্রস্থান) এবং সালাম আল্লাহ্‌র রাসূলকে। হে আল্লাহ্! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার অনুগ্রহের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দিন।
[সুনানে ইবনে মাজাহ ৭৭১,তিরমিযী ৩১৪, আহমাদ ২৫৮৭৭-৭৮]

মসজিদে প্রবেশের সময়ঃ

“‏ بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ ‏”

বিসমিল্লাহে ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহ,আল্লাহুম্মাগফিরলি যুনুবী,ওয়াফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক ‘।

মসজিদে বের হবার সময়ঃ-

“‏ بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ فَضْلِكَ ‏”

বিসমিল্লাহে ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহ,আল্লাহুম্মাগফিরলি যুনুবী,ওয়াফতাহলী আবওয়াবা ফাযলিক ‘।
♠♠লক্ষ্যনীয়♠♠
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে,মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় প্রায়ই মানুষই এই দোয়া পড়েন-
* اللهم افتح لي ابواب رحمتك

* اللهم اني اسئلك من فضلك.

তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি বাদ পড়েছে তা হল-
بسم الله والصلاة والسلام علي رسول الله…

অর্থাৎ পুরো দোয়াটি হবে এই রকম—

* بسم الله والصلاة والسلام علي رسول الله اللهم افتح لي ابواب رحمتك

👌মসজিদে প্রবেশের সময়ঃ
‘বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসূলিল্লাহ,আল্লাহুম্মাফতাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক।’

* بسم الله والصلاة والسلام علي رسول الله اللهم اني اسئلك من فضلك.

👌মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময়ঃ
‘বিসমিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আ’লা রাসূলিল্লাহ আল্লাহুমা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদ্বলিক।’

[ বিস্তারিত দেখুন- আমালুল ইয়াওমে ওয়াল লাইলাহ, ইবনুস সুন্নী,হাদিস নং-৮৮/সুনান আবি দাউদ,হাদিস নং -৪৬৫/ সুনান ইবনে মাজাহ,হাদিস নং -৭৭৩]

✌মসজিদের গেইটগুলোতে এই দোয়া দুটি সংক্ষিপ্তাকারে লেখা থাকে।রাসূলের বেলায় আসলে সব কিছু সংক্ষেপ হয়ে যায় (নাউযুবিল্লাহ)।আপনি যদি ঠিকই রাসূলকে ভালবাসেন তাহলে আজ হতে পরিপূর্ণ দোয়াটা আমল করার চেষ্টা করুন।

♠আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন মানে রাসূলের গুনাহ নয়।আর যদি মনে করা হয় তাহলে ঈমান থাকবে না।কারন নবিজি (ﷺ) আমাদেরকে তা বলে শিক্ষা দিয়েছেন।নতুবা “সালাম আল্লাহ্‌র রাসূলকে। হে আল্লাহ্! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন” এই প্রসঙ্গটা আসতো না।তাই সাবধান হোন।

বি:দ্র: ছাপার কারনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়ত হাদিস নাম্বার কিছুটা কম-বেশি পার্থক্য হতে পারে।অনেক সময় বিভিন্ন দেশ কেন্দ্রীক ছাপার কারনেও এরকম হয়।আপনারাও শুধু দয়া করে মিলিয়ে নিবেন।আর আমি আপনাদের খেদমতে শুধু তুলে ধরলাম।আমার কথায় কারও খারাপ লাগলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থী।

♦দরুদ শরীফের ফজিলত -৯ম পর্ব দেখুন:

★৬৯. সালাতের শেষেও নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর সালাম পৌঁছানো সুন্নাত।

عَنْ أَبِي سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: كَانَ إِذَا سَلَّمَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم مِنَ الصَّلاَةِ قَالَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ: سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُوْنَ ، وَسَلاَمٌ عَلَي الْمُرْسَلِيْنَ ، وَالْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ. (حسن ، رواه أبويعلي ، عدة الحصن الحصين( ،
“আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত থেকে সালাম ফিরাতেন তখন তিনবার বলতেন: সুবহানা রাব্বিকা রাব্বিল ইযযাতি আম্মা ইয়াছিফুন,ওয়া সালামুন আলাল মুরসালীন,ওয়াল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। অর্থাৎ, হে আল্লাহ! লোকেরা যা বলে তা থেকে তুমি পবিত্র এবং মর্যাদা পূর্ণ,সকল নবীদের উপর সালাম ও শান্তি হোক,আর সকল প্রশংসা সারা বিশ্বের প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য।

[আবু ইয়া‘লা, হাদিস: ২১৩ (হাসান)]

