The inspiring Mumin life in Islam

The inspiring Mumin life in Islam – ইসলামের অনুপ্রেরণাদায়ক মুমিনের  জীবন

মুমিনের জীবনে “ক্ষতি” (বুঝার সুবিদার্থে ইংরেজিতে “লস” যাকে বলি আমরা) সেই শব্দের কোনো জায়গা নেই। মুমিনের সবকিছুতেই লাভ। কোনো কিছু পেলেও লাভ,না পেলেও লাভ। সুখেও লাভ, দুঃখেও লাভ। হাসিতেও লাভ,কান্নাতেও লাভ। মুমিনের জীবনটা আল্লাহর রহমতে আর বরকতে বরকতময়। মুমিনের জীবনে আল্লাহর রহমত-বরকতগুলো হলো জমিনের বুকে অবিরাম মুষলধারে বৃষ্টির মতো যা কখনো থেমে যায়না…..

মুমিন যদি আল্লাহর কাছে কিছু চেয়ে পায় তাতেও কল্যাণ,না পেলে তাতেও কল্যাণ। মুমিন যখন কোনোকিছু চায় রবের কাছে তখন সে জানে সে পাবেই, হুবুহু যা চেয়েছে তাই পাবে অথবা অন্যকোনো রূপে পাবে।
এই চাওয়ার মধ্যেও মুমিনের একাধিক লাভ। সে যখন কায়মোনবাক্যে আল্লাহর কাছে কোনোকিছু চায় তখন এই চাওয়া তার আল্লাহর প্রতি একাধিক সুধারণা ফুটিয়ে তুলে—
রবের প্রতি প্রবল বিশ্বাস—
সে যখন আল্লাহর কাছে কোনোকিছু চায় তখন এই বিশ্বাস নিয়েই চায় যে আল্লাহ তাকে দিবেনই। আল্লাহর প্রতি তার অসীম বিশ্বাস প্রকাশ পায় এই চাওয়ায়
রবের ক্ষমতা, ঐশ্বর্য ও একত্ববাদ স্বীকার—
একজন মুমিন জানে আল্লাহ সকল ক্ষমতার মালিক। তাঁর কাছে কোনো কিছুর অভাব নেই। সকল অসম্ভব বস্তুকেও সম্ভব করা আল্লাহর জন্য “হও” বলার ঊর্ধ্বে নয়। তিনি “হও” বললেই হয়ে যাবে। তাঁর ক্ষমতা,তাঁর বরত্ব, তাঁর মহত্ব অতুলনীয়। তাঁর ভান্ডারে কোনো কিছুর অভাব নেই। ধন-সম্পদ,স্ত্রী-সন্তান,সুস্থতা-সব আছে,সব। মুমিন এই বিশ্বাস নিয়েই আল্লাহর কাছে চায়। আর শুধু আল্লাহর কাছেই চায়। কারণ সে জানে এগুলো দেওয়ার ক্ষমতা শুধু আল্লাহরই। তিনি ছাড়া আর কেউ কোনোকিছু দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। তিনি তাঁর সকল গুণাবলিতেই এক ও অদ্বিতীয়
সবর ও তাওয়াক্কুল—
মুমিন কোনোকিছু চাইলে সাথে সাথেই পেয়ে যায়না। তবুও সে চাইতেই থাকে। সে জানে দুআ করার তাওফিক যেহেতু পেয়েছে তাই কবুল হবেই। শুধু লেগে থাকতে হবে। আল্লাহ যে বড়ই দয়ালু। তিনি না দিয়ে থাকতে পারবেন না।শুধু একটু অপেক্ষা করতে হবে, একটু ধৈর্য ধরতে হবে,একটু সময় লাগবে কিন্তু যা চেয়েছে তা সে পাবেই, এতে কোনো সন্দেহ নেই। হয়ত যেমন চেয়েছে তেমনই দিবেন,নয়ত তার চেয়েও উত্তম ভাবে দিবেন,কিন্তু দিবেনই…
আহ! একটা দুআর মধ্যেই রবের প্রতি কত বিশ্বাস, তাকওয়া আর তাওয়াক্কুল মিশে থাকে মুমিনের!
