Symptoms of Bad and Good Death – খারাপ এবং ভালো মৃত্যুর আলামত সমূহ

 

ভালো মৃত্যুর আলামত সমূহঃ

‘সব প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। কেয়ামতের দিন তাদের প্রতিদান পূর্ণমাত্রায় দেওয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে; তারাই সফল। আর দুনিয়ার জীবন ধোঁকা ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৮৫)

আল্লাহ তাআলা সফল ব্যক্তিকে জান্নাত দান করবেন। জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। কিন্তু দুনিয়ার এ ধোঁকার জায়গায় কারা সফল? এমন কিছু লক্ষণ আছে যা মৃত্যুর মুহূর্তের অনেকেরই পরিলক্ষিত হয়। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লা সে বিষয়গুলো সুস্পষ্ট করে তুলে ধরেছেন। তাহলো-

 

১. কালেমা পড়াঃ মুত্যুর মুহূর্তের শেষ কথা হবে কালেমা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

২. বিন্দু বিন্দু ঘাম হওয়া
মৃত্যুর সময় কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম বের হওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিনের মৃত্যুতে কপালে ঘাম বের হয়।’

৩. জুমার রাত-দিন মৃত্যু হওয়া
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জুমার দিন সূর্যাস্তের আগে মৃত্যু হওয়া। যে মুসলিম ব্যক্তি জুমার দিন বা রাতে মৃত্যুবরণ করে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে কবরে বিপদ থেকে হেফাজত করেন।

৪. শহিদ হওয়া
ইসলামের জন্য জীবন দেওয়া। প্রকৃতপক্ষে শাহাদাতের নিয়তে মৃত্যুবরণ করা। যারা ইসলামের জন্য শহিদ হয়েছেন কোরআনে তাদেরকে মৃত বলতে নিষেধ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, ‘কবরে তারা রিজিকপ্রাপ্ত হয়।
এছাড়াও কিছু মৃত্যু রয়েছে যা শহিদী মৃত্যু হিসেবে পরিগণিত-
> আল্লাহর পথে যুদ্ধে বিজয়ী গাজীর মৃত্যু।
> প্লেগ বা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু।
> পেটের অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু।
> পানিতে ডুবে মৃত্যু।
> প্রাচীর বা পাহাড় ধ্বংসস্তুপের নিচে পড়ে মৃত্যু।
> নারীদের সন্তান প্রসবকালীন সময়ের মৃত্যু।
> অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু।
> পার্শ্বদেশের ব্যথায় মৃত্যু।
> যক্ষ্মা ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যু।
> সম্পদ জবর দখল থেকে রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যু।
> ইসলামী জীবন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মৃত্যু।
> নিজের জীবন বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুও উত্তম মৃত্যুর লক্ষণ।
উল্লেখিত সব অবস্থার মৃত্যুকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শহিদি মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

৫. সীমান্ত পাহারায় মৃত্যু
দেশের সীমান্ত পাহারার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির মৃত্যুও উত্তম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, একদিন বা একরাত সীমান্ত পাহারা দেওয়ার মর্যাদা হলো- এক মাস রোজা রাখা এবং এক মাস দাঁড়িয়ে ইবাদাত করা থেকেও উত্তম।

৬. নেক কাজের উপর মৃত্যু
নেক আমল করার কালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করা উত্তম লক্ষণ। তা হতে পারে মানুষের যে কোনো ভালো কাজ। অর্থাৎ মৃত্যুর আগ মূহূর্তে কালেমার তেলাওয়াত, রোজা পালন, দান-সাদকা করা, ন্যায় কথা বলা, ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকা ইত্যাদি।