★৭০.হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে

عَنْ أَبِى طَلْحَةَ رَضِي اللهُ عَنْهُ أنَّه قال قَالَ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم ,جَاء ذَاتَ يَوْمٍ وَالْبُشْرَى فِي وَجْهِهِ فَقُلْنَا إِنَّا لَنَرَى البُشْرَى فِى وَجْهِكَ فَقَالَ : إِنَّهُ أَتَانِى الْمَلَكُ جِبْرِيْلُ فَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ إِنَّ رَبَّكَ يَقُوْلُ أَمَا يُرَضِيْكَ صلي الله عليه وسلم أَنَّهُ لاَيُصَلِّي عَلَيْكَ أَحَدٌ إِلاَّ صَلَّيْتُ عَلَيْهِ عَشْرًا, وَلاَ يُسَلِّمْ عَلَيْكَ أَحَدٌ إِلاَّ سَلَّمْتُ عَلَيْهِ عَشْرًا . (حسن ، رواه النسائي ، صحيح سنن النسائى للألبانى الجزء الأول (

“আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগমন করলেন। তখন তাঁর চেহারা আনন্দে উজ্জ্বল ছিল। আমরা বললাম,আমরা আঁপনার চেহারাতে আনন্দের নিদর্শন দেখছি। তখন তিঁনি বললেন,আঁমার কাছে জিবরীল আলাইহিস সালাম এসে এ কথার সুসংবাদ দিয়েছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,আঁপনি কি এতে সন্তুষ্ট নন,যে ব্যক্তি আঁপনার উপর দরূদ পড়বে আমি তার উপর দশবার দরূদ পাঠ করব। আর যে ব্যক্তি আঁপনাকে একবার সালাম করবে আঁমি তার উপর দশটি শান্তি বর্ষণ করব।
[নাসায়ী, হাদিস: ১২১৬ (হাসান)]

✌অপর বর্ননাতে এসেছে।যে ব্যক্তি একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তা‘আলা তার উপর দশবার দরূদ পাঠ করেন।

عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِي اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم قَال :مَنْ صَلَّي عَلَيَّ وَاحِدَةً صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ عَشْرًا . (رواه مسلم ، كتاب الصلاة على النبى صلي الله عليه وسلم(

“আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যে ব্যক্তি আঁমার উপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি দশবার দরূদ পাঠ করেন।
[মুসলিম, হাদিস: ৪০৮]

✌অপর বর্ননাতেও এসেছে।

عَنْ عَبْدِالرَّحْمَنِ بْنِ عَوفٍ رَضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: خَرَجَ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم حَتّي دَخَلَ نَخْلاً فَسَجَدَ فَأَطَالَ السُّجُوْدَ حَتَّى خَشِيْتُ أَنْ يَكُوْنَ اللهُ قَدْ تَوَفَّاهُ ، قَالَ: فَجِئْتُ أَنْظُرُ فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ : مَالَكَ؟ فَذَكَرْتُ لَهُ ذَلِكَ. قَالَ: فَقَالَ: إِنَّ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ لِى: أَلاَ أُبَشِّرُكَ أَنَّ اللهَ عَزَّوَجَلَّ يَقُوْلُ لَكَ مَنْ صَلَّى عَلَيْكَ صَلاَةً صَلَّيْتُ عَلَيْهِ وَمَنْ سَلَّمَ عَلَيْكَ سَلَّمْتُ عَلَيْه. (صحيح ، رواه أحمد ، فضل الصلاة على النبى للألبانى (

“আব্দুর রহমান ইবন ‘আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বের হয়ে এক খেজুর বাগানে প্রবেশ করলেন। অতঃপর দীর্ঘক্ষণ সেজদা করলেন।এমন কি আমাদের ভয় হল তাঁর কোনো ওফাত (শরীফ) হয়ে গেল নাকি। আমি তাঁকে দেখতে আসলাম তখন তিঁনি মাথা উঠালেন এবং বললেন: তোমার কি হল? আমি তাঁকে আমাদের ভয়ের কথা ব্যক্ত করলাম। তারপর তিঁনি বললেন: জিবরীল আলাইহিস সালাম আঁমাকে বললেন: আঁমি কি আঁপনাকে এই সু-সংবাদ দেব না যে,আল্লাহ তা‘আলা বলছেন: “যে ব্যক্তি আঁপনার উপর দরূপ পাঠ করবে,আঁমি তার উপর দরূদ পাঠ করব।আর যে ব্যক্তি আঁপনাকে সালাম করবে আঁমি তার উপর শান্তি নাযিল করব”।[আহমদ,হাদিস: ৭ (সহীহ)]

★৭১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,

«مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُصَلِّي عَلَيَّ إِلَّا صَلَّتْ عَلَيْهِ الْمَلَائِكَةُ مَا صَلَّى عَلَيَّ؛ فَلْيُقِلَّ الْعَبْدُ مِنْ ذَلِكَ أَوْ لِيُكْثِرْ». (حسن رواه ابن ماجه)

“কোনো মুসলিম আমার উপর দরূদ পড়া মাত্রই ফেরেস্তারা তার উপর সমপরিমাণ দরূদ পড়ে। সুতরাং,একজন মুসলিম যেন দরূদ পড়ে এবং বেশি করে দরূদ পড়ে।[ইবনু মাযাহ, হাদিস: ৯০৭]

★৭২. অপর হাদিস শরীফে এসেছে।

عَنْ أَبِى الدَّرْداءِ رضِي اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولَ اللهِ صلي الله عليه وسلم : مَنْ صَلَّي عَلَيَّ حِيْنَ يُصْبِحُ عَشْرًا وَحِيْنَ يُمْسِي عَشْرًا أَدْرَكَتْهُ شَفَاعَتِي يَوْمَ القِيَامَةِ . (حسن ، رواه الطبراني ، صحيح الجامع الصغير للألبانى (

“আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আঁমার উপর সকালে দশ বার দরূদ পড়বে এবং সন্ধ্যায় দশবার দরূদ পড়বে,সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আঁমার সুপারিশ লাভে ধন্য হবে।
[ত্বাবরানী,হাদিস: ৬২৩৩ (হাদিসটি হাসান)

👏বি:দ্র: তার মানে এই নয় যে,খালি সকালে ও সন্ধ্যায় ১০ বার করে পড়বেন।আপনি যত বেশি পড়বেন তত আপনার লাভ।এটা নিয়া বাড়াবাড়ি করার কোন সুযোগ নেই।এ ব্যাপারে আসুন জেনে নেই হাদিস শরীফে কি বলা হয়েছে:

عن أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ – رضي الله عنه – قال: كَانَ رَسُولُ الله – صلى الله عليه وآله وسلم – إِذَا ذَهَبَ ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللهَ، اذْكُرُوا اللهَ، جَاءَتْ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ، جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ، جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ».قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلَاةَ عَلَيْكَ، فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلَاتِي؟فَقَالَ: «مَا شِئْتَ». قُلْتُ: الرُّبُعَ؟ قَالَ: «مَا شِئْتَ، فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ». قُلْتُ: النِّصْفَ؟ قَالَ: «مَا شِئْتَ، فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ». قُلْتُ: فَالثُّلُثَيْنِ؟ قَالَ: «مَا شِئْتَ، فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ». قُلْتُ: أَجْعَلُ لَكَ صَلَاتِي كُلَّهَا؟ قَالَ: «إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ». (حسن صحيح رواه والترمذي)

“উবাই ইবন কা‘ব (রা:) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাতের দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুম থেকে উঠে যেতেন। অতঃপর তিঁনি বলতেন,হে মানুষেরা! তোমরা আল্লাহর যিকির কর,তোমরা আল্লাহর যিকির কর,রাজেফা তো প্রায় এসেই গেছে তারপরই রাদেফা আসবে। মৃত্যু তার আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে উপস্থিত,মৃত্যু তার আনুষাঙ্গিক বিষয় গুলো নিয়ে উপস্থিত।আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আঁপনার উপর বেশি বেশি করে সালাত প্রেরণ করতে চাই। আমি আঁপনার উপর কতবার সালাত প্রেরণ করব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,তুমি যা পার,আমি বললাম, আমার সমূদয় দো‘আর চার ভাগের এক ভাগ? তিঁনি বললেন,তুমি যা পার,তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম,তাহলে কি আমি আমার সমূদয় দো‘আর অর্ধেক আঁপনার জন্য সালাত প্রেরণে নিয়োজিত করব? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি যা পার,তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম।আমি বললাম, তাহলে কি আমি আমার সমূদয় দো‘আর তিনভাগের একভাগ আঁপনার জন্য সালাত পাঠে ব্যয় করব? তিঁনি বললেন, তুমি যা পার, তবে যদি তুমি বাড়াও তাহলে তা তোমার জন্য উত্তম। আমি বললাম, আমি আমার সমূদয় দো‘আই কি আঁপনার জন্য সালাত প্রেরণে কাটিয়ে দেব। তিঁনি বললেন, তাহলে তা তোমাকে দুশ্চিন্তা করবে এবং তোমার গুনাহসমূহ মুচে দেবে।
[বর্ণনায় তিরমিযি, হাদিস: ২৪৫৭, তিনি বলেন হাদিসটি হাসান ও সহীহ।]

✌ আবার এভাবেও বর্নিত হয়েছে।হযরত তোফায়েল ইবন উবাই ইবনে কা‘ব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,আমি জিজ্ঞেস করলাম,হে আল্লাহর রাসূল! আমি আঁপনার প্রতি অধিকহারে দরূদ পড়তে চাই, অতএব আমার দু‘আর মধ্যে আঁপনার দরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখব? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও।কা‘ব (রা:) বলেন,আমি বললাম,এক চতুর্থাংশ? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও।তবে যদি তুমি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে।আমি বললাম, অর্ধেক? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। কা‘ব (রা:) বলেন,আমি বললাম, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ? তিঁনি বললেন : তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, আমার দু‘আর পুরোটা জুড়েই শুধু আঁপনার দরূদ রাখব। তিঁনি বললেন : তাহলে তা তোমার ঝামেলা ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করা হবে।
[তিরমিযী : ২৬৪৫ ও হাকেম : ৭৬৭৭]

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

Islami Dawah Center Cover photo

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী (এম. এ. ইন ইংলিশ)

 

 

IDC Partner