এটা কোনো সাধারণ ব্যাপার না। অনেক বড় একটা ব্যাপার। একজন মুমিন যখন দুআ করে তখন আল্লাহর প্রতি তার উপরে বর্ণিত এই ধারণাগুলো আপনাআপনিই তৈরি হয়ে যায়। আর এর ফলে কি হয় জানেন? তার প্রতি রবের ভালোবাসা, দয়া আগের চেয়েও অনেকগুণ বেড়ে যায়। রবকে না দেখে রবের প্রতি এতো বিশ্বাস দেখার পর কীভাবে প্রিয় রহমানুর রহিম মুমিনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা বৃদ্ধি না করে থাকে!
পাওয়া না পাওয়া তো পরের কথা, শুধু একটু দুআ করেই মুমিন রবের অসীম ভালোবাসা অর্জন করে ফেলে! রবের ভালোবাসা পেয়ে গেলে তো দু’জাহানই পেয়ে গেলে। কত বড় অর্জন দেখলেন! তারপর আসি পাওয়া না পাওয়ার ব্যাপারে।
রবকে এতো ভালোবাসার পর রব মুমিনকে কী অকল্যাণ কিছু দিতে পারেন! কখনোই না…
আল্লাহ তাকে সেটাই দেন যেটা তার জন্য উত্তম। যা চেয়েছিলো তা যদি উত্তম হয় তাহলে সেটাই দেন, যদি উত্তম নাহয় তাহলে যেটা উত্তম সেটা দেন।আবার কখনো উত্তম হলেও দেন না, উত্তমের চেয়েও অধিক উত্তম দেওয়ার জন্য..সুবহান আল্লাহ!মুমিনের জীবন মানেই বরকত আর রহমত।
এতো গেলো দুআর ব্যাপার নিয়ে, চাওয়া-পাওয়া নিয়ে।
এবার আসি দুঃখ-কষ্ট নিয়ে…
মুমিনের জীবনে দুঃখ-কষ্ট, বিপাদপদ কম নয়, বরং একটু বেশিই। এখন তো বলে ফেলবেন, এই আল্লাহর ভালোবাসা!!
হ্যাঁ, এটাই আল্লাহর ভালোবাসা। কারণ এই দুঃখ-কষ্টগুলো মুমিনের জন্য আজাব নয় নিয়ামত। মুমিন হোক বা না হোক,আমরা সাধারণ মানুষরা কখন আল্লাহর বেশি সান্নিধ্যে থাকি জানেন? যখন দুঃখ-কষ্টে থাকি। দুঃখ-কষ্ট কেটে গেলে আল্লাহকে ভুলে যাই।
** মুমিন তো আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ। সেও তো শয়তানের প্রলোভনে পড়ে আল্লাহকে ভুলে যেতেই পারে। অস্বাভাবিক তো কিছু না। কিন্তু নাহ…
আল্লাহ মুমিন বান্দাদের এতো ভালোবাসেন যে তাদেরকে ভুলতে দিবেন না তাঁকে। তাদেরকে নিজের সান্নিধ্যেই রাখবেন সে পর্যন্ত যে পর্যন্ত না মালাকুল মওত চলে আসে। আর মুমিন কিন্তু দুঃখ-কষ্ট পেলে হাই-হুতাশ করে না। কারণ একটাই, সে জানে তার এই দুঃখ-কষ্টগুলোকে আপাতদৃষ্টিতে দুঃখ-কষ্ট মনে হলেও এগুলো তার কল্যাণের সিঁড়ি। সে জানে তার জীবন আল্লাহর রহমতে রহমতময়। মুমিন তো জানে এই দুঃখ-কষ্টগুলোর মাধ্যমে হয়ত আল্লাহ তাকে বড় কোনো দুঃখ-কষ্ট থেকে বাঁচাচ্ছেন, অথবা এগুলোকে তার দুঃখ মনে হলেও এগুলো আসলে দুঃখ না। ওই যে আল্লাহ বললেন, “এবং আমি জানি, তোমরা জানো না”
** মুমিন দুঃখ-কষ্টকে ভয় পায়না,একদমই না। তার পেটে বা মাথা ব্যথা হলেও সে চোখ বন্ধ করে আলহামদুলিল্লাহ বলে।রাসুল যে বলে গেলেন, “মুমিনের পায়ে একটা কাঁটা বিঁধলে সেটার জন্যও তার গোনাহ মাফ হয়ে যায়”
** আহা! কত সৌভাগ্যবান সে! দুনিয়াবি কিছু শারীরিক বা মানসিক যন্ত্রণার বিনিময়ে পরকালের মুক্তির পথ তৈরি হচ্ছে তার জন্য, জান্নাতের সিঁড়ি তৈরি হচ্ছে! আল্লাহু আকবার! আল্লাহ আসলেই আর-রহমান, আর-রহীমু! নয়ত এমন অফার দিতেন!