৭. অত্যাচারী কর্তৃক হত্যা
অন্যায়ভাবে কিংবা মিথ্যা দোষী সাব্যস্ত করে কিংবা জোরপূর্বক কাউকে অত্যাচার নির্যাতনে হত্যা করা হলে; সে মৃত্যুও উত্তম মৃত্যুর লক্ষণ। এমন মৃত্যুর উদাহরণ হলো- হজরত হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু মৃত্যু। তাঁকে মক্কার অত্যাচারী নেতারা যুদ্ধের ময়দানে হত্যা করেছিল। হত্যার পরও তার ওপর নির্যাতন করেছিল। এটাও শহিদি মৃত্যু।

সুতরাং মৃত্যুর আগে এসব লক্ষণ মানুষের জন্য উত্তম ও কল্যাণের। এ সব মৃত্যুতে বান্দার জন্য রয়েছে পরকালীন জীবনে চূড়ান্ত সফলতা। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে উত্তম মৃত্যুদান করুন। কল্যানকর মৃত্যুবরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

খারাপ মৃত্যুর আলামত সমূহঃ

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন “তোমরা যেখানে থাকো না কেন মৃত্যু তোমাদের স্পর্শ করবেই।(সূরা নিসা আয়াত ৭৮)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলতেন → যখন সন্ধ্যায় উপনীত হবে তখন সকালের জন্য অপেক্ষা কোরো না, আর যখন তোমার সকাল হয় তখন সন্ধ্যায় জন্য অপেক্ষা করো না। অসুস্থ হওয়ার আগে তোমার সুস্থতাকে কাজে লাগাও আর তোমার মৃত্যুর জন্য জীবিতাবস্থা তোমার পাথেয় জোগাড় করে নাও। (সহিহ বুখারী হাদিস ৬৪১৬)

প্রিয় পাঠক যার জন্ম আছে তার মৃত্যু অবধারিত। এ কথা তো চিরন্তন সত্য। তাই জন্ম যখন নিয়েছি মৃত্যু একদিন আসবেই। তাই মৃত্যুটা যেন ভালোভাবে হয় সেই জন্য আমাদের দুনিয়াতে ভালো কাজ করতে হবে।অনেক মানুষের মৃত্যুর আলামত দেখলেই স্পষ্ট হয়, তার মৃত্যুটা খারাপ হয়েছে। কতটা আফসোস তাদের জন্য। আল্লাহ আমাদের ওইসব খারাপ মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

খারাপ মৃত্যুর মধ্যে একটা কমন আলামত হলো : আত্নহত্যার মৃত্যু। আল্লাহ তায়ালা বলেন → আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে তা (আত্নহত্যা) করবে, অবশ্যই আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো, আল্লাহর পক্ষে তা সহজসাধ্য। ( সূরা আন নিসা আয়াত ২৯-৩০)

হযরত ছাবিত বিন যিহাক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন → যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোনো বস্তু দিয়ে নিজেকে হত্যা করবে, কিয়ামতের দিন তাকে সে বস্তু দিয়েই শাস্তি প্রদান করা হবে।(বুখারী ৫৭০০,মুসলিম ১১০)

অর্থাৎ যারা যেভাবে আত্নহত্যা করবে, তারা সেভাবেই কেয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে উঠেও সেভাবে আত্নহত্যা করতে থাকবে এবং জাহান্নামেও সারাক্ষণ ওইভাবে আবার আত্নহত্যা করতে থাকবে।

অর্থাৎ কেউ যদি ফাঁসি দিয়ে মারা যায়, তাহলে জাহান্নামে এভাবে ওড়না পেচিয়ে অথবা গলায় রশি পেচিয়ে মরতে থাকবে। কিন্তু মৃত্যু তো হবে না। শুধু ফাঁসি দিতেই থাকবে আর বাধভাঙ্গা যন্ত্রণা ভোগ করতে থাকবে।

কেউ যদি পেটে বুকে ছোরা চালিয়ে মৃত্যু বরণ করতে থাকে, কেয়ামতের দিন তার সাজা হবে সে অনবরত ওই একই কাজ করতে থাকবে। কেউ যদি বিষ খেয়ে মৃত্যু বরণ করে,কেয়ামতের দিন সে অনবরত বিষ খেতে থাকবে।

যেমন : হযরত আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন → যে ব্যক্তি ফাঁসি লাগিয়ে আত্নহত্যা করে সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।

আর যে ব্যক্তি বর্শার আঘাত দ্বারা আত্নহত্যা করে দোজখেও সে সেভাবে নিজেকে শাস্তি দিবে। আর যে নিজেকে নিক্ষেপ করে আত্নহত্যা করবে, কিয়ামতের দিন সে নিজেকে উপর থেকে নিক্ষেপ করে হত্যা করবে (সহীহ ইবন হিব্বান ৫৯৮৭;তাবরানী ৬২১) আল্লাহ আকবার, আল্লাহ আমাদের এই জাতীয় আত্নহত্যা থেকে রক্ষা করুক আমিন।

দ্বিতীয়তঃ অনেকে নেশা করতে করতে মারা যায়। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন → যে ব্যক্তি দুনিয়ায় মদ পান করেছে এরপর সে তা থেকে তওবা করেনি সেই ব্যক্তি আখিরাতে তা থেকে বঞ্চিত থাকবে। (বুখারী ৫১৬২- আ, ই,উমর (রাঃ), তিরমিজি ১৮৬৭)

মাদকের নেশা করার পর একজন মানুষ তার স্বাভাবিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেনা। শয়তান এসময় তাকে পেয়ে বসে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নেশাকারীর ঈমান ঠিক থাকে না অতএব যদি ওই অবস্থায় কেউ মৃত্যুবরণ করে তাহলে তাকে বেইমান হিসেবে মরতে হবে। এবং তার স্থান হবে জাহান্নাম।

হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) কতৃক বর্ণিত নবী করীম (সাঃ) বলেন → মদ পান করার সময় মদ পানকারীর ঈমান থাকেনা। (বুখারী ৬৩০২)

যেমন : আপনি দেখবেন, অনেকে অতিরিক্ত মদ পান করার ফলে মৃত্যু হয়। আপনিই বলেন সেটা কি ভালো মৃত্যু? অবশ্যই না। ঠিক তেমনই দেখা যায় অনেক খারাপ মৃত্যু আছে। জীবনভর নেশা করেছে, নেশা এবং মাদকের জন্য বাবা মায়ের মনে কতই না কষ্ট দিয়েছে। নেশার অর্থ পাওয়ার জন্য মায়ের গায়ে হাত তুলেছে, বাবার সাথে খারাপ আচারন করেছে।নেশায় মাতাল হয়ে ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়েছে।

এদের মৃত্যু নেশারত হবে না তো কিভাবে হবে? নিঃসন্দেহে নেশারত অবস্থায় অথবা মদ্যপান অবস্থায় যদি কারো মৃত্যু হয়,নিঃসন্দেহে সেটা অত্যন্ত ঘৃনীত এবং দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু। কোন সন্তান যদি মারা যায়, যে তার বাবা মা তার উপর রাগান্বিত। নিঃসন্দেহে এটি তার জন্য একটি বদ নসিবের মৃত্যু।

পিতা মাতার সাথে খারাপ আচার-আচরণত অবস্থায় অথবা পিতা মাতা থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কোনো সন্তানের মৃত্যু, তাদের অন্তরে কষ্ট দেওয়া অবস্থায় সন্তানের মৃত্যু নিঃসন্দেহে আল্লাহর তরফ থেকে তার জন্য একটি অভিশাপ স্বরূপ।

যে কোনো পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ঈমানের প্রশ্ন ব্যতিত বাবা মায়ের সাথে কোনোভাবেই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। এমনকি ঈমানের প্রশ্নেও বাবা মায়ের সাথে বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। শুধুমাত্র তারা যদি শিরকের দিকে ডাকে তাহলে সে ডাকে সাড়া দেওয়া যাবে না। আল্লাহর একাত্তবাদকে আকড়ে ধরে রাখতে হবে মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত।

কিন্তু মনে রাখতে হবে, বাবা মা যদি মিসরিকও হয় তারপরেও মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তাদের খেদমত করার আদেশ রয়েছে আল্লাহ তায়ালা তরফ থেকে। ( সহীহ বুখারী ২৬২০) এতে উল্লেখ রয়েছে।

হযরত আবু উমামা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরয করলো, হে আল্লাহর রসূল! সন্তানের ওপর পিতা মাতার হক কি আছে? তিনি বললেন, তারা তোমার বেহেশত ও দোযখ (ইবনে মাজাহ ৪৯৪১)

তাই পিতা মাতার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে, পিতা মাতার মনে কষ্ট দিয়ে কোনো ভাই মৃত্যু বরণ করলে এটি দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু। জীবিত থাকা অবস্থায় যেকোনো পরিস্থিতিতে ;আমরা বাবা মায়ের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলি,তাদের ছোট খাটো ত্রুটিরবিচ্যুতিকে ভুলভ্রান্তি মনে না করি।

একবার মন থেকে শুধু ভাবি আমি যখন মায়ের গর্ভে ছিলাম কত না লাথি মেরেছি, কত কষ্ট না দিয়েছি।যখন ছোট শিশু ছিলাম, এই মা আমার জন্য ভেজা বিছানায় ঘুমিয়ে আমাকে শুকনো জায়গায় ঘুমিয়েছেন। পিতা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাকে মানুষ করিয়াছেন।অর্থ যোগাড় করে আমার খাদ্যের অন্ন বাসস্থানের ব্যবস্হা করেছেন।

কোনো ভাবে তাদের সাথে সম্পর্ক খারাপ করে আমাদের যেন মৃত্যু না হয়। আমরা যেন মৃত্যুর আগেরদিন পর্যন্ত পিতা মাতার খেদমত করে যেতে পারি। আমিন।

চতুর্থ নম্বর হচ্ছে, স্ত্রীর উপরে নারাজ অবস্থায় স্ত্রীর মৃত্যু। অর্থাৎ কোনো স্বামী যদি স্ত্রীর উপরে নারাজ থাকে, স্ত্রীর উপরে কষ্ট পেয়ে থাকে, স্ত্রীর কোনো কর্মকান্ডে তাকে অভিশাপ দিয়ে থাকে এ পরিস্থিতিতে স্ত্রীর মৃত্যু হলে নিঃসন্দেহে এটি অত্যন্ত খারাপ মৃত্যুর লক্ষন।কোনোভাবেই কোনো স্ত্রীর উচিত হবে না, তার স্বামীর সাথে খারাপ আচারন করা।

ইসলামি শরীয়ত স্বামীকে পরিবারের মধ্যে স্ত্রীর উপরে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আর স্বামীর স্ত্রীকে ভালোবাসার নির্দেশ প্রদান করেছে এবং তার অধিকার নিশ্চিত করার নির্দেশনা প্রদান করেছে।

কিন্তু কোনোভাবেই স্ত্রীর উচিত হবে না কোনো স্বামীর সাথে খারাপ আচরণ করা। আল্লাহ রাসূল (সাঃ) বলেন → আমার শরীয়তে সিজদার কোনো সুযোগ নেই। আমি যদি (আল্লাহ ব্যতিরেকে) অপর কাউকে সিজদা করতে বলতাম তবে স্বামীদের জন্য স্ত্রীদের সিজদা করার নির্দেশ করতাম। (আবূ দাঊদ ২১৪০,দারিমী ১৫০৪) সুবহানাল্লাহ।

তবে সেখানে এমন স্বামীর কথা ইঙ্গিত করা হয়েছে যে আল্লাহর দ্বীনের পথে অবিচল। আবার স্বামীদের ক্ষেত্রেও মৃত্যুর সময় স্ত্রী যদি স্বামীর উপর অসন্তুষ্ট থাকে, তাহলে সেটাও স্বামীর জন্য খারাপ মৃত্যুর লক্ষন।

পঞ্চম নম্বর হচ্ছে এমন ব্যক্তি, যার মৃত্যুর পরে এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। হ্যা, এমন কপালপোড়া মানুষ আমাদের সমাজে রয়েছে, যাদের জুলুম, নির্যাতন,অত্যাচারে তার প্রতিবেশি প্রতিনিয়ত আতঙ্কিত থাকে।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন → সেই প্রকৃত মুসলমান, যার জিহ্বা এবং হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ। সুতরাং অধিক ঝগড়াটে ব্যক্তি, জায়গায় জায়গায় প্যাচ গোচ লাগানো ব্যক্তি, সমাজের মধ্যে নোংরা বিভেদ সংযুক্ত ব্যক্তি এক পরিবারে সাথে আরেক পরিবারের দ্বন্দ সংঘাত বাধিয়া দেওয়া ব্যক্তি, চোগলখুরি করার ব্যক্তিরা মৃত্যু বরণ করলে সমাজের অনেকে খুশি হন।

নিঃসন্দেহে অসন্তুষ্ট অবস্থায় মানুষের বদ দোয়া নিয়ে মৃত্যু বরণ করা অত্যন্ত জঘন্য মৃত্যু। (বুখারী হাদিস ১০,৬৪৮৪,মুসলিম ৪০,নাসায়ি ৪৯৯৬,আবু দাঊদ ২৪৮১,মুসনাদে আহমদ ৬৪৫১,দারেমি ২৭১৬)

এছাড়া যারা হাত দ্বারা মানুষের উপর জুলুম করে, নিজের বিভিন্ন রকমের প্রভাব ক্ষমতা খাটিয়ে দুর্বলের উপর অনাচার অত্যাচার করে,আল্লাহ তাদেরাকে পছন্দ করেন না।এ পরিস্থিতিতে তাদের মৃত্যু কখনোই সুখকর মৃত্যু নয়।

সর্বশেষ বলতে চাই, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন → যে ব্যক্তি নিজেকে সরল সঠিক পথের উপর অবিচল রাখতে চায়,তার জন্য মৃত্যুর যথেষ্ট ( এটি সূরা যুমার ৩৬ আয়াতেও এসেছে) তাই প্রতিনিয়ত মৃত্যুর চিন্তা আমাদের অন্তরে জ্ঞাপন করি। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা আমাদের সরল সঠিক পথে পরিচালিত করবেন ইনশাআল্লাহ।

শুধুমাত্র অন্তরে এই চিন্তা জ্ঞাপন করি যে,মসজিদে ঝুলে থাকা এ খাটিয়াটিতে আমাকে একদিন উঠতে হবে। আজ যে কবরে আমি আমার পূর্ব পুরুষদের শায়িত দেখতে পাচ্ছি আমার পূর্বপুরুষদের মতোই আমাকে একদিন চিরনিদ্রায় যেতে হবে। এই চিন্তা গুলো আমাদেরকে অন্তরের মরিচা ঝড়িয়ে দিয়ে সরল সঠিক পথে অবিচল করে তুলবে ইনশাআল্লাহ। ইনশাআল্লাহ আমরা সেই চেষ্টাই করবো।

প্রিয় ভাই ও বোনেরা লাইক কমেন্ট শেয়ার করে ইসলামি দাওয়াতে আপনিও অংশগ্রহণ করুন।প্রিয় বন্ধুরা জানার স্বার্থে দাওয়াতি কাজের স্বার্থে আর্টিকেলটি অবশ্যই শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন।হতে পারে আপনার একটি শেয়ার বহু মানুষ উপকৃত হবে ইনশাআল্লাহ।