আসলেই,মুমিনের সবকিছুতেই লাভ। মাথা ব্যথা করলেও লাভ,পা ব্যথায়ও লাভ, সর্দি-কাশিতেও লাভ,জ্বরে তো আরও বেশি লাভ। জ্বর সম্পর্কে প্রিয় নবি এটাই বলেছিলেন তাইনা, “কোনো রোগ আমার কাছে জ্বরের চেয়ে অধিক প্রিয় নয়। কেননা জ্বর শরীরের প্রতিটি অঙ্গ ও জোড়ায় পৌঁছে যায়। আর আল্লাহ তায়ালা সে অনুপাতে সওয়াব দিয়ে থাকেন”
** আরও কি কি যেনো বলেছিলেন!!
“জ্বরকে মন্দ বলো না। এটি বনি আদমের গুনাহকে এমনভাবে দূর করে দেয়, যেভাবে আগুন শুকনো লাকড়িকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয়।”
** মুমিনের এতো বরকতময় জীবন দেখে হিংসা হয়না? কী একটা অবস্থা! জ্বরে কাঁপলেও তার লাভ। আবার মুমিন নাকি হাসলেও লাভ, কাঁদলেও লাভ। হাসলে সওয়াব,কাঁদলে গোনাহ মাফ।
“প্রতিটি ভালো কাজ সদকা, আর গুরুত্বপূর্ণ একটি ভালো কাজ হলো অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা”
** “সাত ধরনের মানুষকে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। তার মধ্যে অন্যতম হলো, এমন ব্যক্তি যে আল্লাহকে নির্জনে স্মরণ করে আর তার চোখ দুটি অশ্রুসিক্ত হয়”
** মুমিনের কান্নাও আল্লাহর নিকট কত প্রিয়! এতো প্রিয় যে এই আল্লাহ জাহান্নামকে কান্না করা এই চোখদুটো স্পর্শ করতে দিবেন না
মুমিনের জীবন নিয়ে যত বলতে যাবো, বারবার সুবহান আল্লাহ বলতে হবে। সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ কত মহান! মুমিনের জীবনটাকে কতই না বরকতময় করে দিলেন! সুবহানাল্লাহ,আলহামদুলিল্লাহ।
মুমিনের জীবনের বরকত, কল্যাণ, রহমত নিয়ে লিখতে গেলে শেষ হবে না। ওই যে বললাম, মুমিনের জীবনে আল্লাহর রহমত-বরকতগুলো হলো জমিনের বুকে অবিরাম মুষলধারে বৃষ্টির মতো যা কখনো থেমে যায়না…
যা থেমে যায়না তা আমি অধম লিখে কীভাবে শেষ করব, থামিয়ে দিবো,আমার কলম কীভাবে থেমে যাবে!!
আল্লাহ আমাদের সবাইকে মুমিন বানিয়ে দিন।
আমিন,সুম্মা আমিন।
রেফারেন্স—
(১) বাকারাহ ২১৬
(২)মুসলিম ২৫৭২; মুসনাদে আহমাদ ১৬৫৬০
(৩)আদাবুল মুফরাত ৫০৩
(৪)মুসলিম ৫৬৪৭
(৫)তিরমিজি ১৯৭০
(৬)বুখারি ৬৮০৬
(৭)তিরমিজি ১৬৩৯
IDC Partner

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন।

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে বিস্তারিত জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

Islami Dawah Center Cover photo

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ। যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 (নগদ/বিকাশ পার্সোনাল) ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ )